চরম সাম্প্রদায়িক আওয়ামীলীগ এবং হলুদ মিডিয়ার মুখোশ উন্মোচন...
লিখেছেন লিখেছেন মু নূরনবী ০৪ মার্চ, ২০১৩, ০১:৪০:১৪ দুপুর
এক সময় মিডিয়ায় কাজ করতাম এই পরিচয়টা দিতেও এখন আমার খুব লজ্জা হয়! কারণ, মিডিয়ার প্রতি মানুষের কিছুটা ক্ষোভ থাকলেও সম্ভবত ইদানিংকালে তা আরো বেড়েছে জ্যামিতিকহারে।
গুলি করছে পুলিশ, মরছে মানুষ। আর মিডিয়া প্রচার করছে, জামায়াত-শিবিরের তান্ডবে নিহত ২৮!!!
ছাগল কি আর গাছে ধরে?! শিবির যদি তান্ডবই চালায় তাহলেতো পুলিশ মরার কথা অন্তত ১৫ জন। যদি ফিফটি ফিফটি সমীকরণে যাই।
সাধারণ মানুষের কাছে এখন সব কিছু দিবালোকের মত পরিষ্কার।
বর্তমান সরকার এতটাই চুরিতে নিমজ্জিত ছিল যে তাদের ঘরানার একজন প্রবীণ সাংবাদিক, শুধু সাংবাদিকই নয় মুজিব সময়ের আওয়ামী এমপি এবিএম মুসা বলতে বাধ্য হয়েছেন, যেখানেই আওয়ামীলীগ দেখবেন তাকেই বলবেন, "তুই চোর"! >
সেই পাহাড়সম ব্যর্থতাকে ঢাকতেই বর্তমান সরকার সামনে নিয়ে আসে শাহবাগ নামক টনিক। আস্তে আস্তে সেই প্যান্ডোরার বাক্স খুলতে শুরু করেছে। স্বয়ং আওয়ামীলীগের লোকজনই ক্ষুব্ধ শাহবাগীদের নেতা ইমরানের উপর। রাজাকারের নাতি এখন দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীরা তার আদেশে উঠ-বস করে!!!
সে দিকে নজর দিতে গেলে এরকম দশটা পোস্ট লেখা যাবে। সে দিকে যাব না বাপু....আমি যে কথাটি বলতে চাই..........
বর্তমানে মিডিয়ায় সংখ্যালঘু নির্যাতনের যে ডামাঢোল পেটানো হচ্ছে, তা আওয়ামী প্রযোজনায় আরেকটি নাটক। সারাদেশে নির্বিচারে "পুলিশ লীগ" যে গণহত্যা চালাচ্ছে তা নিয়ে দেশে তো বটেই বিদেশের অনেক প্রতিষ্ঠানও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিচ্ছে। বিশ্বের মিডিয়াগুলোর লিড নিউজ হচ্ছে এই গণহত্যা।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের চিত্র দেখানো হচ্ছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার রাজগঞ্জের। আমার বাড়ী বেগমগঞ্জ থানার রাজগঞ্জের পাশের গোপালপুর ইউনিয়ন।
বাংলাদেশে নোয়াখালী জেলার ধার্মিকতার দিক থেকে আলাদা একটি খ্যাতি রয়েছে। আপনারা উপমহাদেশের ইতিহাস ঘাটলে দেখবেন শত শত আলেক ফকিহ এই অঞ্চল থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিজরত করেছেন ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে। যার ফলে নোয়াখাইল্যা :-)/:-) নাই এমন কোন থানা বাংলাদেশে আছে কি না সন্দেহ!
আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন দেখতাম মা সকালবেলা নামাজ পড়ে জোর করে উঠিয়ে দিতেন মক্তবে আরবী পড়তে যাওয়ার জন্য। না গেলে বেতের বাড়ীর গল্প না হয় অন্যদিন বলব।
যখন হাইস্কুলে ভর্তি হই তখন আমার ডজনখানেক বন্ধু-বান্ধবী ছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বী। তাদের মধ্যে অন্যতম, চন্দন-পলাশ কুরী-পলাশ চন্দ্র সূত্রধর-পলাশ কুমার আচার্য্য-নিমাই-শিখা-বিদ্যুত-মনিষা ছিল উল্লেখযোগ্য। এখনো চন্দনের সাথে প্রায়ই কথা হয়। বর্তমানে সে চট্রগামের ফরেস্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত। পলাশ কুরী পৈতৃক ব্যবসা জুয়েলারী ব্যবসার সাথে জড়িত। পলাশ চন্দ্র সূত্রধর সেও পৈতৃক পেশা রাজমিন্ত্রীর কাজে জড়িত। পলাশ কুমার আচার্য্য সে বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী। নিমাই সৌদিতে। শিখা তো নোয়াখালী না শুধু চট্রগাম বিভাগের সেরা এথলেট হয় স্কুল পর্যায়ে। তার সাথে দৌড় দিয়ে আমরাও পরাস্ত হয়ে যেতাম ! বিদ্যুত ছোট খাট একটা জব করছে। তাদের সাথে সখ্যতা এখনো সেই ফেলে আসা ৯৬-২০০১ সালের চাইতে কোন অংশে কম নয়। এখনো বাড়ী গেলে তাদের সাথে প্রায়ই আড্ডা দিই। তাদের পুজোর সময় অনেকবার তাদের বাড়ী গিয়েছি। সন্দেশ খেয়েছি কত মজা করে। ঈদের সময় তারাও আসতো। নিমাইতো রীতিমত পাঞ্জাবী গায়ে ঈদের পর বের হতো। বুঝাই যেতনা সে কি মুসলমান না হিন্দু! এইতো গত রমজানের ঈদে চন্দন তার মটর সাইকেল চট্রগ্রাম থেকে নিয়ে এসেছে শুধু ঈদে ঘুরার জন্য। তাকে নিয়ে কত আত্নীয়ের বাড়ীতে গিয়েছি। তার প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় আমাদের স্কুলের '০১ ব্যাচের একটা ঈদ পুনর্মিলনীও <:-P হয়ে গেল।
এই হচ্ছে ধর্মীয় সম্প্রীতি।
অথচ বর্তমান মিডিয়াগুলো কি প্রচার করছে???
কারা সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করছে? কারা বিশ্বজিতকে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করেছে??? সে দিন বিশ্বজিত হায়েনাগুলোর কাছে হাত জোড় করে প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছিল। সে বলেছিল..."ভাই আমি হিন্দু"। এতেও কি খুনীদের মন গলাতে পেরেছে?
কারা রামুতে বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা করেছে???
কারা ঢাকেশ্বরী মন্দিরের শত শত ভরি স্বর্ণ লুট করেছে???
উত্তর একটাই চরম সাম্প্রদায়িক দল আওয়ামীলীগ ।
এখন আবার তারা সংখ্যা লঘুদের উপর নির্যাতন করে তাদের সময়ে অবৈধ টাকার মালিক বনে যাওয়া মালিকদের মিডিয়ার মাধমে তা প্রচার করে বেড়াচ্ছে। তবে হালে খুব বেশী পানি পাচ্ছে বলে মনে হয় না। কারণ, বাঁশের কেল্লার বরাতে জানতে পারলাম, শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাকি নির্দেশ দিয়েছেন, নেতা-কর্মীরা যাতে স্ব স্ব এলাকার ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থণাকেন্দ্রগুণোতে যাতে পাহারা বসায়!!! :(fight)
সাধারণ মানুষ আজ অনেক বেশী সচেতন। কোন চ্যানেল মাত্রাতিরিক্ত হলুদ সংবাদ পরিবেশন করলে রিমোর্ট টিপে অন্য চ্যানেলে চলে যেতে কুন্ঠাবোধ করবে না ।
তবে, করুণা হয় সে সব সাংবাদিকদের জন্য যারা আজ সাগর-রুনীর রক্তের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করছে, এর প্রাপ্য তারা একদিন পাবে। সাগর-রুনীতো ষোল কোটি মানুষের ভালাবাসা-দোয়া পেয়েছে। তোদের জন্য থাকবে মানুষের ঘৃণা X-(।
বিষয়: রাজনীতি
১৩০৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন