একজন মাহমুদুর রহমান : রাষ্ট্রযন্ত্রের নির্যাতনের বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকা হিমালয়

লিখেছেন লিখেছেন মু নূরনবী ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০১:৩৩:২৮ দুপুর

ব্লগিং করি আজ প্রায় পাঁচ বছর ধরে। এসবি'র সাথে ছিলাম প্রায় প্রথম থেকেই...বিডি টু'ডের সাথেও আছি শুরু থেকে।

লেখার চাইতে পোস্ট পড়া এবং কমেন্ট করাটাই আমার জন্য যথার্থ মনে করি। কারণ, লিখতে হলে জানতে হয়, পড়তে হয়। তবে যতটুকু লিখি বা লিখেছি...সম্পূর্ণটাই নিজের। কপিপেস্ট সর্বাত্মক এড়িয়ে গিয়েছি। আজ একটি বক্তব্য কপিপেস্ট করব।

একারণেই করব...যে আমার মনে হচ্ছে যার লেখা কপি পেস্ট করছি, তার মতো দেশপ্রেমিকেরা বেঁচে আছে বলেই দেশ এখনৈা বিক্রি হয়নি।তাদের মত সাহসীরা আছে বলেই, ইনুদের হুংকারের কাছে মাথা নত করি না। কীবোর্ডে প্রতিবাদ গড়ে তুলেছি।

হাঁ...যার কথা বলছিলাম। তিনি নির্যাতিত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। বিএনপি তাকে খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদে মনোনয়ন করেছে। কিন্তু এই প্রথম দেখলাম কোন ব্যক্তি দলীয় পোস্টে থেকেও দেশের স্বার্থে দলকে এতটুকু ছাড় দিয়ে কথা বলেননি।

খালেদা জিয়ার ভারত সফরের পর তার আশে পাশের চামচারা যেভাবে গওহর রিজভীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন..তার তীব্র সমালোচনা করে একাধিক কলাম তিনি লিখেছেন। অন্তত বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি ব্যতিক্রম। কারণ, সবাই নেত্রীকে তেলানোর মাঝে কিছু পেতে চায়! ব্যতিক্রম মাহমুদুর রহমান।

বর্তমানে আমার দেশ পত্রিকার উপর সরকারের প্রত্যক্ষ মদদেই খড়গ চলছে। বিভিন্ন জায়গায় বিক্রিতে বাধী দেওয়া হচ্ছে, কথিত প্রজন্ম চত্তর থেকে স্পষ্টভাবে হুমকী দেওয়া হচ্ছে!তবুও দমে যাওয়ার পাত্র নন তিনি।

এই হুমকীর বিপরীতে গতকাল তার ফেসবুকে একটি কমেন্ট দেখে বিষ্মিত হলাম। অনেক আলেমের এই ঈমান আছে কি না আমার সন্দেহ আছে।

তিনি লিখেছেন.............

'২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার

খুনি বাপ্পাদিত্য বসু গত শুক্রবার

শাহবাগ থেকে আমাকেও খুন করার

হুমকি দিয়েছে। ছাত্রলীগের

পাণ্ডারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের

অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল এবং ব্র্যাক

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. পিয়াস

করীমসহ আমার পিঠের

চামড়া তুলে নিতে চেয়েছে। এই

বিধর্মী এবং ইসলাম বিদ্বেষীদের

কাছে কোরআন শরিফ

থেকে কোনো উদ্ধৃতি দেয়া সেই পবিত্র

গ্রন্থেরই অবমাননা। মহান ইংরেজ

নাট্যকার শেক্সপীয়রের বইপত্র পাঠ

করার বিদ্যাও এদের আছে কিনা আমার

জানা নেই। তবু খুনের হুমকির

জবাবে শেক্সপীয়রের অমর সৃষ্টি জুলিয়াস

সীজার নাটকের একটি বাক্য উদ্ধৃত

করার লোভ সামলাতে পারছি না। স্ত্রীর

উদ্বেগের জবাবে অসীম সাহসের প্রতীক

জুলিয়াস সীজার বলছেন,

Death, a necessary end,

Will come, when it will

come.

(মৃত্যু, এক অবধারিত নিয়তি,

অবশ্যই আসবে, যখন তার সময় হবে)

আমি গভীরভাবে বিশ্বাসী মানুষ। এই

ধৃষ্টতার জবাবে শুধু বলব, আল্লাহর

নগণ্য বান্দা আমি; তিনি যখন,

যেভাবে ডাকবেন আমি ব্যাকুল হয়ে বলব,

আল্লাহুম্মা লাব্বায়েক।'

........Mahmudur Rahaman

বর্তমানে পত্রিকার দূরবস্থার কথা জানিয়ে তার আরেকটি লেখা দেখে তার প্রতি শ্রদ্ধা কয়েকগুণ বেড়ে গেল। একান্তই একজন সাহসী যোদ্ধা এবং দেশপ্রেমিক না হলে এমন ভাষ্য মুখ দিয়ে আসার কথা নয়।

নিচের অংশটুকু পড়ুন, দেখুন কত কষ্ট করে মাহমুদুর রহমান আমারদেশ পত্রিকাটিকে ধরে রেখেছেন...

"...........সরকার আমার দেশ-এ বিজ্ঞাপন প্রদানের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে, তার প্রভাব বেসরকারি খাতেও পড়েছে। বিজ্ঞাপনদাতারা তাদের অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে বলেছেন, এই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিলেই নাকি বিশেষ এজেন্সি থেকে তাদের কাছে ফোন যায়, সরকারের অন্যান্য সংস্থাও ব্যবসা পরিচালনায় নানাভাবে হয়রানি করে। বিজ্ঞাপন ছাড়া একটি পত্রিকার বেঁচে থাকা যে কত কঠিন, সেটি ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। পরিবারের আয়ের একমাত্র উত্স সিরামিক কারখানাটি আমার কারাবন্দী অবস্থায় বিক্রি করে তারই টাকা দিয়ে এতদিন আমার দেশ টিকিয়ে রেখেছি। আমার আর কোনো ব্যবসা নেই, পড়ন্ত বেলায় নতুন করে চাকরি করার সুযোগ নেই, গণবিরোধী করপোরেট স্বার্থের ধামাধরা হয়ে পত্রিকা চালানোও আমার নীতিবিরুদ্ধ।

এদিকে কাগজ, কালিসহ ছাপার প্রতিটি উপকরণের মূল্য প্রতি মাসেই হু হু করে বেড়ে চলেছে। সরকার ইতোমধ্যে সাংবাদিকদের জন্য যে ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করেছে, সেটা বৈধ-অবৈধ পথে অর্জিত বেশুমার ধন-দৌলতের অধিকারী মালিকদের পত্রিকায় অদ্যাবধি কার্যকর করা না হলেও আমার দেশ কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের স্বল্প আয়ে জীবনযুদ্ধের বিষয়টি বিবেচনা করে জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকেই বেতন বৃদ্ধি করেছে। সব মিলিয়ে আমার দেশ চরম আর্থিক সঙ্কটে পতিত হয়েছে।

এ অবস্থায় কেবল টিকে থাকার প্রয়োজনে ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ থেকে পত্রিকাটির দাম ২ টাকা বাড়িয়ে ১২টাকা করতে বাধ্য হচ্ছি। আমি জানি, ২০ কিংবা ২৪ পাতার রঙচঙে অনেক দৈনিক পত্রিকার দাম এখনও ৮ টাকা। কিন্তু সেসব পত্রিকার মালিকরা অগাধ অর্থবিত্তের অধিকারী। বিজ্ঞাপন পেতেও তাদের ওপর কোনো সরকারি বাধা নেই। শুনেছি, অনেকে নাকি বিভিন্ন পন্থায় বিদেশি সূত্র থেকে নানারকম সহায়তাও পেয়ে থাকেন। সুতরাং, তারা যেটি পারেন সে কাজ আমাদের পক্ষে করা সম্ভব হয় না।

আমি বুঝি, ক্রেতার পক্ষে ১২ টাকা দেয়াটাও একটা উটকো ঝামেলার ব্যাপার। অনেক সময় পকেটে খুচরো দু’টাকার নোট থাকেও না। এই বাস্তবতা জানা সত্ত্বেও একান্ত নিরুপায় হয়ে পাঠক হারানোর ঝুঁকি নিয়েও আমাকে এই অপ্রিয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হচ্ছে। পাঠকদের ওপর অতিরিক্ত এই বোঝা চাপানোর জন্য দুই হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে রাখছি। যেসব পাঠক বর্তমানের বৈরী পরিস্থিতিতেও সত্য সংবাদ প্রকাশের লড়াইয়ে রত দৈনিকটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রতিদিন দুটি করে টাকা অতিরিক্ত খরচ করবেন, তাদের কাছে আগাম কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আমার আবেদন সমাপ্ত করছি। আল্লাহ্ আপনাদের হেফাজত করুন।"

আজ সময় এসেছে...সত্যের পথে থাকার। আজ সময় এসেছে দেশ প্রেমের পরিচয় দেওয়ার....

তবে কেন বন্ধু...সাহস হারাও। Big Hug

আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। ইনশাল্লাহ। m/

শুধু প্রয়োজন তোমার একটি সাহসী পদক্ষেপ.....

বিষয়: বিবিধ

১১১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File