এখানের সবাই আমার ছেলের বয়সী: জনৈক মুক্তমণা নারীর খোদেক্তি এবং একজন দর্শকের চোখে আজকের শাহবাগ...

লিখেছেন লিখেছেন মু নূরনবী ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১২:৫৯:০৬ রাত



ধাক্কা ধাক্কির পর চারুকলার সামনে পড়ে থাকা চুড়ি.....

শাহবাগীদের চেতনায় উজ্জীবীত হয়ে মুক্তমনাদের উপর হামলে পড়ার কাহিনী এতদিন পত্র পত্রিকায় পড়লেও আজ স্বচক্ষে দেখলাম!

ছোটখাট একটা প্রজেক্ট নিয়ে তিন বন্ধু কাজ করছি। আজকে অনিচ্ছা স্বত্বেও বন্ধু আরমানের পীড়াপিড়িতে শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরী চত্বরে গেলাম আসরের পরেই। সাধারণত, আমি এ সব দিবসে বাসা থেকে খুব বেশী বের হই না। কারণ, অশ্লীলতা আর প্রদর্শনীর ছড়াছড়ির পাশাপাশি বিরক্তিরকর জ্যামই অন্যতম কারণ। যাই হোক, সিদ্ধান্ত হল মাগরিবের পরই আমরা বসব।

মাগরিবের তখনও প্রায় আধা ঘন্টা বাকি। গেলাম ছবির হাটে। উদ্ভট সব ছবির কালেকশন। প্যান্টের পকেটের একটি নমুনা দেখলাম। মূল বিষয় হচ্ছে, মানুষ জিন্সের ব্যাক পকেটে কি রাখে? আমি সাধারণত একটায় মানিব্যাগ এবং অন্যটায় টিস্যু বা মাস্ক রাখি। অথচ ছবিমেলার বিখ্যাত শাহবাগীরা তুলে ধরল তাদের চিন্তা। সেখানে দেখলাম, তাদের কল্পনায় এল প্যান্টের পকেটে নাকি চাউলও থাকে! সবচে অবাক হয়েছি ইয়াংরা নাকি সেথায় জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রীও (ক**ম) রাখে!!!

দেখলাম আর ভাবলাম যার মনে যা! এদিকে মাগরিবের আজানের সময় হয়ে এল। বের হতে গিয়ে দেখি ছবির হাট লোকে লোকারণ্য। সামনেও যেতে পারছিনা। পেছনেও না! ঠিক এক যায়গায় ঠাই দাঁড়িয়ে আছি পনের মিনিট! জানার চেষ্টা করলাম, কেন এত মনুষ্য ভীড়। পরে জানতে পারলাম...গণজাগরণ মঞ্চের শপথ অনুষ্ঠান শেষ, তাই ব্যানার-সহ মিছিল নিয়ে বের হচ্ছে ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা। তাদের বের হওয়ার সুবিধার্থে রাস্তা বন্ধ! এভাবে কেটে গেল আরো দশ মিনিট। এক পর্যায়ে শুরু হল ধাক্কা ধাক্কি। আশে পাশে অনেক মহিলা-বাচ্চাকেও দেখলাম প্রচন্ড ভীড়ে কাহিল হওয়ার উপক্রম। হুঁড়োহুঁড়ির এক পর্যায়ে চিতকার ছেঁছামেচি। অনেক বাচ্চা ভয়ে কান্না শুরু করেছে। আমার নিজেরও নি:শ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম!





প্রচন্ড ভীড়ের মধ্যে....ছবির হাটের ভেতর


এভাবে ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে ধাক্কা খেতে খেতেই চারুকলার সামনে চলে এলাম। নারী কন্ঠের কেউ একজন চিতকার করে বলছে...এখানে সবাই আমার ছেলের বয়সী। অথচ এরাই আমার গায়ে হাত দিয়েছে। আমরা কোন দেশে আছি?

উচ্চ কন্ঠের চিতকারে সম্বিত ফিরে পেয়ে আন্টির দিকে তাকিয়ে তো আক্কেল গুড়ুম! যা পরেছেন, আর যাই হোক শালীন পোশাক বলা চলে না! তার উপর কড়া মেকআপ। গণজাগরণ মঞ্চ থেকে শপথ নিয়ে ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা আন্টির উপর হামলে পড়েছিল!

ফ্রেশ হয়ে শাহবাগ থানা কম্পাউন্ডে নামাজ পড়ার পর বন্ধুরা মিলে পাবলিক লাইব্রেরীর গেটে দাঁড়িয়ে যখন চা খাচ্ছিলাম তখন বার বার একটি কথাই মনে হচ্ছিল, আমাদের সমাজটা দিন দিন বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষে ভরে যাচ্ছে, যারা নিজের টাকা খরচ করে বউকে সাজিয়ে গুজিয়ে অন্যের চোখে তাক লাগানোর জন্য ঘুরে বেড়ায়।

সেই জাতির উপর আল্লাহর লানত আসতে খুব বেশী দেরী হবে না। আর তার পূর্বে আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের জমিন থেকে উঠিয়ে নেন। হয়তো কাদের মোল্লা আল্লাহর প্রিয় বান্দা ছিলেন!

বিষয়: বিবিধ

২৬৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File