"চাপযুক্ত রায়" শাহবাগের আন্দোলন এবং বাস্তবতা....
লিখেছেন লিখেছেন মু নূরনবী ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:৫৯:৫৬ দুপুর
বিচার নিয়ে ক্ষুব্দ যে কেউ আদালতে যেতে পারে। এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। আইনি অধিকার।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, রায়কে কেন্দ্র করে এভাবে সভা-সমাবেশ করা কি আদালত অবমাননা নয়?
এখানেই আমাদের তথাকথিত সুশীল আইনজ্ঞরা কথা বলেন না!
কাল দেখলাম, মঈন-ফখরুদ্দীনের সময়কার "চামচা" ঢাবির অধ্যাপক হালের জাহাঙ্গীর নগরের ভিসি আনোয়ার হোসনে বাংলা নিউজ২৪.কম এ এ নিয়ে একটি কলাম লিখেছেন।
লেখার এক পর্যায়ে তিনি উতসাহ যুগিয়েছেন শাহবাগের আন্দোলনের মাধ্যমে "চাপযুক্ত রায়" আদায় করে আনতে হবে। এ জন্য মাঠ ছাড়া যাবে না।
এখানে আমার জানার প্রবল আগ্রহ। এই "চাপযুক্ত রায়" টা কি?
এখানে আমি যা বুঝলাম মামলার এভিডেন্সে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে অভিযুক্তরা দোষী না হলেও এহেন আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদের প্রত্যাশিত রায় বের করে নিয়ে আসতে হবে!
সেলুকাস!!!
এই হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভিসির ভাষ্য!
কোন জামানায় আছি?
আইন কি বলে?
সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে রায় দিতে হবে। এখানে আবেগের বশবর্তী হওয়া চলবে না।
এবার আসি তাদের এই তথাকথিত "শাহবাগ/প্রজন্ম স্কয়ার"নিয়ে।
আদালতের রায়ে সংক্ষুব্দ ব্যক্তিরা উচ্চ আদালতে আপলি করতে পারেন। কিন্তু আদালতের রায় নিয়ে মিছিল/সমাবেশ/সমালোচনা করলে পক্ষান্তরে আদালত অবমাননা করা হয়। কারণ, এভাবে নাগরিকদের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উসকে দিলে দেশে আইনের শাসন ব্যাহত হয়। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
শাহবাগে যারা আন্দোলেন করছেন, তারা কি আদালতকে অবমাননা করছেন না?
হালের জনপ্রিয় এবং সোজাসাপ্টা কথার মানুষ ড. পিয়াস করিমের সাথে সুর মিলিয়ে বলতে হয়, আপনি যেমন বিচারের দাবি করতে পারেন, তেমনি জামায়াত ও বিচারের বিরোধীতা করতে পারে।
একটু ঘুরিয়ে বললে, আপনারা যে আইনে শাহবাগের মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে "চাপযুক্ত রায়" আদায় করতে চাইছেন, সেই একই আইনে জামায়াত ট্রাইব্যুনাল ভেঙ্গে দেওয়ার দাবি তুলে আন্দোললনে যেতে পারে।
সবচে সরস কথাটি বলেছেন, আমাদের মান্যবর (!) আইনমন্ত্রী মহোদয়! তার মতে বর্তমান সময়ে যে আন্দোলেন হচ্ছে, সে আন্দোলন যদি আগে থেকেই শুরু হতো তাহলে রায় নাকি অন্য কিছু হতো!!!!
ও মোর খোদা.....
একি কয়!!!
তার এ কথায়, জামায়াতীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ আছে। সেটা হচ্ছে, আন্দোলন তীব্রতর হলে রায় লঘু হয়ে যাবে!
...হীরক রাজার দেশে বাস করছি।
ট্রাইব্যুনাল নিয়ে এমনিতে বিতর্কের শেষ নাই। স্কাইপি কেলেঙ্কারির পর তো দেশে বিদেশে এ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
শাহবাগের এই আন্দোলন ট্রাইব্যুনালের অবস্থানকে আরো নড়বড়ে করে দিবে। তাতে লাভবান কে হবে? নিশ্চিত জামায়াত।
তবে হতাশার কথা হচ্ছে, যে দেশে আইনের শাসন নাই সে দেশে মানবাধিকার থাকতে পারে না। নাগরিক অধিকার সুসংসহ হয় না।
আমাদের দেশ সে দিকেই ক্রমান্বয়ে দাবিত হচ্ছে!
বিষয়: রাজনীতি
১০৬৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন