গণমানুষের ভাষা আপনারা ৭১ এ বুঝেন নাই, আজও কি বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছেন?
লিখেছেন লিখেছেন মু নূরনবী ২৬ মে, ২০১৩, ০৩:৫৬:৪০ দুপুর
জোটের রাজনীতির মারপ্যাঁচে আবারো বলি হলো এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
হ্যাঁ, শিবিরের সাবেক এই তুখোর নেতাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দরকার আছে বলে মনে প্রয়োজন নেই। কারণ, রাজনীতির টুকটাক আপডেটও যারা জানেন তারা নিশ্চয়ই ওয়াকিবহাল আছেন যে বর্তমান বাকশালী সরকার অন্যান্য মহানগরীতে বিশেষ বলয় গড়তে পারলেও সিলেটে তাদের শাসন আমলের এই সাড়ে চার বছরে টিকতেই পারেনি। এর মূলে বিএনপির আরেক সাবেক তুখোড় ছাত্রনেতা ইলিয়াস আলী এবং এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জুটির তারুণ্যদীপ্ত নেতৃত্ব।
আমাদের মনে থাকার কথা, টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে সিলেটে এবং পরে সারাদেশব্যাপী যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল তা এই দুই নেতার কল্যাণেই।
শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতিদের থেকে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের একটু আলাদাই বলতে হবে। তার মত এত দ্রুত অনেকেই গণমানুষের নেতা বনে যেতে পারেননি। যার প্রমাণ বর্তমান সরকার বিরোধী আন্দোলেনের প্রত্যেকটি কর্মসূচীতে সিলেটবাসীর ভূমিকা ছিলো উল্লেখ করার মত। স্বাভাবিক ভাবেই ব্যক্তিত্ব এবং নেতৃত্বের গুণাবলীর কারণেই সাধারণ মানুষ, সর্বোপরি দেশে-বিদেশের অগণিত নেতাকর্মীর প্রত্যাশা ছিল সিলেটে এবার মেয়র নির্বাচনে বদর উদ্দীন আহমেদ কামরানের বিপক্ষে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের যোগ্য এবং শক্তিশালী ক্যান্ডিডেট ।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত জোটের রানীতির মারপ্যাঁচে পড়ে নমিনেশন প্রত্যাহার করতে হয়েছে ত্যাগী এই নেতাকে।
আরিফুল হককে নিয়ে নিজের দলেই নানান কথা রয়েছে। অন্য তিন বিদ্রোহী প্রার্থী সহ সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতারা বিএনপির হাইকমান্ডের প্রতি আবেদন করেছিল যাতে আরিফুল হককে প্রার্থী না করা হয়। অন্য যে কোন প্রার্থীর পক্ষে তারা কাজ করতে রাজী! যে নেতাকে নিয়ে নিজের দলেই সমালোচনা তার কথা বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।
তাহলে কেন বলি হতে হলো এহসানুল মাহবুবের মত তুখোড় নেতৃত্বকে?
অনেকেই বলবেন, জোটের স্বার্থে।
কিসের জোট?
যখন সাঈদীর রায় দেয় তখন সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল। বিএনপি নয়।
যখন একের পর এক শিবির কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, পঙ্গু করা হয়েছে তখন তার পরিবার জানে কি হারিয়েছে, খালেদা জিয়া নয়।
হরতাল দিয়ে এসি রুমে বসে ক্যামেরার সামনে ট্রায়াল মারবেন আর গুলি খাবে শিবির!
চারটি মহানগরীর নির্বাচনে একটিও কি জামায়াত প্রার্থী দিতে পারে না?
তাহলে গত সাড়ে চার বছরের সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে কর্মসূচীর ক্ষতিয়ান নিয়ে বসুন। সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
যারা বলতেন, বিএনপিকে জামায়াত গিলে ফেলেছে। তাদের সেই থিউরি দিনে দিনে মিথ্যে হচ্ছে। বরং জামায়াত বিএনপিকে বাদ দিয়ে একা আন্দোলন করলে সরকার জামায়াতের নেতৃত্বকে , নেতাকর্মীদের এত হয়রানি করতো না।
এই যদি হয় জোটের রাজনীতি তাহলে বলব...যারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, বা দিচ্ছেন তারা ভুল করছেন।
নেতাদের বলব....
আপনার আশে পাশে একটু কান পেতে শুনুন, জনগণ কি বলছে। জনগণের ভাষা বুঝার চেষ্টা করুন। জনগণ সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর জানান দিয়েছে। জনগণ নবগঠিত টাঙ্গাইলের বসাইল উপজেলায় জানান দিয়েছে। আপনারা যদি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন তার জন্য আপনাদেরকেই পস্তাতে হবে।
...মানুষের চোখের ভাষা বুঝার চেষ্টা করুন।
সাধারণ মানুষ আজ আওয়ামীলীগের দু:শাসনে অসহায়, ছাত্রলীগের অত্যাচারে অতিষ্ঠ-জনগণ জানান দিয়েছে ফটিকছড়িতে।
গণমানুষ চায় ছাত্রলীগের-যুবলীগের তথা আওয়ামীলীগের এই বাকশাল দমানোর জন্য একটি বিকল্প শক্তি গজে উঠুক। আমি দ্বর্থহীন ভাষায় বলছি, আপামর জনগণ তা স্বাগত জানাবে।
সেই শক্তি হতে পারে সত্য ও ন্যায়ের কাফেলা ইসলামী ছাত্রশিবির।
কিন্তু আপনাদের জোট-ভোট খেলায় আজ অনেক নেতাকর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে। হতাশ হচ্ছে তারা। আপনারা হয়তো বলবেন, আমাদের নেতাদের বাঁচানোর জন্য আমরা ছাড় দিচ্ছি। আপনাদের মনে রাখা উচিত বাঁচা-মরার ফয়সালা হয় উপর থেকে।
প্লিজ নেতা-কর্মীদের মনোভাব বুঝুন। গণমানুষের সাথে সম্পর্ক বাড়ান। কোন জোটের ছত্রছায়ায় নয়, নিজের কোমর শক্ত করুন। ময়দায় প্রস্তুত। শুধু দরকার সিদ্ধান্ত।
যদি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত না নিতে পারেন। তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেন। কারো আঁচলে থেকে তার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দল চালানোর চাইতে তার দলেই যোগ দিন।
আমরা চাই না...৭১ এ আপনাদের ভুলের জন্য আমরা আজ যে মাসুল দিচ্ছি। ২০১৩ এর ভুলের জন্য ২০৫০ সালে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম মাসুল দিক।
বিষয়: বিবিধ
২৫২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন