কেয়ারটেকার সরকার ব্যাবস্থা বাতিলই বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার মুল, যুদ্ধাপরাধের বিচার নয়
লিখেছেন লিখেছেন শরীফ নজমুল ২২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৫:০১:৩৫ বিকাল
দশম সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে চলছে রাজনৈতিক অচলাবস্থা। চারদিকে অস্থিরতা, মরছে মানুষ, ধবংস হচ্ছে অর্থনীতি। এর দায় কে নিবে?একদল সুযোগ পেলেই একদল আরেক দলের উপর চাপিয়ে দেয় এর দায়। যে মানুষ টি মারা যাচ্ছে তার কাছে এই প্রশ্নের কোন মুল্য নাই। যে লোকটি মারা যাচ্ছে এবং পিছনে যে শোকাহত ও অসহায় পরিবার রেখ যাচ্ছে তার এই ক্ষতি কেউই কোনভাবেই পুশিয়ে দিতে পারবে না।
স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর চারটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার তার মেয়াদ শেষ করল (বর্তমান টি সহ)। এই সরকারগুলো ছিল সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য কারণ নির্বাচন ছিল তত্বাবধায়ক সরকারের অধীন। বাংলাদেশের এই হাটি হাটি পা পা গণতন্ত্রের মায়ের মর্যাদা দেয়া যায় এই তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কে। অথচ গণতন্তরের দোহাই দিয়েই গলা টিপে মেরে হয়েছে এই কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা।
বর্তমান সরকারের উল্লেখযোগ্য কাজ হচ্ছে যুদ্ধাপরাধ এর বিচার। স্বভাবতই বিরোধী জোটের গুরুত্বপুর্ন শরীক জামাত এতে ক্ষুব্ধ হয়েছে। এই বিচারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম কর্মসূচী পালন করেছে, অনেক কর্মসূচী থেকে সন্ত্রাস-নাশকতার মত ঘটনাও ঘটেছে! যদিও প্রধান বিরোধী দল এই বিচারের প্রকাশ্য বিরোধিতা করেনি।
কিছু জ্ঞানপাপী আছেন যারা প্রচার করছেন যুদ্ধাপরাধের বিচার বাধা দেবার জন্যই যে আজকের অচলাবস্থার তৈরী করা হচ্ছে। কিন্তু সেটা কি সত্যি? প্রধান বিরোধী দল কি কখনো বলেছে যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধ করলে তারা নির্বাচনে আসবে?
বরং যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠিক মত এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়া উচিত ছিল। একটি বিতর্কবিহীন নির্বাচনে বর্তমান সরকার পুনরায় নির্বাচিত হয়ে আসলে তারা জোর গলায় বলতে পারত এই বিচারের তারা জনগনের ম্যান্ডেট রিনিউ করেছে। পক্ষান্তএর কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা থাকলে বিএনপি র নির্বাচন বর্জন হালে পানি পেত না। বরং নির্বাচনের আগেই যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রশ্নে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করতে হতো, অফিসিয়ালী।জনগন তাদের ম্যনাডেট দেবার সুযোগ পেত। দেশী-বিদেশী সমালোচনাও বন্ধ হত কিম্বা সমালোচনা হলেও তার গ্রহনযোগ্যতা কমে যেত!
আজকের এই অচলাবস্থার মূলে রয়েছে নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার বাতিল করা, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার এটা বাতিল করেছে। অথচ এটা তাদেরই ব্রেন চাইল্ড, তারা বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় জামাতের সাথে যুগপত আন্দোলন করে যা তারা আদায় করে নিয়েছিল।
সুতরাং নির্বাচন কালীন কেয়ারটেকার সরকার পুণঃস্থাপনই বর্তমান অচলাবস্থা দূর করার সম্ভবত একমাত্র উপায়।
বিষয়: বিবিধ
১৭৪৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন