ন্যাড়া নিজে থেকে বেল তলায় না গেলে কি হবে, কপাল খারাপ হলে বেল বাড়ির উপর এসেই ন্যাড়ার মাথায় পড়ে (জীবন থেকে নেয়া)
লিখেছেন লিখেছেন শরীফ নজমুল ০২ জানুয়ারি, ২০১৩, ১১:০০:৪১ সকাল
ধরা যাক, এই গল্পের নায়কের নাম মিঃ হাসান (কাল্পনিক)। একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে মাঝ-পর্যায়ের এক পদে কর্মরত। চাকরির পরিবেশ ভাল, উর্ধতন কর্মকর্তার ব্যাবহার ভাল। বেতন মোটামোটি। তবু তার মনে সাধ আরেকটু ভাল কোন চাকরি যদি পাওয়া যায় তাহলে খারাপ কি? বিশেষ করে, অনেক বন্ধু-বান্ধব যখন অনেক বেশি এগিয়ে গেছে, মাঝে মাঝে তারও সাধ জাগে। তাই খবরের কাগজে সজাগ দৃষ্টি......সাথে সাবধানতা অফিসের কেউ যেন না জানে, বিশেষ করে বস যেন বুঝতে না পারে, কারন সে চলে যেতে চায় এটা জানলে বসের সুনজর হয়ত আর থাকবে না।
এমন অবস্থায় একদিন খবরের কাগজে চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে দরখাস্ত করে ফেললেন মিঃ হাসান। অবশ্য প্রতিষ্ঠানের নাম দেয়া নাই, পোস্ট বক্স নাম্বার দেয়া। চাকুরির বর্ণনা দেখে মনে হয় কোন টেলিকম অপারেটর-এর ব্যাবস্থাপক পদ। তখন বাজারে নতুন একটি মুঠোফোন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান আসবে এরকম জোর গুজব। আর মিঃ হাসানেরও খুব প্রত্যাশা এই রকম জায়গায় চাকুরি করার, কারন বন্ধুরা এ সমস্ত জায়গায় খুব ভাল করছে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, মিঃ হাসান যে প্রতিষ্ঠানের কাজ করেন, তার একটি শাখা আছে যারা ফোন সেবা দেয়ার যন্ত্রপাতি তৈরি-বিক্রি করে থাকেন, যদিও মিঃ হাসান সেই শাখায় কাজ করেন না, তিনি কাজ করেন হ্যান্ডসেট সংক্রান্ত শাখায়।
যাই হোক, দরখাস্ত জমা দিয়েই স্বপ্ন দেখা শুরু করেন মিঃ হাসান। কখন না জানি ডাক আসে, সাক্ষাতকারের জন্য প্রস্তত হতে থাকে।
একদিন একই প্রতিষ্ঠানের ফোন সেবা দেয়ার যন্ত্রপাতি তৈরি-বিক্রি করে থাকেন সেই শাখার এক বড় ভাই তাকে ডেকে পাঠান, কি ব্যাপার হাসান, তোমার চাকরি কি খারাপ যাচ্ছে? চাকরি করবা নাকি আমাদের এখানে? একটা পোস্ট কিনতু আছে। বড়ভাইয়ের হেয়ালী প্রথমে ধরতে পারে না হাসান।
বলে না ভাই, আমি খুব ভাল আছি। নতুন চাকরির কোন ধান্দা করছি না আপাতত।
এবার বড় ভাই হাসতে থাকেন। হাসানের মনে সন্দেহ হয় এবার, তাহলে কি পোস্ট বক্সের দরখাস্ত কি এখানেই এসেছে? জিজ্ঞেস করে, ভাই আমার চাকরির দরখাস্ত কি আপনাদের কাছে এসেছে? বড় ভাইয়ের হাসি দেখে নিশ্চিত হয় ঘটনা তাহলে এই। ধরনী দ্বিধা হও টাইপ অবস্থা। হাতে পায়ে ধরে বড় ভাই কে অনুরোধ করে ভাই, আমার দরখাস্তটা ফেলে দেন। আর আমার বস যেন না জানে। বড় ভাই রহস্যময় হাসি হেসে তাকে বিদায় করেন।
কয়েক দিন পরের ঘটনা। হাসান তার অফিসে বসে কাজ করছেন। পিএবিএক্স বেজে ওঠে, বসের ফোন। বস কিছু কাজের কথা সারেন, তারপর বলেন, হাসান সাহেব, আপনি নাকি আমাদের অমুক শাখায় চাকরির আবেদন করেছেন? এই খানে আপনার কোন সমস্যা হচ্ছে? হাসান বিষম খায় বসের কথায়, আমতা আমতা করতে থাকে।
হাসান বেশ বিব্রত হয়, বড়ভাইয়ের ওপর রাগও হয় তার। নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বড় ভাই এই কথাটা রাখল না?
আর ভাবে, ন্যাড়া বেশির ভাগ সময় বেলতলা এড়িয়ে চলে কিন্ত তাতে কি মাফ হয়? কপাল খারাপ হলে বেল বাড়ির উপর এসে ন্যাড়ার মাথায় পড়ে।
বিষয়: বিবিধ
১৩০৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন