*শিরোনামহীন আত্মকথা*
লিখেছেন লিখেছেন জোছনার আলো ৩০ জানুয়ারি, ২০১৪, ১০:৫৮:৫৬ সকাল
সময় খুব অল্প। কি কি লিখবো,কিভাবে লিখবো বুঝতেছি না। পোষ্টটা আরো আগেই দেয় উচিত ছিলো।বাট লিখার মতন সময় পাচ্ছিলাম না। আর শব্দরাও যেনো হারিয়ে গিয়েছে মন থেকে।
মানুষের বিয়ের ভিডিওর বিদায়ের ছবি দেখে যে কতবার যে চোখের কোনে অশ্রু জমেছিল! ভাবীদের ও দেখি চোখে পানি ছলছল করে ।ভাবীদের নাকি তাদের বিদায়ের দৃশ্য মনে পড়ে যায়।আর আমার চোখ ছলছল করতো আগামীতে আমাকেও এভাবেই যেতে হবে তা ভেবে।
আমার বিয়ের আকদটা খুব হঠাত করেই হয়েছিলো। তার অবশ্য অনেক কারন ও ছিলো। বাবার আসুস্থতা,মায়ের দুঃশ্চিন্তা, ছোট ভাইয়ার বিদেশ গমন, পাত্রের তাড়াহুড়া সব মিলিয়ে অস্থির পরিস্থিতি। সে যাইহোক, আমি যেমনটি ভাবতাম যে -আমার জীবন সাথী এমন হবে,অমন হবে, আমার জন্য এটা করতে হবে ,ওটা করতে হবে, আমাকে রান্না শিখাতে হবে; এসব কিছু নিয়ে যা ভাবতাম ঠিক তেমনি একজন কে আমার জীবন সাথীরুপে আল্লাহ আমাদের একত্রিত করেছিলেন ২৬ এপ্রিল ২০১৩। বিদায়টা আসলে অনেক দেরীতেই হচ্ছে, তার ও হাজারটা কারন আছে। কিন্তু, এসব লিখার সময় এখন হাতে নাই। কারন কাল আমার বিদায়। এসময় চুপিচুপি ব্লগে লগ ইন করলাম। আম্মু বা ভাবীরা দেখলে খবর আছে।
শশুড়বাড়ি কেমন হবে, কিভাবে মিলিয়ে চলবো তাদের সাথে সেসব নিয়ে অবশ্য ভাবছি না। আলহামদুলিল্লাহ তারা সবাই খুব ভালো। আর ভালো না হয়ে যাবেই বা কই, আমি যে আমার শশুরের আদরের ছোট বোনের ছোট্ট মেয়ে। তাই এসব নিয়ে টেনশ্ন হচ্ছে না।
আম্মুর জন্য খুব খারাপ লাগছে। ঠান্ডাজনিত কারনে প্রায়ই অসুস্থ থাকে। আর খুব অনিয়ম করে খাওদা-দাওয়ায়। আমি চলে গেলে তার খুব অসুবিধা হবে, বাবা বাহির থেকে আসলে প্রথমেই আমার নাম ধরে ডাকতো।বড় ভাইয়া এখনো খাবার কিছু আনলে তার স্ত্রীর হাতে না দিয়ে আমার হাতে দেয়, বাজারের ব্যাগটা আমার কাছ থেকেই চেয়ে নেয়।
বড় ভাবি তো আমার বান্ধবী। ২০০৪ সাল থেকে সে আমাদের পরিবারের সদস্য।একদম নিজের বোনের মতন।ড্রেস বানালে এক রকম বানাতাম, কোথাও গেলে একসাথে যেতাম। শপিং এ গেলে ভাইয়া যেতো না, আমি সাথে যেতাম। যেকোন কাজে, 'জান্নাত চলো তো' বললেই দৌড় ভাবির পেছনে। আবার আমি কোথাও গেলে ভাবিকে সাথে নিয়ে যেতাম। মেঝো ভাবি কোথাও গেলে আমার জন্য গিফট আনবেই, তার সাথেও বন্ধুতটা গভীর।
ভাতিজি ইফতি অবশ্য কাল অবধি খুশি ছিলো আমার রুমটা এখন ওর রুম হবে ভেবে, কিন্তু আজ সকাল থেকেই দেখছি মুখ গুমরা করে আছে।একটু পর পর আমার পাশে এসে জড়িয়ে ধরে কাদছে। ছোট্ট আরিয়ান ও বড় বোনের মতন চুপটি করে আছে। আর ইলমা মণিতো মহা খুশি। ও অবশ্য বুঝতেছে না যে কালকের পর থেকে ঘুম থেকে উঠেই যখন ফুপ্পিকে ডাকতে যাবে, তখন ফুপ্পি আর বলবে না 'মামনি, দরজা খোলা, আসো। তারপর জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু দিয়ে ওকে কবিতা শিখাবে না, ভার্সিটি থেকে ফিরে বোরকা না খোলেই ওকে কোলে নিয়ে ফ্যান্সি বেকারী দেখে কেটবেরী কিনে দিবে না।
যাই হোক, কাল চলে যাচ্ছি , ব্লগটাকেও মিস করবো। যদিও চেষ্টা করবো তারাতারি-ই ফিরে আসারবাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।সবাইকে আমন্ত্রন রইলো। আর আমার জন্য, আমাদের জন্য, জান্নাত-ইমনের জন্য দোয়া করতে ভুলবে না কিন্তু! নাহ,আর লিখতে পারছি না।চোখের কোনে পানি জমে গেলো কোথা থেকে যেনো। লিখাটাও এলোমেলো।কেমন জানি এলোমেলো লাগছে। ধর্য্য ধরে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আবারো বলছি, দোয়া করবেন আমাদের জন্য। আমরা যেনো শুধু দুনিয়াতেই নয়, জান্নাতের বাগানেও একত্রে প্রবেশ করতে পারি।
বিষয়: বিবিধ
১৮৩৭ বার পঠিত, ৪৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
শাশুরবাড়ীতে গিয়ে বাপের বাড়ীর কথা মনে পড়বে........মনে পড়বে ব্লগকেও....বিয়ের পরেও আমাদের সাথে থাকবেন।....
দোয়ায় আমীন। শশুরবাড়ির মুরুব্বীদের প্রতি বিশেষ আবেদনটি মঞ্জুর হয়েছে। আমার বাধা নেই ব্লগে আসতে! শুকরিয়া লক্ষী ভাইটি
শুনে খুব ভালো লাগলো। এভাবেই পূর্ন হোক সবার চাওয়া।
বিদায়ের মুহুর্তটা এমনই হয়। নতুন সংসারে নিজে খুব তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিবেন এটাই প্রত্যাশা।
অগোছাল হয়নি লেখাটা মোটেই,আমি হলেতো কিচ্ছুই লিখতে পারতামনা
ধন্যবাদ
থ্যাংক ইউ আপুমণি আমার পছন্দ সবারই পছন্দ হয়, আলহামদুলিল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন