ফারুকীর সাথে বিয়েটা পণ্ড হতে বসেছিলঃ তিশা

লিখেছেন লিখেছেন শয়তান ০৪ জানুয়ারি, ২০১৩, ০২:৩৩:৪৭ রাত



তারকাদের বর্ণময় জীবনে থাকে বিচিত্র ঘটনা—কোনোটি বিশাল, কোনোটি সামান্য। এর মধ্যে এমন অনেক কিছু আছে, যা কাউকেই কখনো বলা হয়নি। আজ তিশা শোনাচ্ছেন না-বলা সে রকম একটি ঘটনা

২০১৩। শুরু হলো নতুন বছর। আমাদের বিবাহিত জীবনেরও অনেক দিন পার হলো। ২০১০ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সঙ্গে আমার বিয়েতে কম বাদ্য-বাজনা হয়নি। চেনা-অচেনা নানা মানুষ শুভকামনা জানিয়েছেন আমাদের। কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়েছে। বলা যেতে পারে আমাদের বিয়েটা হয়েছে বেশ হুল্লোড় করেই। তার পর থেকে আমাদের টোনাটুনির সংসার অনেকটা রূপকথার মতো, ‘অতঃপর তাহারা সুখে-শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিল’—এভাবেই চলছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, একদম শেষ মুহূর্তে গিয়ে আমাদের বিয়েটা প্রায় পণ্ড হতে বসেছিল! ঘটনাটি আগে কাউকে বলা হয়নি। আজ বিয়ে হতে হতে পণ্ড হওয়া এবং পণ্ড হতে হতে আবার জোড়া লাগার সেই চমকপ্রদ ঘটনাটি সবাইকে বলতে চাই।

বিয়ে উপলক্ষে আমরা তো প্রচুর ঢাকঢোল পিটিয়েছিলাম। আগেই সবাইকে জানিয়েছিলাম, ১৬ জুলাই বিয়ে হবে আর ১৮ জুলাই বৌভাত। কিন্তু গায়েহলুদের অনুষ্ঠান করার বিষয়ে আমার ও সরয়ারের—দুই পরিবারের কারোরই কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। বিয়ের জন্য ১৩ জুলাই আমেরিকা থেকে ঢাকায় ফিরলাম আমি।

এর মধ্যে হঠাৎ সরয়ারের মাথায় নতুন খেয়াল চাপল। ১৩ তারিখ রাতে আমাকে ফোন করে ও বলল, ‘কাল (১৪ জুলাই) আমাদের গায়েহলুদ অনুষ্ঠান করতে হবে। জীবনে একবারই বিয়ে করব। সেখানে হলুদের অনুষ্ঠান হবে না, তা কি হয়!’ খুবই যৌক্তিক কথা, ন্যায্য আবদার। কিন্তু সরয়ার তো আবদার করেই খালাস। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হলুদের এত বড় হাঙ্গামা, এত আয়োজন করবে কে? এদিকে আমাদের দুই পরিবারের কারোরই হলুদ অনুষ্ঠানের কোনো প্রস্তুতি নেই। তাই দুই পরিবার থেকেই সরয়ারকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হলো, ‘ন আকারে না’, অর্থাৎ এত অল্প সময়ে গায়েহলুদ অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়।

তবে সে কি ছাড়ার বান্দা? বলল, ‘হলুদ অনুষ্ঠান ছাড়া বিয়েই হবে না।’ এ যেন সরকার ও বিরোধী দলের পাল্টাপাল্টি অবস্থান; একপক্ষ অনুষ্ঠান করতে চায়, আরেক পক্ষের বক্তব্য, অনুষ্ঠান একেবারেই অসম্ভব। এখানে জানিয়ে রাখি, অনুষ্ঠান করার পক্ষে সরয়ার ছিল একাই। কিন্তু সে তো একাই এক শ।

ওদিকে দুই পক্ষের মধ্যে পড়ে আমার তখন ত্রিশঙ্কু অবস্থা। আমি একবার আমার শাশুড়িকে ফোন করি তো আরেকবার আম্মুর সঙ্গে কথা বলি। আবার সরয়ারকে বোঝাই। ১৪ জুলাই সারা দিনই চলেছে এই কার্যক্রম। আমাদের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা দফায় দফায় দেন-দরবার করছেন। সরয়ারকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন। শেষে অবস্থা এমন হলো যে বিয়েই হবে না। একেকটি মুহূর্ত যায়, আর টেনশন বাড়ে সবার। এভাবে সিদ্ধান্তহীনতায় রাত আটটা বাজল। এ সময় যেন অসাধ্য সাধন করল আমার দেবরেরা—বেশ সাড়ম্বরে হলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ফেলল তারা। এরপর হলুদের সাজে সাজানোর জন্য পারলারে নেওয়া হলো আমাকে। তারপর রাত ১০টা থেকে একটি রেস্তোরাঁয় শুরু হলো আমাদের গায়েহলুদের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি চলে সারা রাত। কী যে মজা হয়েছিল সেই অনুষ্ঠানে! এখন মনে হয়, সে সময় সরয়ার ও রকম গোঁ না ধরলে হলুদের আনন্দ থেকে হয়তো বঞ্চিত হতাম আমরা। এ জন্য মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে একটা আনুষ্ঠানিক ধন্যবাদ দেওয়া যেতে পারে, ‘থ্যাঙ্ক ইউ সরয়ার’।

সুত্রঃ প্রথম আলো

বিষয়: বিবিধ

১৩৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File