গভর্নরের পদত্যাগ; চুরি হওয়া ৮০০ কোটির চোর ধরা সম্ভব!!
লিখেছেন লিখেছেন নীলসালু ১৫ মার্চ, ২০১৬, ০৫:৫৯:৪৭ বিকাল
গভর্নরের পদত্যাগ, অতঃপর চুরি হওয়া ৮০০ কোটি এবং চোর ধরা কী সম্ভব??
সম্ভব! একদম easy! পান্তা ভাত দিয়ে কাঁচা মরিচ খাওয়ার মতো সহজ!
সুত্র ধরে এগুলে চোর, চোরের বাপ, চোরের মা, নানা-নাতি সব বেরিয়ে যাবে!
৪ তারিখে ডিলিং রুমে কারা ছিলো ৮ টা পর্যন্ত, কার আইডি পাওয়া গেছে, সিসি ক্যামেরা নষ্ট ছিলো কবে থেকে এবং ঠিক করা হয়নি কেন ইত্যাদি।
International Wire Transfer বিধি অনুযায়ী, এ লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক, সিটি ব্যাংক ও ওয়েলস ফার্গো ব্যাংকের ছাড়পত্র ছিলো। ছাড়পত্র দেয়ার পর ফিলিপাইনের স্থানীয় ব্যাংককে লেনদেন সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
আরসিবিসি ব্যাংকে ৫ জনের নামে টাকা গেছে। ১ জন ফিলিপাইনি ব্যবসায়ী 'সো গো।'
সে অভিযোগ তুলেছে তার সই নকল করে, আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার শাখায় একাউন্ট খুলেছে সেই শাখার ম্যানেজার 'মাইয়া সান্তোষ দুগুইতি।'
সে একজন নারী। - নামের মধ্যেও দুই নম্বরী একটা ভাব আছে।
এরা হচ্ছে লেইন্জা। আমরা জানি 'লেইন্জা ইজ ভেরি ডিফিকাল্ট টু হাইড।' এরাও পারেনি।
লেইন্জা ধরে টান দিলে কুই কুই চিক্কুর শুরু হবে। চিক্কুর ফলো করে পৌছে যাব মুখে।
মুখ কার?
কবো না। সব কথা বলেনা হৃদয়- কিছু কথা বুঝে নিতে হয়!
আন্তর্জাতিক তদন্ত টিম গঠন করা দরকার।
যুক্তরাষ্ট্রের 'fire-eye mandiant-র ফরেনসিক বিভাগ হেল্প করবে। খোদ মার্কিন সরকার হেল্প করার প্রস্তাব দিয়েছে! FBI থেকে সাহায্যের কথা বলেছে।
টাকা কি আসলেই উদ্ধার হবে?
পদ্ধতি যতই easy হোক, কোনো টাকাই উদ্ধার হবেনা। সহজ বলেই উদ্ধার হবেনা।
রবী বাবু আগেই বলে গেছেন-
'সহজ-সহজ হবে তোমরা কহ যে- চুরির মাল আদায় হয় না সহজে'' :-P
আপনারা যারা এ লেখা পড়ছেন-জেনে রাখুন--
এ আমি লিখে দিলাম-যদি টাকা উদ্ধার হয় তো আমি ...... আমি.......কি!
ভেবেছেন ছাত্রলীগ বলবো?
না --
যদি উদ্ধার হয়- তবে আমি একটা ICC- (International Cricket Council)
Already-বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে-
'বাইরে থেকে ব্যাংকের সিস্টেমে প্রবেশকারী একাধিক আইডি শনাক্ত করা হয়েছে।'
জোক ইয়াদ আগ্যায়া-
মোল্লা গেছেন দাওয়াতে। খাবারের অপেক্ষা করছেন। চোখ বন্ধ। হঠাৎ বলে উঠলেন- 'হই ছুয়া -ছুয়া-হুর-হুর।'
আশেপাশের মেহমানরা আৎকে উঠলো ! জিজ্ঞেস করলো কী হইসে হুজুর? হুজুর ভাব-সাব নিয়ে বললেন- 'মদিনা শরীফে কুত্তা ঢুকতেছিল, খেদায়া দিসি।'
সবাই মনেমনে ভাবলেন-আরে বাপরে! বহুত বড় বুজুর্গ ! পা গুটিয়ে-শুটিয়ে বসলো। খুবই ভদ্রতা দেখাতে লাগলো। বুজর্গের বদদোয়া লাগলে খবর আছে।
যথাসময়ে খাবার প্লেট এলো। সবার প্লেটে মাছ। মোল্লার প্লেটে শুধু ভাত। ইতিউতি তাকিয়ে মোল্লা বললেন 'আমাকে তরকারী দেয়া হয় নাই কেন?'
আড়াল থেকে ঘরের কর্ত্তী মুচকি হেসে বললেন- ''মদিনা শরীফে কুত্তা ঢুকতে দেখেন, ভাতের নিচে টাকি মাছ দেখেন না?''
ব্যাংকের ভেতর চোরের উপস্থিতি স্পষ্ট। খবর নাই। বাহিরের দেশ থেকে হ্যাকার ঢুকেছে-সেইটা ধরতে পেরেছে ! আশ্চর্য !
এবার একটু Political আলোচনা করি-
এখন পর্যন্ত জামায়াত-বিএনপি কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিবাদ কর্মসূচি দেখি নাই।
এই টাকা কী কারো ব্যক্তিগত?
না, এই টাকা আমার-আমাদের। জনগনের। কিন্তু কারো কোনো সাড়া নেই।
কেন?
এখন আমি যদি বলি-বিএনপি-আওয়ামিলীগ সব শালাই চোর। আপনারা বলবেন হাজী সাহেবের মুখ খারাপ। থাক বললাম না।
এদের উচ্চবাচ্চ্য নেই কারণ-এরা জনগণের রাজনীতি করেনা। করে-ক্ষমতার। বহু প্রমাণ আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি।
জামায়াত চোর না হলেও ultimate target 'ক্ষমতা।'
নতুবা আমি দেখিনি জাতীয় বড় কোন ইস্যু নিয়ে জামায়াত উচ্চবাচ্চ্য করেছে !
দু'বছর আগে কোরিয়ায় ফেরি ডুবে যায়। ফেরিতে School Student ছিলো। তারা নিহত হয়। শুধু নৌ মন্ত্রী-নন, কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত কাঁদতে কাঁদতে পদত্যাগ করে !
এখানে প্রধানমন্ত্রীর কী দোষ বলতে পারেন?
আসলে লজ্জাবোধ। যা সহ্য হয়নি !
আমরা বুইড়াভামকে অর্থমন্ত্রী বানিয়েছি, যার আমলে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট।
পদত্যাগ দূরের কথা-প্রতিটি ব্যর্থতাকে legalize করতে rubbish talk বলে যাচ্ছে !
আর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর?
এত বড় ঘটনা ঘটেছে! আতিউর রহমান একমাস চুপ থেকে আজ পদত্যাগ করে দায় এড়ায়!
হাউ লুল !
সে বলির পাঠা হোক আর যা-ই হোক, আমরা কী ধরে নিতে পারি না যে- ঘটনা ধামাচাপা দেয়া গেলে পদত্যাগ করা লাগতো না বলেই এতদিন চুপ ছিলো? পারেনি বলেই -এ পদত্যাগ ! এমন ভাবলে অন্যায় হবে?
বিএনপি-জামায়াতের উচিত ছিলো আবুল মালের পদত্যাগের দাবীতে সোচ্চার হওয়া !
কোন পথে বাংলাদেশ?
যদি বলি ভিক্ষার পথে- অত্যুক্তি হবে না।
গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৪২৪ কোটি পাচার হয়েছে !
৪ শ নয়, ৪ হাজার নয়, ৪ লক্ষ কোটি !!--আবারও Can you Imagine?
এই টাকায় ৩ টা বাজেট অনায়াসে পাশ হয়ে যেতো !
হলমার্কের সাড়ে ৪ হাজার, বেসিক ব্যাংকের ২ হাজার, শেয়ার বাজার থেকে ২ হাজার সহ রাষ্ট্রীয় বহু খাত থেকে হাজার হাজার কোটি উধাও হয়ে গিয়েছে !!
গত ১০ বছরে বাংলাদেশের কোটিপতির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ৬৮৭ জন!
- ৪০ হাজার ! --আরেকবার can you imagine?
বাঙ্গালী second home বানাচ্ছে মালেশিয়ায়। এ পর্যন্ত মালেশিয়ায় বাড়ি কেনার আবেদন পড়েছে ৩ হাজার!
মালেশিয়ায় বাড়ি করতে ব্যাংকে দুই কোটি জমা লাগে, মালেশিয়ান ব্যাংকে ৭০ লক্ষ deposit লাগে। মাসিক আয় লাগে ২ লক্ষ !
প্রধানমন্ত্রীর বেতনও দুই লাখ নয়।আমাদের IT উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ কিনতে পারবে।
বারাক ওবামার বেতন ২৫ লাখ হলেও, হাসিনা পুত্র জয়ের বেতন ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা !
প্রশ্ন করবেন না- 'কেন?'
কবি এখানে নীরব !
দৃশ্যত মনে হবে দেশ উন্নত হয়েছে। আসলে তা নয়।
একটা নির্দিষ্ট অংশ জুলুম-দুর্নীতির মাধ্যমে ওপর অংশকে শোষণ করে আজ কোটিপতি। ওপর অংশ দিনদিন নিঃস্ব হচ্ছে।গ্রীসের মতো। ৬০০ পরিবার গ্রীসকে নেংটা করে দিয়েছে।
এরকম অর্থ পাচার করে গত বছর গ্রীসের মতো দেশ দেউলিয়া হয়ে গেছে ! বিলিয়ন বিলিয়ন ইউরো পাচার হয়েছে সুইজারল্যান্ড সহ অন্যান্য দেশে।
একদিন-দুদিন ধরে ঘটেনি। দীর্ঘদিন ধরে ধাপে ধাপে গ্রীস আজ ফিনিশড।
যেখানে ইউরোপ পর্যন্ত ধরা, সেখানে আমরা তো তুইচ্ছা ছা পোনা !
এই তো, ৪ দিন আগেও ভারতের কাছে থেকে কঠিন শর্তে ঋণ নিলাম ১৫ হাজার কোটি !
A look back in History-
৭৪ এর দুর্ভিক্ষ কেন হয়েছিলো জানেন?
তখনো এমন হরিলুট চলেছিল। লুটপাট, চোরাচালানি, সিন্ডিকেট, দুর্নীতির ফলে খাদ্য সংকট দেখা দিলো। খাদ্যের অভাবে প্রাণ হারিয়েছে কয়েক লক্ষ লোক। শুধু রংপুরেই ৩ মাসে প্রাণ হারিয়েছে ৮০ হাজার। সেটাও একটা গণহত্যা ছিলো।
বিচার হয়েছে এর?
হবে ইনশাল্লাহ হবে - আমি প্রাইম-মিনিস্টার হলে।
কিছু লোকে বলবে যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশে দুর্ভিক্ষ হতেই পারে। স্বাভাবিক।
এমন যারা বলবে, প্রথমে হাত-পা ভালো করে বাঁধেন। ঢাকা শহরে যেসব খোলা জায়গায় পেশাব করে, সেখানে শোয়ায়ে দেন।তারপর মুইত্যা দেন।জিপার লাগান। এবার তাদেরকে বলেন-
যুদ্ধে ক্ষতি হয়েছিলো ১২০০ মিলিয়ন ডলার। ৭২-এর আগস্টের আগেই সাহায্য পেয়েছি ৯০০ মিলিয়ন ডলার। বছর শেষেই ৩০০ মিলিয়ন ডলার।
প্রায় প্রতি মাসেই বিভিন্ন দেশ থেকে সাহায্য আসছিলো। তবুও দেখা দিলো দুর্ভিক্ষ !
কিন্তু সাহায্য থেমে থাকেনি। দুর্ভিক্ষের বছর অনুদান পেয়েছিলাম- ৯১৯.২ মিলিয়ন ডলার !
তবুও না খেয়ে মরতে হয়েছিলো কেন?
কারণ?
এখনকার মতো তখনো হরিলুট হয়েছিলো ! শেখ মুজিব সাহেব 'দাবায়া রাখতে পারে নাই।'
তারমানে কি আমরা আবারও দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন?
আরে নাহ পাগলা-না। এ গ্লোবালাইজেশনের যুগে দুর্ভিক্ষ হবেনা।
যতদিন বিদেশীরা কামলা খেটে টাকা পাঠাচ্ছে, ততদিন দুর্ভিক্ষের আশা করতে পারেন না।
তবে আমরা ভেঙ্গে পড়েছি।
শুধু আর্থিকভাবে নয়, সার্বিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছি। প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি !
মানহীন শিক্ষা- অনৈতিক শিক্ষকতা, অজ্ঞ ডাক্তার-ত্রুটিযুক্ত চিকিৎসা, অদক্ষ-দুর্নীতিযুক্ত প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পঁচন ধরেছে !
কত বছর লাগবে ঘুরে দাঁড়াতে আল্লাহ মালুম।
কিছু মানুষের কাছে মনে হবে-ঠিকই আছে।আসলে ঠিক নেই। তারা ভবিষ্যত দেখছে না।
তারা একদিন মাইকেল মধুসূদনের মতো বলবে-
'আশার ছলনে ভুলি, কি ফল লাভিনু হায়,
তাই ভাবি মনে---'
ফুল ফোটে এতো ধীরে যে সমস্ত রাত জেগে পাহারা দিলেও এর পূর্ণতা দেখা যাবে না। কিন্তু ফুটে গেলে হুট করেই নজর কাড়ে। বিমোহিত করে।
বাংলাদেশকে ভিক্ষার দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করাচ্ছে বুঝতে পারছি না। যেদিন দাঁড়িয়ে যাব সেদিন অবাক হবার সুযোগ থাকবে না।
দুঃখে loose motion হয়ে যেতে পারে। সেই loose motion পাতলা ডাল মনে করে কেউ খেলেও অবাক হবেন না। ৭৪-এর দুর্ভিক্ষে একজনের বমি আরেকজনে খেয়ে ফেলার ইতিহাস আছে।
সমালোচকেরা বলেব-
'আরে হইসে, সমস্যার কথা আমরাও জানি। বক্কর-বক্কর বাদ দেন। সমাধান কী বলেন?'
যদি বলি- আসেন রাস্তায় নামী।
বলবে- 'ভআইসাপ, তলপেটে কামড়ায়। টয়লেট ছাড়া থাকতে পারি না।'
আসলে সমাধান নাই। উপরওয়ালার ইশারা ছাড়া। তবে ধৈর্য ধরতে হবে।
কারণ বিধাতা দয়াময়। তিনি সবকিছুই দেন। কিন্তু টাইমিংটা বড্ডই খারাপ (আমাদের দৃষ্টিতে)। চোরকে দেন ক্ষমতা ডাকাত হবার। ভালোকে করেন অসহায়, মুখ বুঝে সহ্য করার। নাটক-নভেলে একেই বলা হয় 'নিয়তির নির্মম পরিহাস।'
আমরা সেই পরিহাসের শিকার। যার একদিন শেষ হবে। তবে নেংটু করে দিয়ে যাবে তা সত্য।
(লিখাঃ আহাম্মেদ সাহাব)
বিষয়: বিবিধ
৩৯৪৮ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দু'বার হয়ে গেছে- একটা মুছে দেন
ব্লগ তো প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন!!!
এই কথাটা লেখক সাহেব অন্যদের নামতে বলেন, কিন্তু নিজেও নামতে গড়মসি করেন, এ আমাদের ভালো করেই জানা আছে।
যারা লেখায় খুব পটু, কাজের বেলায় ঠিকি ডূডু
মন্তব্য করতে লগইন করুন