জনসমর্থন ক্রাইসিস (পর্ব তিন)
লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ০৫ এপ্রিল, ২০১৫, ১১:২৫:০১ সকাল
জনসমর্থন ক্রাইসিস পর্ব তিন...(এই লেখাটি অনেকের ভাল লাগবেনা। আগেই ক্ষমা চেয়ে নিলাম। নিজগুণে ক্ষমা করবেন। সহজ সরল সত্য স্বীকারোক্তি না দিয়ে পারলাম না।এটাই বাস্তব)
----------
জাতির অর্ধেক নারী। নারীরা কনভিন্স মানে ৫০% ভোট আপনার। নারী নিয়ে আমাদের ভাবনাটি আসলেই চরম উদ্বত পুরুষতান্ত্রিক। আমরা সবসময় একই টাইপ পোষাককে নারীর উপর চাপিয়েছি। আমি বলছিনা হিজাব না করার কথা। আমি বলছি একই টাইপ বা ডিজাইন একই রংয়ের কথা। আমরা নিকাবকে ফরজ করে সমাজে ভুল বার্তা দিয়েছি।আমরা অনেকেই মনে করি নিজের ঘরই একমাত্র নারীর কর্মক্ষেত্র। আমরা সব ঘরকে নিজের ঘর ভাবতে পারিনি।। সেলফিস টাইপ মনোবৃত্তি আমাদের। পুরো মুসলিম সমাজকে ও সব মুসলিম পরিবারকে সব মুসলিম ঘরকে নিজের ঘর ভাবতে পারার মত মন বড় করা দরকার ছিল।আমরা পারিনি। মুসলিম দেশগুলোর সম্মিলিত জিডিপি পুরো বিশ্বের সামনে কিছুই না। নারী পুরুষ সবাইকে কাজ করে মুসলিম বিশ্বের জিডিপি বাড়াতে হবে। কার্লমাক্স বলেছে অর্থ যার সবই তার। আসলেই ঠিক।সব অর্থ যদি ওয়াল্ড ব্যাংক আর আইএমএফ এর কাছে থাকে তবে আপনি থাকবেন দর্শক গ্যালারীতে।।নারীকে ঘরে আনপ্রোডাক্টিভ করে তখনই আটকে রাখা সম্ভব যখন নারীকে শুধু মাত্র যৌনবস্তু ও একখন্ড মাংসল পিন্ড ভাবা যায়।ভাবতে হবে পজিটিভলি ...নারীর নিরাপদ কর্মক্ষেত্র,নিরাপদ আবাসন, নিরাপদ যাতায়াতের কথা। নারীর অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতার কথা। নারীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নারীকে আত্বমর্যাদাশীল করবে। স্বামী তালাক দিতে পারে, স্বামীর চাকরী চলে যেতে পারে, স্বামী কর্মঅক্ষম হতে পারে একসিডেন্ট জনিত কারনে, স্বামী মারা যেতে পারে...তাই নারীকে কর্মহীন রেখে অর্থনৈতিক বিকলাংগ রাখা যায় না।অপ্রতুল কাবিনের টাকা আর মীরাসী সম্পদ এখানে বলা বাহুল্য মাত্র। ঘরে আটকে রেখে দিনকে দিন একঘেয়েঁ জীবন এড়াতে নারীকে স্টার জলসা আর স্টার প্লাস দেখার সুযোগ করে দেয়া যায়না।বিদ্যামান সমস্যা সমাধানের জন্যে হাঁ নারীর কর্মঘন্টা কমানো যেতে পারে। সাংসারিক কাজে পুরুষদেরও হাত লাগানোর জন্যে মোটিভেশান চালানো যেতে পারে।
নারীরা আমাদের পর কেউ নয়। অথচ আমরা নারীকে পোষাক দিয়ে ঘৃনা করে অন্যদের সমর্থক হওয়ার দিকে ঠেলে দিয়েছি। অথচ এই নারীরা ছিল আমাদের সমাজের মা বোন কন্যা স্ত্রী প্রিয়তমা। আমাদের মাসজিদের দরজাগুলো সংকীর্ন মাদরাসার গেইটগুলো ছিল সংকীর্ন। আমরা নারীদের জন্যে কিছুই ভাবিনি। আমরা ভেবেছি পর্দা আর পর্দা। আমরা ভাবিনি নিরাপদ মাতৃত্বের কথা, নারী উচ্চ শিক্ষার কথা, নারীর সুস্থ ও প্রফুল্ল মনের কথা, নারীর অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতার কথা, নারী স্বাস্থ্যর কথা, ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের কথা। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে মেয়েরাই হবে আপনার সামনের প্রতিদ্বন্ধী প্রতিবাদী অগ্নিমূর্তি। এমনও আশংকা করছি আপনাদের সাথে বসবাসও নারীরা ভুলে যেতে পারে। সময় এখনো আছে রাশ টেনে ধরার। মনে রাখতে হবে এরা আমাদের স্বজন আমাদেরই আত্বজা ।
বিষয়: বিবিধ
১১৬৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার উপলব্দি ঠিক পথে আছেতো???? ঘরে আটকে রাখার কারণ কি স্টার জলসা দেখা? হিজাব নিকাবধারী অসংখ্য মা বোন ঘরেই বেশির ভাগ সময় কাটায়, তারা কি স্টার জলসা নিয়ে পড়ে থাকে? খোঁজ নিলে দেখা যাবে, যারা স্টার জলসার মত সিরিয়ালের পেছনে পড়ে থাকা, তাদের বাহিরে যাবার ব্যপারে তেমন কোন বাধ্যবাধকতা থাকে না!
প্রতিবাদ যতোটা নিজে করে তার চাইতে হাজারগুন বেশি করে উস্কানীদাতাদের উস্কানিতে।
আপনার ভাবনাগুলো ভালো, কিন্তু তা করতে গিয়ে যদি স্বকীয়তা নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে আখেরে ফলাফল শূন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন