হে হে ..তুমি এক বিরাট ভারত বিরোধী বটে...
লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ৩১ মার্চ, ২০১৪, ০৯:২৬:১১ সকাল
হে হে ..তুমি এক বিরাট ভারত বিরোধী বটে...
সীমান্তে বাড়ি। তাই ভারত সম্পর্কে ছোটকাল থেকে হালকা ধারনা ছিল। ভারত মানে বুঝতাম হিন্দী গান আর সীমান্ত দিয়ে শাড়ি চিনি পেয়াজ সাইকেল সহ নানা ধরনের ভারতীয় পন্য ক্যাম্প বা ব্যক্তি মারফত বাংলাদেশে ঢুকে বিক্রি। গোলাগুলির ঘটনা থেকে বুঝতাম ভারত কিছু একটা চায়। আরো বুঝতাম হিন্দুদের প্রতি তাদের আলাদা একটা টান আছে কারন আমার অনেক পরিচিত হিন্দু বন্ধু দেদারসে ভারত যায় আর আসে । ভিসা পাসপোর্ট লাগেনা। মুসলমান হলে অবাধ যাতায়াত করা যায় না তাই ভিসা লাগে। প্রাইমারী স্কুল জীবনের কথা যতটুকু মনে পড়ে তখন পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি বাহিনীকে গ্রামবাসী মিলে চাদাঁ দিতে হত। যে উপজাতি মানুষগুলো থেকে আপন করে মানুষ শন বাশঁ মধু কাঠাল আম দুধ গরু কিনত সে মানুষের পরিচিতরা রাতের আধারে হয়ে উঠত শান্তি বাহিনী নামক যমদুত। (শান্তিচুক্তির পর আমার এলাকায় চাদাঁবাজি নেই) । ক্লাসে বসে যে উপজাতি সহপাঠী বন্ধুর সাথে খোশালাপ করতাম তারাই মনে মনে আমাদের আধিপত্যবাদী মনে করত। এই সবের মূলে ছিল ভারত কারন তারাই অস্ত্র সরবরাহ করত উপজাতিদের আর বুদ্ধি ও শেল্টার দিত।
ইসলামী আন্দোলনের জন্যে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশের এখনো সবচেয়ে বেশী শহীদ আমার এলাকায়। আমাদের এলাকার আওয়ামীলীগের সোনার বন্ধুরা ঘটনা ঘটাইয়া সীমান্ত দিয়ে ভারত পাড়ি দিত।
সেই শৈশব থেকে ভারতের নাম শুনে শুনে বড় হয়েছি।
ভারত বিরোধীরা আসলে কি প্রকৃত ভারত বিরোধী?
ভারত বিরোধী গুলার বেশিরভাগ চাপাবাজিতে ব্যস্ত। বক্তৃতার জগাখিচুড়ি রাধেঁ। ভারত বিরোধিতা করে আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক পরাজয় নিশ্চিত করে ক্ষমতায় যেতে ব্যস্ত। তাই ভারত বিরোধীদের প্রতি আমি বিরক্ত।
ভারতের সাথে আমাদের সমস্যা গুলো কিকি?
১.ভারতের সাথে আমাদের বানিজ্য ঘাটতি অনেক।
২. সীমান্ত সমস্যা।
৩.সাংস্কৃতিক আগ্রাসন।
৪. আধিপত্যবাদী থ্রেড।
কি করা যেত?
বানিজ্য ঘাটতি মোকাবেলায আমাদের চাল ডাল পেয়াজ চিনি গরু উৎপাদনের জন্যে ভারত বিরোধীরা জনগন তথা কৃষক ভাইদের মধ্যে ক্যাম্পেইন করতে পারত। উৎপাদনের লক্ষ্য কৃষকদেরকে যথাযথ সরকারী সহযোগিতা নিশ্চিতের জন্যে হরতাল করতে পারত। এভাবে ভারত বিরোধীরা ভারত নির্ভরতা সহনীয় পর্যায়ে কমাতে পারত।
সীমান্ত সমস্যা ও আধিপত্যবাদ মোকাবেলায় ভারত বিরোধীরা বিএনসিসি কার্যক্রম জোরদার করতে পারত। সাথে সাথে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিককে আধা সামরিক ট্রেনিং বাধ্যতামূলক করার জন্যে ক্যাম্পেইন করতে পারত এবং সরকারকে বাধ্য করে কার্যকর ভারত বিরোধীতার পরিচয় দিতে পারত।
ভারতের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রথম শিকার এদেশের নারীরা। নারীদেরকে ইসলামের পথে পরিপূর্ন ভাবে আনার জন্যে ইসলামপন্থীরা ওয়াজ ছাড়া কিছু করেনি। কিছু ইসলামপন্থী নারীদের কর্মসংস্থানের তীব্র বিরোধীতা করেই যাচ্ছে।কিছু ইসলামপন্থীর কাছে নারীদের ইসলাম মানে বোরকা নিকাব। এদেশের নারীদের মীরাসী সম্পত্তি দিয়ে দেয়ার ওয়াজ খুব কম ইসলামপন্থীই করে কারন পুরুষ স্বার্থে আঘাত লাগবে। সেকুলাররা নারীদের টার্গেট করে যুবক পুরুষ ও শিশুদেরকেও তাদের টার্গেট বা চিন্তার প্রভাবাধীন করছে আর সেখানে গড্ডালিকা প্রবাহে নারীদের ভেসে যেতে দিয়ে ইসলামপন্থীরা আছে "দ্বীনের কাজ করতে গিয়ে দীলের কাজ হয়ে যাবে" দৃষ্টিভঙ্গীতে। যে দিন এদেশের মুসলিম নারীরা সবাই গেঞ্জি পড়ে হাটবে হয়ত সে দিন এই সব গিলু বেশী ওয়ালা ইসলামপন্থীদের খবর হবে। এদেশের কালচারকে জাতীয়তাবাদী ট্যাগ দিয়ে ঘৃনায় তারা দুরে ঠেলে দেয়। ইসলাম থেকে সবাইকে বের করে দিতে পারলে এদের শান্তি। অমুক কাফির অমুক নাস্তিক অমুক মুনাফিক অমুক ভন্ড অমুক ট ভ লীগ, অমুক চর্মরোগ , অমুক ওহাবী , অমুক হিজবুতী, অমুক জামাতী এভাবে তারা সবাইকে পর করে দেয়ার উদ্ধত অহংকারে লিপ্ত। এরা ভারতীয় আধিপত্যবাদ মোকাবেলায় ঐক্যের সুর বাজায় না। এরা কাদা ছুড়াছড়ি করে এরা একে অপরকে ঘৃনার বুলেটে জর্জরিত করে। এরা সেকুলার ভাবধারার সংশ্লিষ্ট কারো কাছে গিয়ে ইসলামের কথা বলেনা। এরা পক্ষে বিপক্ষের সবাইকে ঠিটকারী ও তুচ্ছতাচ্ছিল্যে ব্যস্ত। এদের চাপার জোর শক্ত। মহা শক্ত। এরা অন্ধ। এরা মনে করে নিজেরা মহাপন্ডিত আসলে এরা আবাল মহা বোকা ধুরন্ধর।
এরা ভারতীয় আধিপত্যবাদ মোকাবেলায় খ্রিষ্টান মিশনারীদের বিপরীতে পার্বত্য চট্টগ্রামে ইসলামের জন্যে কাজ করছেনা। ভারতীয় আধিপত্যবাদ মোকাবেলায় আধিপত্যবাদ বিরোধী বাম চেতনাকে কাছে টানছেনা। এরা ভারতীয় আধিপত্যবাদ মোকাবেলায় আমার দেশের হিন্দুভাইদের উপর নানা সময়ে সাম্প্রদায়িক নির্যাতন প্রতিরোধে দৃষ্টিগোচর কোন কিছু করেনা। (আওয়ামীলীগ করে বিরোধীদের উপর চাপানোর অভিযোগ আছে)
ভারত বিরোধীদের উপর আমি ক্ষুদ্ধ মহা বিক্ষুদ্ধ। এরা চাপার জোরে ভারত বিরোধী কাজ দিয়ে নয়। এরা দলান্ধ ভারত বিরোধী আসলে কাজে বিশাল কলা গাছ। এরা কোরাস গানের ভারত বিরোধী ড্রয়িংরুমে না।
বিষয়: বিবিধ
১০৪০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি তাহলে এখন আর পার্বত্যঅঞ্চলে বসবাস করেন না। কারণ শান্তিচুক্তির চাদা দিতে হত শুধু জেএসএস কে। আর এখন জেএসএস, ইউপিডিএফ সহ বিভিন্ন গ্রুপে একসাথে দিতে হয়...
মন্তব্য করতে লগইন করুন