বিয়ে না হওয়া মেয়েদের কথা (৭ম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ২০ মার্চ, ২০১৪, ০৮:৩৯:০৬ সকাল
বিয়ে না হওয়া মেয়েদের কথা (৭ম পর্ব)
আইইএলটিএস ক্লাসে বসে আছি ঢাকায়। ক্লাস শুরু হওয়ার ১৫ মিনিট মত পর একজন মধ্যবয়স্ক ভদ্রমহিলা ক্লাসে প্রবেশ করলেন। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ক্লাসের পিছনের বেঞ্চে বসলেও কোচিংগুলোতে সামনের টেবিলে বসার চেষ্টা করি। অনেক সময় ছোট পুলাপাইনের অনাকাংখিত হালকা আচরন থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়াতে এইটা করা। সামনের চেয়ার ছাড়া অন্য চেয়ার খালি না থাকাতে সেই ভদ্র মহিলাটি একেবারে আমার পাশের চেয়ারেই বসলেন। টি ব্রেক হল। আপুকে সালাম দিলাম এবং কৌতুহলবশত জিজ্ঞাসা করলাম এই বয়সে কই যাবেন? তিনি বললেন অস্টেলিয়া যাবে। মনে মনে ভাবলাম স্বামী সম্ভবত অস্ট্রেলিয়া। কোচিংয়ের ক্লাশ গুলো শেষ হতে চলল। শেষের দিকে ক্লাসে অনিয়মিত হয়ে পড়লেন। শেষের ক্লাসের আগের ক্লাসে দেখা হওয়ার পর বললাম আপু অনিয়মিত কেন..তিনি বললেন ছোট ভাই ১৪ কি ২১ ডিসেম্বর পরীক্ষার ডেইট। বাসায় অধ্যয়ন প্র্যাকটিস করছি। ও...
আগের কৌতুহলের রেশ রয়ে গিয়েছিল। বললাম আপু দুলাভাই কি করেন?
আপু ক্ষেপে গেলেন...
আমি পুরাই টাস্কিত এবং বিব্রত।
আমার চেহারার অবস্থা দেখে তিনি বললেন...মানে আপু বললেন ছেলেদের এই একটা স্বভাব মেয়েদেরকে শুধু দুলাভাই কি করে প্রশ্ন করে। দুলাভাই সাবজেক্ট ছাড়া আর কি কোন প্রশ্ন থাকতে নেই? কেমন আছি? কি করি? ইত্যাদি। সে দিন জানা হল অন্য এক কাহিনী। আপু বিসিএস কর্মকর্তা। দাপুটে কর্মকর্তা বটে। স্বামীর অভ্যাস ছিল মদ খেয়ে মারার। মারামারি সহ্য করেও অনকে বছর সংসার করেছেন। একটি কন্যা সন্তানও আছে। যে দিন মদ খেয়ে মাইরের কবলে পড়ে মা মেয়ে দুই জনে আহত হলেন সেদিনই ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিলেন। ডিভোর্স দিলেন। মনের মত বন্ধুর মত আর কাউকে না পাওয়াতে যৌবন থাকা স্বত্তেও আর বিয়ে করেননি। বলল... ভাই ...ডিভোর্সের পর থেকে সমাজের প্রশ্ন ও সিদ্ধান্ত ..মেয়েটার চরিত্র খারাপ। সমাজের অযাচিত প্রশ্নে ক্ষত বিক্ষত হৃদয়।
আজ তিনি দাপুটে নারী নেত্রী। তীব্র পুরুষ ও ধর্মবিদ্ধেষী। অসহায়ত্বের সুযোগে সমাজের পরিপার্শ্বিকতার শিকার আবেগময়ী এই নারীকে নারীবাদীরা কাস্ট করেছেন এবং ব্যবহার করছেন।
শহরের উচু ঘরে ঘরে উচ্চশিক্ষার মোহময় ভদ্র খোলসের ভিতরে আবদ্ধ আহত নারীদের মুক্তির পথ কি নেই?
বিষয়: বিবিধ
১৪১৬ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর সেই জন্যই হয়তোবা সেই শিক্ষিত মহিলাটি এখন তার মধ্যে জমে থাকা ক্ষোভকে ধর্মের প্রতি উগড়ে দিচ্ছেন। কিন্তু তিনি নিজেই যে ভুল করেছেন তা বুঝতে পারছেন না।
আসলে এসব পরিস্থিতির জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। দোষ হয় ধর্মের। ধন্যবাদ আপনাকে
মন্তব্য করতে লগইন করুন