বিয়ে না হওয়া মেয়েদের কথা:(৩য় পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ১২ মার্চ, ২০১৪, ১২:৫২:১৬ দুপুর

বিয়ে না হওয়া মেয়েদের কথা:(৩য় পর্ব)

একটি এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলাম। ঐই এলাকার একটি প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাথে কথা বলতে গেলাম। দেখলাম একদল হিজাবী মেয়ে কমন রুম থেকে ক্লাশ করতে যাচ্ছে। প্রথম দৃষ্টিতেই চোখ গেল এক বালিকার দিকে। অদ্ভূত মায়া। পরে জানলাম মেয়েটি আমার দুর সম্পর্কের ভাইঝি। আজ যার কথা বলব তিনি দাখিল আলিমে গোল্ডেন ৫ পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ুয়া ছাত্রসংগঠনের বর্তমানে সদস্য হিসেবে কাজ করছেন এবং অনেকদিন জেল খেটেছেন এমন একজন চৌকস ভাইয়ের বড় বোন।

আলিমে পড়াকালীন সময়ে বিয়ে হয়ে যায় মেয়েটির। বিয়ের কিছুদিন পরে শশুর বাড়ি থেকে ফেরত আসার পরে আর শশুর বাড়িতে ফিরে যায়নি। হাজবেন্ডের কোন একটা সমস্যা আছে।এই মেয়ে মানসিক ভাবে প্রচন্ড ভেঙ্গে পড়ে । এই ঘটনা আমি জেনেছি অনেক পড়ে। ঈদুল ফিতরের বেড়ানো প্লাস গনসংযোগ উপলক্ষে একটা দাওয়াতে আমার এক বন্ধু সহ মেয়েটির বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। পথে দেখা হয়ে গেল। সালাম দিল মেয়েটি ।কুশল জিজ্ঞাসা করে শশুর বাড়ির খোজ নিলাম। খুব বিব্রতবোধ করতে দেখলাম। আমার বন্ধুটি মেয়েটিকে বাচিয়ে দিল। বলল ওর শশুরবাড়ির সবাই ভাল আছে। চলত...এত কথা বলস ক্যা!!!

একটু দুরে গিয়ে বললাম..বন্ধু ব্যাপার কি? বন্ধুটি আমাকে খুলে বলল সব। অদ্ভূত উদাস হয়ে গেলাম। এরও অনেকদিন পড়ে আমার প্রিয় সদস্য ভাইটির মোবাইলে কল করলাম । ধরল তারই বড় বোন। পড়ালেখার খোজ নিলাম। বললাম ফাজিলটা যে কোন ভাবে করে ফেলার জন্যে। মাদরাসার আশে পাশে লজিং থাকার জন্যে পরামর্শ দিলাম। কয়েক জায়গায় ফোন করলাম লজিংয়ের জন্যে। কিভাবে জানি হয়েও গেল। গত বছর সে ফাজিল পাশ করেছে। তার একটি চাকরি দরকার। মেধায় অনেক ভাল।

এই যে মেয়েটি! সমাজ তার মনকে ক্ষত বিক্ষত করে দিয়েছে। অপয়া অলক্ষুনে বেয়াদব এবং পতিতা পর্যন্ত ডেকেছে। অন্য কোন জায়গায় সম্পর্ক আছে বলেছে। এক নিমিষেই পেরেন্টসের কাছেও অপাংক্তেয় হয়ে গেল। তবে সদস্য ভাইটি তাকে সাপোর্ট দিয়েছে বেশ। আজগুবী সব প্রশ্ন এই মেয়ের জীবনকে অস্থির করেছে। সমাজ করুনার দৃষ্টিতে তাকায়। সমাজ বলেনি "এই মেয়ে তুমি ভাল আছো তো!!!" এসো তোমার ব্যাদনার অশ্রুগুলোকে মুছে দিই। তুমি আগের মত আবার খিলখিলিয়ে হেসে উঠ। বাড়ির চারপাশের বাড়িগুলোতে আবার যাও । যাও না দাদী চাচী ফুফু কাজিন মেয়েদের সাথে আড্ডা দিতে। সে আড়ষ্ট। আড়ষ্ট তার মন ও জীবন। উৎফুল্লতা হারিয়ে গেছে জীবন থেকে। ফোনে উত্যক্ত করেছে তাকে।কুপ্রস্তাবও দিয়েছে অনেকেই। মেয়েটি ভাবলেশহীন তাকিয়ে আছে আকাশের পানে।

হে আকাশের মালিক মেয়েটিকে একটি সুন্দর জীবন ও হায়াতে তাইয়েবা দাও। তার সুখগুলো তাকে ফিরিয়ে দাও। মনের কোনে জমে থাকা কালো মেঘ সরিয়ে পূর্নিমার চাদেঁর আলো দাও। যে দিপ্তী চেহারা থেকে হারিয়ে গেছে তা আবার তাকে দিয়ে দাও। চোখের নীচে যে কালি গুলো পড়েছে তুমি তোমার কুদরাতী হাতে তা মুছে দাও। এই বালিকাটিকে তুমি জান্নাতিদের দলে শামিল কর।

বিষয়: বিবিধ

১৩২৫ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

191148
১২ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০২:২৬
হতভাগা লিখেছেন : আপনি মেয়েটাকে বিয়ে করে ফেলেন - সোজা হিসাব ।

আপনার মত একজন ভাল মানুষ পেয়ে মেয়েটার জীবন আবার সুন্দর হয়ে উঠতে পারে ।
১২ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:১৪
142158
লোকমান বিন ইউসুপ লিখেছেন : আমি কয়টারে বিয়ে করব?
১২ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৮
142166
হতভাগা লিখেছেন : করছেন কয় টা ?
১২ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:০৫
142176
লোকমান বিন ইউসুপ লিখেছেন : আপনার কি মনে হয়না "আমার চিন্তা করার মত যথেষ্ট সক্ষমতা আছে"?
১২ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:১৫
142188
হতভাগা লিখেছেন : কাহিনী এত বাড়াইয়েন না ? সোজা সাপ্টা উঃ দেন ।
১২ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:৪১
142215
লোকমান বিন ইউসুপ লিখেছেন : আমার বিভিন্ন ব্লগপোস্টে আপনার আচরন এর কারনে আমি আপনার সাথে আলোচনায় আগ্রহী নই।
191163
১২ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:১৩
সজল আহমেদ লিখেছেন : আমীন।মেয়েটির জন্য মায়া হয়!সমাজ তাকে ধিক্কার কেন দেয় না বুঝেই তার মনের কথা!
194840
১৯ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৫
স্বপন১ লিখেছেন : লজিংয়েরমার লজিংয়ের ব্যবস্থা করেন। লোকমান বিন ইউসুপ ভাই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File