সামষ্টিক পাঠ,কুরআন তালিম,মিছিল না অনলাইন ফেইসবুক?
লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ১৮ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:২৭:৩০ রাত
সামষ্টিক পাঠ,কুরআন তালিম,মিছিল না অনলাইন ফেইসবুক?
---------------------------
আর কয়েকদিন বাদে বিপ্লবের তথাকথিত সোল এজেন্টরা সব ছাইড়া অনলাইনে ভীড় জমাবে।যেভাবে অনলাইন জনপ্রিয় হচ্ছে ও হবে আগামী দশ বছর পর ফিজিকেলী এক জায়গায় হয়ে প্রোগ্রাম করাটাই কঠিন হয়ে যাবে।
কারন আপনি চাইলে
১.গ্রুপ চ্যাট করতে পারছেন
২.কোন একটা লেখা লিখে হাজার জনকে মেইল করতে পারছেন
৩.ফেইসবুকে ও ব্লগগুলোতে একটা লিখা লিখে দিনে অনেক মানুষের কাছে পৌছতে পারছেন
৪.ফেইসবুক সহ অনলাইন গ্রুপগুলোতে সামষ্টিক পাঠ করতে পারছেন
৫.মোবাইলে কনফারেন্স করে বক্তব্য রাখতে পারছেন
৬.স্কাইপিতে ভিডিও আলাপ সেরে নিতে পারছেন
৭.হ্যাংআউটে গ্রুপ ডিসকাশন করতে পারছেন....
তবে কেন আপনি ১০ জন মানুষকে একসপ্তাহ দাওয়াতী কাজ করে আসা যাওয়া প্রোগ্রাম নাস্তা সহ ৪ ঘন্টা সময় ব্যয়ে কষ্টসাধ্য প্রোগ্রামে যাবেন?
যেখানে ফেইসবুক গ্রুপে বা ফেইসবুক পেইজে প্রতিদিন ২টা কুরআনের আয়াত আর ২ টা হাদীস স্টেটাস দিয়ে কর্মীদের পড়ে লাইক দিতে বলে পাঠ্যাভ্যাস বৃদ্ধি করতে পারবেন... পড়েছে কিনা চ্যাক দিতে পারবেন মানে রিপোর্ট রাখা ও দেখানোর কাজ হচ্ছে সেখানে কেন সরকারের রোষানলে পড়া আওয়ামী কথিত জঙ্গী বই কুরআন হাদীস সাহিত্য নিয়ে ঘুরতে যাবেন?
তাজবীদ সহ বর্নমালার উচ্চারন শিখানোর অনেক ওয়ব তৈরী করতে পারেন যা কুরআন শিখাবে তবে কেন কুরআন শিখার ক্লাশ?
পৃথিবীর বড় বড় অনেক পরীক্ষা হচ্ছে অনলাইনে তবে কেন সিপিকে সিলেট যেতে হবে শপথ দেয়ার জন্যে?
ফেইসবুকগ্রুপে আপনি ইসলামিক প্রশ্ন তৈরী করে তার উত্তরে পোষ্ট দিতে বলতে পারেন বা স্কাইপিতে আপনি আপনার ব্যাক্তিগত সাংগঠনিক কন্টাক্টটা সেরে নিতে পারছেন সেখানে কেন দরকার ফিজিকেল মিটিং?
যেখানে বিকাশ একাউন্ট করে আপনার বায়তুলমালের এয়ানতটা আপনি কালেক্ট করতে পারছেন সেখানে কেন দরকার বিল্ডিংয়ে বিল্ডিংয়ে উঠানামা করে কষ্টসাধ্য এয়ানত কালেকশান?
হ্যাংআউটে যেখানে পাঠচক্র আলোচনা চক্র করার সুবিধা আছে সেখানে কেন দরকার ফিজিকেল প্রোগ্রামের?
অনলাইন লাইব্রেরী করে ইসলামিক বইগুলোর পিডিএফ ভার্সান করে তা থেকে প্রত্যেকের কাছে আপনি পৌছে দিতে পারেন ১০ হাজার বা তারও বেশী বই সেখানে কেন দরকার বিশাল রুম ভাড়া নিয়ে পাঠাগার করার?
ব্লগগুলো হয়ে পড়েছে বিকল্প মিডিয়া, সেলবাজার বা বিক্রয় ডট কম হয়ে পড়েছে অনলাইন শপিং ক্ষেত্র, বিডিজবস, জবসএ১, প্রথমআলো জবস হয়ে পড়েছে চাকরী খোজার জায়গা, ব্রেইনট্র্যাক ডট কম(braintrack.com) হয়ে পড়েছে পৃথিবীর সকল ভার্সিটির ওয়েবসাইট এড্রেস এবং ভর্তির আবেদন করার উপায়, studera.nu, daad.de, সহ বিশ্ববিদ্যালয় এর ওয়েবসাইটগুলো শিক্ষাবিষয়ক তথ্যের জন্যে হাতের নাগালে সেখানে কেন কষ্ট করে তথ্যের জন্যে অপ্রয়োজনীয়ভাবে ক্যাম্পাসে যাবেন?
গনতন্ত্র ছাড়া যদি আপনি অস্ত্রকে মুল হাতিয়ার বা উপায় মনে করেন তবে আপনার জন্যে সিনেমা হলে বোমা মারা, সুপ্রীমকোর্টের বাথরুমে বোম রেখে আসা, জ্বলন্ত বাসে মানুষ মারা সহ অনেক চটকদার এবং ইলেকট্রনিক এন্ড প্রিন্ট মিডিয়ার কাভারেজ পাওয়ার জন্যে বহু কিছু করা সম্ভব।
কিন্তু বিপ্লবের নাম যদি মানুষের মনজগত চ্যাইঞ্জ হয় তবে আপনাকে এই মূহুর্তে যেটা করা উচিত সেটা হলে ফেইসবুকে, টুইটারে একটা একাউন্ট খুলে ফেলা। ব্লগগুলোতে একাউন্ট করা। দেশী বিদেশী নিউজপেপার পড়া ও কমেন্ট করা। সম্ভব হলে টিভি রেডিও স্টেশান প্রতিষ্ঠা করা। প্রিন্ট মিডিয়া বানানো। ইসলামিক ওয়েব বা মানুষের উপকার হয় এই রকম ওয়েবসাইট তৈরী করা। ব্লগ বানানো।
মাথা ব্যাথার উপশমে মাথা কেটে ফেলা যেমন সমাধান নয় ঠিক তেমনি ভাবে তাকওয়ার নাম করে বিজ্ঞানের আবিষ্কার থেকে জনশক্তিকে বিচ্ছিন্ন করাও ভাল উপায় নয়। নিজ থেকে স্রষ্টাকে মানার নাম তাকওয়া । দায়িত্বশীলের ভয়ে কাজ করার নাম রিয়া বা প্রদর্শনেচ্ছা। দায়িত্বশীল অধীনস্থদের ভয়ে তটস্থ করে রাখা বা থাকাতে গৃহপালিত ঈমানদারের জন্ম নেয় মাত্র। প্রকৃত বিপ্লবী তৈরী হয়না।
বড় জনসভা থেকে টিভি জনমত তৈরীর ভাল একটা মাধ্যম। অথচ ইসলামপন্থীরা টিভির বিরুদ্ধে জনমত তৈরীতে উঠে পড়ে লেগেছিল।
ফেইসবুক জনমত গঠনের ভাল মাধ্যম অথচ ইসলামপন্থীরা তাদের জনশক্তিকে ফেইসবুক একাউন্ট আছে শুনলে সন্দেহের চোখে দেখে ও ঠিটকারী মারে।
একসময় আর্ন্তজাতিক ভাষা ইংরেজীকে হারাম বলা হয়েছিল অথচ সেই ইংরেজী হয়ে উঠেছে এখন দাওয়াতী কাজের ভাল মাধ্যম।
ইসলামপন্থীরা জায়েজ যে কাজগুলো করে থাকে তার মধ্যে সবচেয়ে কম ফলপ্রসু একটি কাজ হচ্ছে রাস্তায় মিছিল করা । একমাইল মিছিল করে কয় জনের মনোজগত পরিবর্তন করা যায়? একমাইল মিছিলে পরিবহনের লোকজন ও পথচারীরা কিছু আওয়াজ শুনে মাত্র আর কিছুই হয়না। তিনভাগের দুইভাগ আরোহী ট্রাফিকজামের কারনে গালি দেয় বিশ্রী ভাষায় মিছিল কারীদের।
আর মিছিলের ভাষা হল
জ্বালো জ্বালো-আগুন জালো
একশান একশান-ডাইরেক্ট একশান
রক্তের বন্যায় --ভেসে যাবে অন্যায়
আমরা সবাই অমুক সেনা---ভয় করিনা বুলেট বোমা
লড়াই লড়াই লড়াই চাই-লড়াই করে বাচতে চাই......
এই শ্লোগান জংলী অসভ্য বর্বরদের। আমিও বর্বরতার অনুকরন করেছি অন্ধ হয়ে।
এই শ্লোগানে মানুষের মন পরিবর্তন করবেন?
আগুন জেলে দেশের সম্পদ নষ্ট হোক তা সাধারন জনগন চায় না। যুক্তি বিতর্ক জ্ঞান নির্ভর সমাজ চায় সচেতন মহল একশান ডাইরেক্ট একশান , রক্ত , লড়াই , সেনা , বুলেট , বোমা সভ্য পৃথিবী চায়না।
বতমান পৃথিবী জ্ঞানের
বর্তমান পৃথিবী যুক্তির
বর্তমান পৃথিবী বিতর্কের
বর্তমান পৃথিবী মানবতার
ধর্মীয় কুটচালে জিহাদের নামে উগ্রতা পৃথিবী গ্রহন করতে তৈরী নয়।
ধর্মীয় কুটচালে নিজের ধর্মই শুধু ঠিক বলে পরমতঅসহিঞ্চু হয়ে অপর সম্প্রদায়কে হামলা করে সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামা সৃষ্টি গ্রহন করার জন্যে পৃথিবী তৈরী নয়।
ধর্মীয় নামে ধর্মান্ধতা করে বিজ্ঞানের আবিষ্কারের(ফেবু/ব্লগ)বিরুদ্ধে দাড়িয়ে সফলতার বীজ বুনার স্বপ্ন দেখা তামাশা।
পর্দার নামে নারীকে অন্ধকার প্রকোষ্ঠে ঠেলে দিয়ে তার বেচে থাকাকে কঠিন ও যন্ত্রনাময় করে দিয়ে নারীকে মানুষ না ভেবে নারী ভাবা ও যৌন ভোগের বস্তু ভাবা সভ্য সুন্দর পৃথিবী গ্রহন না করে আপনাকে জনমতের দৃষ্টিতে সংখ্যালঘুতে পরিনত করবে। আপনিই হবেন জনবিচ্ছিন্ন যাযাবর।
সবাই এগিয়ে যাবে। আপনি স্থির হয়ে যাবেন। সবাই নেতৃত্ব দেবে আপনি দর্শক হবেন। সবাই আযান দেবে আপনি নয়েজ মনে করবেন। কঠিন করার বনী ইসরাইলী রোগ ছাড়তে না পারলে দশকে দশকে আপনি লাশ হয়ে পড়ে থাকবেন রাস্তায়। আপনি মনে করবেন আপনি সফল যা আল্লাহই ভাল জানে। আর আল্লাহর পৃথিবীতে নেতৃত্ব দিবে মানবতাবাদীরা। কারন সেবার জন্যে নেতৃত্ব। বৈষয়িক যোগ্যতার জন্যে নেতৃত্ব।
বিষয়: বিবিধ
১৭৭২ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
চমৎকার লেখনী।
মন্তব্য করতে লগইন করুন