চোখের পানি মুছে ফেলুন। ইসলামী বিপ্লবের বারুদের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ দেখতে চাই।
লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০১:০৮:২৫ দুপুর
শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা। তোমার কপোলে রইল উড়ন্ত চুমু। তোমার শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করছি। শাহাদাতের পর তোমাকে দেখার অধিকারটুকু পায়নি ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ উত্তরসুরীরা। তোমাকে দেখে কাদাঁরও সুযোগ পাওয়া যায়নি। ফরিদপুরের সেই দুর্লভ জানাজাতেও শরীক হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি আমাদের।
কি অদ্ভূত! পৃথিবীর সকল প্রকৃত মুসলিম তোমার জন্যে কেদেঁছে,দোয়া করেছে। অসংখ্য দেশে তোমার গায়েবানা জানাজাহ হয়েছে। সবচেয়ে আষ্চর্য্যের বিষয় হল এই মূহুর্তে একজন ইসলামী আন্দোলনের কর্মীও নিষ্ক্রিয় নেই। ওয়াল্লাহু আ'লাম
নির্মম শাহাদাতের রক্তের বদলা নেয়ার জন্যে কিছু ভেবেছ কি? যদি ভেবে না থাক বা কোন পরিকল্পনায় তুমি না নিতে পারলে তাহলে তোমার চোখের পানি নিষ্প্রয়োজন অভিব্যক্তির সাক্ষী হয়ে রইল।
তোমাকে মনে রাখতে হবে তুমি এমন এক উম্মাহর সদস্য যে উম্মাহ বিশ্বঅর্থনীতির নিয়ন্ত্রক নয়। হিন্দু স্বার্থ রক্ষার জন্যে যেমন ভারত , খ্রিষ্টান স্বার্থ রক্ষার জন্যে যেমন আমেরিকা, ইহুদী স্বার্থ রক্ষার জন্যে যেমন ইসরাইল, বৌদ্ধ স্বার্থ রক্ষার জন্যে যেমন চীন তেমনি ভাবে মুসলিম স্বার্থ রক্ষার জন্যে তেমন কোন দেশ নেই। তোমাকে একদিকে বিশ্বের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রনের জন্যে কাজ করতে হবে ঠিক তেমনি মুসলমান জাতিকে বিজ্ঞানের উৎকর্ষতা দেয়ার লক্ষে তরুনদের মোটিভেট করতে হবে। "কুনতুম খাইরা উম্মাতিন উখরিজাত লিন্নাছ..তা'মুরুনা বিল মা'রুপ..ওয়ান্নেহিয়ানিল মুনকার"। আবার সেই পিছিয়ে পড়া উম্মাতের সদস্য হয়ে "কুনতুম খাইরা উম্মাতের" র্অন্তভূক্ত হয়ে অর্থাৎ ইসলামী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী হয়ে উম্মাত ও দলের অভ্যন্তরীন সমস্যাগুলি মায়ার তুলি দিয়ে রাঙ্গিয়ে দুর করে দিয়ে সাধারন মানুষকে সেকুলার চিন্তাভাবনা থেকে শ্বাশ্বত ইসলামের দিকে নিয়ে আসতে হবে। "ফাদকুলু ফিচ্চিলমি কাফ্ফাহ"। পরিপূর্ন ভাবে ইসলামে নিয়ে আসার কাজ করতে হবে।
কি করা যেতে পারে?
১.আমি প্রথমেই বলব ইসলামের জ্ঞান অর্জনের কথা। কুরআনের জ্ঞান অর্জনের কথা। কুরআন স্টাডি করার ক্ষেত্রে ব্যস্ততম ছাত্রদেরকে এখনো অল্প সময়ে অধিক কুরআনের জ্ঞান অর্জন করার পথ বাতলে দেয়া যায়নি।
২. তারপর বলব বিরোধী শক্তির বুদ্ধিবৃত্তিক তৎপরতার সুষম বাস্তবভিত্তিক জওয়াব দেয়ার কথা।আপনাকে মনে রাখতে হবে ইসলামী আদর্শের সেনানী হিসেবে কোন পক্ষেরই যৌক্তিক প্রশ্ন আপনি এড়িয়ে যেতে পারেননা। আমাদের পাঠ্য ফিকাহর কিতাব গুলো আপগ্রেড হচ্ছেনা অনেকদিন।
৩. মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্যে সর্বাত্বক চেষ্টা চালানোর মধ্য দিয়ে সাধারন মানুষকে ইসলামের দিকে নিয়ে আসা। আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি জান্নাত দেয়ার মালিক নন। আবার সব কাজ করেও আল্লাহর করুনা ছাড়া আপনিও জান্নাতে যেতে পারবেননা। আপনি "ফাজাক্কির ইন্নামা আনতা মুজাক্কির। লাচতা আলাইহিম বিমুছাইতির"। আপনি স্মরন করায়ে দেয়া কারী মাত্র । বল প্রয়োগ কারী নন।
তাই আপনাকে শহীদের রক্তের বদলা নেয়ার জন্যে আজ সমাজের ইসলামপ্রিয় জনতার দ্বারে দাড়াতে হবে । শ্বাশ্বত ইসলামের প্রেমময় আর্জি নিয়ে।
কিন্তু কিভাবে?
প্রথমে আমি গুরুত্ব দিব গৃহবিবাদ কমানোর দিকে। শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার ত্যাগকে অসহায়ভাবে হজম করার চাইতে শুধু ঈমান আছে সালাত পরে আর কুরআনের প্রতি টান আছে এই নুন্যতম শর্তের উপর একমত হয়ে আমাদের তাবলীগ জামায়াতের ভাইদেরকে , খিলাফতপন্থী ভাইদেরকে, সকল ইসলামী দল ও প্রতিষ্ঠানকে , সকল কওমী মাদরাসার সাবেক বর্তমান অসংখ্য ভাইদেরকে চোখে পানি নিয়ে মনের সকল ভালবাসা দিয়ে বাংলাদেশে ইসলামের আসন্ন ঘোরতর বিপদের কথা বলে বুকের সাথে বুক মিলিয়ে ইসলামের বৃহত্তর ঐক্যের জন্যে কাজ করতে হবে।
২য়তঃ মাঠের নিদোর্ষ আওয়ামীলীগের সাথে আমাদের বিরোধ নেই। তাদের কে বুঝাতে হবে কেন্দ্রীয় বামঘেষা কতিপয় আলীগ, বাম রাম দের সাথে আমাদের মুল বিরোধ। মাঠের এই অংশটিকে আলীগের ভয়ানক ইসলাম বিরোধী তৎপরতা সম্পর্কে বুঝিয়ে নিষ্ক্রিয় করতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে এমন কোন তৎপরতা গ্রহনযোগ্য নয় যে তারা শুধুমাত্র জিদের বশবর্তী হয়ে কেন্দ্রীয় আলীগ বামদের ইসলাম বিরোধী ঘৃন্য তৎপরতায় সহযোগিতা করবে। মাঠপর্যায়ে হিন্দু কমিউনিটি প্রতি আমাদেরকে আরো যত্নবান হতে হবে। নারী সমর্থক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমাদেরকে সর্বোচ্চ পরিমানে ছাড় দিয়ে তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে বিব্রত না করে শুধুমাত্র ইসলামের প্রতি সমর্থন আদায়ের দিকে নজর দিতে হবে।
৩য়ত: বিশাল ইসলামপ্রিয় অরাজনৈতিক গোষ্ঠীকে অরাজনৈতিক প্লাটফরম তৈরী করে দিয়ে তুরস্কের ফেতুল্লাহ গুলেনের মত কাজ এগিয়ে নিতে হবে।
চতুর্থত: আপনাকে অন্তত একটি কাজ করতেই হবে। আপনার আব্বু আম্মু, ভাই বোন, দাদা দাদী, চাচা চাচী, ফুফু ফুফা, মামামামী, সকল কাজিন, সকল বন্ধুবান্ধব, সকল আত্বীয়ের ইসলামের প্রতি সমর্থনটা আপনাকেই নিশ্চিত করতে হবে। সাবেক বর্তমান সকল শপথের কর্মীরা তাদের আত্বীয় স্বজন ও পরিচিতদের ইসলামের প্রতি সমর্থন নিশ্চিত করতে পারলে আমাদের খুববেশীদিন সময় লাগবেনা বাংলাদেশের লালসবুজের পতাকাতে ইসলামের বিজয় চিহ্ন একে দিতে।
পৃথিবী নিমর্ম। চোখের পানির মূল্য আল্লাহর কাছেই শুধুমাত্র। কিন্তু আল্লাহ চেষ্টা করা ছাড়া জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেননা। তাই আমাদের সকলকে শোককে শক্তিতে রুপান্তরিত করতে হবে। বৈষয়িক ভাবে পিছিয়ে পড়া মুসলিম উম্মতের সদস্য হিসেবে আবার তার ভিতরের "খাইরা উম্মত" হিসেবে মানে ইসলামী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে আমাদের আবেগাক্রান্ত হয়ে উঠলে চলবেনা। পরিকল্পিত উপায়ে র্নিভূল ও সর্ন্তপনে প্রত্যেকটি সেকেন্ডকে যদি কাজে লাগিয়ে কাধেঁ কাঁধ মিলিয়ে ময়দানে উদ্দ্যেশ্যে অর্জনে অবিচল থাকতে পারি তবে মাত্র পাচঁ বছরে আমরা ঈষর্নীয় অগ্রগতি লাভ করতে পারব বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ইনশাআল্লাহ।
বিপ্লবের সেনানীদের বুঝতে হবে ক্ষমতায় গিয়েও ক্রমধারা অবলম্বনের বিষয় আছে। তুরস্ক আমাদের সামনেই মডেল হিসেবে আছে।আওয়ামী সেকুলাররা ক্ষমতা থেকে বিশ্বইসলামী আন্দোলনের সকল কর্মীদের হৃদয়ে শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার অন্যায় ফাসিঁ দিয়ে যে বিষমাখা চুড়ির আচড় দিয়েছে তা ফিরিয়ে দিতে হলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বিকল্প নেই। আর বাংলাদেশের ভূখন্ডগত বাস্তবতায় রাষ্টীয় ক্ষমতাকে স্থিতিশীল করার জন্যে রাশিয়া-ইরানের মত সম্পর্ক তৈরীর বিকল্পও নেই।
আসুন নিজ অবস্থান থেকে সরব হয়ে উঠি। একজন সত্যিকার বিপ্লবের কর্মীর মতই হোক আমাদের দৈনন্দিন রুটিন। ইজা জা'আ নাসরুল্লাহি ওয়াল ফাতহু। ওয়ারাআইতান্নাছা ইয়াদকুলুনা ফি দ্বীনিল্লাহি আফওয়াজা। ফাছাব্বিহ বিহামদি রাব্বিকা ওয়াসতাগফির।
চোখের পানি মুছে ফেলুন। বিপ্লবের বারুদের আগুনের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ দেখতে চাই। রক্ত বিপ্লকে স্তিমিত করেনা ..বিপ্লবের গতিকে প্রশান্ত মহাসাগরের স্রোতের বেগের চেয়েও গতিবেগ দেয়। পানি নয় চোখ থেকে বের হয়ে আসুক বিপ্লবের আগুনের ফুলকি। হৃদয় থেকে বের হয়ে আসুক ইসলামী বিপ্লবের আগ্নেয়গিরির লাভা। সকল তন্ত্রমন্ত্রের উপর দাড়িয়ে বলতে চাই
"No East No West Islam Is The Best"
বিষয়: বিবিধ
১৬৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন