আমি তো পানি খেলাম... হে ভাষা সৈনিক গোলাম আযম .... তুমি আজ কি খেয়েছ?
লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ১৬ নভেম্বর, ২০১৩, ০৭:৫৭:০৬ সন্ধ্যা
গতকাল ছিল জুমাবার । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। রিলেটিভ থাকায় ক্যাম্পাসে গেলাম। ডাকসুর পাশে বসে আছি। দেশের ইতিহাসের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত এটি।মুজিবের শাসনামলে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ডাকসুর পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু উপাধি ফিরিয়ে নিয়ে বঙ্গবন্ধু উপাধিটির রেকর্ডটি ছিড়ে বাতাসে উড়িয়ে দেন।
অধ্যাপক গোলাম আযম ...ভাষা আন্দোলনের বীরসেনানী। বাংলাভাষা রাষ্টভাষার দাবীতে তিনি পাকিস্তানের শাসককে স্মারক লিপি দেন ডাকসুর জিএস হিসেবে।কোন প্রমান না থাকা স্বত্ত্বেও ৯১ বছরের প্রবীন ব্যাক্তিটির ৯০ বছর জেল হয়েছে। কিন্তু ডাকসুর ইতিহাস থেকে তার নামটি মুছে ফেলা হল। কি অদ্ভূত মানসিকতা। গোলাম আযমকে পছন্দ হলনা ঠিক আছে কিন্তু তার ইতিহাস মুছে দেয়া মানে গোলাম আযম জয়ী হয়েছে আর পরাজিত হয়েছে তার বিরোধীরা ।
প্রহর গুনছি পরাজয়ের তিলকটা যাতে কপালে পরিয়ে দিতে পারি... নে বেটা নে... এবার দাদার দেশ ভারতের তাজমহলের সামনে গিয়ে পোজ দে....
সি ইউনিটের পরীক্ষা চলকালীন সময়টা বাইরে অপেক্ষা করছি। সময় যেন কাটছেইনা । কফি খেলাম, আমলকি খেলাম, চটপটি খেলাম আবার চা খেলাম... দুর সময় যায় না ...কনসেপ্ট অব ইসলাম এর তোহাকে ফোন দিলাম। তোহা মনে হয় বিজি ছিল...রিসিভ হয়নি...এমনিতে সর্দি কাশি হালকা জ্বর...বাংলাদেশ প্রতিদিনের তুহিন মালিকের কলামটি পড়ছিলাম....আলীগ কিভাবে সংবিধান লংঘন করে নিজের মৃত্যৃদন্ড দেয়ার সুযোগ রেখে যাচ্ছে ..পড়লাম,.... আর হাসিনার মৃত্যুদন্ড কার্যকরের দিন আমি চট্টগ্রামের কালচার মুড়ি দিয়ে কেমনে শব্দ করে আয়েশী ভঙ্গীতে চা'টা খাব তার কল্পনা করে সুখানুভূতি পেলাম... ওহ! ইনুটার ফাসিঁ হওয়ার সময় আমি যেন জল্লাদের কাছে থাকতে পারি। এই বেটা বহু মানুষের রক্ত ঝড়ানোর সাথে জড়িত।
আশে পাশে বসা মানুষগুলোরে বাজিয়ে দেখতে ভূল করিনি। হাসিনারে কে কি ভাবে একটু নিজের কানকে শুনাইলাম..... আহ তৃপ্তি....খুব তৃপ্তি... সর্দি কাশির জ্বালাটা মাঝে মাঝে ভূলে যাচ্ছি। চোখ মুখ দাতঁ খিঁচে আওয়ামীলীগরে যখন পাবলিকে গাইল পারে....তখন যে কোন দেশপ্রেমিকেরই মজা লগবে...
তারপর ঘুরাঘুরি করতে গিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের স্টলে গেলাম। গল্প করলাম আর সংবিধান ও গঠন তন্ত্র বিক্রির অনুরোধ করলাম। তারা বলল এইটা তাদের সাংগঠনিক কাজের জন্যে। পরে তারা এটি আমাকে গিফট করল।শিক্ষা সংক্রান্ত একটা সংকলন কিনলাম।স্টলের পিছনে সেটিয়ে রেখেছে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের বানী।আচ্ছা বাম ছাত্ররা অনুপ্রেরনার উৎস কি?
টিকাটুলির খালাম্মার বাসার পথ ধরলাম। তারপর দুপুরের খাওয়া ও ভাবীর হাতের সেইরাম একটা পায়েস খেয়ে কমলাপুর রেল স্টেশন। মাথা ব্যাথা আর সর্দি । ওহ!!!!! কলিগ আনোয়ার ভাইয়ের সাথে গল্প করছি। ট্রেন এসে যাওয়াতে তারা ট্রেনের দিকে ছুটলেন আর আমিও আমার মহাখালীর বাসায় এসে রাজ্যের ঘুমে হারিয়ে গেলাম... ঘুম থেকে উঠলাম...রাত ১১ টা। উঠে দেখি বুয়া কিছু রান্না করে যায়নি মানে বুয়া আসেনি...দ্যুত! শালা। পেটে তেমন ক্ষিধেও নেই ...কারন বাসায় উঠার সময় নাস্তা করে ঢুকেছিলাম... এক গ্লাস পানি খেয়ে ব্লগ ফেবুতে একটা পোস্ট দিয়ে বিছানায় গেলাম... আমি তো পানি খেলাম... ভাষা সৈনিক গোলাম আযম .... তুমি আজ কি খেয়েছ? কিছু খেতে দিয়েছে কি জালিম তোমায়.... আমরা কাপুরুষ .... যে ভাষায় কথা বলছি , যে ভাষায় কথা বলার অধিকার তুমি দিয়েছ, বাঙ্গালী জাতিস্বত্ত্বার পরিচয় এনে দিলে যে তুমি সে তুমি কারাগারে... বাংলা ভাষার মানুষ চোখের পানি ফেললেও
জালিমের কারাগারের লৌহ কপাটটি ভাঙ্গতে পারেনি।
কবি নজরুল বহু আগে গেয়ে উঠেছিল...
লাথি মার ভাঙ্গলে থালা...........কারার ঐ লৌহ কপাট....
হয়ত তুমি মুক্ত হবে হয়তো না.... কিন্তু প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বয়ে বেড়াবে প্রতিশোধের আগুন। অব্যর্থ নিশানার বজ্রাঘাত...বাতিলের স্পৃহাকে চুষে উগড়ে ফেলে দেবে.... দৃপ্ত কন্ঠে ঘোষিত হতে থাকবে
সৃষ্টি যার আইন চলবে তার.....
বিষয়: রাজনীতি
১৩৮০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন