টার্গেটেই কি ভূল? প্রসঙ্গঃ ভিভিআইপি, শিশু ও নারীদের মাঝে দাওয়াত।
লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০১:০১:৩০ দুপুর
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন যে টার্গেট নিয়ে কাজ করে তা অতি দীর্ঘমেয়াদী। ক্লাশ টেনে একটা ছেলেকে সাথী বানালে সে ত্রিশ বছর পরে সমাজকে র্সাভাইভ করতে পারবে। আর এভাবে ১৫ বছর কাজ করলে ৪৫ বছর পরে আউটপুট পাওয়া যাবে যদি সে এক্সসিলেন্টভাবে গড়ে উঠে।
১.কিন্তু আপনি যদি ২০/৩০ বছরে একটা পর্যায়ে যেতে চান তাইলে হযরত খাদিজা রাঃ ,আবু বকর রাঃ , হযরত উমর রাঃ , হযরত উসমান রাঃ হযরত আলী রাঃ সহ রাসুলের সঃ টার্গেটকে বিশ্লেষন করুন। হযরত খাদিজা রাঃ ছিলেন মক্কার যোগ্য ধনী ব্যবসায়ী মহিলা । হযরত আবু বকর রাঃ ছিলেন "খিয়ারুকুম ফিল জাহিলিইয়াতি খিয়ারুকুম ফিল ইসলাম।" আর হযরত উমরের সাহস ও দুরদৃষ্টির কথা ,হযরত উসমান রাঃ এর সম্পদের কথা, হযরত আলী রাঃ এর বীরত্বের কথা সবাই জানেন।
রাসুল সাঃ এর টার্গেট পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় অল্প সময়ে কিছু করতে হলে বিদ্যামান সমাজের ভিভিআইপিদের টার্গেট করতে হবে। আপনার লিখিত সাহিত্যের ভাষায় কথা বলতে না পারলে আপনার দৃষ্টিভঙ্গীকে হৃদয়ে ধারন না করলে মানের লোক না বলার দুঃসাহস আমার নাই।
বিদ্যামান ভিভিআইপিদেরকে আমরা দাওয়াতের আওতায় আনতে পারিনি। কোন সমাজের উপর বিজয়ী হতে হলে ঐ সমাজের ভিআইপিদের ইনক্লুড করা বাধ্যতামূলক।
২. দীর্ঘ মেয়াদী টার্গেট হিসেবে আপনি একটা ছেলেকে ক্লাশ নাইন-টেনে আসলে দাওয়াতের আওতাভূক্ত করছেন। অথচ ইলেকট্রনিক মিডিয়া থেকে এই ছেলেটি ৩ বছর বয়স থেকে এফেক্টেড হয়ে আসছে। এন্টি ইসলামিক কোচিং সে শিশু বয়সে পাচ্ছে।আমরা যদি শিশুদের জন্যে লক্ষ লক্ষ কেজি স্কুল গড়ে তুলতে পারতাম বা শিশু সাহিত্য বা শিশুদের উপযোগী সাংস্কৃতিক একটিভিটিস বাড়াতে পারতাম তাহলে একটা ভাল কাজ দিত। তাইলে ইলেকট্রনিক মিডিয়া থেকে শিশুরা যে কোচিং পাচ্ছে তার প্যারালাল আনন্দদায়ক শিশু দাওয়াতী কাজের সুচনা করা যেত।
৩. ছেলেরা নয় ইসলামী মেয়েরাই শিশু দাওয়াতী কাজের জন্যে সবচেয়ে উপযোগী। মেয়েদের প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া মাতৃত্বের স্বভাব দিয়ে শিশুগঠনের কাজকে এগিয়ে নিতে হবে। শিশু দাওয়াতী কাজের জন্যে অত্যন্ত ধী শক্তি সম্পন্ন জনশক্তি প্রয়োজন। আর বিদায় পদ্বতিটা আমি ঘৃনা করি। কোন ভাই চার্জে থাকবেননা তাই বলে শিশু সংগঠন থেকে দায়ীদের বিদায় দেয়া একটা আত্বঘাতি কাজ । অভিজ্ঞ লোকদেরকে প্রফেশনাল করে ফেলতে হবে।
৪. জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী । ছেলেরা মেয়েদের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে "দ্বীনের কাজ করতে গিয়ে দিলের কাজ হয়ে যাবে" এটা একটা অতি পরিচিত শ্লোগান। কিন্তু আপনাকে চিন্তা করতে হবে দিলের কাজটা যদি ইললিগেল সেক্স বা অবৈধ যৌনতা হয়ে যায় তাহলে জাতির জন্যে সমস্যা বৈকি কিন্তু দিলের কাজটা যদি ইসলামী পরিবার গঠনে কাজে লাগে আমি এতে বারকাতই দেখি। ১৮ উর্ধ্ব ছেলে মেয়েদের একসাথে আন্দোলন কোন থানাতে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করা যেতে পারে। খারাপ উপসর্গ দুরীকরনে গবেষনা হতে পারে। টিচিং মডিউল তৈরী হতে পারে। কিন্তু আজ অসহায়ভাবে দেখি রাজনীতি বিমূখ নারী সমাজ আমাদের ফিউচার আদর্শ মা হওয়ার উপযোগী হয়ে গড়ে উঠছেনা।এর দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব ভয়াবহ। এন্টি ইসলামিক মা'দের সন্তানেরা ইসলামিক কমফোর্ট জোনে বেড়ে উঠবেনা।স্বামীরা পরিবেশ পাবেনা । তাহলে যুবকদের নিয়ে আপনার পরিশ্রম পুরাটাই মোটামুটি পন্ডশ্রম। বিবাহ উত্তর ইসলামিক যুবকের প্রেসারাইজ করা মোটিভেশানে কিছু ইসলামিক নিয়মকানুন মেয়েরা উপর থেকে মেনে নিলেও মন থেকে মেনে নেয়না।ইসলামিক যুবকদের বিয়ে উত্তর নারীদের উপর প্রেসারাইজ করা দাওয়াতকে আমি ভাল চোখে দেখিনা। কারন এই প্রেসারাইজে মেয়েরা আল্লাহকে চিনার চেয়েও ইসলাম নিয়ে ভীত হয়ে পড়ে অনেক বেশী।
মেয়েদের ড্রেসআপ ঠিক করার চাইতে তাদেরকে এখন ইসলামের পক্ষে নিয়ে আসাটা জরুরী। নিকাবের দিকে গুরুত্ব দেয়ার চেয়ে হিজাবের দিকে গুরুত্ব দেয়া জরুরী। বোরকার চেয়েও ফরজ ওয়াজিব হালাল হারাম ইসলামকে চিনিয়ে দেয়া জরুরী। না বোধক মোটিভেশনের চেয়ে পজিটিভ আদুরে মোটিভেশন জরুরী। গম্ভীর ক্রিটিকেল ইসলামী নারী নেতৃত্ব থেকে সফট, হালকা মেজাজের, উচ্ছল, চঞ্চল, স্বামী সন্তানের উপর প্রভাব বিস্তারকারী ,মায়াময়ী ,লাস্যময়ী নারী দায়ী বেশী উপযোগী।
ঠান্ডা মাথায় আমাদের কর্মকৌশলকে রিভাইজ করে দেখতে হবে। অনেক বছর পিছনে ফেলে এসেছি। এন্টি ইসলামিক প্লানাররা বসে নেই। আমরা ওদের কর্মকৌশল দেখে প্রতিরোধ করব এমন কর্মপদ্বতি কৌশলে বিব্রত বোধ করি। বরং আমরা পলিসি থ্রো করব ওরাই ঠেকানোর জন্যে পাগল ও কিংকর্তব্যবিমুঢ় থাকবে এমন পরিকল্পনায় ও কাজে স্বাচ্ছন্দ ফিল করি।
বিষয়: বিবিধ
১৬০২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন