ঢাকার ফ্লাটে ফ্লাটে হয় হরেক রকম নারী নির্যাতন। (সবগুলোই সত্য ঘটনা।)

লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৬:০৬:১১ সন্ধ্যা

১.গত শনিবারে দেখলাম পাশের ফ্লাটের একজন তার প্রেগনেন্ট স্ত্রীকে বেদম পিঠাচ্ছে। দুই জনেই উচ্চশিক্ষিত। চেচাঁমেছি শুনে গেলাম । গিয়ে জানলাম মেয়েটি প্রেগনেন্ট। বিয়ের আগে বলা হয়েছিল ছেলে পক্ষ থেকে মেয়ে হাসবেন্ডের সাথে ঢাকায় থাকবে। বিয়ের তিনমাস পর মেয়ে বায়না ধরে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্যে। শশুর পক্ষের আবদার রক্ষার্থে ছেলে স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়ে আসে। এরপর থেকে ছেলের কথায় কথায় হাত চলে। বিশেষ করে যে দিন গ্রামের বাড়ি গিয়ে ছেলে ফিরে আসে সেদিনই একটা মাইর দেয় বউকে।

মেয়েরা বিয়ের পর কেমন থাকে ইসলামপন্থীরা কি খবর নেয়? সেই মানসিকতা কি তাদের আছে? কই এমন ওয়াজ তো করতে দেখিনা...ওহ... মেয়েদের কথা মনে হলে হয়তো মনের জেনা হয়ে যেতে পারে...তাই এমন ওয়াজ করা হয় না বোধ হয়... এদিকে মাইর খাইয়া মেয়েদের জান যায় যায়...

২. একমেয়ের বিয়ে হয় অনেক আগে। পড়ালেখার জন্যে বাচ্চা নেয় নাই। অনার্স শেষ করে বাচ্চা নেয়। প্রেগনেন্ট হওয়ার খবর শুনে শাশুড়ীর মুখ কালো হয়ে গেল। বলল পাগলেরও বাচ্চা হয়। ছেলে অফিসে চলে গেলে বউয়ের উপরে চলে কটুকথার মানসিক নির্যাতন। মেয়েটিই আবার প্রেগনেন্ট।( মেয়ের অভিভাবক জানাল এই কথা। )

৩. মেয়ের বিয়ে হল ।মেয়ে শশুর শাশুড়ীর সাথে থাকে। জামাই থাকে শহরে। গার্মেন্টসের বড় কর্মকর্তা। সেখানে অন্য মেয়ের সাথে ফুর্তি করে।অন্য মেয়ের সাথে ছবিও তোলে। স্ত্রীর বায়না ধরে সে জামাইয়ের সাথে থাকবে শহরে গিয়ে। খাওয়াতে পারলে খাওয়াবে না পারলে সে কাজ করে খাবে। মেয়ের অভিযোগ তার শশুড়ের চোখ ভালনা। ডিস্টার্ভ করে। ছেলে বউ শহরে নিবেনা । শেষে ডিভোর্স হয়ে যায়। এটার বিচারের সাথে আমিও ছিলাম বলে জানি। (মেয়ের ভাই থেকে জানা)

৪. মেয়ে ইন্টার পরীক্ষাথী। ছেলে বলেছিল বিয়ের পর পড়াবে। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর বলল সংসার করার জন্যে কি এসএসসি থেকে বেশি লাগে? মেয়েটির আর পড়া হয়নি।(মেয়ের আত্বীয় থেকে জেনেছি)

৫. ৯ম শেনীর একমেয়েকে বিয়ে করে জামাই মিডল ইস্ট চলে যায়। সেখানে ১০ রিয়ালের ফুর্তির কথা অনেকেতই জেনে থাকবেন। দেশে এসে মাঝে মাঝে বাচ্চা পয়দা করে চলে যায়। শশুড়বাড়ির লোকদের বউ পছন্দ হয়নি। শেষে টিকস করে ছাড়াছাড়ি করায়া দেয়। (মেয়ের আত্বীয় থেকে জেনেছি)

৬. নাজু নামে একমেয়ের জামাই সেনাবাহিনীর অফিসার। বউ শশুড়বাড়িতে থাকে। একসন্তানের জননী ফুটফুটে এই মেয়েটি কেন আত্বহত্যা করল আমার এখনো অজানা।

(মেয়ের আত্বীয় থেকে জেনেছি)

৭. একমেয়ের জামাই বিদেশ থাকে। মেয়েটি শিক্ষকতা করে নিজের জীবিকা চালায়। জামাই মাঝে মাঝে বিদেশ থেকে এসে মানসিক টর্চার করে আবার চলে যায়। (মুহরেমাতের মাধ্যমে জেনেছি)

৮. একমেয়ের বিবাহ হল । জামাই কোন খোরপোষ দেয়না। খোরপোষ দিতে বললে ছেলেটা উল্টা পাল্টা বলে। ছেলেটা আবার রাজনৈতিক নেতা। (মেয়ের পরিবারে মাধ্যমে জেনেছি।)

৯. একমেয়ে পদার্নশীন ছিল খুব। বোরকা নিকাব হাত মোজা পামোজা সব পড়ত। শশুরবাড়িতে গিয়ে শাশুড়ীর নির্যাতনের মুখে সব ছেড়ে দিতে হয়। শাশুড়ীর এক কথা ...গোড়ামী চলবনা। অবশ্যই মেয়েটা সাজুগুজুতে আনইজি ফিল করত। তবে সমস্যা হল সোনালী ব্যাংকের এই অফিসার স্ত্রেকে কোন মানসিক সাপোর্টই দিতনা। (মুহরেমাতের মাধ্যমে জেনেছি)

১০. একমেয়ের বিয়ে হয় ফাস্টসিকিউরিটির এক অফিসারে সাথে। মেয়ের বাবা প্রাইমারী স্কুলের হেডমাস্টার। বয়স ও ব্যস্ততার কারনে মেয়ে বাড়িতে গিয়ে কম খবর নিতে পারেন। বড় ছেলেও নাই। মেয়ের জেঠাত ভাইকে পাঠানো হল শশুড়বাড়িতে খোজ নিয়ে আসার জন্যে। মেয়ের জামাইয়ের হুকুম গায়রে মুহারিমকে দেখা দেওয়া যাবেনা। দেখা না করে আসতে হল। খোজ নিয়ে জানা গেল জামাই আর শশুড়বাড়ির লোকেরা যতটুকু পারে মানসিক টর্চারের মধ্যে রাখে মেয়েকে। (মেয়ের বাপ থেকে জানা)

১১. মেয়ে দেখল তার জামাই অন্য মেয়ের সাথে শুয়ে আছে। সব দেখেও মেয়ে ম,ুখ খুলতে পারেনা। ছেলে অবৈধ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মুখ খোললে তালাকের হুমকি দেয়।

১২. মেয়ে একজন হাইস্কুল শিক্ষক। ছয় মাস মেটারনিটি লিভ পায়। সন্তান মারা যায় এবং অনেকদিন আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে পানজা লড়ে তিনমান পড়ে স্কুলে হাজির হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ বেতন প্রথম থেকে বন্ধ করে দেয়। যেদিন স্কুলে গেল বেচারী হাটঁতে পারছেনা। তবু প্রধান শিক্ষক তাকে দোতলায় উঠে ক্লাশ করতে বাধ্য করে।

১৩. একমেয়ে ছিল সুন্দরী। তার জন্যে অনেকে প্রার্থী ছিল। বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার পর মেহেদী সন্ধার দিন সশস্ত্র অবস্থায় একছেলে ছেলের বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়ে থ্রেড করে। এই ঘটনায় পুরা দোষটা মেয়ের উপর যায়। এখনো শশুড়বাড়িতে মেয়ের উপর মানসিক নির্যাতন চলছেই।

১৪. ফুফাতো ভাইয়ের সাথে মেয়ে বিয়েতে রাজী। প্রেম না করলেও একে অপরের প্রতি দুর্বল। মা বাপ জোড় করাতে অন্যত্র বিয়ে করে। আগের ঘটনার গ্লানি মেয়েটাকে এখনো তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।

এভাবে অনেক মেয়েদেরকেই শশুড়বাড়িতে গিয়ে বিরুপ পরিবেশের শিকার হতে হয়। এই মানবিক বিষয়ে কাজ করার জন্যে কোন ইসলামপন্থীরই কোন আগ্রহ আছে কি!! সমস্যা নিয়ে কাজ না করেই উনারা ক্ষমতায় যেতে চায়। !!! মেয়েরা দিবে ভোট... বাক্স ফুরায়া দিবে...বসে থাকেন... হা কইরা!!!!

বিষয়: বিবিধ

৪৮৯৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File