প্রিয় সহপাঠী সুপ্তি বিশ্বাস
লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৮:০৭:৫৯ রাত
প্রিয় সহপাঠী সুপ্তি বিশ্বাস ,
সহপাঠী ও মানুষ হিসেবে যতটুক ভালবাসা সম্ভব সবটুকু ভালবাসা তোমার জন্য রইল।
প্রথমেই ক্ষমা চাই যদি ভূল করে থাকি বা ভূল বলে থাকি। তুমি আমার এইচএসসি পড়াকালীন সময়ের বিতর্কসঙ্গী।মনে পড়ে আমরা ইনডোর আউটডোরে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। আমাকে তুমি কলেজে দেখেছ কাছ থেকে । একসাথে একই ব্যাচে প্রাইভেট পড়তাম। আমি তুমি যেই কলেজে পড়তাম সেই কলেজের শিবির সভাপতি ছিলাম আমি। আমার মধ্যে নূন্যতম সাম্প্রদায়িকতা কি দেখেছ তুমি? কলেজে এসে যখন সবাই বান্ধবী খুজে নিয়ে রং ডং এ ব্যস্ত ছিল এই লোকমানকে তখন মেয়েদের সাথে অপ্রয়োজনীয় বাক্যালাপে দেখা যায়নি।
সেই লোকমানের নেতারা সাম্প্রদায়িক হবে আর ৭১ এ এদেশের মাবোনদের ধর্ষন করবে তা কিভাবে সম্ভব? যে নেতারা আমাকে বিয়ে বর্হিভূতভাবে মেয়েদের সাথে অপ্রয়োজনীয় বাক্যালাপ থেকে বিরত থাকতে উদ্বুদ্ধ করত সে নেতাদের কিভাবে খারাপ বলে বিশ্বাস করি???!!!
মিডিয়া বিপক্ষে থাকলে যা ইচ্ছা করা যায়। মিডিয়া গনপিঠুনিতে নিহত ৬ ছাত্রকে ডাকাত বলেছিল । পরে যদি না বলত ওরা ছাত্র তবে আমি তুমি কেহ জানতে পারতামনা। মোল্লা কাদের আর কসাই কাদের এক নয়। বাংলা সিনেমাই দেখনি যে একজনের সাজা অন্যজন ভোগ করছে কারসাজির মাধ্যেমে? এখানে আলীগ সেইরকম একটা ব্যাপার ঘটিয়েছে।
কারন তারা একটা আদর্শিক যুদ্ধের সুত্রপাত করেছে। ৫০০ বছরের বা অসীম সময়ের জন্য চলতে পারে এই যুদ্ধ। কখনো এই পক্ষ জিতবে কখনো সেই পক্ষ জিতবে। এভাবে জীবন মরনের এক অনাকাঙ্খিত খেলা শুরু হয়ে গেল। কেহ শান্তিতে থাকবেনা অনেকদিন অনেক বছর ।হয়ত কয়েক শতাব্দী ধরে চলবে এই লড়াই। জ্বলে পুড়ে ছাড়খার হবে এই ভূখন্ড। ইসলামিস্ট আলীগ বাম সবার সাম্প্রদায়িকতার মাত্রা হয়ে পড়বে ভয়াবহ। অনাগত মারাত্বক আগুনের দাবানল সামনে। মৃত্যু মৃত্যু লাশ আর লাশ দেখতে পাচ্ছি আগামীর দিন গুলোতে। আমি শংকিত। উদ্বিগ্ন। আশাহত ।এই ভূখন্ডের মানুষের মায়ায় অঝোরে ক্রন্দনরত এক মানব সন্তান। তুমি হয়ত বর্তমান সরকারের সমর্থক আমি ইসলামিস্ট। দুই জন দুই মেরুর। আমাদের আন্তরিকতার মধ্যে কোন ঘাটতি কখনো ছিলনা।
সেই আমি গতকাল শাহবাগ ছিলাম সন্ধ্যা ৭.৪৫-৯.৪৫ পর্যন্ত। আজকে শাহবাগের একটি পোস্টমর্টেম রিপোর্ট লিখব আশা করছি। কোন কোন ধর্ম হয়ত কিছু বিশ্বাস এর উপর বেইসড করে এবং হয়ত জীবনের সব বিষয়ে কথা বলেনা। কিন্তু আমি যেটা মানি সেটা তোমার আমার সবার জন্য খারাপ না। অনেক ধর্ম আছে অর্থনীতি , ব্যাংকিং নিয়ে কথা বলেনি বাট আমার ধর্মটি সব বিষয়ে কথা বলেছে । আমার ধর্মের উপানুষ্ঠানিক প্রোগ্রাম গুলো সংখ্যালঘুদের জন্য এপ্লিকেবল না কিন্তু আমার ধর্মের ঈদের সেমাই খেতে যেমন কোন ধর্মানুসারীকে তাদের ধর্ম বাধা দেইনি , মানা করেনি ঠিক তেমনি আমার ধর্মের নির্দেশিত রাজনীতি , অর্থনীতি , ব্যাংকিং , সত্য কথা বলা , আমানতদারীতা , অন্যের উপকার করা ইত্যাদি মানতেও তো কোন ধর্ম বা তোমার ধর্ম মানা করেনি । জীবন থেকে ধর্ম যখন আলাদা হয়ে যায় তখনই অধর্মরা সবার মনে জায়গা করে নেই। আর অধার্মিক হলেই কেবল গুজরাট এর রক্তাক্ত ঘটনা ঘটতে পারে বা রামুর ঘটনা। আর কসাই কাদেরের দোষকে কাদের মোল্লার উপর চালিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে যাবজ্জীবন সাজার রায়ও দিতে পারে আওয়ামী আদালত। একটু চিন্তা কর ধর্ষনের সেঞ্চুরিয়ান জাহাঙ্গীরনগরের মানিক্যাদের গডফাদাররা কত ভয়ংকর হতে পারে। কালোবিড়ালেরা কত ভয়ংকর! যারা পদ্ধাসেতু , হলমার্ক কেলেংকারী করে তারা কত ভয়ংকর হতে পারে? !
এই তারাই আমাদের মত নিরীহ গোবেচারাদের জন্য ট্রাইবুনাল করে তামাশা করছে।
স্বাধীনতাকে যদি ভালবাস অনুপচেটিয়াকে স্বাধীনতা দাও। কাশ্মীরীদের স্বাধীনতার কথাও বল। রেইজ ইউর ভয়েস ফর এনোদার ডিসসিমিলারিটি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড । প্লিজ ! ! !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
চট্টগ্রামের সিটি কলেজ , এমইএস কলেজ , কমার্স কলেজে সোনা ছাত্রলীগের ২ গ্রুপে সশস্ত্র সংঘাত দেখেছ কিন্তু চট্টগ্রাম কলেজে , মহসিন কলেজে দেখেছ ? আইআইইউসির পরিবেশ কোন মেয়ের সম্ভ্রমহানির জন্য সহায়ক মনে হয়েছে কি?
এই প্রতিষ্ঠান গুলোকে যারা শান্তিতে রাখার জন্য আমাদের শিক্ষা দিয়েছে সেই
এই আমি , আমরাই তোমার ও তোমাদের বিবেকের দরবারে হাজির হয়েছি । যে ছেলেটিকে ভদ্র, সত্যবাদী , নম্র , বিনয়ী বানালো যে নেতারা সে নেতারা খারাপ হয় কিভাবে বলতে পার ? তোমার আব্বুকে তুমি যতটুকু জান আমরা আমাদের নেতাদের ততটুকু জানি ও ভালবাসি।
স্রষ্টার শপথ ! এই লোকমান সাক্ষ্য দিচ্ছে কাদের মোল্লারা ধর্ষন করেনি যা তাদের উপর অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
খুশির কিছু নেই বান্ধবী সুপ্তি। যে প্রতিহিংসার আগুন আমি আলীগ ও বামদের মধ্যে দেখেছি আর যে প্রতিরোধের দীপ্ত শপথ আমি শিবিরে দেখেছি তাতে তুমি , তোমার ফুটফুটে ছোট্ট সোনামনিটি আর আমার ও আমাদের অনাগত সন্তানদের জন্য এই বাংলাদেশটি বসবাসের অযোগ্য ও অনিরাপদ হয়ে গেল । সামনে সবার জন্য কঠিন কালো প্রভাত। এই প্রভাতের উজ্জলতা নেই। পাখির কিচিরমিচির ডাকে ঘুম ভাঙ্গবার মত পরিবেশ নেই। আছে রক্ত , স্বজনদের আর্তনাদ , কান্না আর লাশ। স্ত্রী বিধবা হওয়া , সোনামনিগুলো এতিম হওয়া। বোন ভাই হারা হবে, মা ছেলে হারা হবে। তুমি শিবির কে চেনোনা আমি চিনি। এই শিবির পরাজয় মানেনা। জয়ই যার অদম্য নেশা। সামনের মহাসাগরের সকলপানি চুষে নেয়ার এক অদম্য তৃষা আমি তাদের মধ্যে দেখেছি। এরা হল বিড়াল । মায়া দিবে তো লেজ নাড়িয়ে পাশে ঠান্ডা হয়ে বসে থাকবে আর খোচা দিবে তো তোমারেই খামচি দিয়ে রক্তাক্ত করবেই।
সময় থাকতে তরুনদের বাংলাদেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধ করা না গেলে আমরা আবার স্বাধীনতা হারাতে পারি। ৩য় বিশ্ব থেকে ডিমোশন পেয়ে বাংলাদেশ চলে যেতে পারে ৫ম বিশ্বে। অর্থনৈতিক মুক্তি কখনোই আসবেনা। আমার তোমার সোনামনিরা সমাজের অনৈতিকতায় আর অপুষ্টিতে সোমালিয়ান , আফ্রিকান ভাগ্যবিড়ম্বিতদের মত হবে এটা কোনভাবে মেনে নিতে পারিনা।
এসো সুপ্তি এসো হাত মিলায় একটি উন্নত বাংলাদেশ গঠনে । পিছনে নয় সামনে তাকাব , অনৈক্য নয় ঐক্য চাই , যুদ্ধ নয় শান্তি চাই।
তোমার কিশোরী জীবনের সহপাঠী
লোকমান।
বিষয়: বিবিধ
১১৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন