এক পরিচিত তরুনীর সাথে শিবিরমনা তরুনের ফোনালাপ (একটি সত্য কাহিনী অবলম্বনে)
লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ১৮ জুলাই, ২০১৩, ০৩:০৯:২১ দুপুর
(তরুনীর আব্বা বিএনপি ও তরুনী বিএনপি সমর্থক)
তরুনী:হ্যালো আসসালামু আলাইকুম
ভাল আছেন ভাইয়া?
তরুন:হুমম! আলহামদুলিল্লাহ ভাল।
তরুন:তুমি?
তরুনী:ভাল।
তরুনী:ভাইয়া আমনের দলটা শুধু বার বার হরতাল দেয় কেন? ফালতু যত্তসব। পরীক্ষা একটা শুরু হয়েছে মার্চে । এখনো শেষ হতে পারছেনা।
তরুন:আসলেই একটু প্রোবলেম। অন্যায় রায় দিচ্ছে । হরতাল তো একটু দিতেই হয়।
বিএনপিই ভালা। তারা অনেক শান্তি প্রিয়।
তরুনী: দুর! ছাই! এটা একটা হিজরার দল। কোন কামের না। দেশে এত অন্যায় হইল অথচ এরা কিছু করতে পারেনাই।
ছাত্রলীগই ভালা। একটু উৎশৃংখল। পৌরুষত্ব আছে। ছেলেরা একটু উৎশৃংখল না হলেই কি হয়!
তরুন: তাহলে তো শিবিরই ভাল। পুলিশ মাইরা দেয়।
তরুনী: দুর ভাইয়া ! এটা তো যুদ্ধাপরাধীর দল। এটা নিয়া চিন্তা কইরা লাভ আছে?
তরুন: তুমি কি জান যুদ্ধাপরাধ কি?
তরুনী: না ভাইয়া
তরুন : যুদ্ধাপরাধ হল অগ্নিসংযোগ , ধর্ষন , হত্যা, লুটতরাজ। এই রকম কোন বিষয়ের সাথে গোলাম আযম মুজাহিদদের জড়িত করে কোন বিষয় প্রসিকিউশন প্রমানে ব্যর্থ হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী হতে হলে সেনাবাহিনীর সদস্য হতে হয়। বেসামরিক কোন লোক যুদ্ধাপরাধী হয়না।
তরুনী: থাকগে ভাইয়া বাদ দেন। রাজনীতি বুঝিনা।
তরুন: হুমম! আমিও চাইনা রাজনীতি নিয়ে বলতে। কিন্তু তুমি বললে তো তাই।রবীন্দ্রনাথের গানের একটা লাইন বল।
তরুনীঃ কি যে বলেন ভাইয়া আমি গান পারিনা। রবীন্দ্রনাথ নজরুল কিছুই পারিনা।
তরুন: হাবিব ন্যন্সি পার?
তরুনী: না ভাইয়া। তবে বালাম, অর্নব ভাল লাগে। আমি কোন কামের না ভাইয়া । কিছুই পারিনা। খাই,ঘুমাই, অল্প পড়ি, সাজুগুজু, টিভি দেখা ছাড়া কিছুই পারিনা।
তরুন: কো-কারিকুলার একটিভিটিস..এই ধর বই পড়া?
তরুনী: সমরেশ পড়ি।
তরুন: নিঃসন্দেহে সমরেশের পুরনো বই গুলোতে গভীর জীবনবোধ আছে। মানবিকতার ছোয়া আছে।
তরুনী: জ্বী ভাইয়া।
তরুন: তো.....আগামী কাল গোলাম আযমের রায়। কি ভাবছ!
তরুনী: ফাসিঁ ফাসিঁ।
তরুন: ফাসিঁ কেন?
তরুনী: সব রাজাকারের ফাসিঁ হওয়া উচিত।
তরুন: গোলাম আযম তো রাজাকার না।
তরুনী: ছোটকাল থেকে শুনে আসতেছি গোলাম আযম রাজাকার।
তরুন: শুনা কথার উপর ভিত্তি করে ফাসিঁ দেয়া যায় না।সঠিক শাস্তি দিতে হলে প্রমান লাগে। ৭১ এর পত্রিকার রিপোর্টের বিবৃতি পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক আরোপিত তাই পত্রিকার রিপোর্টের নৈতিক ভিত্তি নেই। পাকিস্তানী কারো সাথে দেখা করলেই যদি রাজাকার হয় তবে শেখ সাহেব তো জুলফিকার আলী ভুট্টোকে এদেশে লাল গালিচা সংবর্ধনা দিয়েছেন। রাজাকার ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি অক্সিলিয়ারী ফোর্স। এটা পাকিস্তানের সরকারী প্যারা মিলিশিয়া বাহিনী ছিল। এটাতে গোলাম আযম - মুজাহিদের নাম নাই। তাই বিধি অনুযায়ী ওরা রাজাকার না।
তরুনী: ভাইয়া জানেন ক্যাম্পাসে লীগের পোলা একটা আমারে মারাত্বক থ্রেড দিছে। সরকার চেইঞ্জ হোক। ওরে খবর কইরা দিমু।
তরুন: আমারে নাম ঠিকানা দাও । চবিতে এখনো আমাদের অবস্থান খারাপ না।
তরুনী : না ভাইয়া .যা করুম আমি নিজেই করুম।
তরুন : কি করছিলা?
তরুনী: এক লীগ পুলিশ ভাইয়ার সাথে প্লাট মাইরা আইলাম।
তরুন: ভাল লাগলনা।
তরুনী: বুঝলেননা.!.. আজ বাসায় এক লীগু পুলিশ আসছিল। অনেক হ্যান্ডসাম। চোখে লফর লফর ভাব আছে। লুজ ক্যারেক্টার। চান্দা নিয়া চইলা গেছে।
তরুন: যাও এবার আর্মির লগে প্লাট মার গিয়া। আমারে কল আর না দিলেও চলবে।
তরুনী: আইডিয়া খ্রাব না।
তরুন :রাখছি।
তরুনী : ভাইয়া মাইন্ড খাইয়েননা। আপনি অনেক ঘাটের জল খাইছেন মনে হয়। কথা বার্তা তো দেখি হেভি।
তরুন: একটি ঘাটের জল খেতে চেয়েছি। গিয়ে দেখি ঘাট অন্যের দখলে । আবার খোজ নিয়ে গেলাম অন্য ঘাটের জল খাবার জন্যে। আবার একই দশা। এভাবে চলছে। অনেক ঘাটের জল খেতে চেয়েছি কিন্তু ঘাট গুলো অন্যের অবৈধ ঘেরাওয়ের শিকার। তাই আমি জল খেতে পারিনি।
তরুনী: একজন ঠিক করে রাখলেই তো পারতেন।
তরুন: না ভাইয়া । পড়ালেখার জীবনে প্রেম টাইম কিলিং মেশিন। মধ্যবিত্ত ঘরের উচ্চকাংখী ছেলেদের এই মেশিনে ঢুকতে নেই। আমার ইন্টারের সহপাঠী ও অনার্সের সহপাঠিদের মধ্যে যারা নেশায় পেশায় প্রেমিক ছিল কেহ ভাল রেজাল্ট করতে পারেনি। অবশ্যই যারা প্রেমকে এনজয় হিসেবে নিয়েছে তারা ভিন্ন। আর সমাজনীতি ,রাজনীতি ,পরিবার ,আউটবই পড়া , একাডেমিক পড়া এত কিছুর মধ্যে মেয়ে সাবজেক্টটিকে ছাত্রজীবনে আমি ক্লোজ করে রেখেছিলাম।
তরুনী: তাইলে ঘাটে ঘাটে ঘুরেন।
তরুন: স্রষ্টার উপর আমার বিশ্বাস আছে।
তরুনী: ভাইয়া একটা কথা .... পারলে দলের নামটা চেইঞ্জ কইরেন। ১৯৯১-৯৫ সাল ঐ যে সেই নেতা বাচানোর আন্দোলন।২০০৮-২০১৩ সেই একই বৃত্ত। এবার ইতিহাসের প্যাচকি থেকে বের হয়ে গন মানুষের আন্দোলন করেন। আর কত! পরাজিতদের দলে লোক যেতে চায়না।
তরুন: দীর্ঘশ্বাস ফেলে.... হুমমম..... দেখি.....
বিষয়: বিবিধ
২০৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন