গ্রামবাসীর সাথে আলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় ফটিকছড়িতে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৪০ এর বেশী। প্লিজ সমাজবিজ্ঞানীরা ..একটু ভাবুন...
লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ১৫ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:০১:১২ দুপুর
গত বৃহস্পতিবার ছিল ১১.০৪.২০১৩ তারিখ। দিনটিতে ছাত্রশিবির তাদের কেন্দ্রীয় সভাপতিকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে রিমান্ডে নির্যাতনের প্রতিবাদে হরতাল ডাকে শুরু হয় হরতাল পালন। সকাল ৯ টায় দৈনিক আমারদেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান গ্রেফতার হন। হরতালে ভিন্নমাত্রা আসে। দুপর ১টায় ছিল ফটিকছড়িতে হরতাল বিরোধী মিছিল। জোর যার মুল্লুক তার নীতি দিয়ে স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৮ পর্যন্ত আলীগ ফটিকছড়ির সংসদীয় আসনটি জয়ী হয়ে আসছিল। ২০০৮ সালে ছবি সহ ভোটার তালিকায় দক্ষিন ফটিকছড়ির ভোটার কত আর ২০০১ এ দক্ষিন ফটিকছড়ির ভোটার সংখ্যা কত তা নিয়ে কমপারিজন করলে সত্য বের হয়ে আসবে। আর এলাকাবাসী তো প্রত্যক্ষ সাক্ষী। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মানুষ স্বাধীনতার পরে প্রথম মুক্তভাবে ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়ে ২০০৮ এ নির্বাচিত করে।
সেদিনের সে হরতাল বিরোধী মোটরসাইকেল মিছিল থেকে আল্লামা শফিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ন শ্লোগান দেয়া হতে থাকে। যা সারা ফটিকছড়ির কওমী ব্লকে ছড়িয়ে যায়। উত্তরফটিকছড়ির দিকে মিছিলটি আসতে থাকলে উত্তরফটিকছড়ির একমাত্র কওমী অধ্যুষিত ভূজপুর-কাজিরহাটবাসী আতংকিত হয়ে পড়ে। শুরুতেই উভয়পক্ষের মৃদু ইটপাটকেল ছুড়াছুড়ি তারপর তারপর গ্রাম আক্রমনের গুজব , তারপর কে বা কারা মাইকে ঘোষনা দেয় মুহতামীম হুজুরকে সন্ত্রাসী তৈয়ব (যিনি উত্তর চট্টগ্রামের টপমোস্ট ওয়ান্টেড টেরর)নিয়ে যাচ্ছে তখনই বাজারের লোকজন, মসজিদের মুসল্লি , মাদরাসার ছাত্র , পুরো ২/৩ গ্রামের লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত মোটর শোভাযাত্রাকে আক্রমন করে সব মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দিয়ে আড়াই কিলোমিটার জুড়ে প্যান্ট পরিহিত যাকেই পেয়েছে তাকেই মেরেছে গ্রামবাসী। আওয়ামীলীগের দানবীর, সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্জ্ব রফিকুল আনোয়ারকে গত ২০০৮ এর নির্বাচনের আগে ২০০৮ এর নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম রফিক সাহেবকে অস্ত্র দিয়ে তৎকালীন কেয়ারটেকার সরকারকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে প্রশাসনের মাধ্যমে গ্রেফতার করায় বা ধরিয়ে দেয় বলে জোর গুজব আছে। স্বাভাবিক ভাবেই সোনা রফিকের প্রতি কৃতজ্ঞ উত্তরফটিকছড়ি আলীগ প্রতিরোধ না করে কেহ কেহ সাবেক সন্ত্রাসী পেয়ারু বাহিনীকে প্রতিহত করতে গ্রামবাসীর সাথে লেগে যায়। তাই বাংলাদেশের ইতিহাসে নির্মম ও ব্যতিক্রম এতবড় একটি ধ্বংসযজ্ঞ সংঘটিত হল।
যে প্রশ্নগুলো আমাকে ভাবাচ্ছে তা হল:
১. কেন হরতাল বিরোধী জঙ্গী মিছিল বের করা হল?
২.কেন জনপ্রিয় নেতা রফিকের মৃত্যুর পরে পেয়ারু সাহেব সাবেক রফিক ভক্তদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করছিলেন?
৩. কওমীদের থেকে ঘোষনাই ছিল তারা মাহমুদুর রহমানের গ্রেফতার মেনের নিবেনা। তবুও কেন মিছিল বের করা হল?
৪.বাংলাদেশের সকল জায়গায় পুলিশ প্রটেকশনে আলীগের মিছিল চললেও এখানে কেন পর্যাপ্ত পুলিশ প্রটেকশন নেয়া হয়নি? তাইলে কি পেয়ারু সাহেব নিজের দলের লাশ ফেলে সামনের নির্বাচনে জেতার গ্রাউন্ড তৈরী করতে চেয়েছিলেন?
৫.তৈয়বের মত সন্ত্রাসী নিয়ে কেন পেয়ারু সাহেব উত্তর ফটিকছড়িতে গেলেন যেখানে তৈয়ববাহিনীর হাতে অসংখ্য যুবক খুন হয়েছে ,মাবোন ধর্ষিতা হয়েছেন , অনেকেই কিডন্যাপ হয়ে এখনো ফিরেননি, কত চাদাঁবাজি হয়েছে তা নাই বললাম। যে তৈয়ব বাহিনী উত্তরফটিকছড়ির জনপ্রিয় ছাত্রলীগ নেতা নেতা টিপু ও ফটিকছড়ি থানা আলীগ সভাপতি জহুরুল হকের খুনী। সে উত্তর ফটিকছড়িবাসী কোনভাবেই পেয়ারুকে মেনে নেবেনা যদি সন্ত্রাসী তৈয়ব সহযোদ্ধা থাকে। আলীগের ধারাবাহিক জনবিরোধী কার্যক্রমের কারনে গনমানুষের ক্ষোভের বিস্ফোরন হয়েছে।
ক্ষোভের বিস্ফোরনোত্তর চলছে ধরপাকর। ইতিমধ্যে যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ডিসির উপস্থিতিতে ও পুলিশ সহযোগিতায় রাত ১১টা পর্যন্ত মারামারি দমনে কাজ করেছেন তাকে ডিসি মহোদয় যাওয়ার সময় গ্রেফতার করে নিয়ে গেলেন হাটহাজারী থানায় যেখানে তার হাত পা নির্মমভাবে ভেঙ্গে দেয়া হয়। যিনি কাজিরহাট কওমী মাদরাসার মুহতামীমকে দিয়ে মাইকে ঘোষনা দেয়ান যে তিনি ভাল আছেন ও সুস্থ আছেন তার কিছু হয়নি। যা উত্তেজনা প্রশমন করে। তাকে করা হল মামলার একনম্বর আসামী। ফটিকছড়ি থানার জনপ্রিয় উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান মাওলানা নুরমোহাম্মদ আলকাদেরী থানা সদরে ঐদিন থানা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে পুরোদিন প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত ছিলেন তাকে করা হল ২নং আসামী আর সর্বজন শ্রদ্বেয় বৃদ্ধ জামায়াত নেতা ,শ্রেষ্ট চেয়ারম্যান হিসেবে আলীগের বর্তমান আমলে রাষ্ট্রীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত মাওলানা হাবীব আহমদকে করা হয়েছে ৩নং আসামী যিনি শহরেই থাকেন অসুস্থ শরীর নিয়ে।
ঘটনা করল কারা আর মামলা দেয়া হয়েছে ফটিকছড়ির সকল গ্রামের জামাত নেতাদের বিরুদ্ধে। সকল গ্রাম আজ পুরুষ শুন্য। চলছে গ্রেফতার বানিজ্য।নিরীহ ৫০০ এর মত মানুষ গ্রেফতার করে টাকা লেনদেনের মাধ্যমে থানা থেকে ছাড়া হচ্ছে।
এভাবে ফটিকছড়ির সাধারন মানুষকে আরো খেপানো হচ্ছে সুকৌশলে। যা ভোটের রাজনীতিতে আরো প্রকটভাবে দেখা যাবে। জনগনকে ক্ষেপিয়ে কি সাধারন আলীগদেরকে নির্যাতন করার পরিবেশ তৈরী করছে আলীগের ভিতরে থাকা কেউ?
বিষয়: বিবিধ
২০৫৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন