বিশ ত্রিশ বছরের ভিতর ইসলামী বিপ্লব করার আশার ঘুর্নিপাকে "জামায়াতে ইসলামী"...
লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ০৪ এপ্রিল, ২০১৩, ০৫:১১:০৩ বিকাল
আমার আব্বু যখন ছাত্রসংঘ করতেন তখন উনাদের বলা হয়েছিল এইতো "২০ / ৩০ বছরের ভিতরে ইনশাআল্লাহ আমরা এদেশের ক্ষমতায় গিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করব"। আবার আব্বু যখন ১৯৮৫ সালে রাউজান থানা নাজেম তখন উনারা দাওয়াতী কাজ করতেন বা উনাদের আশা দেখানো হয়েছিল "২০ / ৩০ বছরের ভিতরে ইনশাআল্লাহ আমরা এদেশের ক্ষমতায় গিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করব"।
আবার আমি যখন ১৯৯৫ সালের ১১ ই মে ছাত্রশিবিরের সমর্থক হয়েছি সে সময়ে আমাকে বলা হয়েছিল "২০ / ৩০ বছরের ভিতরে ইনশাআল্লাহ আমরা এদেশের ক্ষমতায় গিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করব।" আবার আমি যখন ২০০৪ এ সদস্য হচ্ছিলাম তখনো আমাকে বলা হয়েছিল "২০ / ৩০ বছরের ভিতরে ইনশাআল্লাহ আমরা এদেশের ক্ষমতায় গিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করব।"।
আমি যখন ছাত্রসংগঠন থেকে ২০১১ সালের ২রা জানুয়ারী বিদায় নিচ্ছি তখনও "২০ / ৩০ বছরের ভিতরে ইনশাআল্লাহ আমরা এদেশের ক্ষমতায় গিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করব" এমন শ্লোগান শুনেই বিদায় নিছি। আজ যারা ১৫ বছর বয়সে সমর্থক হচ্ছে সেও শুনছে "২০ / ৩০ বছরের ভিতরে ইনশাআল্লাহ আমরা এদেশের ক্ষমতায় গিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করব।"।
১৫ বছর বয়সী আজ যে সমর্থক হল সে যখন দেখবে তার ত্রিশ বছর বয়সেও ২০/৩০ বছরের আশার শ্লোগানটি রয়ে গেছে তখন সে হতাশ হয়ে ইসলামী আন্দোলন থেকে নিষ্ক্রিয় হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
দেখুন "২০ / ৩০ বছরের ভিতরে ইনশাআল্লাহ আমরা এদেশের ক্ষমতায় গিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করব।" এই দৃষ্টিভঙ্গীর ২ টি দিক।
১."২০ / ৩০ বছরের ভিতরে ইনশাআল্লাহ আমরা এদেশের ক্ষমতায় যাওয়া।
২. ক্ষমতায় গিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা।
জামায়াতে ইসলামীর সাথে অন্যদলগুলোকে কমপেয়ার করে দেখেছি জামায়াতে ইসলামীতে প্রচুর যোগ্যতা সম্পন্ন লোক রয়েছে অথবা জামায়াতে ইসলামীর শুভাকাঙ্খী মহলে প্রচুর যোগ্যতা সম্পন্ন লোক আছে। কিন্তু যোগ্যতা সম্পন্ন লোক না থাকার দোহাই দিয়ে যেভাবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে হযরত উমরের (রা এর মত লোকদেরকে শুভাকাঙ্খীমহল থেকে তুলে আনা হয়নি ঠিক তেমনি দিনের পর দিন হীনমন্যতায় ভোগছে উল্লেখ যোগ্য জনশক্তি "এখনো লোক গঠন "হলনা বলে। শেখ মুজিব ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭২ সালের ১০ ই জানুয়ারীর ভিতরে একটি বিপ্লব করে দেখিয়ে দিয়েছেন।বিপ্লবের জন্য সব লোককে টার্গেটকৃত দাওয়াতী কাজের আওতায় আনা হয়নি। পরবর্তী কিস্তিতে টার্গেটকৃত দাওয়াত নিয়ে লেখার আশা রাখছি।
ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আমরা ১০ বছরের প্লান কেন করিনা বা প্রধান বিরোধী দল হওয়ার জন্য ৫ বছরের কেন প্লান হয়না বুঝিনা।মনে রাখতে হবে বেশীরভাগ জনশক্তির বিপ্লবের ইমোশান ঐ ত্রিশ বছরই লাস্টিং করে।
২য় বিষয় হল ক্ষমতায় গিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা ।
লক্ষ্য রাখতে হবে " ক্ষমতায় যাওয়া হয়ত সম্ভব কিন্তু ইসলাম প্রতিষ্ঠা হওয়ার জন্য আল্লাহর সিদ্ধান্ত থাকতে হবে। আর এটি লং প্রসেজ। ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অনেক ধাপ পার হওয়ার জন্য ইসলামী আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করার মত মনমানসিকতা তৈরী করতে হবে।
একটাই দাবী ২০/৩০ বছরের ইসলাম প্রতিষ্ঠার আশার বৃত্তবন্দী অবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি ঘটুক। শর্ট প্লান করার মত পরিবেশ আছে , জনশক্তিও আছে কিন্তু নেতা নেই। আত্ববিশ্বাসী নেতার বড়ই অভাব। এক আল্লামা সাঈদী জন্য যে পরিমান শাহাদাত হয়েছে সে পরিমান শাহাদাতের নজীর ৫/১০ বছরের ভিতর পেশ করার মানসিক শক্তি তৈরী করতে পারলে আলীগ বিএনপির ভঙ্গুর সাংগঠনিক কোয়ালিটির সময়ে ইসলামী শক্তি দিয়ে বাংলাদেশ শাসন করা সম্ভব। ইসলাম বিরোধীদের হাতে মার না খেয়ে সকল ইসলামী শক্তির ঐক্য তৈরী করার জন্য যে কোন ত্যাগ স্বীকার করা অনেক ভাল।
অবশ্যই ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাত্রিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক আক্রমন হওয়ার ফলে ইপিআর ,রাজারবাগ, ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয় ও তার আশে পাশে লাশের স্তুপ আর বাসী লাশের পচাঁ গন্ধ সামনে নিয়ে যারা পাকিস্তান সেনা বাহিনীকে সমর্থন দিয়েছিল তাদের থেকে দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তনের আশা আমি করিনা। আল্লাহর ভয়ে ভীত না হয়ে ভারত জুজুর ভয়ে অখন্ড পাকিস্তানের সমর্থক ৭১ এ পরাজিত দলের কোন নাম এদেশে বিদ্যামান থাকুক তা আমি এদেশের কোটি তরুনের মত ঘৃনাভরে চাইনা। কারন সংগঠন নয় , সংগঠনের নাম নয় আমি শুধু ইসলামকেই ভালবাসি।
বিষয়: বিবিধ
১৪২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন