সরকার জামায়াত-শিবিরকে উষ্কে খুন খারাবীতে নিয়োজিত করতে চায়! ফলে এই মুহূর্তে জামায়াত শিবিরের কর্তব্য কি?
লিখেছেন লিখেছেন বিবেক ০৩ নভেম্বর, ২০১৪, ১১:৩২:২৫ সকাল
দুই দিন আগেই পোষ্ট দিয়েছিলাম যে, কামরুজ্জমান সাহেবকে সরকার ফাঁসিতে ঝোলাতে যাচ্ছে শুধুমাত্র জেদের কারণে। সেই মৃত্যুর দিন ক্ষণ নির্ধারণে সরকার যে এত তাড়া হুড়ো করবে সে তথ্য জানা ছিলনা। তবে সরকারের তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে সেই কথাটি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা হল যে, সরকার জেদের কারণে যে, বেসামাল হয়েছে সে কথাটা ভিত্তিহীন নয়। জামায়াতের বারবার হরতালে সরকারের জেদ বেড়েই চলেছিল, এই সব হরতালে জে,এস,সি ও জে,ডি,সি পরীক্ষা স্থগিত কিংবা পেছানোর কারণে দেশের মফস্বলেও প্রভাব পড়েছে এটা সরকারের জন্য বড় বিব্রতকর হচ্ছে। ফলে জেদের মাত্রাও ক্ষণে ক্ষণে বেড়ে চলেছে।
সরকার এসব ইসলামী নেতাকে একে একে এভাবে হত্যা করে ভারতের প্রতি বিশ্বস্ততাকে গভীর করতে চায়। বামপন্থী কিছু মানুষের উৎসাহে গতি আসবে কিন্তু আওয়ামীলীগের দলীয় ফায়দা মোটেও সৃষ্টি হবেনা। কেননা জামায়াতের মুল জনশক্তিকে কবজা করতে না পারলে এভাবে নেতা মেরে গতি আনা সম্ভব নয়। আওয়ামীলীগের জন্য দুর্ভাগ্য যে, জামায়াতের মত একটি বেয়াড়া দলকে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে। লোভ, টোপ, উপঢৌকন, ভয়, ভীতি, আতঙ্ক, জেল, জুলুম, হত্যা কোনটাতেই কাজ হচ্ছেনা। এটাতেই আওয়ামীলীগ পর্যদুস্থ হয়ে পড়েছে।
শেখ সেলিম যে নেত্রীর আচলের নীচে দাঁড়িয়ে, সময় সুযোগ পেলেই খালেদা জিয়াকে অগ্নি ভাষায় হুমকি দেয় কিন্তু সেই শেখ সেলিম মইন-ফখরুর আমলে গরম ডিমের ভয়ে সেই নেত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে চিন্তা করেনি। আওয়ামীলীগ বিএনপি নেতাদের হুড়োহুড়ি পড়েছিল কার আগে কে গিয়ে দল ও নেতা বিরুদ্ধে বলে আসতে পারে। এই জায়গায় জামায়াতের দৃঢ়তা সরকারকে আরো অত্যাচারী হতে বাধ্য করেছে। শত শত কর্মী মারা গেল, হাজার হাজার নেতা কর্মী জেলে গেল, হাজার হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করল! তাদের একজন মানুষও নিজ দলীয় নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হলনা, এটা একটা বিস্ময়কর ও বিরল ঘটনা! একজন সাধারণ পাঠক কিংবা মানুষের কাছে এই কথার কোন গুরুত্ব নাই কিন্তু সরকারের কাছে এই দৃঢ়তার যথেষ্ট গুরুত্ব আছে।
তাই সরকার একে একে এভাবে জামায়াত নেতাদের উল্লাস করে হত্যা করার মহরত চালু করেছে। সরকার বুঝে নিয়েছে জামায়াত-শিবিরকে টোপ, প্রলোভন, লোভ, ভীতি লাগিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাবেনা। সে হিসেবে সরকারের কাছে আরেকটি সুন্দর পথ বাকী থাকে, সরকার চায় জামায়াত শিবির সেই রাস্তাটি সহজে বাছাই করে নিক। তাহলে সরকারের ষোল কলা পূর্ণ হবে এবং তাদের ক্ষমতাকে আরো দীর্ঘতর করা যাবে।
সরকারের আকাঙ্ক্ষিত সেই রাস্তাটি হল, সরকার চায় তাদের নেতাদের ফাঁসিতে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে জামায়াত-শিবির যেন আওয়ামীলীগদের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা হত্যায় মেতে উঠে। অন্তত কিছু হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িয়ে ফেলুক। তাই এই কঠিন সময়টি জামায়াত-শিবিরকে, যতই কঠিন ও বর্বর হোক না কেন, ঠাণ্ডা মাথায় পার করতে হবে।
কেননা মুসলমান এই কথায় ইমান আনে যে, জীবন মৃত্যুর ফায়সালা আল্লাহর হাতে। কে কখন, কোথায়, কিভাবে মরবে তা আল্লাহ আগেই নির্ধারণ করে রেখেছে! সুতরাং জামায়াত নেতাদের এভাবে শহীদ হয়ে মৃত্যু বরণ করতে হবে এটা আল্লাহর ফায়সালা ছিল। এটা হল ইমানের দিকের ব্যাখা। তাছাড়া এ ধরনের মৃত্যুর বিরুদ্ধে জামায়াত শিবির তো তাদের সাধ্যমত বৈধ উপায়ে সর্বোচ্চ প্রতিবাদ করে যাচ্ছে, সাহসিকতার সহিত আইনি লড়াই করে যাচ্ছ, আন্তরিকতার সাথে কর্মীরা নিজের পকেটের টাকা খরচ করে দলীয় কাজে লেগে রয়েছে, সর্বোপরি জামায়াত-শিবিরের সুধী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা যথাসাধ্য সহযোগিতা করে যাচ্ছে। যারা প্রবাসে থাকে, তারাও বসে নেই, নিজ স্থানে দাড়িয়ে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা তারাও করে যাচ্ছে।
আজকের এই দিনটি খারাপ গেলেও, জামায়াত-শিবিরের জন্য উপরে বর্ণিত কাজগুলো আগামী দিলে ভাল ফল দিবে। দেশের অসহায় ও হতভাগা মানুষদের জন্য যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে। মানুষ ইতিমধ্যে বুঝতে শিখেছে নারীর হাতে ক্ষমতা গেলে, তারা জনগণকে সতিন মনে করে কিভাবে জনপদকে বিপযস্থ করে। সুতরাং এই কঠিন পরিস্থিতি ঠাণ্ডা মাথায় মোকাবেলা ব্যতীত কোন উত্তম পন্থা এই মুহূর্তে নাই। এই কথা শুনতে যত কষ্ট ও কঠিন মনে হোক না কেন এটাই হবে প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার পথ।
পিতার নিশ্চত মৃত্যু জেনেও কামরুজ্জমান সাহেবের ছেলের মন্তব্যটি দেখলে বুঝা যায় তিনি কতটুকু দূরদর্শীতার পরিচয় দিয়েছেন, তাঁর মন্তব্যটি দেখুন,
এটা আমার এবং আমার পরিবারের জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ সময় এবং জামাতের সাথে সংপৃক্ততার জন্য এখনও আমরা গর্বিত। কাল যাই হোক না কেন, আমি এই সংগঠনটির সকল নেতা কর্মীদের এ পর্যন্ত তাদের শর্তহীন সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। ২০১০ থেকে ৩৫০ জনের বেশী সাহসী মানুষ এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামিলীগের কবল থেকে আমার বাবা এবং অন্যান্য জামাত নেতাদের রক্ষার জন্য তাদের জীবন দিয়েছেন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের এই ত্যাগ এবং শাহাদাত কবুল করুন। আমি আরও ধন্যবাদ জানাতে চাই বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যে অবস্থিত আমাদের আইনি সহায়তা প্রদানকারী দলগুলোকে। এমনকি এই দলের একজন শিক্ষানবিশ আমার বাবাকে রক্ষা করার জন্য যা করেছে, সন্তান হয়েও আমি তা করতে পারতাম না।
আমি আমার ফেসবুক এবং এর বাইরের সমস্ত বন্ধু, যারা এই অবিচার এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন তাদের সবাইকে একটি সনির্বন্ধ অনুরোধের মধ্য দিয়ে নোটটি শেষ করব। আজকে আমার বাবা এবং তার সহকর্মীরা নির্যাতিত হচ্ছে, কাল নির্যাতিত হতে পারে আপনারই প্রিয় কেউ। সে কারণেই আমাদের প্রতিবাদগুলোকে শক্ত পদক্ষেপের সাথে সঙ্ঘবদ্ধ করা অত্যন্ত জরুরী।
আগের লিখাটি এই শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল 'শেখ হাসিনার জেদের রাজনীতি! কয়েক দিনের মধ্যেই জামায়াত নেতা কামরুজ্জমান খুন হতে যাচ্ছেন'! দেখে নিতে পারেন।
বিষয়: বিবিধ
২৭৩৭ বার পঠিত, ২৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নিজের পক্ষে গেলে আডালট নিরপেক্ষ,আর বিপক্ষে গেলে মোটিভেটেড,
জামাতের উপর আল্লাহর গজব পড়ছে,ইসলামের অপব্যখ্যা করার জন্য।
মাইরেও জেতবেন কাইন্দেও জেতবেন ?
উমাইয়া শাসনামলে বহু সাহাবায়ে কেরামগনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছিল,কই অন্য সাহাবারা হরতাল,ভাংচুর করেন নাই।এত বড় জুলুম এর পরেও ধর্য্য ধরেছেন , এটাই ইসলাম। আপনারা আওয়ামীলিগ বিএনপির মত স্রেফ ভন্ড রাজনৈতিক দল
ইসলামের অপব্যাখ্যা করলে জামায়াতের এই দূরাস্হা হতোনা। বরং নাস্তিক্যবাদী, ভোগবাদী, ধমনিরপেক্ষতাবাদী সবার কাছে আদরণীয়ই হতো। আপনাদের মনে থাকতে পারে শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের আমলে ঢাকার বখশীবাজারে অবস্হিত কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাদিয়ানীদের পক্ষ নিয়ে বলেছিলেন খোদার উপর খোদগিরি করা হচ্ছে কেন।কে মুসলীম, কে অমুসলীম সেটা আল্লাহ দেখবেন। এদিকে বাংলাদেশের নাস্তিকগং ও তথাকথিত সুশীল সমাজ, মানবাধিকার কমীদেরও দেখা যায় কাদিয়ানীদের পক্ষ নিতে। বিদেশী মোড়লরা তো আছে। এসব খাতিরের মূলে রয়েছে ইসলামের বিকৃতি। যা কাদিয়ানীরা বহন করছে। হাদীস শরীফের কথা কারো প্রতি অন্যায় জুলুম দেখেও চোখ বুজে থাকেন কিংবা মজা পান মনে রাখবেন এরচাইতেও কঠোর বিপদ আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে। ইসলামের অপব্যাখ্যা করলে জামায়াতের এই দূরাস্হা হতোনা। বরং নাস্তিক্যবাদী, ভোগবাদী, ধমনিরপেক্ষতাবাদী সবার কাছে আদরণীয়ই হতো। আপনাদের মনে থাকতে পারে শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের আমলে ঢাকার বখশীবাজারে অবস্হিত কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাদিয়ানীদের পক্ষ নিয়ে বলেছিলেন খোদার উপর খোদগিরি করা হচ্ছে কেন।কে মুসলীম, কে অমুসলীম সেটা আল্লাহ দেখবেন। এদিকে বাংলাদেশের নাস্তিকগং ও তথাকথিত সুশীল সমাজ, মানবাধিকার কমীদেরও দেখা যায় কাদিয়ানীদের পক্ষ নিতে। বিদেশী মোড়লরা তো আছে। এসব খাতিরের মূলে রয়েছে ইসলামের বিকৃতি। যা কাদিয়ানীরা বহন করছে। হাদীস শরীফের কথা কারো প্রতি অন্যায় জুলুম দেখেও চোখ বুজে থাকেন কিংবা মজা পান মনে রাখবেন এরচাইতেও কঠোর বিপদ আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7238
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7238
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> রায়হান রহমান লিখেছেন :এই দুই শব্দের মন্তব্য দিয়েই তো ব্লগিং জীবন পার করলেন! আপনার মন্তব্যের কোন মূল্যায়ন কি আদৌ হয়েছে?
এত মন্তব্য করেন কিন্ত বেশী মন্তব্যকারী হিসেবে লিষ্টে নাম থাকেনা কেন এটা অনেকেই খেয়াল করে! নিজেকে চালাক মনে করেন বটে কিন্তু অন্যরা যে বোকা নয়, সেটা তো বুঝতে পারেন না। তার পরও ধন্যবাদ।
দেশবাসীর কাছে ৭১ এ কৃত পাপের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে ।
না হলে সামনে আরও হাঁপানী আসছে । সেক্টর কমান্ডাররা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার জন্য লেগে গেছে । দেশবাসীর সমর্থনও যে এতে থাকবে তা তো বলাই বাহুল্য ।
এবার তোর কি হবে রে জাশি ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন