আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি মার্কা জাতীয় সঙ্গীত রচয়িতা হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

লিখেছেন লিখেছেন বিবেক ১০ মে, ২০১৪, ১১:৩১:০৪ সকাল



রবী ঠাকুরের আমার সোনার বাংলা....... গানটি শুনে এবং গেয়ে, সবাই ধারনা করেন তিনি বুঝি বর্তমান বাংলার মানুষের প্রতি খুবই অনুরক্ত ছিলেন। ব্যাপারটি মোটেও তা নয়, কিঞ্চিত পরিমানও সত্যও নয়।

পাকিস্থানের স্বপ্ন দেখা হয়েছিল ১৯৩৭ সালে, বাংলাদেশের স্বপ্ন ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাত্রেও দেখা হয়নি! তাহলে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৮ সালে এই বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন কিনা প্রশ্নটি তোলা মানেই বোকামী ও হাস্যকর! তাহলে স্বভাবতই একটি প্রশ্ন উঠে, তিনি কোন বাংলার জন্য কেঁদেছিলেন? যেখানে কবি নিজেই পাকিস্থান জন্মেরও ৭ বছর আগে তথা ১৯৪১ সালের ৭ই আগষ্ট মৃত্যু বরণ করেন। যখন বাংলাদেশ নামক কোন বস্তুর স্বপ্ন দেখা অলীক কল্পনা ছিল। যখন ভারত আর পাকিস্থান নামেই কোন রাষ্ট্রের জন্ম হয়নি!

মূলতঃ ১৯০৫ সালে তদানীন্তন বৃটিশের ভাইসরয় ঘোষনা করেন, রাষ্ট্রিয় কাজের সুবিধার্থে তথা পূর্ব বঙ্গের মানুষের সুবিধার্থে বঙ্গকে ভেঙ্গে দুভাগ করা হবে। পূর্ব বঙ্গ ও পশ্চিম বঙ্গ। ঢাকা হবে পূর্ববঙ্গের প্রধান কেন্দ্র। এটি কোন স্বাধীনতা কিংবা স্বায়ত্বশাসন ছিলনা, সেরেফ রাষ্ট্রিয় কাজের সুবিধার্থে এই পৃথকিকরণ। তদানীন্তন বাংলার মানুষ শিক্ষা, চিকিৎসায় পিছিয়ে ছিল। তারা সবাই ছিল চাষা; তাদের উৎপাদিত পাট, চা, বেত কাঁচামাল হিসেবে তৈরী হত এবং তা কলিকাতার মিলে প্রক্রিয়াজাত হয়ে বিদেশে রপ্তানী হত। এসব শিল্প কারখানায় কলিকাতার অভিজাত হিন্দুরা চাকুরী করত। তাদের সন্তানেরা সেখানে লেখাপড়া করে মানুষ হত। অপরদিকে বাংলার চাষারা ছোটখাট মারামারি করলেও কলিকাতা হাইকোট পর্যন্ত ছুটতে হত, এতে তারা গরীবই থেকে যেত। সাধারন একটা পুস্তিকা কিংবা বিয়ের কার্ড ছাপাতে সদূর সিলেট-চট্টগ্রামের মানুষকে কলিকাতা পর্যন্ত ছুটতে হত। এতে কলিকাতায় একটি হিন্দু আইনজীবি শ্রেনীও গড়ে উঠে। যার খদ্দের ছিল বাংলার অভাবী লোকজন। তাই দেশ ভাগ হলে তাদের ভাতের অভাবে মরার ভয় ছিল।

রবী ঠাকুরের দুঃচিন্তা ছিল সবচেয়ে বেশী । কারন তারা ছিলেন পশ্চিম বঙ্গের মানুষ; আর দেশ ভাগ হলে, তাদের জমিদারী পড়ে যাবে পূর্ব বঙ্গে তথা বর্তমান বাংলাদেশে। এতে করে পশ্চিম বঙ্গ থেকে, পূর্ব বঙ্গে গিয়ে প্রশাসনিক খবরদারী করার অতীত খায়েশ বন্ধ হয়ে যেত! তখন তাকে জমিদারী চালাতে পূর্ব বঙ্গের নিয়ম কানুন মেনে চলতে হত। ফলে তার জন্য দুটি পথ খোলা থাকে। হয়ত জমিদারী বিক্রি করতে হবে, নয়ত পূর্ব বঙ্গে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে হবে। এই দুইটির একটি করাও তার জন্য অসম্ভব ছিল। ফলে তার চরম স্বার্থহানীই তার জন্য দুঃখের কারন হয় এবং হৃদয়ে আচানক বাংলার মায়া উৎড়ে উঠে! শুরু হয় চড়া গলায় পেরেশানী। এই হতাশায় তিনি বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হবার ৬৩ বছর আগে, তথা ১৯০৮ সালে রচনা করেন, আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি....।

যে গানের সূত্রপাত হয়েছিল পূর্ব বঙ্গের মানুষদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য।

যে গানটি রচনা করা হয়েছিল কবি পরিবারের জমিদারী টিকিয়ে রাখার জন্য।

যে গানটি রচনা করা হয়েছিল, রক্তচোষা জমিদারের স্বার্থ সংরক্ষনে।

সেই গানটিই হয়ে গেল আমাদের জাতীয় সঙ্গীত! অর্থাৎ জোতার মালা গলায় নিয়ে, জাতির গুনকীর্তন! এটি ইতিহাসের সেরা তামাশার একটি?


আফসোস আমাদের সরকার গুলো এর কোনটাই মূল্যায়ন করেনি। আওয়ামীলীগ সরকার জানে এই গানটি খুবই ঠুনকো ঐতিহাসিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। ভবিষ্যতে এই গান কে কেন? কোন মতলবে জাতীয় সংগীত বানানো হয়েছে সেসব কথা উঠবে ফলে গানের ও গুনের অস্থিত্ব বিপন্ন হবে। তাই আওয়ামী সরকার ২০০৮ সালে নিজেদের ক্ষমতা ব্যবহার করে সংসদে বিল আকারে সেটাকে রক্ষা করেছেন!

সরকারী সেই বিলে এই গানটি রক্ষায় যে কঠোরতা আরোপ করা হয়েছে, কোরআন হাদিসের মান রক্ষার জন্যও পুরো জাতি এত কঠোর হয়নি!

যেমন,

এই গান নিয়ে আইনগত প্রশ্ন তোলা যাবেনা!

গানটিকে কটাক্ষ করা যাবেনা!

গানটির ঐতিহাসিক ভিত্তি নিয়ে হাসি তামাসা করা যাবেনা!

গানটির স্থলে অন্য গান প্রতিষ্ঠিত করা যাবেনা!

সে গানটিকে যথাস্থলে রেখে আরেকটি জাতীয় সংগীতও যোগ করা যাবেনা!

করা হলে সেটি হবে রাষ্ট্ববিরোধী কর্মকান্ড এবং সেই ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ফাসানো হবে।

আওয়ামীলীগের দাদার দেশ ভারতেও একাধিক জাতীয় সংগীত রয়েছে, যার যেটা ইচ্ছা সেটা গাইতে পারে, তবে বাঙ্গালের দেশে সে ধরনের আগ্রহ প্রকাশ ও রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে বিবেচিত হবে!

রবী ঠাকুরকে তার বংশধরেরা যতটুকু দেয়নি, তার চেয়ে ঢেড় বেশী দিয়েছে আওয়ামীলীগ সরকার। কাউকে সম্মান দিতে বাংলাদেশের কোন মানুষের অাপত্তি থাকার কথা নয়, তবে এই সংগীতের চেয়ে অনেক উন্নত, অনেক মানবিক গুন সম্পন্ন সংগীত বাংলাদেশের কবি সাহিত্যিকেরা রেখে গেছেন, সেখান থেকেও কোন একটিকে অতিরিক্ত জাতীয় সংগীত হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হোক। তখন বাংলাদেশের মানুষ বাছাই করবে রবীর গান চাই না কবির গান চাই। মানুষের হাতে বিচারের ভান ন্যস্ত করা হউক।

বিষয়: বিবিধ

৪২৭৬ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

219745
১০ মে ২০১৪ দুপুর ১২:০৬
নীল জল লিখেছেন : আপনি কিন্তু পরোক্ষ ভাবে আমাদের দেশকে অপমান করলেন
১০ মে ২০১৪ দুপুর ১২:০৯
167494
বিবেক লিখেছেন : আমি কোথায় অপমান করলাম! তিনি যা করেছেন আমি তা লিখেছি। কেউ কিছু করে গেলে তা বলার নাম কি অপমান হয়? তাহলে যত ইতিহাস আছে সবই অপমান করা হয়েছে। আমি সত্য কথাটি লিখেছি, যা ইতিহাসের পাতায় করুন চোখের পানিতে লিখিত আছে।
219747
১০ মে ২০১৪ দুপুর ১২:১২
বিবেক লিখেছেন : 'হারিয়ে যাবো তোমার মাঝে'
ব্লগারের মন্তব্যের উত্তর দিতে গিয়ে মন্তব্যটি মুছে ফেলেছি, আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
219755
১০ মে ২০১৪ দুপুর ১২:২৮
১০ মে ২০১৪ দুপুর ১২:৩২
167517
বিবেক লিখেছেন : সম্ভবত আপনি লিখেছিলেন আমি ঠাকুরের গায়ের পশমের সমনা হব কিনা? আগামী পর্বে ঠাকুরের গায়ের পশমের মর্যাদা নিয়ে একটি সুন্দর ঘটনা আছে সেটিই উল্লেখ করব। সেখানে উত্তরটা পেয়ে যাবেন। অনেক ধন্যবাদ।
219782
১০ মে ২০১৪ দুপুর ০১:০৪
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : রবীন্দ্রনাথের চটি জুতো চিবিয়ে খা........ @ ছাগু
১০ মে ২০১৪ দুপুর ০১:১৪
167533
বিবেক লিখেছেন : আঁতে ঘা খাওয়ার জন্য ধন্যবাদ। দাদাদের বিরুদ্ধে গেলে যেভাবে আপনার আঁতে ঘা লাগে, ক্ষতিগ্রস্থদের গায়েও সেভাবে ঘা লাগে।

রবী ঠাকুরের চটির কথা বললেন! আজন্ম কৃপন কবির চটি তো দূরের কথা, এক চিমটি চাউল কোন ভিখারী পেয়েছিল কিনা সেই উদারহরণ ও বঙ্গে নাই।
১০ মে ২০১৪ দুপুর ০১:৪৫
167546
বিবেক লিখেছেন : আসলে অন্তত এই ব্যাপারে আপনাদের গালাগালি করা ব্যতীত অন্য কোন অস্ত্র হাতে নাই। সত্যের মাপকাঠিতে যেহেতু

প্রমাণ যখন শেষ হয়ে যায় তখন মানুষ হাত তুলে কথা বলে,
যু্ক্তি যখন শেষ হয়ে যায় তখন মানুষ গালাগালি করে কথা বলে,

আপনাদের অবস্থান সেই পর্যায়ে বস্তুত আমি আপনাদের আচরণের সেই কথাটিই এখানে বুঝাতে চেয়েছি, যে সত্য উৎঘাটনে গেলে তখন পুরো জাতির চোখ খুলে যাবে, নিজেরা নিজেদের দোষ দিবে এই জন্য যে, কি মনে করে, কিসের ভুলে এতদিন কিছু দাদাদের পুজো করেছি।
১০ মে ২০১৪ দুপুর ০১:৫৪
167558
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : সূর্যের বিপক্ষে চামচিকার চামচিকার আস্ফালন...।


Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor দুরে যেয়ে মর @ ছাগু.......
১০ মে ২০১৪ দুপুর ০১:৫৯
167563
বিবেক লিখেছেন : কোন উত্তর নাই! আপনার হেয়ালীপূর্ণ উত্তরে আমাকে এই বিষয়ে বিস্তারিত লিখতে উৎসাহিত করেছে। জোককে নাকি চুনা দিয়ে জুতসই জায়গায় ধরতে হয়। এখন তো আপনার মুখে চুন পড়েছে তাই উত্তর বেরুচ্ছে না।

তথ্য থাকলে প্রতিবাদ করুন, চ্যলেঞ্জ করুন! আমি উত্তর দেবার জন্য মুখিয়ে আছি।
219789
১০ মে ২০১৪ দুপুর ০১:১৯
আব্দুল গাফফার লিখেছেন : সহমত আপনার সাথে এ কেমন সংগীত যেখানে বাংলাদের নাম কোথাও নেই । অনেক ধন্যবাদ
১০ মে ২০১৪ দুপুর ০১:৪০
167542
বিবেক লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
219799
১০ মে ২০১৪ দুপুর ০১:২৪
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : রবীন্দ্রনাথের চটি জুতো চিবিয়ে খা........ @ ছাগু Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor

চরমভাবে সহমত।
১০ মে ২০১৪ দুপুর ০১:৪৫
167545
বিবেক লিখেছেন : আসলে অন্তত এই ব্যাপারে আপনাদের গালাগালি করা ব্যতীত অন্য কোন অস্ত্র হাতে নাই। সত্যের মাপকাঠিতে যেহেতু

প্রমাণ যখন শেষ হয়ে যায় তখন মানুষ হাত তুলে কথা বলে,
যু্ক্তি যখন শেষ হয়ে যায় তখন মানুষ গালাগালি করে কথা বলে,

আপনাদের অবস্থান সেই পর্যায়ে বস্তুত আমি আপনাদের আচরণের সেই কথাটিই এখানে বুঝাতে চেয়েছি, যে সত্য উৎঘাটনে গেলে তখন পুরো জাতির চোখ খুলে যাবে, নিজেরা নিজেদের দোষ দিবে এই জন্য যে, কি মনে করে, কিসের ভুলে এতদিন কিছু দাদাদের পুজো করেছি।
219830
১০ মে ২০১৪ দুপুর ০২:৪৫
আল সাঈদ লিখেছেন : প্রমাণ যখন শেষ হয়ে যায় তখন মানুষ হাত তুলে কথা বলে,
যু্ক্তি যখন শেষ হয়ে যায় তখন মানুষ গালাগালি করে কথা বলে


চরম যুক্তি আছে আপনার লেখায়।
ভাই আরেকটি কথা কুকুরদের অংক শিখাতে বৃথা চেষ্টা করবেন না। ভালো লাগলো
১০ মে ২০১৪ দুপুর ০২:৫৩
167581
বিবেক লিখেছেন : কুকুরকে অংক শেখানোর দরকার নাই, তবে মগুর মারার দরকার আছে তো‍!
219927
১০ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : যুক্তিপুর্ন পোষ্টির জন্য ধন্যবাদ।
১৪ মে ২০১৪ দুপুর ০১:৩৯
168859
বিবেক লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
221373
১৪ মে ২০১৪ দুপুর ০১:২৩
মু. মিজানুর রহমান মিজান (এম. আর. এম.) লিখেছেন : বিয়ের আগেই সন্তানের নাম নির্ধারণ
১৪ মে ২০১৪ দুপুর ০১:৩৯
168860
বিবেক লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File