মোবাইল ট্র্যাকিং কিভাবে হয় হয়রানি থেকে পরিত্রানের উপায় (গুরুত্বপূর্ন পয়েন্ট)

লিখেছেন লিখেছেন বিবেক ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৮:৫১:০৩ রাত



বর্তমানে বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের গ্রেফতার, গুম ও গতিবিধি লক্ষ্য রাখার জন্য পুলিশ-র‍্যাব ও যৌথবাহিনী মোবাইল ট্র্যাকিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসছে আবার এতে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষও। তাই এ বিষয়ে সবার ধারণা থাকা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের সব মোবাইল অপারেটর বিটিআরসি এর আইন আনুসারে গোয়েন্দা সংস্থার কাছে সব সিমের তথ্য প্রকাশ করেতে আইনগতভাবে বাধ্য। তাই আইন শৃংখলা বাহিনী যেকোন সময় অপারেটরের সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে যে কোন সিমের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারে। যখন কোন অপরাধী কে ধরতে মোবাইল ট্র্যাকিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তখন সর্বপ্রথম সন্দেহভাজন সিম নাম্বারটি নিয়ে দেখা হয় সিমটি খোলা আছে কিনা আর থাকলে এখন কোন জায়গায় আছে? এক্ষেত্রে সিমটি যে জায়গায় খোলা থাকে সেখানে টাওয়ার এর মাধ্যমে অপরাধীর অবস্থান নির্নয় করা যায়। এক্ষেত্রে একটি বিশেষ পোর্টেবল (ভ্রাম্যমাণ) ডিভাইস এর সাহায্যে টাওয়ার থেকে সিম কত দুরত্বে আছে তা দেখতে পারে গোয়েন্দা সংস্থা। ডিভাইসটি একেবারে আপনার দেহ পর্যন্ত আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে যেতে পারে। যদি সিম বন্ধ থাকে তাহলে সিমের অতীত ইতিহাস জানার জন্য অপারেটরের সার্ভারে প্রবেশ করে গোয়েন্দা সংস্থা। একটি সিম চালু করার পর যে বিষয়গুলো স্বয়ংক্রিয় ভাবে অপারেটরের সার্ভারে রেকর্ড হয়ঃ

1. ঐ সিমের মালিকের নাম–ঠিকানা ও ছবি (যদি রিজিষ্টার্ড সিম হয়)।

2. কল লিস্ট(রিসিভ ও ডায়াল্ড), SMS (ইনবক্স-আউটবক্স) । 3. সিমটি নিয়ে ব্যবহারকারী কোন কোন জায়গায় ভ্রমণ করেছিল এবং কত সময় পর্যন্ত প্রতিটি জায়গায় ছিল।

4. সিমটির জন্য যে মোবাইল সেট ব্যবহৃত হয়েছে বা হচ্ছে সেটির IMEIনাম্বার। প্রতিটি মোবাইল সেটেরই ২টি বা ৩ টি IMEI নাম্বার থাকে যা সেটের ব্যাটারী খুলার পর দেখতে পাবেন।

5. রিচার্জ ও ব্যালেন্স এর হিস্টোরী। এক্ষেত্রে সাধারণত অপরাধীরা ভুয়া সিম ব্যবহার করায় সিমের মালিকের নাম–ঠিকানা ও ছবি পাওয়া যায় না।

তবে মজার ব্যপার হলো এই বিষয়গুলোর ব্যপারে অপরাধীরা ক্লু রেখে যায়ঃ

১.কল লিস্ট(রিসিভ ও ডায়াল্ড), SMS (ইনবক্স-আউটবক্স),

২.সিমটি নিয়ে ব্যবহারকারী কোন কোন জায়গায় ভ্রমণ করেছিল এবং কত সময় পর্যন্ত এক এক জায়গায় ছিল।

৩. সিমটির জন্য যে মোবাইল সেট ব্যবহৃত হচ্ছে সেটির IMEI নাম্বার। তখন গোয়েন্দা সংস্থা এই তিনটি নিয়ে গবেষনা করে। প্রথমত কল লিস্ট থেকে ঐ সিমে ইঙ্কামিং ও আঊটগোয়িং কল ও এসএমএস এর নাম্বারগুলো সংগ্রহ করে সেগুলো থেকে সন্দেহভাজন নাম্বারগুলোও ট্র্যাকিং এর আওতায় নিয়ে আসা হয়।

১ম পর্যায়ে কোন কিছু পাওয়া না গেলে ২য় পর্যায়ে ‘সিমটি নিয়ে ব্যবহারকারী কোন কোন জায়গায় ভ্রমণ করেছিল এবং কত সময় পর্যন্ত এক এক জায়গায় ছিল’ তা দেখে ঐ জায়গাগুলোতে স্পাইদের পাঠানো হয় ঐখানে কারা ছিল তা খুজে বের করার জন্য। ২য় পর্যায়ে কোন ক্লু পাওয়া না গেলে ৩য় পর্যায়ে সিমটির জন্য যে মোবাইল সেট ব্যবহৃত হচ্ছে সেটির IMEI নাম্বার টিতে অন্য কোন সিম লাগানো আছে কিনা এটা সার্চ করে হয়। যদি একি মোবাইল সেটে অন্য সিম লাগানো হয় তাহলে IMEI নাম্বার এর মাধ্যমে অপরাধীর অবস্থান যেনে ফেলা যায়। অনেক সময় সিম ব্যবহারকারী মোবাইল অফ করে রাখলেও মোবাইল সেটের ব্যাটারী খুলে না ফেললে মোবাইলের BIOS অন থাকায় টাওয়ার এ সিগনাল চলে যায়।এর ফলে সিম ও সেট এর IMEI এর তথ্য টাওয়ার এ চলে যায়।ফলে সন্দেহভাজন ব্যাক্তির অবস্থান প্রকাশ হয়ে যায়।

হয়রানি থেকে পরিত্রানের জন্য করনীয়ঃ

১. রেজিস্টার্ড সিম ব্যবহার না করা।

২. পরিচিত সিম ও ঐ সিমের ব্যবহৃত সেট ব্যবহার না করা। একই সেট ব্যবহার করলে অন্য সিম লাগালেও আপনার সেটের IMEIকিন্তু পেয়ে যাবে।

৩. মোবাইল সেট বন্ধ রাখলেও ব্যাটারী না খুলে ফেললে মোবাইলের BIOS অন থাকে বলে আপনার অবস্থান নির্ণয় করা যাবে।

৪. সিম নিয়ে কোন কোন জায়গায় যাচ্ছেন, কল লিস্ট(রিসিভ-ডায়াল), এসএমএস (ইনবক্স-আঊটবক্স-ড্রাফট) এগুলো কিন্তু অপারেটরের সার্ভারে রেকর্ড করা হচ্ছে তাই সতর্ক থাকবেন।

৫. আপনার অনেক দিন আগের পরিচিত সিম নতুন মোবাইল সেটে ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকবেন। এক্ষেত্রে নতুন সেটের IMEI চলে যাবে টাওয়ারে।

৬. সেন্সিটিভ কথা মোবাইলে বলবেন না। অনেক সময় সন্দেহভাজনকে না ধরে তার কথোপকথোন শুনে গোয়েন্দা সংস্থা।

সবাই বিষয়টি অনুধাবন করতে পারলে অনাকাক্ষিত গুম, খুন ও হয়রানি থেকে বাচতে পারবেন এটাই আশা করি। শেয়ার করে সবাই কে জানিয়ে দিন

ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত তথ্য

বিষয়: বিবিধ

২৭২৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File