স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাদুর্ভাব! নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আগমন

লিখেছেন লিখেছেন বিবেক ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৭:০০:২৩ সন্ধ্যা

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীদের অযোগ্যতা, অদক্ষতা, মুখ ফসকে কথা বলে ফেলা, অগ্রিম কথার হুড়োহুড়ি, পুরানা কথার অস্বীকৃতি লেজেগোবরে দশা যখন আওয়ামী সরকারকে কাহিল করে ফেলছিল, ঠিক তখনই ক্লিন চেহারার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর আর্ভিবাব। তিনি আমাদের শিক্ষা মন্ত্রী! তার মন্ত্রণালয়ের যেখানে ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা, ছাত্রলীগের ছেলেরা গাজার পয়সার জন্য মারামারি, যৌন উত্তাপ হালকা করতে ছাত্রী-শিক্ষিকাদের উপর হামলা, মদের টাকার জন্য প্রিন্সিপ্যালকে রাস্তায় দৌড়াতে ব্যস্ত; সে সব কে সমাধান না করে তিনি তার মন্ত্রণালয়ের বাহিরে গিয়ে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নিজের দায়বদ্ধতার বক্তব্য দেবার আগেই, শিক্ষামন্ত্রী বলে বসেন মরহুম ব্লগার নাকি জামায়াতের হাতে শহীদ হয়েছেন! এসবের পিছনে আছে কিছু গুঞ্জন, তাই শেয়ার করলাম।

১. আওয়ামীলীগ সরকার শাহবাগের তাপ, যাতে উত্তাপে পরিণত না হয় সেজন্য ২৪ ঘণ্টার প্রতিবাদের স্থলে বিকাল-সন্ধ্যায় পরিণত করতে ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল বিকেলে ঘোষণা করা হয় ৩ টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখানো যাবে।

২. ঘোষণাটি সরকারের। বিক্ষোভে সরকারী দলের পরিমাণ প্রায় ৯০% বেশী। কিন্তু সরকারের এই সিদ্ধান্তে বামপন্থিরা খুশী হতে পারেন নি। অপরাধীদের কারো ফাঁসি না হলে বিক্ষোভকে কেয়ামত পর্যন্ত দীর্ঘায়ত করার পক্ষপাতী। বামপন্থিদের সংখ্যা বেশী না হওয়াতে তারা সরকারকে অনুরোধ, আবদার, হুমকি, ধমকি কোনটাতেই সুবিধা করতে পারছিলেন না। তাই তাদের দরকার একটি বড় ইস্যু। যে ইস্যুটি বিক্ষুব্ধ প্রতিবাদ কারীর ক্ষোভকে বহু গুনে বাড়িয়ে তুলবে।

৩. এই ক্ষোভ বাড়িয়ে দিতে বামপন্থিরা অতীতের মত একই কায়দায় নিজেদের নেশাগ্রস্থ কর্মীকে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে ‘মাগো-বাবারে’ বলার সুযোগ না দিয়েই জনবহুল রাস্তায় হত্যা করে। তার ল্যাপটপ তার পাশেই ছিল। কোন জিনিষ খোয়া যায়নি।

৪. তিনি একজন বিপ্লবী, তিনি একজন ব্লগার, তিনি একজন ইঞ্জিনিয়ার, তিনি একজন বিক্ষুব্ধ, তিনি অনেক অনেক............... এই ধরনের একজন ব্যক্তি একাকী বাসায় যাচ্ছিলেন!!!!!!! এমনটি বিশ্বাস করা খুবই কঠিন। তার সাথে কেউ ছিল এবং অবশ্যই তারা তার বন্ধু নচেৎ পূর্ব পরিচিত কেউ। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড যার সুবিধাভোগী শুধুমাত্র বামপন্থী কেবলমাত্র বামপন্থিরা।

৫. তিনি মারা যাবার সময় ল্যাপটপ পাশেই পড়ে ছিল। অর্থাৎ তাকে কোন ছিনতাই কারী হত্যা করেনি। গুঞ্জন আছে যে, সমাবেশ স্থলে টাকা পয়সার মেলা শুরু হয়েছে। সেখানে প্রচুর চাঁদার টাকা সংগ্রহ হচ্ছে। অনেক কোম্পানি থেকে ফোন করে টাকা আনা হচ্ছে। এ সবের ভাগাভাগির কোন পর্যায়ে নিজেদের কেউ পথ পরিষ্কার করেছে কিনা পুলিশ সেটা কোন দিন বিবেচনা করবে না।

৬. শিক্ষামন্ত্রী আগে কখনও আগ বাড়িয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সমর্পকে কথা বলতেন না, তবে এইবার বলেছেন। কেননা এই ক্লিনমন্ত্রি বামপন্থিদের বড় নেতা ছিলেন, মানুষের গলাকাটা রাজনীতির সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ছিলেন। বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা অন্য কোন মন্ত্রী মরহুম ব্লগারের মৃত্যু সম্পর্কে কোন কথা বলার আগেই শিক্ষা মন্ত্রী মহোদয় পুরো দোষটি জামায়াতের উপর দোষ চাপিয়েছেন। ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক অন্য মন্ত্রীরা এখন আর সঠিক কথাটি বলতে পারবেন না। বলতে গেলেই অন্যান্য বারের মত মন্ত্রীপরিষদের উপর দায় চাপবে।

৭. পুলিশ ইচ্ছা করলেও সত্য তথ্য উৎঘাটন করতে পারবে না। অবশ্যই তাদেরকে বলাতে বাধ্য করা হবে এটা জামায়াত করেছে। জামায়াত যদি করে থাকত তাহলে তথ্য পাবার জন্য অবশ্যই তারা মরহুমের কম্পিউটার টি নিয়ে যেত। এই লিখাটি লিখতে চলা অবস্থায় টিভিতে দেখতে পেলাম প্রধানমন্ত্রী জামায়াতে উপর দোষ চাপিয়েছেন।

৮. দোষ চাপাবে যার হাতে ক্ষমতা নাই সেই, যার হাতে সকল ক্ষমতা পুঞ্জিভূত তারা কেন দোষ চাপাবে! বর্তমান সরকার এই পদ্ধতি বাছাই করেছেন। তবে শিক্ষামন্ত্রীর তড়িৎ মন্তব্যে বামপন্থিরা হারানো সুযোগটি ফিরে পেল, তারা ঘোষণা করলেন এই বিক্ষোভ চলতে থাকবে।

৯. শাহবাগের গন সমাগম, জামায়াতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আর ব্লগারের মৃত্যু তিনটি দিক রয়েছে।

প্রথমত: এই গন-সমাবেশের ফলে জামায়াতের সুনাম ক্ষতি হয়েছে, তবে ভাল হোক মন্দ হোক জামায়াতের ভাল প্রচার হয়েছে।

দ্বিতীয়ত: ক্ষতি হয়েছে আওয়ামী লীগের। ট্রাইব্যুনালের পরবর্তী বিচার গুলোতে যদি যাবজ্জীবন হয় তাহলে বলা হয়ে সঠিক বিচার হয়নি। যদি ফাঁসি হয়, তাহলে বলা হবে, ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বিচারক রায় দিয়েছে। সুতরাং সামনের সকল বিচারগুলোই বিতর্কিত হবে। এটা আওয়ামীলীগের জন্য গোদের উপর বিষের জ্বালার মত বয়ে নিয়ে আসবে। কোন রকম ফায়দা তুলতে পারবে না বরং ইতিহাসে আরো একটি বাজে উদারহণ যোগ হবে।

তৃতীয়ত: বামপন্থিরা আপাতত ইসলামী দলগুলোর বিরুদ্ধে বহু দিন পরে একটি দাও মারার সুযোগ পেল। এই কাজে না এদের জনসমর্থন বাড়বে, না রাষ্ট্রের কল্যাণে কোন উপকারে আসবে।

পরিশেষে, বামপন্থিরা যদি ভালই ভালই সরকারের কথা মত আন্দোলন কে নিয়ন্ত্রণ করে তাহলে এক কথা। নতুবা আওয়ামীলীগে গরজেই আন্দোলন কারীকে উত্তম মধ্যম দিতে আওয়ামীলীগ মুহূর্ত চিন্তা করবে না।

১০. এই ব্লগার মরহুম রাজীব শিক্ষিত হলেও ভদ্র, রুচিবোধ সম্পন্ন ছিলেন না। আল্লাহ এবং তার রাসুল কে কতভাবে গালাগালি করা যায়, তার সকল দক্ষতা ছিল। এই ধরনের এক প্রকাশ্য কাফের ব্যক্তির জানাজা হবে। সেই জানাজার ইমামের অভাব আমাদের দেশে হয়না। দলীয় মুসল্লিও হবে যেভাবে কমরেড ফরহাদের বেলায় হয়েছিল। দেশে একটি অনিবার্য সংঘাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এটা নিশ্চিত। সেখান থেকে ফিরে আসাটা অন্তত আওয়ামীলীগের মত ধ্বংসাত্মক ফ্যাসিবাদীর পক্ষে যেমন সম্ভব নয়, বামপন্থীর মত শঠ ও ধড়িবাজ চিটিং দলের পক্ষেও সম্ভব নয় আর বিএনপি? সে তার নিজের উপকার করার মত যোগ্যতা হারিয়েছে অনেক দিন আগেই।

বিষয়: বিবিধ

১৩১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File