আবার বাড়ল জ্বালানির দাম! গণতন্ত্র অবরুদ্ধ! সীমাহীন দুর্নীতি ও অদক্ষতায় বুয়াজিজি’র শরীর এদেশেও জ্বলতে পারে

লিখেছেন লিখেছেন হাসান ০৩ জানুয়ারি, ২০১৩, ১১:৩৩:২১ রাত



দিন বদলের ডিজিটাল সরকারের আমলে দূব্যমূল্যের নজিরবিহীন উর্ধ্বগতি, সর্বক্ষেত্রে সীমাহীন অদক্ষতা ও লাগামহীন দুর্নীতির ভার জনগনকে বইতে হচ্ছে। দূব্যমূল্যের নজিরবিহীন উর্ধ্বগতির কারনে কারনে সাধারণ মানুষের যখন নাভিশ্বাস ওঠেছে, তখন জালানির মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সরকারের জনবিচ্ছিন্নতার চূড়ান্ত প্রমাণ।



আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারকে অনুরোধ করব দামবৃদ্ধি, দুর্নীতি, অদক্ষতা, বিরোধী দমন, বাঁশি ইস্যুর মুলো ঝুলিয়ে সীমাহীন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে জনকল্যাণে একটি নজর দিন। ৪ বছর পরাশক্তির ষোলআনা স্বার্থ উদ্ধার ও বাঁশি ইস্যুর মুলো ঝুলানো ছাড়া আর জনগণের জন্য কি করলেন?

গাড়ী ভাড়াসহ সব কিছু কত বাড়বে? ভাত-পানিতে মেরে ফেলার স্বপ্ন পূরন হচ্ছে কি?

বাসে পাশের সিটে বসা একজন অফিসগামী অনেক কষ্টের ও আপসোসের সাথে বলছিলেন, দাম বাড়ার ঘোষণার কারনে ২০ টাকার ভাড়া ৩৫ টাকা নিল। মরে যাওয়া ছাড়া আর পথ দেখছিনা। কারা শুনবে এই কষ্টের কথা!? দেশ ও সাধারণ জনগণের কথা ভাববার সময় কোথায়? সরকার ব্যস্ত রয়েছে জনগণের সাথে সম্পর্কহীন দশ-ট্র্যাক অস্ত্র, যুদ্ধাপরাধ মামলা, নজিরবিহীন লুটপাটে ও বিভিন্ন অজুহাতে বিরোধীদের দমনের মাধ্যমে নিষ্কণ্টকভাবে দিল্লীসহ পরাশক্তির মনোরঞ্জনে!




পুলিশ বেষ্টনীর ভেতরে অবরুদ্ধ গণতন্ত্র!



উচ্চশিক্ষিত বেকার যুবক মোহামেদ বুয়াজিজি (২৬) শিক্ষা জীবন সমাপন ঘটিয়ে অনেক চেষ্টা করেও বেঁচে থাকার মতো সামান্য একটি চাকরি যোগাড় করতে ব্যর্থ হন। উপায়ন্তর না দেখে তিনি তিউনিশিয়ার একটি বাজারে সবজি বিক্রি শুরু করেন। সবজি বিক্রি করে তার আয়-রোজগার ভালোই হচ্ছিল। কিন্তু এটা সে দেশের সরকারের পছন্দ হয়নি। সরকার তার ব্যবসা বন্ধ করে দেন। ফলে বুয়াজিজি চোখে অন্ধকার দেখতে শুরু করেন। কিন্তিু তিনি দমে যাবার পাত্র নন। সরকারের এই অমানবিক আচরণের প্রতিবাদে বুয়াজিজি নিজেরে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। তার এই আত্মাহুতি তিউনিশিয়ায় জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলে। বুয়াজিজি অচিরেই তিউনিসিয়ার ৩০ শতাংশ শিক্ষিত বেকার যুবকের প্রতিনিধিতে পরিণত হন। তার আত্মাহুতি দিকে দিকে বিদ্রোহের আগুন জ্বেলে দেয়। এই আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যায় তিউনিশিয়ার একনায়ক দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা প্রেসিডেন্ট জাইন আল-আবেদি বেন আলির সোনার সিংহাসন। এক পর্যায়ে তিনি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পলিয়ে যেতে বাধ্য হন। বুয়াজিজির আত্মত্যাগ শুধু তিউনিশিয়ায় রাজনৈতিক ক্ষমতা পরিবর্তন করেনি গোটা আরব বিশ্বের রাজনীতিতে বিরাট ঝাঁকুনি দিয়েছে। তারাই প্রভাবে মধ্যপ্রচ্যের দেশে দেশে বইছে গণতন্ত্র জোয়ার। কিছুদিন আগেও যেখানে গণতন্ত্র ছিল স্বপ্নের মতো আজ সেখানেই বইতে শুরু করেছে গণতন্ত্রের সুবাতাস।



বুয়াজিজি’র চাচা রিদাহও একজন ফল বিক্রেতা। তিনিও পুলিশের হাতে নিত্য নির্যাতনের শিকার হওয়া একজন। ‘এই সরকারের ইন্সপক্টেররা জোর করে ‍আমাদের পণ্য নিয়ে নিতো। আমাদের কাছে অবৈধভাবে ঘুষ নিতো। কিছু বললেই অকথ্য নির্যাতন করতো আমাদের ওপর।’ এভাবেই তিনি পুলিশি নির্যাতনের কথা বলেন।

বুয়াজিজি’র শরীরের ওই আগুনের তাপে পুড়ে যায় বিন আলী’র মসনদ। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে পুরো তিউনিশিয়া। মাত্র একমাসের মাথায় ক্ষমতা থেকে নেমে যেতে বাধ্য হন তিউনিশিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদিন বিন আলী।

মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক নীতিনির্ধারকরা ভাবতেই পারেননি বুয়াজিজির শরীরের আগুন দাবানলের মতো এতটা দূর ছড়িয়ে যাবে। কারণ তিউনিশিয়ার এই বিপ্লবের ছোয়া লাগে মিসরে। অভ্যূত্থান সামাল দিতে না পেরে ক্ষমতা ত্যাগ করতে বাধ্য হন দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা হোসনী মোবারক।

সেই জাগরনের ঢেউ গিয়ে লাগল মিশর, সিরিয়া, লিবিয়াসহ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে।



‘শেয়ার বাজার ঠিক কর, নইলে বুকে গুলি কর’

আস্থাহীনতা ও বিকলের প্রায় সবগুলো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান- একে একে সবগুলো বিভাগ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পেশাদারিত্ব বলে কিছুই থাকছে না। সংবিধান, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, বিডিআর, আর্মি, পুলিশ, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, কৃষি, যোগাযোগ, বেতার-টিভি, গণমাধ্যম ও বাক-স্বাধীনতা, পররাষ্ট্র, আইন শৃঙ্খলা........ যেদিকেই তাকাই ডিজিটাল সরকারের সফলতা!



যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের নয়, এ ছবি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিধ্বস্ত বাংলাদেশের! কোথায় আজ মানবতা?

সারাদেশেই মঙ্গা- উত্তরে মহামন্দা: এ ছবি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিধ্বস্ত বাংলাদেশের!

সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতা থেকে জনগণের দৃষ্টি আড়াল করার ডিজিটাল আওয়ামী ষড়যন্ত্র।



১৯৮৮ সালে জাতীয় কবিতা উৎসবে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে পটুয়া কামরুল হাসানের শেষ স্কেচ: "দেশ আজ বিশ্ববেহায়ার খপ্পরে"

সরকারের আচরন অগণতান্ত্রিক তথা চরম ফ্যাসিবাদী। গণতান্ত্রিক সমাজে সবার মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। পুলিশ কেন গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিবে। জার্মানিতে নাৎসিরা মিছিল করলে পুলিশ সাথে থাকলেও বাধা দেয়নি। আওয়ামী লীগের আমল হিটলারের দমনের সাথে মিলে যায়।

গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় মিছিল-সমাবেশ তথা মত প্রকাশের অধিকার সবারই রয়েছে। সেটা বিএনপি-আওয়ামী লীগ- জামায়াত অথবা যে কারো ক্ষেত্রেই সমান।

দেশের উন্নতির লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক সরকারের দায়িত্ব থাকে বিরোধীদের উস্কানীর মুখেও ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু বিস্ময়করভাবে লক্ষ্য করছি ক্ষমতাসীন আ.লীগই বিরোধী দলসমূহের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেও নানা অজুহাতে চরম উস্কানীমূলক আচরন করছে। চরম স্বৈরাচারী সরকারও নিজেদের স্বার্থে এরকম উস্কানীমূলক আচরন করে না। সরকারের আচরন স্বৈরাচারী ও বেসামাল।

জাতির সবকিছুকে বিভক্তির জননী হাসিনার কাছ থেকে ঐক্য আশা করা যায় না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েও দেশের জনগণের জন্য একের পর এক দুর্বিষহ বিপদ নিয়ে আসছেন, আর বিরোধী দলে থাকতে তাদের ভূমিকা তো সবাই জানি!

এ অবস্থায় দেশ বাঁচাতে প্রয়োজন দেশপ্রেমিক সকল জনতাকে নিয়ে দেশ রক্ষার ডাক। তবে তা হতে হবে সতর্কভাবে। কারন আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক বেসামাল কর্মকান্ড দেখে মনে হচ্ছে - দেশের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটসহ সীমাহীন ব্যর্থতা নিয়ে তারা জনমত উপেক্ষা করে নিজেদের অধীনে প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের মেয়াদ আপাতত ৫ বছরের জন্য বাড়িয়ে নেয়া কিংবা দেশে বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি করে ভিন্ন নামে তাদের অন্য কোন শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে চায়।


জাতি হিসেবে এটি অত্যন্ত লজ্জার। একবিংশ শতাব্দীর অগ্রসরমান বিশ্বে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হলে অযৌক্তিক আবেগ পরিহার করে বাস্তবমুখী হওয়া দরকার।

ফের বাড়ল তেলের দাম, মধ্যরাতেই কার্যকর

বিষয়: বিবিধ

১৬৭০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File