ডিফেন্সের আইনজীবীকে গ্রেফতার করেত ব্যারিষ্টার রাজ্জাকের চেম্বারে পুলিশের অভিযান ও শাহবাগে নয়া দিগন্ত-আমাদের দেশ পত্রিকায় আগুন সীমালঙ্ঘণ
লিখেছেন লিখেছেন হাসান ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৮:৩৩:৪৪ রাত
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ ও ঢাকা মহানগর জামায়াত ইসলামীর এসিসটেন্ট সেক্রেটারী শফিকুল ইসলাম মাসুদকে ধরতে ব্যারিষ্টার আবদুর রাজ্জাকের চেম্বারে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। আজ শনিবার বিকেল সোয়া ৫ টা থেকে সাড়ে ৫ টার মধ্যে ডিবি পুলিশের এডিসি নুরুন্নবীর নেতৃত্বে একটি টিম এই অভিযান চালায়। তবে তারা কাউকে গ্রেফতার বা আটক না করেই ফিরে যায়।
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, নয়া পল্টনস্থ সিটি হার্ট ভবনের ১৪ তলায় ব্যরিষ্টার আবদুর রাজ্জাকের চেম্বার। শনিবার বিকেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালের আসামিপক্ষের আইনজীবীদের মিটিং ছিল। যার কারণে বিকেলে আইনজীবী ব্যরিস্টার রাজ্জাক সাহেবের চেম্বারে যান। বিকেল সোয়া ৫ টার দিকে ভবনের নিচ থেকে জানানো হয় শতাধিক পুলিশ পুরো ভবনটিকে ঘিরে ফেলেছে। এর কিছু সময়ের মধ্যে ডিবি পুলিশের এডিসি নুরুন্নবীর নেতৃত্বে পুলিশের ১০/১৫ জনের একটি দল আবদুর রাজ্জাকের চেম্বারে প্রবেশ করে। এসময় আবদুর রাজ্জাক তার রুম থেকে বেরিয়ে পুলিশের কাছে জানতে চান কি কারণে তারা এসেছে? তখন এডিসি নুরুন্নবী জানান, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ ও শফিকুল ইসলাম মাসুদকে তারা ধরতে এসেছে। আবদুর রাজ্জাক তাকে বলেন, ডিফেন্সের একজন আইনজীবীকে গ্রেফতার করলে দেশবাসী আমরাসহ দেশবাসী মনে করবে ট্রাইবুন্যালের বিচার কাজ বাধাগ্রস্ত করতে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এরপরও কি আপনারা তাকে গ্রেফতার করবেন? এ কথা শোনার পর এডিসি নুরুন্নবী বলেন, ‘ঠিক আছে তাহলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে আসি। এই বলে তারা চলে যান।
তাজুল ইসলাম আরো জানান, পুলিশ চেম্বারের বিভিন্ন রুমে তল্লাসী চালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ব্যারিষ্টার রাজ্জাক তাদের তল্লাসীর অনুমতিপত্র আনতে বলায় আর তল্লাসী করেনি। প্রায় ৫/৬ মিনিট অবস্থান করেছিল। যার পুরো দৃশ্য চেম্বারের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যারিষ্টার রাজ্জাক সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চাননি। এমনকি এডিসি নুরুন্নবীকেও পাওয়া যায়নি।
চরম প্রতিক্রিয়াশীল বামপন্থীদের পত্রিকা পোড়ানোর মত জঙ্গিবাদী আচরনের দায় তরুণ প্রজন্ম নিতে পারে না। তরুণ প্রজন্মকে ভুল বার্তা দেয়ার মাধ্যমে আধিপত্যবাদীদের বন্ধুরা আজ দেশের যে ক্ষতি করছে তার নেতিবাচক প্রভাব মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতার চেয়েও ভয়াবহ।
শাহবাগে নয়া দিগন্ত-আমাদের দেশ পত্রিকায় আগুন
ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিলের দাবীতে শাহবাগে আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের কর্মীরা দৈনিক নয়া দিগন্ত ও আমার দেশ পত্রিকা পোড়াচ্ছে। আন্দোলনের পঞ্চমদিনে আজ লোক সমাগম কম হলেও আন্দোলন কারীদের বত্তৃতা, নাচ-গান অব্যাহত রয়েছে। তারা গতকালের সমাবেশে ঘোষিত একাধিক সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেল নিষিদ্ধের দাবীর অংশ হিসেবে আমার দেশ ও দৈনিক নয়া দিগন্ত হকারদের কাছ থেকে নিয়ে পত্রিকার কপিগুলোতে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে।
তরুণ প্রজন্মের আবেগকে পূজি করে বিদ্বেষ ও অশ্লীলতার বীজ বপন জাতির জন্য চরম আত্মঘাতী
দু:খজনক হলেও সত্য স্বাধীনতার ৪২ বছরেও অফুরন্ত সম্ভাবনাময় আমাদের এই দেশটিতে তরুণ প্রজন্মের প্রতিভাকে গড়ার কাজে যথার্থভাবে ব্যবহার করতে পারিনি।
মানবতাবিরোধী অপরাধের স্বচ্ছ বিচারের ক্ষেত্রে কারো দ্বিমত তথা বিরোধীতা নেই। খোদ যাদের নামে অভিযোগ তারাও বরাবরই স্বচ্ছ বিচারের দাবি জানিয়ে বিচার কাজে অংশ নিচ্ছেন। এরকম একটি প্রেক্ষাপটে দীর্ঘদিনের এই বিতর্কিত বিষয়টির যখন অবসান হয়ে দেশ জাতীয় ঐকমত্যের দ্বারপ্রান্তে উপনিত হচ্ছিল, ঠিক তখনি তরুণ প্রজন্মের আবেগকে ভুল পথে চালিত করে কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল জাতির মধ্যে নতুন করে বিভেদের বীজ বপন করছে।
দেশের নামকরা অসংখ্য প্রবীণ নাগরিকের নেতৃত্বে লিখিত বক্তব্যে এমন সব দেশবিরোধী আত্মঘাতী বিষয়ের অবতারনা করা হলো যার ভয়াবহতা কল্পনাকেও হার মানায়। দেশের যে দলটির প্রায় ২ কোটি সমর্থক তাদের সবাইকে নির্মূল ও নাগরিকত্ব বাতিলের মত মধ্যযুগীয় বর্বরোচিত উস্কানি দেওয়া হলো। বাজেয়াপ্ত, বয়কট ও বন্ধ করার হুমকি দেয়া হলো দেশের প্রায় অর্ধেক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে।
গোটা জাতি অত্যন্ত কষ্টের সাথে লক্ষ্য করছে, জাফর ইকবালের মত মানুষেরা তরুণ প্রজন্মকে যে রকম অশ্লীল, আক্রমনাত্মক ও বর্বরোচিত স্লোগান শিখাচ্ছেন তা জঙ্গিদেরও হার মানায়। যেখানে ধর্ষণবান্ধব আ.লীগ সরকারের ৪ বছরে ১৩ হাজার ধর্ষণের ঘটনা ঘটল, সেখানে জাফর ইকবাল তার বক্তব্যে কোমল-মতি তরুণদের সবাইকে মানুষ হতে না বলে তথাকথিত প্রেম করার আহবান জানাল। আধীপত্যবাদীদের নানামুখী আগ্রাসনের মোকাবেলায় দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তরুণ প্রজন্মের মাঝে যেখানে জাতীয় ঐক্যের চেতনা জাগ্রত করা অতীব প্রয়োজন ছিল, ঠিক সেই সময়ে হিংসা ও অশ্লীলতার বীজ বপন করে জাতির অপূরনীয় ক্ষতি করা হলো।
তরুণ প্রজন্মকে ভুল বার্তা দেয়ার মাধ্যমে আধিপত্যবাদীদের বন্ধুরা আজ দেশের যে ক্ষতি করছে তার নেতিবাচক প্রভাব মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতার চেয়েও ভয়াবহ।
আমাদের পরিচয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি কিংবা জামায়াত নয়, সবাই মহান আল্লাহর সৃষ্টি মানুষ। আর কতকাল এই বিভেদ ও হানাহানির রাজনীতি চলবে? এ জাতির কি হুশ ফিরবে না? আ.লিগ, বিএনপি, জামায়াতসহ সব রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ করব জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে আমাদের সম্ভাবনাময় প্রিয় দেশটিকে এগিয়ে নিন।
দোয়া করি, সবাই যেন অন্ধকার থেকে আলোর পথে আসার তৌফিক পায়। হে আল্লাহ, এ জাতির মধ্যে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও মহব্বত পয়দা করে দিন।
একবিংশ শতাব্দীর অগ্রসরমান বিশ্বে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হলে অযৌক্তিক আবেগ পরিহার করে বাস্তবমুখী হওয়া দরকার।
বিষয়: বিবিধ
১৩৩৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন