দেশের ৭৮.৫৮% জনগণ শাহবাগের আন্দোলনের বিপক্ষে- বাংলানিউজ; শাহবাগ স্কয়ার নিয়ে ডিজিটাল মিডিয়ায় তুলকালাম! সুশীল মিডিয়ার বাটপারি
লিখেছেন লিখেছেন হাসান ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১০:৩৮:০৪ রাত
বাংলানিউজের আজকের অনলাইন জরিপের ফলাফল অনুযায়ী বাংলাদেশের ৭৮.৫৮% জনগণ শাহবাগের কতিপয় বিভ্রান্তদের এই জাতিবিনাশী অযৌক্তিক আন্দোলনের বিপক্ষে।
শাহবাগের কতিপয় বিভ্রান্তের সাথে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ট তরুণ প্রজন্মের চাওয়া পাওয়া ও বিশ্বাসের কোন সম্পর্ক নেই।
শাহবাগ স্কয়ার নিয়ে ডিজিটাল মিডিয়ায় তুলকালাম!
বিপরীতমুখী অবস্থানে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের রায় নিয়ে এ বৈপরিত্য সৃষ্টি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আবদুল কাদের মোল্লার রায় নিয়ে সমালোচনা করলেও বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীরা চাইছেন তার ফাঁসি হোক। সে জন্য আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের বাংলাদেশের কোনো কোনো প্রতিনিধি স্বপরিবারের শাহবাগ স্কয়ারে যোগ দিয়েছেন। এটি খবর সংগ্রহের জন্য নয় বরং সংহতি জানানোর জন্য।
সামাজিক যোগাযোগর জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফেসবুকে বিবিসি বাংলার ঢাকা অফিসের একজন সাংবাদিক (!) সকালের স্ট্যাটাস দিলেন সপরিবারের যাচ্ছি শাহবাগ স্কয়ারে। তাদের আরেক সাংবাদিকও (!) তার কিছুক্ষণ করে স্ট্যাটাস আপডেট করেছেন, শাহবাগ যাচ্ছি। তবে তিনি কী খবর সংগ্রহ করতে যাচ্ছেন? না অ্যাক্টিভিস্ট হিসাবে যাচ্ছেন তা পরিষ্কার করেননি।
সামহ্যয়ার ইন ব্লগ, সচলায়তন, বিডি টুডে ব্লগ, পেঁচা ব্লগসহ বিভিন্ন ব্লগেও কাদের মোল্লার ফাঁসি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। কেন ফাঁসির রায় হলো না এ নিয়ে সরকারের সাথে জামায়াতের আঁতাতের দাবিও করছেন কেউ কেউ।
আমাদের ট্রাইবুনাল রিপোর্টার মেহেদী হাসানকে জিজ্ঞেস করেছিলাম আসলে কিসের ভিত্তিতে এ রায়? এমন একটা রায় হলো যেটি জামায়াত ও সরকার দুপক্ষই অসন্তোষ প্রকাশ করছে।
মেহেদী হাসান জানালেন, কাদের মোল্লার বিপক্ষে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে সে সব অভিযোগের প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। যার জন্য এমন একটা রায় হতে পারে।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে কবি মেহেরুন্নেসা হত্যার অভিযোগ আনা হয়। কাজী রোজী নামে একজনকে এ জন্য সাক্ষী হিসাবে আনা হয়। কিন্তু মেহেরুননিসার ওপর তার লেখা বইতে তিনি কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি, এমনকি তার নাম পর্যন্ত উল্লেখ করেননি। অথচ নিজের বইয়ের তথ্য নিজেই অস্বীকর করে ট্রাইবুনালে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন, ‘মেহেরুননিসা হত্যার সাথে কাদের মোল্লা জড়িত বলে’ ‘জনতার কাফেলার’ কাছে শুনেছেন।
কাদের মোল্লার রায় ঘোষণার পর মঙ্গলবার শাহবাগে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ শুরু করেন ব্লগাররা। এতে যোগ দেন অনেকে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ঘটনাস্থল ঘুরে এসে জানিয়েছেন, শ’ চারেক লোক সেখানে জড়ো হয়েছে। আমাদের মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান সেখানে সংহতি প্রকাশ করেছেন।
তবে মঙ্গলবার ব্লাগারদের দখলে থাকা শাহবাগ স্কয়ারের একাংশের নিয়ন্ত্রণ আজ সন্ধ্যা নাগাদ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের দখলে চলে গেছে। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে টানা পড়েন চলছে। গতকাল সকাল থেকে ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা ফেসবুকে তাদের আপডেট দিতে থাকেন। সেখানে হাজির হওয়ার জন্য সবাইকে আহবান জানান। কেউ কেউ সেখানে হাজির হয়ে নিজেদের ছবিও পোস্ট করেন।
ফেসবুক ব্যবহারকীদের অনেকেই মনে করছেন কাদের মোল্লার ফাঁসি হওয়া দরকার ছিল। আবার অনেকে এর বিরোধিতা করছেন। স্বাভাতই গতবাঁধা ছাঁচে বিরোধীতাকারী ‘রাজাকার’ হিসাবে অভিযুক্ত। পক্ষের লোকজন ‘মুক্তিযোদ্ধা’। দেশের একটি প্রভাবশালী দৈনিকের অনলাইন সংস্করণে শাহবাগ স্কয়ারের খবর দেয়া হয়নি বলে প্রথম আলোরই একজন সাবেক রিপোর্টার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রথম আলো তুই রাজাকার’।
দেশের অন্যতম অনলাইন দৈনিক বিডি নিউজ টুয়েন্টিফোরডটকম আওয়ামী লীগের ওয়েবসাইট হ্যাকের খবরে একটি গালিকে কোট করে নিজেদের মহান করে তোলার চেষ্টা করেছেন।
ফেসবুকে সংবাদ মাধ্যমগুলোর কমী দের স্ট্যাটাস আপডেট দেখে মনে হবে, পারলে নিজেরাই বিচার করেন।
বাংলানিউজ টুয়েন্টিফোর ডট কম, শাহবাগ স্কয়ারের আন্দোলনের সমর্থন নিয়ে একটি জরিপ চালিয়ে তাতে নেতিবাচক ফল পেয়ে বিস্মিত। পরে তারা জরিপটি তুলে নেয়। দুপুরের দিকে এ জন্য বাংলা নিউজ কয়েক ঘন্টা দেখা যায়নি।
এবার এক নজরে দেখে নেয়া যাক বিদেশী গণমাধ্যমে কি খবর হয়েছে? বিবিসি, এএফপি, এপি, রয়টার্স আর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতো সংবাদ মাধ্যম নির্মোহভাবে খবরটি তুলে আনার চেষ্টা করেছে।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, এ রায়ে সরকার পরে আইনজীবী থেকে শুরু করে ছাত্র, নাগরিক, মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠন সবাই অখুশি। বেশ কয়েকটি সংগঠন রাস্তায় নেমে রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে এই রায়ের কারণে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে।
আলজাজিরার খবরে বলা হয়, বিতর্কিত আন্তর্জাতিক (অপরাধ) ট্রাইব্যুনাল ধর্ষণ, গণহত্যা ও হত্যার দায়ে তাকে (কাদের মোল্লা) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।
লন্ডনের দ্য গার্ডিয়ানের অনলাইন সংস্করণে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো ট্রাইব্যুনালের বিচারকার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ২০১০ সালে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একটি দেশীয় আদালত। এর আন্তর্জাতিক মানের ঘাটতি রয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি লিখেছে, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ব্যাপক গণহত্যার দায়ে জামায়াতে ইসলামীর ওই নেতাকে আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এরপরই বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
অনলাইন ভয়েস অব আমেরিকায় বলা হয়, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসলামপন্থি বিরোধীদলীয় সিনিয়র এক নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।
বার্তা সংস্থা এপি’র সংবাদের শিরোনাম- বাংলাদেশ জেইলস ইসলামিক পার্টি লিডার ফর লাইফ। তথ্যসূত্র- নয়া দিগন্ত
বিষয়: রাজনীতি
১১৭২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন