হেফাজতের সমর্থনকারীরা নির্বোধ; কোন বোধসম্পন্ন মানুষ ১৩ দফা সমর্থন করতে পারে না : আসিফ নজরুল
লিখেছেন লিখেছেন হাসান ০৮ এপ্রিল, ২০১৩, ০১:০৬:৪৫ রাত
ড. আসিফ নজরুল নজরুল বলেন, শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশে হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা ঘোষণাকে সমর্থনকারীরা নির্বোধ; কোন বোধসম্পন্ন(সেন্সিবল) মানুষ ১৩ দফা সমর্থন করতে পারে না। আজ রাত ১২টায় বাংলা ভিশনের টকশোতে তিনি একথা বলেন। তিনি বার বার হেফাজতের নারী বিদ্বেষী বক্তব্যের কথা বলছিলেন। কিন্তু হেফাজতের ঘোষণা পত্রে নারী বিদ্বেষী কি লেখা আছে তা একবারও স্পষ্ট করে বলেননি। আর প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরনের বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা তার কাছে এতটা মধ্যযুগীয় মনে হলে ইসলাম ত্যাগ করলেই পারেন। প্রকারান্তরে তিনি ইসলামের শাশ্বত বিধানকেই চরমভাবে হেয় করলেন।
জ্ঞানের মূল উৎস আল কুরআনের পড়াশুনা না থাকার কারনে এধরনের মানুষেরা পুরোপুরি আলোকিত হতে পারে না। অনেক বিষয়েই তার বিশ্লেষণ ভালো। দোয়া করি, এই মানুষগুলি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা আল কুরআনের জ্ঞানে সজ্জিত হয়ে অন্ধকার থেকে প্রশান্তির পথে আসুক।
প্রশ্ন জাগে আসিফ নজরুল ১৩ দফা কি ভালোভাবে পড়ে দেখেছেন?
হেফাজতের ১৩ দফা দাবিতে যা আছে : শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী (দা. বা.)-এর আহ্বানে যে ১৩ দফা দাবিতে লংমার্চ ও মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, তার মধ্যে রয়েছে—
১. সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ‘মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন করতে হবে।
২. আল্লাহ, রাসুল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুত্সা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে।
৩. শাহবাগ আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী নাস্তিক-মুরতাদ এবং প্রিয় নবী (সা.)-এর শানে কুত্সা রটনাকারী ব্লগার ও ইসলামবিদ্বেষীদের সব অপপ্রচার বন্ধ করে তাদের গ্রেফতারপূর্বক কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদরাসার ছাত্র এবং তৌহিদি জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।
৫. অবিলম্বে গ্রেফতার করা সব আলেম-ওলামা, মাদরাসা ছাত্র ও তৌহিদি জনতাকে মুক্তিদান, দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং দুষ্কৃতকারীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
৬. জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধাবিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করতে হবে।
৭. কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতত্পরতা বন্ধ করতে হবে।
৮. ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বলনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে।
৯. মসজিদের নগরী ঢাকাকে মূর্তির নগরীতে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করতে হবে।
১০. ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলামি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।
১১. সারাদেশের কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ এবং মসজিদের ইমাম-খতিবকে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দানসহ তাদের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।
১২. রেডিও-টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় দাড়ি, টুপি ও ইসলামি কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসি-ঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় খল ও নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করতে হবে।
১৩. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও, কাদিয়ানিদের অপতত্পরতা এবং খ্রিস্টান মিশনারিদের ধর্মান্তকরণসহ সব অপতত্পরতা বন্ধ করতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৬৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন