আস্তিক-নাস্তিক বিতর্ক :: কমন মিসআন্ডাস্ট্যান্ডিংস

লিখেছেন লিখেছেন salam ০২ নভেম্বর, ২০১৩, ১১:১৬:৪৬ রাত

আস্তিকতা বনাম নাস্তিকতা, বৈজ্ঞানিকভাবে স্রস্টার অস্তিত্ব বা অনস্তিত্বকে প্রমাণ, বিগ ব্যাং বনাম কোরান, ইভল্যুশন বনাম ক্রিয়েশন ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আস্তিক আর নাস্তিকদের মধ্যে খাইয়া না খাইয়া বিতর্ক লেগে আ্ছে বছরের পর বছর ধরে..... কিন্তু বড়ই আশ্চর্য্যের বিষয় হইল 'স্রষ্টা' এবং 'সায়েন্স' এই দুই জিনিসের মৌলিক বিষয়গুলোতে বিপুল মিসআন্ডাস্ট্যন্ডিং রয়ে গেছে আস্তিক নাস্তিক নির্বিশেষে আমজনতা সহ সবার মাঝে... যার ফলে বিতর্কের ঝড় আর থামেনা... অথচ মৌলিক বিষয়গুলো একটু মনযোগ সহকারে বুঝার চেষ্টা করলে দেখা যাবে ৯৫% বিতর্কের ভিত্তিমূল-ই অবশিষ্ট থাকেনা... আসুন কমন মিসআন্ডাস্ট্যান্ডিংগুলোর কয়েকটা শটকাটে দেখে নেই...

১. 'গডকে সায়েন্টিফিক্যালি প্রুফ বা ডিসপ্রুভ করা যায়' এই ধারণা থেকে আস্তিক নাস্তিক দুই পক্ষই দৈনিক হাজার হাজার বার স্রষ্টার অস্তিত্বকে প্রমাণ এবং মিথ্যাপ্রমাণ করে চলেছে, কিন্তু কেউ কারোটা আর মানেনা, সবাই নিজের অবস্থানে ইউনিক এবং রিজিড হয়ে আছে... ইসলাম ধর্মমতে মূলত স্রষ্টার ধারণাটাই নিদর্শনভিত্তিক বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত, নো ভিশন/ইনটেলেক্ট ক্যান কমপ্রিহেন্ড গড... অনেক আস্তিক এটা জেনেও বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমান করতে মাঠে নেমে যায়, আর নাস্তিক মূল ডেফিনিশনটা না জেনেই অথবা নিজের মত একটা ডেফিনিশন তেরী করে কোমরে গামছা বেন্ধে নেমে যায় কুস্তাকুস্তিতে ... আসলে এখানে সায়েন্টিফিক প্রুফ বা ডিসপ্রুফ এর কোন বিষয় নাই... কেন? জানতে চাইলে ২য় পয়েন্টে আসেন....

২. মিসআন্ডস্ট্যান্ডিং এর তালিকায় আরেকটা হচ্ছে 'সায়েন্টিফিক প্রুফ বা সায়েন্টিফিক এভিডেন্স মানেই হল এমন কিছু যা অকাট্য, প্রমাণিত বা ধ্রুবসত্য'... অথচ সাইন্সের কেতাবে এবং সায়েন্টিস্টদের মাঝে 'সায়েন্টিফিক প্রুফ' বা 'সায়েন্টিফিক এভিডেন্স' বলে কোন জিনিস সচরাচর দেখা যায়না... এইসব বিখ্যাত টার্ম পাওয়া যায় মিডিয়াতে, ননসায়েন্টিস্ট এবং কখনো কখনো ফিলোসোফারদের মাঝে... লূজলি স্পিকিং, প্রুফ থাকলে তা আছে 'ম্যাথমিটিক্যাল প্রুফ', নট 'সায়েন্টিফিক প্রুফ'.... এভিডেন্স থাকলে তা আ্ছে 'এক্সপেরিমেন্টাল এভিডেন্স' জাতীয় কিছু, নট 'সায়েন্টিফিক এভিডেন্স'....

এতটুকু পড়িয়া আস্তিক নাস্তিক ভ্রাতাগণ ভাবিয়া থাকিতে পারেন, এই নূতন পাগলের আমদানি হইলো কোত্থেকে!!!...বা প্রশ্ন করিতে পারেন, 'ভাহে! কয় বোতল গাঁজা খাইয়া এই লেখা শুরু কর্ছেন'?.... ভ্রাতাগণ! একটু থামেন, একটু শান্ত হোন, আর দুইটা মিনিট মনযোগ সহকারে পড়েন.... মিডিয়া যে সায়েন্টিফিক টার্মকে বিকৃত করে তার দুইটা উদাহরণ হাতে নাতে দেইখা লন....

a) সুপারকম্পিউটিং: হাজার হাজার কখনো কখনো কয়েক লাখ 'কোর' নিয়ে বিশাল বিশাল সাইজের সুপারকম্পিউটার যে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ঐজিনিসকে বলে সুপারকম্পিউটিং, তাইনা?.... অথচ দেখেন, কম্পিউটার সাইন্সের কোন কেতাবে এই মহান শব্দখানা পাওয়া যায়না... যেকোন কম্পিউটার সায়েন্টিস্টকে জিগান, ওরা বলবে 'প্যারালাল কম্পিউটিং' বা 'হাই পারফর্মেন্স কম্পিউটিং' অথবা সাধারণভাবে 'সায়েন্টিফিক কম্পিউটিং'.. কিন্তু মিডিয়া জনগনকে খাওয়াইছে সুপারকম্পিউটিং নামে... এই টার্মটা হাই পারফর্মেন্স কম্পিউটিং এর কোন বই বা পেপারে এখনো চোখে পড়েনি, বাট শব্দটার প্রচলন এত বেশী, বইয়ের পরিভাষা হতেও বোধয় সময় লাগবেনা....

b) বিগব্যাং থিউরি:মডার্ন ফিজিক্স আর কসমলোজির এক মহা বিস্ময় হইলো এই মহান বিগব্যাং থিউরি, তাইনা? সৃষ্টির শুরুতে কিছুই ছিলোনা, হঠাৎ করে কোত্থেকে এক বিশাল বিস্ফোরনের মাধ্যমে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি.... এই হইলো গিয়া বিগব্যাং এর সারাংশ.... অথচ ব্যাপক আশ্চর্যের বিষয় হইলো আপনি যদি কোন ফিজিসিষ্টকে বা কসমোলজিস্ট জিজ্ঞেস করেন বিগব্যাং থিউরী নিয়ে তাইলে উনি কোন কনফিউশন ছাড়াই বুঝে ফেলবে, হয় আপনি ননফিজিসিস্ট অথবা টেকনিক্যাল পার্সনই না, কিংবা আপনি একজন বিখ্যাত গুগল সায়েন্টিস্ট! ভাসা ভাসা আইডিয়া ছাড়া কসমোলজিতে আপনার আসলে কোন দখল নেই.... কারন হইলো বিগব্যাং থিউরী নামে কোন কিছু ফিজিক্সের বইতে আপনি পাবেন্না.... বিগব্যাং থিউরী নামে কমেডি সিরিজ পাবেন, বই ডকুমেন্ট ভিডিও বহুত পাইবেন, মাগার বিগব্যাং থিউরী বলে কোন কিছু বিজ্ঞানের বইতে পাবেন্না... মূলবিষয় হলো 'ডপলার রেডশিফট', যা থেকে ইউনিভার্সের এক্সপানশন এর ধারনা পোক্ত হয়.. তারপর ইউনিভার্সকে 'আইসোট্রপিক এন্ড হোমোজিনিয়াস' ধরে একটি ইকুইলিব্রিয়াম ইকুয়েশন ফর্ম করা হয়েছে, করেছেন বিখ্যাত রাশিয়ান ম্যাথমেটিশিয়ান এন্ড ফিজিসিস্ট আলেকজান্ডার ফ্রিডম্যান.. সেই ইকুয়েশনকে এনালিটিক্যালি সলভ করে শুরুর দিকটা বিবেচনা করলে চলে আসে সিঙ্গুলারিটি, যার ক্লিয়ারকাট কোন ব্যাখ্যা নাই, কারন সিঙ্গুলারিটিতে ল'জ অব ফিজিক্স এর টোটাল ব্রেকডাউন হয়ে যায়.. ফ্রিডম্যানের মডেল এর কয়েকদফা মোডিফিকেশন হয়েছে মাস ডেনসিটি, ডার্ক ম্যাটার, ডার্ক এনার্জি ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় কম্বাইন্ড করার মাধ্যমে... স্ট্যান্ডার্ড মডেল, ফ্রিডম্যান মডেল, বিগব্যাং মডেল, বিগব্যাং কসমোলজি ইত্যাদি বিভিন্ন টার্ম কসমোলজির বইতে পাওয়া গেলেও বিগব্যাং থিউরী বলে কোন কিছু আসলে নাই....... আবারও রিপিট করছি, সবচেয়ে বড় কথা হলো বিগ ব্যাং এমন একটা ধারনা যেখানে বিজ্ঞানের কোন কিছুর অস্তিত্বই থাকেনা, ব্রেকডাউন অব অল ফিজিক্যাল ল'জ.... যাকে বলে সিঙ্গুলারিটি.... অথচ মিডিয়ার প্রচারনা বা অন্য যেভাবেই হোক, এই জিনিসটার মহানত্ব অনেক আস্তিকের কাছে কোরানশরীফের চেয়েও বোধয় বড় ধ্রুবসত্য হিসিবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে.... তাদের মধ্যে এর যে পরিমান বিশ্বাসযোগ্যতা তার সাথে বাস্তবতা মিলালে মনে হতেই পারে এটা আসলেই একটা কমেডির পর্যায়ে চলে এসেছে…..

তাহলে এখন প্রশ্ন তোলাই যায় গ্রহনযোগ্যতার বিচারে বিগব্যাং কি আসলেই একেবারে শেকী, অনরিলায়েবল একটা ধারনা?? ……এইটার প্রপার আন্ডাস্টেন্ডিং এর জন্য তিন নাম্বার পয়েন্টে আসেন....

৩. এই মিসআন্ডাস্ট্যান্ডিং টাই সব কিছুর মূল, ভুল বুঝাবুঝি রয়েছে খোদ সায়েন্স, সায়েন্টিফিক, সায়েন্টিফিক মথেডলজি এইসব বেসিক টার্মিনোলজি নিয়েই....সায়েন্স নির্ভর করে অবজার্ভেশনাল, ইম্পিরিক্যাল, এক্সপেরিমেন্টাল ডেটা, রেজাল্ট এন্ড মেজারমেন্ট এর উপরে....অক্সফোর্ড ডিকসানারিতে সায়েন্স এর ডেফিনিশন মিলায়ে নেন..a method of procedure that has characterized natural science since the 17th century, consisting in systematic observation, measurement, and experiment, and the formulation, testing, and modification of hypotheses... কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অন্যতম দিকপাল হাইসেনবার্গ তার 'ফিজিক্স এন্ড বিয়ন্ড' বইয়ের ভুমিকাতেই উল্লেখ করেছেন.. Science rests on experiments... 'সায়েন্টিফিক' এই টার্মের ব্যাখ্যায় নিউটন নিজেই তার বিখ্যাত Philosophiae Naturalis Principia Mathematica তে বলেছেন..To be termed scientific, a method of inquiry must be based on empirical and measurable evidence subject to specific principles of reasoning ... কোয়ান্টাম মেকানিক্স এর দুই প্রধান গুরু আইনস্টাইন এবং হাইসনেবার্গ দুজনেই একমত, it is theory that determines what is measurable in experiments and not vice versa. তাহলে প্রশ্ন করতেই পারেন, যা এক্সপেরিমেন্টাল রেজাল্ট দিয়ে ভেরিফাই করা হয়েছে, তা কি প্রমাণিত নয়?... না! …সায়েন্টিফিক ওয়ার্ল্ডে যত এসট্যাবলিশড থিওলী আছে, সেগুলো জাস্ট থিওরী.. থিওরী কখনো প্রুফ করা যায়না বরং ডিসপ্রুফ, ডিসপিউট বা ফলসিফাই করা যায়.. No scientific idea is ever once-and-for-all ‘proved’ [Computational Multiscale modeling, Dr. Steinhauser].... সায়েন্টিফিক থিওরী সর্বদা ডিসপ্রুফ হবার জন্য ওপেন.... থিওরীতে সার্টেনিটি বা প্রুফ বা ফ্যাক্ট বলে কিছু নেই…. আইনস্টাইনই বলেছেন.. "So far as the theories of mathematics are about reality, they are not certain".... যদি কোন থিওরী বর্তমান সময় পর্যন্ত কোন সার্বজনীন ভাবে এক্সপেরিমেন্টাল এভিডেন্সের সাথে কন্ট্রাডিক্ট না করে তাহলে তা ‘ল’ এর পর্যায়ে চলে যায়.... মাস্টার্সে কন্টিনিউয়াম মেকানিক্স (এপ্লাইড ভার্সন অব ক্লাসিক্যাল মেকানিক্স) পড়তে গিয়ে দেখেছি কোন কিছু থিওরী হবার আগে সেটা পসটুলেট/এক্সিওম এবং লেমা'র স্তর পাড়ি দিতে হয়… যে তত্ত্বের উপর এক্সপেরিমেন্ট যত বেশি হয় এবং রেজাল্ট যত ক্লোজ হয় তার গ্রহনযোগ্যতা তত বাড়ে, তাই বলে কোন কিছু প্রোভেন ফ্যাক্ট হয়ে যায়না... গত শতকের ওয়ান অব দি মোস্ট ইনফ্লুয়েনশিয়াল ফিলোসোপারস, কার্ল পপার তার The Logic of Scientific Discovery বইতে বলেছেন, ‘হাজারটা এক্সপেরিমেন্ট একটা থিওরী কে প্রমান করতে পারেনা বাট একটা এক্সপেরিমেন্টাল এভিডেন্সই থিওরী কে ফলসিফাই করতে পারে’..... আর যেখানে এক্সপেরিমেন্ট ই তেমন হয়নি বা হওয়া সম্ভবও না, ফ্যাকচুয়াল বেসিস থেকে তার গ্রহণযোগ্যতা কোথায়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা...

আরেকটা জিনিস পরিস্কার করে রাখা প্রয়োজন, বিজ্ঞানে কম্প্লেক্স ন্যাচারাল ফেনোমেনা ডেভেলপ হয় ম্যাথমেটিক্যাল থিওরী বা মডেল দিয়ে.... একটা ম্যাথমেটিক্যাল মডেলের গ্রহনযোগ্যতা নির্ভর করে তার এসাম্পশনস এর নির্ভুলতার উপরে ... এসাম্পশনস দিয়ে কম্প্লেক্স রিয়েলিটিকে অনেক সিম্পল করে ফেলা হয়, এসাম্পশনস ছাড়া সবক্ষেত্রে পারফেক্ট মডেল ডেভেলপ করা সম্ভব হয়না... এসাম্পশনস এর পারফেক্টনেস ভেরিফাই করা সবসময় তেমন সহজও না.... এক্সপেরিমেন্টাল রেজাল্ট এর সাথে মডেল এর কনক্লুশন যত ক্লোজ হবে, বুঝতে হবে এসাম্পশনস তত ভালো....

এবারে আসেন মূল বিষয়ে ফিরে যাই, আস্তিক নাস্তিক বিতর্কের অন্যতম প্রধান বিষয় স্রস্টার অস্তিত্ব বা অনস্তিত্বের সায়েন্টিফিক প্রুফ বা ডিসপ্রুভ….. তার সাথে রিলেটেড আরেকটা স্ট্রং বিতর্ক হচ্ছে এভ্যুলশনারি বায়োলজি'র বিবর্তনবাদ নিয়ে.... একপক্ষ বলছে এটা এস্টাবলিশড সায়েন্স, কেউবা আরেকটু নমনীয় হয়ে এটা সায়েন্স, আর অপরপক্ষের লোকজনের কথা এটা কখনো সায়েন্স হতেই পারেনা.... এটা 'হাইপোথিসিস'.... আসল কথা হলো বিবর্তনবাদকে থিওরী, সায়েন্স বা হাইপোথিসিস যাই বলেননা কেন, বিজ্ঞানের পরিভাষায় ওটা সায়েন্স, এমনকি হায়পোথিসিস হলেও.... এটাও একটা মিসআন্ডাস্টেন্ডিং যে হাইপোথিসিস হলো ভিত্তিহীন আকামের একটা জিনিস... আসলে ফিজিক্সে যেটা পসটুলেট, এক্সিওম বা লেমা; বায়োলোজিতে এবং এসট্রনমিতে সেটাই হায়পোথিসিস এর পর্যায়ে পড়ে.... বিজ্ঞানে হায়পোথিসিস কোন আন্দাজ অনুমান নয়, বরং A tentative educated insight into the natural world; a concept that is not yet verified but that if true would explain certain phenomena...

বিজ্ঞানের যেসব ডিসিপ্লিনে সবসময় সকল বিবেচ্য বিষয়ের এক্সপেরিমেন্টাল রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব হয়না অথব এক্সপেরিমেন্ট করা যায়না, সেসব ক্ষেত্রে হায়পোথিসিস ই প্রাথমিকভাবে মূল ভরসা হয়ে থাকে, যাকে একটা ছোট্ট এক্সপেরিমেন্টাল রেজাল্টই পাল্টে দিতে পারে... কসমলজি এবং এভ্যূলশনারি বায়োলজির অনেক কিছুই ল্যাবরেটরীতে টেস্ট করা সম্ভব হয়না বলেই এজাতীয় বিষয়ের বৈজ্ঞানিক ধারনা বা তত্ত্বগুলো মোর আনরিলায়েবল দ্যান ফিজিক্স ... অবশ্য অনেক ডিকশনারীতেও কসমলজিকে ফিজিক্স না বলে মেটাফিজিক্স বলা হয়েছে…. কসমলোজি নিয়ে আরো একটা মজার কথা প্রচলিত আছে Cosmologists are often in error but never in doubt... !!!!!… অবশ্য কসমোলোজির মানইজ্জত রক্ষার্থে কেউ কেউ এটাও বলে থাকেন যে এক্সপেরিমেন্টাল কসমোলজি ইজ সায়েন্স, বাট রেস্ট আর মেটাফিজিক্স…. এবার এটার সাথে বায়োলজির বিবর্তনবাদ কে মিলিয়ে নেন, ডিসিসান আপনাদের হাতে!

এই বিষয়ে একটা বিখ্যাত গল্প প্রচলিত আছে সায়েন্টিফিক ওয়ার্ল্ডে, এখানে গল্পটা বোধয় একেবারে অপ্রাসঙ্গিক হবেনা... কমমোলজিস্ট, ফিজিসিস্ট আর ম্যাথমেটিশিয়ান তিনজন কনফারেন্স শেষে ট্রেনে করে কোথাও যাচ্ছিলো যুক্তরাস্ট্রের কোন এক শহর থেকে.....কোন এক স্টেসনের পাশে তারা দেখলো একটা গরু ঘাস খাচ্ছে, যেটার একপাশ দেখা যাচ্ছে সাদা-কালোয় মিশ্রিত, (অনেকটা নিউজিল্যান্ডের গরুর মত!!!!).... কসমোলজিস্ট বলল দেখ, যুক্তরাস্ট্রের গরুগুলো সব কি সুন্দর সাধা কালো..... তখন ফিজিসিস্ট সাথে সাথে বলে উঠলো, আরে না, যুক্তরাস্ট্রের অন্তত কিছু গরু এরকম সাদাকালো.... ম্যাথমেটিশিয়ান তাদের জবারে বললো, ব্যাপারটা আসলে এরকম হবে, যুক্তরাস্ট্রের একটি গরুর অন্তত একসাইড এরকম সাদাকালো.... গল্প হলেও এতে কিন্তু কসমলোজি আর বা এজাতীয় হায়পোথিসিসের রিলায়েবিলিটি কেমন তা গল্পের কসমলজিস্ট এর মন্তব্য থেকেই বুঝা যায়….

প্রাসঙ্গিকভাবে জাকির নায়িকের দুইটা কথা এড করা যায় এখানে, জাকির নায়িক যখন বলে থিওরী অব এভ্যূলূশন জাস্ট একটা থিওরী, কোন ফ্যাক্ট না, তখন ঠিকই বলেন.... আবার তালগোল পাকিয়ে ফেলেন, যখন কোরান শরীফের আয়াত ২১:৩০ রেফারেন্স দিয়ে বলেন, এটা বিগব্যাং থিওরী ইন এ নাটশেল!!!.... আরে ভাই, কোরান শরীফে থিওরী আসবে কেন? শুরুতেই তো বলা আছে ওটা 'বুক অব ফ্যাক্ট'... আপনি ফ্যাক্ট এর সাথে থিওরী মিলালে কোরানের গ্লোরি কি বাড়ে?

সবশেষে একথা বলে রাখা দরকার, একটা বিষয়ে আস্তিক নাস্তিক বোধয় একমত হবে যে বিজ্ঞান এবং বিশ্বাস (ইসলাম ধর্মমতে) দুইটারই একটা কমন ভিত্তি হচ্ছে 'ফলসিফিকেশন'... বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে ফলসিফিকেশন টেস্ট .. এতটুকু পর্যন্ত যদি একমত হইতে পারেন (না পারলে কুনু সমইস্যা নাই), তাইলে এবার বলেন, গডকে প্রুফ বা ডিসপ্রুফ করার চেষ্টা তাও আবার সায়েন্টিফিক্যালি, অথবা এভল্যুশনের মাধ্যমে স্রষ্টাকে অস্বীকার করার সায়েন্টিফিক প্রচেষ্টা(!) কতটুকু সায়েন্টিফিক (!)??? এইসব বিতর্কের ভিত্তি কোন জায়গায় লুকায়া আছে??

বিষয়: বিবিধ

২৮২৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File