ইজরাঈলে দাবানল এবং মুসলমানদের উল্লাস।
লিখেছেন লিখেছেন আয়নাশাহ ২৭ নভেম্বর, ২০১৬, ০৯:৪৮:১৮ সকাল
ইজরাঈলে আগুন লেগেছে এই খবরে অনেক মুসলমান মহা খুশী হয়েছেন দেখে কি বলবো ভাবছি। একটা জনগোষ্টির উপর এরকম বিপদ হলে কি মুসলমানদের খুশী হবার বিধান আছে? হোক না তারা ইহুদী খ্রিষ্টান বা অন্য যে কেউ। এরকম বিপদ মুসিবত তো আমাদের উপরও আসে। আল্লাহ আমাদের উপর বিপদ মুসিবত দিয়ে আমাদেরকে পরীক্ষা করেন সেকথা কুরআনে স্পষ্ট করেই বলেছেন। কিন্তু অন্যদের ব্যাপারে বিধান কি?
আমরা যদি ভিন্নধর্মীদের বিপদে উল্লাস প্রকাশ করি তাহলে তারা আমাদের বিপদে কি করবে? যখন হজ্বের সময় দুর্ঘটনায় অসংখ্য হাজিদের মৃত্যু হয় তখন কি তারা এরকম উল্লাস প্রকাশ করে? খরা, বন্যা, ভুমিকম্প, জলোচ্ছাস, সুনামী ইত্যাদি সহ মানব সৃষ্ট দুর্যোগ আমাদের উপরও আসে। তখন যদি ওরা এরকম উল্লাস করে আমাদের কেমন লাগবে একবার ভেবেছেন? তাহলে আমাদের এরকম উল্লাস প্রকাশ কি রকম সভ্যতা?
যেকারো বিপদ মুসিবতে তাদের সাহায্য করার জন্য তাদের ধর্মীয় পরিচয় খুঁজা কি জরুরী? এরকম হলে তো মায়ানমারের মুসলমানদের উপর অত্যাচারের জন্য আপনারা দুনিয়ার অন্যান্য ধর্মের লোকদের দৃষ্টি আকর্ষন করছেন কোন যুক্তিতে? অথচ আমরা দেখেছি, আমাদের বিপদ মুসিবতে খ্রিষ্টান পশ্চিমারা অনেক বেশী সাহায্য করেছে। আমরাও অনেক সময় তাদের হাতের দিকে তাকিয়ে থাকি, কখন ইউরোপ আমেরিকা সাহায্য নিয়ে আসে। কারো বিপদ মুসিবতে ধর্মীয় পরিচয়ে না, মানূষ পরিচয়ে এবং মানুষ হিসাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া একজন মানূষের কর্তব্য। আর আপনি হচ্ছেন সব মানুষের সেরা মানুষ, মানবাতার মুক্তি দুত মুহাম্মদ (সঃ) এর উম্মাত। আপনার কাছেই তো মানুষের সবচেয়ে বেশী মানবতা আশা করার কথা। আপনি কেনো অন্য মানুষের দু;খ দুর্দশায় উল্লসিত হবেন? আপনি সাহায্য করতে পারলে উত্তম আর না পারলে অন্তত সমবেদনা জানান। অন্যের বিপদে অট্টহাসি দেবেন আর নিজেদেরকে সর্বোত্তম জাতি বলে বড়াই করবেন এ কেমন কথা?
আশার কথা দুনিয়ার আর কোনো মুসলমান ইজরাঈলের বিপদে এগিয়ে আসেনি ঠিক কিন্তু তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান তাদেরকে আগুন নিয়ন্ত্রনে সাহায্য পাঠিয়েছেন। ইজরাঈলও এমন সাহায্যকে স্বাগত জানিয়েছে। বিপদে এমন সাহায্য তো প্রকৃত মুসলমানের পরিচয়। বলা তো যায়না, এরকম মানবিক আচরণের কারণে ইহুদীরাও আমাদের প্রতি মানবিক আচরণ করতে পারে। মুসলমান তো আচরণ দিয়েই ইসলামের সৌন্দর্য প্রকাশ করবে যাতে সবাই ইসলামের মহান ছায়ায় আশ্রয় নেয়।
ইজরাঈলের সাথে মুসলমানদের শত্রুতা মানূষ হিসেবে নয় বরং এই শত্রুতা ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক কিন্তু এই সাহায্য একটা মানবিক সাহায্য। এতে রাজনীতি বা ধর্মীয় ফতোয়া দেয়া ঠিক হবেনা।
বিষয়: বিবিধ
১৬০৪ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
একমত পোষ্টের সাথে। তবে আমার মনে হয় মুসলিম দের এই আচরন ই তাদের পরাজিত থাকার কারন নির্দেশ করছে। ইকবাল এর ভাষায়
"সুবিচার সেযে প্রকৃতির রিতি
প্রকৃতি খেলাপ করেনি তার
কাফির লভিল হুর-গেলমান
মুসলিম নিতি করিয়া সার"
একটু ভেবে চিন্তে বলবেন।
আজ এরদোগান না হয়ে অন্য শুধু আরব দেশ গুলো যদি সাহায্য করতো! তাহলে এই লিখার লিখককে আপনি গালাগালি করতেন।
সি'সি যদি এমন সাহায্য করতো, তাহলে আপনিই ফেবু ও ব্লগ নাচিয়ে ছাড়তেন।
একটু বিবেক থাকা উচিত জনাব ৷
ইহুদীরা সরাসরি দাবি করছে এটা মুসলমানদের কাজ ৷ আর সেই ইহুদীদেরকে সাহায্য করতে যাচ্ছে তথাকথিত যুগের আইয়্যুবীরা! এতে কি ইহুদীদের অপবাদ থেকে মুসলমানরা মুক্ত হবে ?
ফিলিস্তীনে সত্তুর বছর ধরে মুসলিম নিধন চালাচ্ছে ইহুদীরা ৷ তখন কি সেখানে কোন বিমান গেছে মুসলমান ভাইবোনদের সাহায্যার্থে ?
অর্থোডক্স জু সাপোর্ট মুসলিম।সেমিটিক বনী ইজরাইলই ইহুদিরা ফিলিস্তিনই ষ্টেট সাপোর্ট করে।
অনেকদিন পরে ব্লগে এলাম।
একটা সূত্র খুঁজছি। সৈয়দ মুজতবা আলী'র লেখা 'বেঁচে থাকো সর্দিকাশি' নকল করে চেতনাজীবি আনিসুল হকের লেখা'র উপর ব্লগে কেউ একজন লিখেছিলেন। সেটা'র কোনো লিঙ্ক দিতে পারবেন কি?
মন্তব্য করতে লগইন করুন