অভিজিত রায়কে নিয়ে একটা মজার ঘটনা শেয়ার করতে ইচ্ছা করছে।
লিখেছেন লিখেছেন আয়নাশাহ ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১১:৪৫:২৯ সকাল
সে ২০০৩ সালের কথা। ইন্টারনেটে সবেমাত্র বাংলা সেখালেখি শুরু হয়েছে। অভিজিতরা কিন্তু তখন থেকেই মুক্তমনা.কম, ভিন্নমত.কম, সদালাপ.কম ইত্যাদি বিভিন্ন সাইটে ইসলামের বিরুদ্ধে লেগেই ছিল। তাদের মোকাবেলা করতে আমরা গুটিকয় লোক হিমসিম খাচ্ছিলাম। এই অভিজিত তখন সনামে এবং কখনো মুসলিম নাম নিয়ে (বেনামে) ইসলামের বিরুদ্ধে লিখতো। অভিজিতের একটা লেখার বিরুদ্ধে আমি যখন যৌক্তিক জবাব দিলাম তখন 'রুদ্র মোহাম্মদ' নামে একজন পাল্টা একটা অশ্লীল গালাগালি পূর্ণ লেখা লিখে অভিজিতের পক্ষ নিল। কিন্তু আব্দুর রহমান আবিদ নামে আমাদের এক ভাই ধরে ফেলেন যে ঐ লেখাটা অভিজিতের আইপি থেকে এসেছে এবং লেখাটা 'রুদ্র মোহাম্মদ' এর না। তিনি এও প্রমান করে দিলেন যে 'রুদ্র মোহাম্মদ' বলে কেউ নাই বরং সে ই 'রুদ্র মোহাম্মদ' নামে লিখে। তিনি যখন চ্যালেঞ্জ করলেন তখন সে বলল, লেখাটা রুদ্র তার কাছে ইমেইল করেছিল এবং তার কম্পিউটার থেকে পোস্ট করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সদালাপ.কম এ বিরাট বিতর্ক জমে উঠে। এর এক পর্যায়ে সে আমাকে নিজের পরিচয় গোপন করার অপবাদ দেয়। তাকে মিথ্যাবাদী প্রমানের জন্য সেদিন আমার একটা লেখা সদালাপে প্রকাশ হয়েছিল। আজ অভিজিতের মৃত্যুর পর আমার বন্ধু মাহফুজ ভাই তার ব্যক্তিগত আরকাইভ থেকে আমার লেখাটা উদ্ধার করে পাঠালেন। বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারলাম না।
সেই লেখাটা পড়ুন।
বুঝিবার কিছুই নাই ।
আয়না শাহ
----------
আমি রেজাউল করিম ওরফে আয়না শাহ। আয়না শাহ নামে আমি প্রায় ১৫ বছর যাবত লেখালেখি করে আসছি। আগে যখন শুধু নাটক প্রবন্ধ ইত্যাদি লিখতাম তখন স্বনামেই লিখতাম। কিন্তু ১৯৮৯ সাল থেকে যখন পত্রিকায় কলাম লেখা শুরু করলাম তখন বিপত্তি দেখা দিলো। বিষেশ করে যখন কয়েকজন প্রথিতযশা লেখকের বিরুদ্ধে সরকারের তরফ থেকে ব্যবস্থ নেয়া শুরু হলো, এমনকি একজন ব্যাঙ্কার-যিনি জনতা ব্যাঙ্কের ব্যবস্থপনা পরিচালক ছিলেন- তার একটি লেখা দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত হলে শেষ পর্যšত তাকে সম্ভবত অবসরে যেতে বাধ্য করা হয়।সরকার একটি সার্কুলার জারী করে সকল সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীকে সংসাদপত্রে লেখালেখির আগে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে অনুমতি নেয়া বাধ্যতামুলক করে দিলেন। আর একথাতো সবারই জানা যে, আমাদের দেশে এরকম একটি অনুমতি পাওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপর, বিশেষ করে যখন সরকার ও প্রসাশনের বিরুদ্ধে কলাম লেখার প্রশ্ন আসে তখনতো এরকম অনুমতি পাওয়া অসম্ভব। আমিও একটি সরকারী চাকুরী করতাম।কলাম লেখতে সরকার, প্রশাসন ও সরকারী লোকদের সমালোচনা করা ও অনেক তথ্য প্রকাশ করা জরুরী হয়ে পড়তো। তখন আমার ঘনিষ্ট বন্ধু, একটি স্থানিয় দৈনিকের স¤পাদক, পরামর্শ দিলেন একটি যুতসই ছদ্মনাম পছন্দ করে লেখা দিতে। সেই থেকে আমি আয়না শাহ হয়ে গেলাম। আয়না শাহ নামে আমার অনেক পাঠক আমাকে চিনেন, এমনকি আনেকে আমাকে আয়না শাহ নামে ডাকেনও। এখনো যদি আমি আমার পুরাতন পত্রিকার অফিসে ফোন করে বলি আমি রেজাউল করিম তাহলে আমাকে অনেকেই চিনেনা, কিন্তু যাদ বলি আমি আয়না শাহ বলছি,তবে সাথে সাথে আমাকে সবাই চিনে ফেলে। একারণেই আমি আয়না শাহ নামে লিখি ।
১৯৮৪/৮৫ থেকে বাংলদেশের পত্রপত্রিকা ঘাটলে উভয় নামেই আমার লেখা পাওয়া যাবে। বাংলাদেশের রেডিওতে যদি খোঁজ নেন তবে আমার স্বনামে লেখা কয়েকটি নাটক পেয়ে যাবেন। ১৯৯৬ সালে দেশাšতরী হওয়ার পর আর লেখালেখিতে সময় দিতে পারিনি তবুও এখানে যদি নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সপ্তাহিকগুলোতে খোঁজেন তবুও আয়না শাহ নামে কিছু লেখা পাবেন আশাকরি। আমার এতোকথা বলার কারণ হলো অভিজিৎ বাবুদের কাছে নিজের পরিচয় প্রকাশ করা। আমি নিজেকে আড়াল করার জন্য আয়না শাহ হইনি। ভিন্নমত ও মুক্তমনার আর্কাইভে আমাদের লেখালেখি সেইভ করে রাখার জন্য সরদার বাবু আদেশ দিয়েছেন। আমিও বলি, কাজটা ভালই, আমাদের পরিচয়টা যদি রাখা থাকে তবে নিজেকে ধন্যই মনে হবে।
এবার আসুন পিঠ চাপড়ানোর ব্যাপারটি নিয়ে কথা বলা যাক। এটা একটা সাধারণ যুক্তির কথা। যখন অভিজিৎ বাবুর নাম পিডিএফ এ এসে গেলো তখন এছাড়া তিনি আর কি বলে নিজের মুখ রাখবেন যে রুদ্র তাকে লেখাটি পাঠিয়েছিল? বললেন তিনি আগেই সদালাপে তার উত্তরটি পাঠিয়েছিলেন।আর আয়না শাহ তার লেখা দেখে সম্ভবত আর একটি লেখা পোষ্ট করে দিলেন জিয়া উদ্দিনের সাথে যোগসাজস করে। যারা একে অপরের পিঠ চুলকান আর যোগসাজস করেন তারা এরকমই ভাববেন এতে আমরা আশ্চর্য হইনা আসলে একবার যখন একটি অসত্য ভাষণ কারো মুখ থেকে বের হয়ে পড়ে, তখন তাকে প্রতিষ্টা দেবার জন্য হাজারটা অসত্য যে বলতে মানুষ বাধ্য হয়, অভিজিৎ বাবু আবারও তা প্রমাণ করলেন। তাঁর কথায়ই তিনি জবাব পাঠিয়েছিলেন ১৫ তারিখ সকাল সাতটায়। অথচ আমি আমার লেখা ১৫ তারিখ ভোররাত ১:২৫ এ পাঠিয়েছি। দেখুন প্রমান।
(প্রমান স্বরূপ আমার ইমেইল এটাচমেন্ট এর হেডার এবং ফুটার এর স্ক্রীন শট দিয়েছিলাম যা এখন আর নাই)
সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলো। আজ আমি কই আর অভিজিত কই?
বিষয়: বিবিধ
২৮৬৭ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অভিজিত্ রায় মরেও মরলো না॥
তাকে চেনার জন্যে এখন কিছু নতুন স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র রা নেটে সার্চ দিবে তার লেখা আবার পড়া শুরু করবে ॥
অজ্ঞতা এবং নিজের জানার চেষ্টা না করে আরো কিছু অভিজিত্ রায় জন্ম নিবে।
এটাই লজ্জাজনক যে আরো অনেকগুলো অভিজিত্ রায়ের শুক্রাণু প্রবেশ করেছে চিন্তা চেতনা।
তার স্ত্রীর ব্যপারে বিস্তারিত কোথাও দেখলাম না।
এমন'কি উইকিপিডিয়া'তেও কিছু লেখা নেই।
তবে মেয়েটা'র পোস্টিং অনুযায়ী, সে তার বাবা'র আদর্শকেই আঁকড়ে ধরেছে।
এলাকায় থাকতো। তার নেইবারও জানতো না
তারা নাস্তিক। বাংলাদেশী ব্যাবসায়ী সংস্থা তার
নাস্তিকতার কথা প্রকাশ করে,লোকাল টিভিতে।
নাস্তিকতা, সাউর্থের ষ্টেট গুলো খুব রক্ষনশীল
শুভ হোক এ পথচলা...
মন্তব্য করতে লগইন করুন