বস্তুবাদীদের পুজা এবং অনুৎপাদশীল খরচ।
লিখেছেন লিখেছেন আয়নাশাহ ২০ অক্টোবর, ২০১৪, ১১:০৬:৩১ সকাল
বস্তু বাদ বলুন আর নাস্তিক্যবাদ বলুন অথবা কমিউনিজমই বলুন, এর সার কথা হল 'নগদ যা পাও হাত পেতে নাও, বাকীর খাতা শূন্য থাক।' অথবা 'দুনিয়াকা মজা লে লোও দুনিয়া তুমহারি হ্যায়'। অর্থাৎ এই জীবনটা ভোগ করো কারন যৎসামান্য কটা দিন পরেই তুমি মরে যাবে, তোমার এই সুন্দর দেহটা পচে গলে মাটিতে মিশে যাবে। সেটা একটা ভাল জৈব সার হয়ে গাছের খাবারে পরিণত হবে। প্রায় এই একই ধারণা পোষণ করেন ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদিরাও। এ জীবনের পর কি হবে সেটা নিয়ে ভাবা ভাবির কোনো দরকার নাই। এই জীবনের পরেও আরেকটা জীবন আছে সেটা নিয়ে ভেবে জীবন উপভোগ করা থেকে বিরত থাকা নির্বুদ্ধিতা। তারা অনেকেই যদিও বিশ্বাস করেন যে খোদা বা গড নামে একটা শক্তি আছে তবে সেটা এই বিশ্বাস পর্যন্তই। গড আছেন তাতে আমার কি। তিনি আছেন একথা তো বিশ্বাস করি ব্যাস। আমার ব্যাক্তি জীবন, পারিবারিক বা রাষ্ট্রীয় জীবনে তাকে টেনে এনে ঝামেলা বাধানো একটা বাজে কাজ। তাকে তার জায়গায় থাকতে দাও, নিজের জীবনটা নিজেই গড়ে নাও এবং উপভোগ করো। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ আমেরিকা। তারা বলে তারা গড এ বিশ্বাস করে। তাদের মুদ্রায় পর্যন্ত কথাটা লিখে দিয়েছে, ইন গড উই ট্রাস্ট। কিন্তু এ পর্যন্তই। জীবনের কোনও ক্ষেত্রে গড কে তারা টেনে আনেনা।
যারা এই দুনিয়ার জীবনকেই শেষ এবং একমাত্র জীবন মনে করেন তারা সবাই নগদে বিশ্বাসী। লতিফ সিদ্দিকির মতো যারা মনে করেন যে, মুসলমানেরা হজ্বে গিয়ে কোটি কোটি টাকার অপচয় করছেন তারাই প্রকৃত বস্তুবাদি। এরা যা কিছু অনুতপাদনশীল তা করতে পছন্দ করেন না। নামাজে বা পুজা করতে সময় নষ্ট হয় বলে তারা এসবে সময় এবং পয়সা নষ্ট করতে রাজী না কারণ তাতে উৎপাদন হয়না। লতিফ সিদ্দিকির ভাষায় তারা প্রোডাকশন দিচ্ছে না, শুধু খাচ্ছে আর রিডাকশন করছে।
কিন্তু একটা বিষয় আমি বুঝতে পারিনা। এইসব বস্তুবাদিরাও দেখি বিশেষ বিশেষ দিনে কোনো কোনো স্থানে বা মূর্তিতে বা ছবিতে ফুল দেন। আবার নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এইসব অনুস্টান করতে গিয়ে কতো সময় নষ্ট হয়, কতো টাকা খরচ হয় সে হিসাব তারা করেন না কেনো? দেশে এইসব মূর্তি, সৌধ, ভাস্কর্য, স্তম্ভ, চত্তর ইত্যাদি বানাতে গিয়ে দেশের কতো টাকা অনুতপাদনশীল খাতে খরচ হয়েছে সেটাও তারা হিসাব করেন না। এইসব দিনগুলোর কোনোটিতে আবার সরকারী ছুটিও থাকে। কেউ কাজ করেনা কিন্তু বেতন পায়। দেশের কোটি কোটি টাকার ফুল নষ্ট করা হয়। যদি গাছের প্রাণ আছে বলে তারা বিশ্বাস করেন তবে কত কোটি প্রাণ তারা বধ করছেন সে হিসাবও তারা করতে চান না যদিও কোরবানীর সময় তারা পশুর জন্য কান্না শুরু করে দেন। এই যে মুক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা, ফুল দেয়া, শ্রদ্ধা নিবেদনের নামে কুর্নিশ করা, কারো জন্ম বা মৃত্যু দিনে গান বাজনা করা, স্মৃতি স্তম্ভ, শহিদ মিনার, শিখা অনির্বাণ, অথবা ভাস্কর্য নাম দিয়ে সারা দেশে অসংখ্য মূর্তি বানানো, পশু পাখির মুখোশ পরে মিছিল করা, বিশেষ সাজে সাজা এইসব করে কি উৎপাদন তারা করেন?
ওরা আসলে মানুষ না, মানুষ নামের জীব।
বিষয়: বিবিধ
১৫৪৫ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
একমত এবং দাবী করি তাই।
তাদের আত্মপ্রবঞ্চনা ও স্ববিরোধিতার ব্যাপারটা তারাও বোঝে- কিন্তু সমাজের চাহিদা উপেক্ষা করতে পারেনা-
তাই এসবকেও বাণিজ্যের উপায় বানিয়ে নিয়েছে এবং প্রমোট করছে
আপনি যেগুলো অনুতপাদনশীল বলেছেন সেসবের পিছে কতশত কোটি টাকার বাণিজ্য হয় এবং কী পরিমানে মানিসার্কুলেশন হয় তা যদি ভাবতেন তবে মনে হয় এমন কথা বলতেননা-
অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন