আপনা মাংশে হরিণী বৈরী ।
লিখেছেন লিখেছেন আয়নাশাহ ০২ এপ্রিল, ২০১৪, ১২:৪৪:৩৪ দুপুর
আপনা মাংশে হরিণী বৈরী বলে একটা কথা আছে। জামায়াতে ইসলামির অবস্থা আজ এই রকম হয়ে গেছে।
উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতের যে জনপ্রিয়তা প্রকাশ পেয়েছে তা ই দলটিকে নিষিদ্ধ করতে জামায়াত বাদে সবাইকে উৎসাহিত করবে এবং করেছেও। আওমী লীগ কখনো জামায়াত নিষিদ্ধ করবে বলে সরাসরি বলেনি। হাসিনা স্পষ্ট ভাবে বলেছেন কোনো দলকে নিষিদ্ধ করতে তারা চান না। কিন্তু গত ক'দিন আগে সৈয়দ আশরাফ বলেছেন জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়টি রাজনৈতিক ইস্যু। এর পর পরই আওয়ামী ঘেঁষা বিভিন্ন গণমাধ্যমে আগামী সংসদ অধিবেশনে জামায়াত নিষিদ্ধের বিল উঠছে বলে খবর বেরিয়েছে। ইতোমধ্যে আইসিটিতেও জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে যা সহসাই আমলে নিয়ে বিচারিক কার্যক্রম শুরুর কথা রয়েছে। গত পাঁচ বছর জামায়াতকে যদিও দাঁড়াতে দেয়া হয়নি তবে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক ভাবে দলটিকে নিষিদ্ধ করা হবে এমন কথা স্পষ্ট করে বলা হয়নি বরং উল্টো কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এখন তারা সরাসরি নিসিদ্ধের কথা বলছে কেনো?
'র' এর পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে কামায়াতের সমর্থন ২৫% এরও বেশী যা মনোমোহন সিং প্রকাশ করে দিয়েছিলেন। এই হিসাবকে ধরে নিয়েই 'র' জামায়াত নির্মূলের জন্য আওয়ামি লীগকে ক্ষমতায় বসায়। তাদের ধারণা ছিল জামায়াত নেতৃত্বকে বিচারিক হত্যা করে এবং বাকীদেরকে পিটিয়ে শেষ করে দেয়া যাবে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতের প্রতি জনগণের সমর্থন যেভাবে দেখা গেছে তাতে 'র', সিআইএ, মোশাদ সহ মধ্য প্রাচ্যের রাজতান্ত্রিক দেশগুলোর কাছে এই বার্তা পৌঁছে গেলো যে, না, জামায়াতকে শেষ তো করা গেলোনা বরং মানুষের কাছে ওদের গ্রহণযোগ্যতা আরো বেড়ে গেছে যা মিশর, তিউনিশিয়া বা তুরস্কের রূপ ধারণ করা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
যে বিএনপি'র সাথে জামায়াত জোটবদ্ধ সেই বিএনপিও এখন জামায়াত নিষিদ্ধ হোক সেটা চাইবে এবং এদের একটা অংশ তো দীর্ঘ সময় ধরে এমনটা চাইছেই। কারণ, উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত বেশ কয়েকটি স্থানে বিএনপিকে হারিয়ে নিজেরা বিজয়ী হয়েছে। এমনকি বিএনপি'র ঘাটি বলে খ্যাত বগুড়াতে জামায়াত বিএনপির সাথে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে এবং জিতেছে। দেশের অনেক স্থানেই জোটবদ্ধ ইলেকশন হয়নি। কোথাও কোথাও একে অপরকে দোষারোপ করেছে। এমনও দেখা গেছে যে, যেখানে বিএনপি প্রার্থীর কারনে জামায়াত হেরেছে সেখানে আগামী সংসদ ইলেকশনে বিএনপিকে ছাড় না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জামায়াত বা এর স্থানীয় সংগঠন। আর জামায়াত যদি শক্তিশালী হয় তবে বিএনপি'র জন্য এর চেয়ে বড়ো দুঃস্নগবাদ আর কিছুই হতে পারেনা। এতো সমালোচনা এবং বদনাম মাথায় নিয়েও বিএনপি জামায়াতকে জোটে রেখেছে শুধু ক্ষমতায় যাবার সিঁড়ী হিসেবে। কিন্তু জামায়াত যদি আরো শক্তি অর্জন করে তবে তাদেরকে আর সিঁড়ী হিসাবে ব্যবহার করা যাবেনা বরং ওরা ক্ষমতায় যথাযথ ভাগ বসাতে চাইবে। অথাচ এদের ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়াও বিএনপি'র পক্ষে অসম্ভব। এজন্য যদি জামায়াত মাঠে না থাকে তবেই তাদের পথ নিস্কন্ঠক হয়ে যায়। এটা একরকম নিশ্চিত যে যদি আগামীতে সংসদ নির্বাচন হয় তবে জামায়াতকে ন্যূনপক্ষে ১০০ আসনের কম দিয়ে বিএনপি জোট রক্ষা করতে পারবে না যা বিএনপি এবং জোটের অন্যদের জন্য বিপদ সঙ্কেত। জামায়াতের জনপ্রিয়তা সেটা দাবী করে এবং তা বিএনপি উড়ীয়ে দিতে পারবে না। এজন্য জামায়াতের বিলুপ্তিতে তারা আগ্রহী হলে তাদের স্থান থেকে তা সঠিক রাজনীতি হবে।
এর বাইরে যেসব শক্তি তা রাজনৈতিক হোক বা অরাজনৈতিক হোক, ধর্মীয় হোক বা নাহোক, সবাই জামায়াতের বিলুপ্তি মনে প্রানে চায়। যেসব,গুস্টি গণতন্ত্রের কথা বলে, মানবাধীকারের কথা বলে, ন্যায় বিচারের কথা বলে তারাও জামায়াত নির্মূলের বিষয়ে ন্যায় আন্যায় কোনো কিছুই তোয়াক্কা করেনা। জাতীয় পার্টিকে এখানে গুনায় না আনলেও তাদের যে সামান্য শক্তি অবশিষ্ট আছে তাও যে তারা ব্যবহার করবে সেটাও নিশ্চিত। আর আছে কিছু ইসলাম পন্থী দল এবং গুস্টি। তারা যে জামায়াতের ব্যাপারে কতোটা উগ্র তা যারা জানেন তাদেরকে বুঝানো বা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
চীন, রাশিয়ায়, আমেরিকা এবং পশ্চিমা বিশ্বতো দুনিয়ার কোথাও ইসলামের নামে কোনো কিছুই বরদাস্ত করতে চায়না বরং ফুঁৎকারে নিভিয়ে দিতে চায়। এর প্রমান দেয়ার দরকার আছে বলে মনে করিনা।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে উপজেলা নির্বাচনের পর থেকে জামায়াত আরো বেশী একা হয়ে গেছে এবং তাদের বৈরীর সংখ্যা আরো বেড়েছে। আগামীদিনে তাদের একাকীত্ব আরো বেড়ে গেলে আমি আশ্চর্য হবনা বরং আমি মনে করি সেটাই হওয়া একদম স্বাভাবিক। হক এবং বাতিল তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে ফেলেছে। দেখা যাচ্ছে সব বাতিল এক হয়ে গেছে।
এই প্রেক্ষা পটে হক এবং বাতিলের টক্কর অবশ্যম্ভাবী। এই টক্করে আপনার ভুমিকা কি হবে তা এখনি চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আল্লাহ দুনিয়ায় মুসলমানদেরকে হক্ক প্রতিস্টার জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন। দুনিয়ার সকল বাতিল ঐক্যবদ্ধ থাকবে কিন্তু হক্ক পন্থী্দেরকে বাতিলের মোকাবেলা করতেই হবে। হক্ক পন্থিদের ঈমানকে আরো শানিত করতে হবে, শাহাদাতের তামান্না নিয়ে ঈমানী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেই হবে। তবেই আব্দুল কাদের মোল্লার রক্ত কথা বলবে।
বিষয়: রাজনীতি
১২৭৭ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পড়া এবং সম্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
তাহলে এখন আর দুষ্টুমি করা যাবেনা।
ওকে?
জনগণকেই সিদান্ত নিতে হবে কে তাদের শত্রু কে মিত্র ।
ধন্যবাদ
আসুন জামায়াতের হাতকে শক্তিশালী করি,
ধন্যবাদ পড়া এবং মন্তব্যের জন্য।
কিছু বুঝে উঠার আগেই মা একদিন বললেন কাল থেকে যেন দাদীর বিছাবায় যাই!
১০ পেরতে না পেরতেই স্নেহময়ী দাদীও একদিন ঘাড় ধরে তার বিছানা থেকে সরিয়ে দিলেন!
ষোকে দুঃখে যখন পাথর প্রায়, জীবন থেকে যখন নিঃসঙ্গ ভাবে আরো ১৫টি বছর চলে গেছে তখন দাদী একদিন বললেন, 'আর একা থাকতে হবেনা'!
কপালে চিন্তার ভাজ পড়ল, ঠোটের কোনে মুচকি হাসি এল, ভাবনার জগতে হারিয়ে গেলাম।
ওমা! ঠিকই একদিন সন্ধ্যায় দেখি ফুলশয্যায় সেই আমি এক আপরূপা তরুণীর সম্মুখে!
জামায়াত মনে হয় অচীরেই সেরকম বাস্তবতার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে।
ধন্যবাদ।
েখন আমি মনে করি জামাআত তরা রাজনৈতিক মোর্চা গঠনে অধিকতর ক্রিয়াশীল হবে।
আরেকটা জিনিষ প্রমাণিত হলো যে ইসলাম কে ধ্বংশ করতে যেই চাক, একে ধ্বংশ করা যাবেনা। আমি বরং বলি কি, জামাত রাজনৈতিক ময়দানে ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা চালিয়ে ভেতর থেকে তার ইসলামিক এজেন্ডাতে সময় বেশি দিক। এই ইসলামি এজেন্ডা মানে হলো সোশ্যাল জাস্টিস প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক ভারসম্য প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি।
খুব ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে।
হৃদ্বয় ছুুঁঁয়ে যায়। সারা বিশ্বে জাহেলী শক্তি
ইসলামকে কালার দিচ্ছে। তবু জামাতকে হাটতে হবে গনতন্ত্রের মোড়কে, যাষ্ট হূদাবিয়ার সন্ধির মত। আনটিল ৪৫% লোক তৈরী হওয়া পযন্ত।ময়দানে যখন লোক তেরী হবে এমনিতে ইসলামী বিপ্লব হয়ে যাবে। মিশরে ৩০% এর কম ছিল বিধায় ওখানে সফল হয়নি। এখন দাওয়াতী কাজ করতে হবে, কর্মীর সংখ্যা বৃদ্বি করতে হবে।
সামার এসে গেল, এ বছর বাগানে কি কি লাগাবেন? গত বছরের মত এবারও ছবি দিবেন। আশা করি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন