বাংলাদেশে ইয়াং যে ছেলেমেয়েরা ইসলাম নিয়ে ইদানিং পড়াশোনা করছে। কিন্তু কেনো এবং কিভাবে ।

লিখেছেন লিখেছেন আয়নাশাহ ০৩ মার্চ, ২০১৪, ১২:২৫:৫৮ দুপুর

Asif Shibgat Bhuiyan

বাংলাদেশে ইয়াং যে ছেলেমেয়েরা ইসলাম নিয়ে ইদানিং পড়াশোনা করছে (তাদের জেনরেল স্টাডির পাশাপাশি) তাদের মাঝে একটা ট্রেন্ড আমাকে ভাবিয়ে তুলছে। আজ অ্যাকাউন্টটা কিছুক্ষণের জন্য অ্যাক্টিভেট করলাম এই কথাগুলো বলার জন্য। যাদের ভালো লাগবে তাদের কাছে অনুরোধ থাকল কপি/পেস্ট করার। শেয়ার করলে চলে যাবে কেননা আমি আবার আজ ডিঅ্যাক্টিভেট করব, তখন আর শেয়ারড পোস্ট থাকবে না।

ইসলামি পড়াশোনার পেছনে যতটা ইসলামের সেবা করার ইচ্ছা রয়েছে, মনে হচ্ছে যেন অনেকেই ইদানিংকার মুসলিম স্টুডেন্ট অফ নলেজদের (বিশেষ করে ওয়েস্টার্ন স্টু অ ন যারা আছেন) খ্যাতি এবং গ্ল্যামারের দিকে বেশি নজর দিচ্ছে। কীভাবে একজন জনপ্রিয় লেকচারার হওয়া যায়, কীভাবে কিছু চটকদার আর্টিক্‌ল লেখা যায় এবং এমনকী কীভাবে কিছু চিজী স্ট্যাটাস দেয়া যায় সেসবের দিকে লক্ষ্য বেশি থাকছে অনেকেরই। তাদের কাজকর্ম এবং কথাবার্তা শুনলে বোঝা যায় যে কীভাবে ইসলামিক স্টারডমে পৌঁছনো যায় সেদিকে তাদের নজর বেশি। তাদের কয়েকটি কাজ থেকে এটি সহজেই অনুধাবন করা যায়।

তারা কোনও হার্ডওয়ার্ক করে না। ইসলামিক স্টাডিকে সিরিয়াসলি নেয়ার জন্য যে ধরণের সময় এবং ইন্টেলেকচুয়াল কমিটমেন্ট তাদের থাকা দরকার এবং দেয়া দরকার সেটা তাদের নেই। তারা মুখে ইসলাম নিয়ে প্রচুর কথা বললেও সময় নষ্ট করে বহু আজে বাজে কাজে। এমনটি বলছি না যে তাদের কোনও অবসর কাজ থাকতে পারবে না। কিন্তু সেটাও সিস্টেমেটিক এবং গোল ওরিয়েন্টেড হওয়া দরকার, সেটার পেছনেও প্ল্যান থাকা দরকার। আজে বাজে নভেলস পড়ে তারা টাইম নষ্ট করে। ক্রমাগত ফেসবুকে মিনিংলেস পার্টিসিপেশন থাকে তাদের। যে ছেলে/ মেয়ে অন্যের স্ট্যাটাসে অযথা নিডলেস কমেন্ট করে নিজের সময় নষ্ট করে, সে যতই ইসলামিক কথা বলুক না কেন, সে স্টুডেন্ট অফ নলেজ কখনই হতে পারবে না। পিরিয়ড।

আজকের পৃথিবীতে একজন প্রকৃত স্টুডেন্ট অফ নলেজের প্রচুর কাজ এবং দায়িত্ব। বহু পদক্ষেপ তাকে নিতে হবে যাতে রয়েছে প্রচুর কাজ এবং পড়াশোনা। এধরণের বেশিরভাগ কাজই তাকে একাই করতে হবে, কারও সাহায্য ও প্রশংসা তার মিলবে না, সেদিকে তার লক্ষ্য থাকলেও চলবে না। তাকে একজন ভিশনারি হতে হবে। সে কী করছে কেন করছে তার পূর্ণ জবাবদিহিতা নিজের কাছে থাকতে হবে। কোন বইটি তার এখন পড়া দরকার, কোন লেকচারটি তার শোনা দরকার - এর পেছনে থাকতে হবে টোটাল প্ল্যানিং, ভিশন এবং এক্সিকিউশান। তাকে তালিকা তৈরি করতে হবে একজন পূর্ণাঙ্গ স্টুডেন্ট হওয়ার জন্য তাকে কী কী করতে হবে? কবে সে আরবি শিখবে এবং শিখে শেষ করবে। আরবি শেখার সময় তাকে অন্যান্য অদরকারী ইসলামিক লেকচার বা বই পড়া বন্ধ রাখতে হবে যাতে আরবি শেখা ডিলেইড না হয়। বোকার মত কেউ একটা কিছু শেয়ার দিলেই সেটা দেখা, কেউ কোনও বইয়ের কথা বললেই সেটা পড়তে শুরু করে দেয় যে ছেলে বা মেয়ে তাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। আরবি শেখা শেষ করে তাকে 'আকীদা, ফিক্‌হ, তাফসীর এবং উসূল শাস্ত্রের যে ভালো বইগুলো আছে সেগুলো পড়তে হবে। প্রতিটি শাস্ত্রে প্রাথমিক ভাবে আমাদের অন্তত ১০টি ভালো আরবি বই পড়া দরকার, তাহলে আমরা অ্যাট লিস্ট বলার মুখ রাখব যে আমরা স্টুডেন্ট হওয়া শুরু করেছি। গেট ইট স্ট্রেইট, বাংলা বা ইংলিশে পড়ে আর যাই হোক কোনওদিনও স্টুডেন্ট অফ নলেজ হওয়া যাবে না। যে বাংলা বা ইংলিশে ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করে তাকে স্টুডেন্ট অফ নলেজ কখনও বলা উচিতও নয়।

আমরা এমন এক সময়ে বাস করছি যখন ইসলামিক অ্যাকাডেমিক এফোর্টকে সামনে নিয়ে আসতে হলে আমাদের পলিম্যাথ স্কলার দরকার। আমাদের কেবল ক্লাসিকাল ইসলামিক ফিক্‌হ থাকলেই চলছে না, বরং বর্তমান সময়কে বুঝতে এবং এসময়ে ইসলাম ও মুসলিমদের রেলেভেন্ট করে তোলার জন্য একাধিক সেক্যুলার সায়েন্সে ওয়ার্কিং নলেজ ক্রিয়েট করতে হবে। এদের মধ্যে থাকবে সোশোলজি, পলিটিকাল সায়েন্স, সায়কোলজি, একনমিক্স এবং হিস্ট্রি। We need brilliant student, visionary, planner, social entrepreneur all in one. পুরো পৃথিবী এখন যে ব্যাটল জোনে আছে সেটা ইন্টেলেকচুয়াল। অন্য সব ব্যাটলই এখন সেকেন্ডারি, এমনকি মিলিটারি ব্যাটলও। একমাত্র মূর্খ, পাগল অথবা অপদার্থ ব্যক্তিই সেটা অস্বীকার করবে।

সন্দেহ নেই যে সবাইকে স্কলার হতে হবে না। কিন্তু যারা হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছে কিন্তু ক্রমাগত সময় নষ্ট করছে কোনও রকম প্ল্যানিং ছাড়া তাদের জন্য এই রিমাইন্ডার। প্রতিটা ছেলেমেয়েই ইসলামের জন্য একটা অ্যাসেট হতে পারে যদি তারা নিজেদের ঠিকমতো তৈরি করে। এজন্য কষ্ট করতে হবে, স্যাক্রিফাইস করতে হবে, পারসিভিয়ার করতে হবে। যারা জনপ্রিয়তার পেছনে ছুটবে তারা জনপ্রিয়তা পেতেও পারে নাও পেতে পারে। ইদার কেস দে উইল লুজ। আজ হোক বা কাল হোক তারা ঠিকই অনুধাবন করবে যে তারা আসলে ভুল জিনিসের পেছনে ছুটেছে। আত্মপ্রতারণার চেয়ে বড় প্রতারণা আর হতে পারে না।

আমার মুসলিম ভাইবোনদের প্রতি অনুরোধ সময়কে ধরুন। একটি প্ল্যান তৈরি করুন যে ইসলামের জন্য কী অবদান আপনি রাখতে চান। এরপর সেটা স্লোলি অ্যান্ড সিউরলি এক্সিকিউট করুন। আল্লাহ্‌ আমাদের তৌফিক দিন।

লিখেছেন Asif Shibgat Bhuiyan।

বিষয়: বিবিধ

১২৭৯ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

186011
০৩ মার্চ ২০১৪ দুপুর ১২:৩৪
সিটিজি৪বিডি লিখেছেন : আমরা বিভিন্ন নোবেল বই পড়ে অনেক সময় ব্যয় করি। এই সময়টুকু যদি কোরআন-হাদিস-ফিকাহ-স্টাডি করি তাহলে নিজের ইসলামীক জ্ঞান বাড়বে.. সওয়াব তো আছে।
186028
০৩ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০১:০৬
আব্দুল গাফফার লিখেছেন : পডে খুব ভাল লাগলো । অনেক ধন্যবাদ
186032
০৩ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০১:১৭
সজল আহমেদ লিখেছেন : অনেক ভাল লাগল লেখাটা
186035
০৩ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০১:২৩
গেরিলা লিখেছেন : ভালো লাগলো পিলাচ
186060
০৩ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০২:৩৮
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : আমাদের সবার উচিত কোরআন হাদিস শুধু মুখস্ত না করে বুঝে পড়া, এবং বেশি বেশি ইসলামী সাহিত্য পড়া। ধন্যবাদ
186091
০৩ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:১১
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : সুন্দর পোষ্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ।
186119
০৩ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৫
ঈগল লিখেছেন : সত্য যে, তরুণরা এগিয়ে আসছে। আপনার এই পোস্টটি প্রত্যেকেরই কাজে লাগবে। জাযাকাল্লাহ খায়রান।
186213
০৩ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আপনার বক্তব্য সঠিক। অনেকে তরুনই এগিয়ে আসছেন ইসলামি গবেষনার জন্য কিন্তু ডেপথ এ প্রবেশ করতে ব্যার্থ হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই তারা প্রয়োজনিয় মানে পেীছতে পারছেননা। অনেকেই আবার অন্যদের সাথে বিতর্কের ও সৃষ্টি করেন অতি সামান্য বিষয় নিয়ে। তবে বর্তমান সামাজিক পরিস্থিতিকে না যেনে শুধু ইসলাম এর তত্ব নিয়ে পড়াশুনা করলেও কোন লাভ হবেনা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File