এতোবড়ো বিপর্যয়ে আমাদের পাশে দাঁড়াবার কেউ নেই! আমরা এতোই বন্ধুহীন হয়ে গেলাম কি করে?
লিখেছেন লিখেছেন আয়নাশাহ ২৮ এপ্রিল, ২০১৩, ১০:৫৭:২৪ সকাল
হায়রে বাংলাদেশ! জন্মের পর থেকেই কেবল বিপর্যয় আর বিপর্যয়। একটার পর একটা বিপর্যয়। জন্মের আগের বছরের ঘুর্ণিঝড় দিয়ে শুরু। লক্ষ লক্ষ মানুষের লাশকে পাশে ফেলে আমরা নির্বাচনের জন্য সেদিন বায়না ধরেছিলাম কারণ আমরা জানতাম আমাদের প্রতিবেশী দেশটি সেটা চায়। তারা এজন্য প্লট আগেই তৈরী করে রেখেছিল। মাওলানা ভাষানি সেদিন 'ভোটের আগে ভাত চাই' বলে নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। আমরা নির্বাচনে জিতলাম। শুরু হলো বিপর্যয়ের। এর পর থেকে সামান্য বিরতি দিয়ে বিপর্যয় চলেই আসছে আর আমরা এসবের মোকাবেলা করেও বেঁচে আছি।
তবে এর আগে সবগুলো বিপর্যয়ের সময় দেখা গেছে সারা বিশ্ব থেকে মানুষ আমাদের সহমর্মী হয়েছে, মানুষ যেভাবে পারে সরকারী বেসরকারী ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়োয়ে দিয়েছে। প্রলয়ঙ্কারী বিপর্যয়গুলোর সময় জলে স্থলে এমনকি তড়িত সাহায্যের জন্য অন্তরিক্ষেও সাহায্য নিয়ে বিশ্ববাসী পাশে দাঁড়িয়েছে। এয়ার প্লেনে এবং হেলিকপ্টারে করেও সাহায্য এবং সরঞ্জাম নিয়ে এসে পৌঁছেছে বিভিন্ন দেশ এবং মানবিক সাহায্য সংস্থা। কিন্তু এবার?
এমন একটি বিপর্যয়ের পরও কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ালো না। বিশ্বের সবগুলো মিডিয়া এই ঘঠনাকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে পরিবেশন করলেও কোনো সংস্থা, কোনো দেশ এমনকি প্রাণের সখা আমাদের দাদারাও একটু সাহায্যের হাত বাড়ালো না। অত্যন্ত আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম, দাদারা সাহায্য তো করলো না ই, একটা বিবৃতি দিয়ে সমবেদনা পর্যন্ত জানিয়েছে বলে দেখলাম না। উপরন্তু যে ঋণ দেয়ার মুলা ঝুলিয়ে আমাদের থেকে সবকিছু আদায় করে নিয়েছে, এখন সেটাও বাতিল করে দিলো। দাদা প্রেমের এরকমই মজা।
এতো গেলো দাদাদের কথা। কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য দেশ এবং সংস্থা গুলোও তো একই আচরণ করলো। আমেরিকার দু'জন সেনেটর সম্ভবত সমবেদনা বার্তা পাঠিয়েছেন। এ ছাড়া আর কেউ শব্দ করেছেন বলা জানিনা। করে থাকলেও সেটা তেমন গুরুত্ব পায়নি। অথচ এমন একটা মানবিক বিপর্যয়ের মুহুর্তে আমাদের দরকার ছিল উদ্ধার কাজে ব্যাবহার যোগ্য উন্নত যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তি নিয়ে অকুস্থলে সাহায্যের হাত। কিন্তু আজকের বিশ্বে আমরা এমনই বন্ধুহীন অবস্থায় আছি যে, কেউ আমাদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে না। দিপু মনি'র এতো বিদেশ সফরের ফলটা কি এটা?
মখা আলমগীরের কথার সুত্র ধরে আমার এক মুরব্বী বলেছেন " আসলে এই ঘঠনা 'র' এর পুর্ব পরিকল্পিত। 'র' এই ভবনটি টলটলয়মান দেখে শেখ হাসিনা এবং তার এজেন্ট মুরাদ জং এর সাহায্যে ঐ ভবনের মালিক এবং গার্মেন্ট মালিকদেরকে বাধ্য করে যাতে হরতালের দিন ভবনে হাজার হাজার লোককে জোর করে কাজে পাঠায়। এজন্য হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন তারা আগেই ষতর্ক ছিলেন। এজন্যই সোহেল রানার নামটা যুবলীগের কমিটি থেকে আগের দিনই বাদ দেয়া হয়। এজন্যই হাসিনা তিন দিন পরে রানাকে গ্রফতার করতে নির্দেশ দেন। এই সময়ে তাকে সহি সালামতে কোথাও চলে যাবার সুযোগ দেয়া হয়। 'র' যখন বুঝতে পারলো এই ভবনটি ধ্বসে পড়তে পারে তখন তারা পরিকল্পনা করে যাতে একটা বিপর্যয় হয় এবং তাতে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ভুলুন্ঠিত হয়ে যায়। এতে পোষাক শিল্পে যে আঘাত আসবে তা বাংলাদেশ সামলে উঠতে পারবে না। ফলে এই ক্রতারা ভারতে যাবে।
এজন্যই এমন একটা বিপর্যয়ের মুহুর্তেও ভারত সরকার কিংবা বেসরকারী কেউ সাহায্যের হাতটা বাড়ায় নি। শাহবাগের নর্তন কুর্দণ শুরু হতেও কোলকাতা দিল্লী থেকে রথী মহা রথীরা উড়ে এসে দিনের পর দিন মজমা গরম করতে পারলেও এই মহা বিপর্যয়ের সময় কিন্তু তারা কেউ কোনো কথা বললো না। অথচ ভরতের কাছে এরকম ভবন বিপর্যয় হলে উদ্ধার করার মতো ভারী যন্ত্রপাতি এবং টেকনোলজি আছে। ঘটনার সাথে সাথে যদি তারা স্থলপথেও আসতো তবুও ভবনটিতে আটকা পড়া মানুষগুলোকে উদ্ধার করা যেতো। কৈ, শেখ হাসিনা বা তার সরকারের কেউও তো কারো কাছে সাহায্যের আবেদন জানালেন না। এমনকি তাদের পেয়ারের দাদাদেরকেও না। উল্টো তার উন্মাদ মন্ত্রী যখন প্রলাপ ছাড়লো তখনও তাকে স্বপদে বহাল রেখে হাসিনা নিজেই উন্মাদের পক্ষ নিলেন।
ডঃ ইউনুস ইস্যুতে আমেরিকার সাথে বনিবনা নাই, একই ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথেও তথৈবচ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে বাকী সব মুসলিম দেশগুলোর সাথেও সম্পর্ক ভাল না। এমনকি এখন ভারতের সাথেও সেই গরম খাতির নাই। তাই বাংলাদেশের বিপর্যয়ের সময়ও কেউ পাশে দাঁড়াবার নাই।"
আমি তার কথাটা শুধু রিপিট করলাম।
আপনাদের কি মনে হয়?
বিষয়: বিবিধ
১৬৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন