নোবেল পুরস্কার শেখ হাসিনারই প্রাপ্য
লিখেছেন লিখেছেন চন্দ্রাবতী ২৪ ডিসেম্বর, ২০১২, ০৫:১৮:১১ বিকাল
ড. ইউনুস তখন টক অব দি কান্ট্রি। কেউ কেউ বলতে চেয়েছেন উনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তাই রাষ্টীয় আইন যেন ভিন্নভাবে প্রয়োগ করা হয় উনার উপর। অনেকটা মামার বাড়ীর আবদারের মত। এমন কি নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে অপমানিত করেছে বলে তার আইনজীবীদের অভিযোগ সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, তার নোবেল বিজয়ের সঙ্গে আদালতের রায় কিংবা তাকে অপসারণের কোনো সম্পর্ক নেই। ড. ইউনূস নোবেল অর্জন করেছেন গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি হিসেবে নয়। তিনি ব্যক্তি হিসেবে এটা পেয়েছেন। আদালতের আদেশে তার নোবেল অর্জনের বৈধতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠবে কি-না? এ প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মামলার সঙ্গে পুরস্কারের কোনো সম্পর্ক নেই। তাছাড়া নোবেল পুরস্কার পেলেই কারও অবৈধ কাজ বৈধ হতে পারে না। এটা আইনেরও কোনো বিধান নয়। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের জন্য যে পুরস্কারটা দেয়া হয়, মূলত সেটাই হচ্ছে ‘শান্তিতে নোবেল’। এ ক্ষেত্রে বলতে হয় যে, বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যদি কেউ নোবেল পুরস্কার পাওয়া যোগ্য হন, তারা হচ্ছেন শেখ হাসিনা ও সন্তু লারমা। দীর্ঘদিনের বিরোধের অবসান ঘটিয়ে তারা দেশের তিন পার্বত্য জেলায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়েছেন। তারা যদি নোবেল পুরস্কার না পান, তাহলে তাদের এ অবদান কোনো অবস্থায় খাটো হয়ে যাবে না।তিনি আরও বলেন, মাদার তেরেসা ও নেলসন ম্যান্ডেলাও নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু পুরস্কার পেয়ে তারা প্রেসিডেন্ট হবার খায়েস দেখাননি।
তবে, অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ হাসিনার নামের সাথে সন্তু লারমার নাম জুড়ে দিয়ে প্রকারান্তরে শেখ হাসিনাকে খাটই করেছেন। কেননা, একজন বিচ্ছিন্নতাবাদীর সাথে শান্তির অগ্রদূতের তুলনা হতে পারেনা। অন্যদিকে, ড. ইউনুসকে অপসারনের মাধ্যমে প্রমানিত হয়েছে যে আইনের চোখে সবাই সমান। সে একজন খেটে খাওয়া দিনমুজুর হোক কি নোবেল বিজয়ী হোক।
ড. ইউনুস বা গ্রামীন ব্যাংকের অবদানটা অর্থনীতিতে, কোন যুক্তিতে উনাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে আমার বোধগম্য নয়। সুধখোর মহাজন হিসেবে উনার খ্যাতির কথা বাদ দিলে বড়জোর উনাকে অর্থনীতিতে নোবেল দেওয়া যেত।
শেখ হাসিনা নোবেল পুরস্কার যোগ্য কি যোগ্য নয় তা নীচের তালিকা থেকেই আন্দাজ করা যাবে। এ থেকে আরও অনুমেয় হবে যে বিশ্ব শান্তি, ক্ষুধা-দারিদ্র বিমোচনে শেখ হাসিনার অবদানের কাছে ড. ইউনুসের অবদান যেন বিড়াল হয়ে বাঘের সাথে লড়াই করার মত।
১। ডক্টর অব লজ - (১৯৯৭) =বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় = যুক্তরাষ্ট
২।ডক্টর অব লজ - (১৯৯৭) = ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয় = জাপান
৩।ডক্টর অব লিবারেঠ আর্টস (৯৭) = ডান্ডি আবার্তে বিঃবিঃ = ব্রিটেন
৪।ডক্টর অব লিটারেচার (৯৯) = বিশ্বভারতী বিঃবিঃ = ভারত
৫। ডক্টর অব ল = ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি = অস্ট্রেলিয়া
৬।ডক্টর অব লজ (৯৯) = ঢাকা বিঃ বিঃ = বাংলাদেশ
৭।ডক্টর অব লজ (৯৯) = ক্যাথলিক বিঃ বিঃ = বেলজিয়াম
৮। ডক্টর অব সাইন্স (২০০১) = বঙ্গবন্দু কৃষি বিঃবিঃ = বাংলাদেশ
৯। ফেলিক্স হোফে বোইনি (৯৮) = ইউনেস্কার
১০। সেরেস পদক (৯৯) = এফ এ ও
১১। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র পদক (৯৭) = ভারত
১২। পল হ্যারিস ফ্যালো (৯৭) = রোটারি ফাউন্ডেশন
১৩। মাদার তেরেসা পদক (৯৭) = ভারত
১৪। গান্দী পদক (৯৮) = ভারত
১৫। পার্ল এস বার্ক পদক (২০০০) = ম্যাকন ওমেনস কলেজ = যুক্টরাষ্ট
১৬। রাষ্ট্র প্রধান পদক (৯৭) = লয়ন্স ক্লাব = যুক্টরাষ্ট্র
১৭। পার্সন অব দ্য ইয়ার (২০০০) = আফ্রো এশিয়ান লইয়ার্স ফেডারেশন
১৮। ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পুরস্কার (২০১০)= ভারত
১৯। জাতিসংঘ পদক (এমডিজি) (২০১০)= নিউইয়র্ক, যুক্টরাষ্ট্র
ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পুরস্কার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান কালে ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল ট্রাস্ট জানায়,
শান্তি প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় অঙ্গীকারের জন্যই তাকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে )মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রতিভা পাতিল বলেন, "সন্ত্রাস ও সহিংসতার বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার ক্রুসেড আজ সবার জানা। তিনি নিজের জীবনের ওপর হুমকি নিয়েও সাহসের সঙ্গে তা মোকাবেলা করছেন।"
কাজেই শেখ হাসিনা যে নোবেল প্রাপ্তির দ্বার প্রান্তে তাতে যারা ঘুরের মধ্যে আছেন তাদের ঘুর আশা করি কেটে যাবে। তবে সেটা অবশ্যই ড. ইউনুসের মত বিতর্কিত নোবেল নয়, সেটা হবে প্রকৃতই শান্তির জন্য।
বিষয়: রাজনীতি
১৫১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন