যেভাবে কাটে প্রবাসে বাংলাদেশীদের ঈদ

লিখেছেন লিখেছেন লোকমান ২৮ জুলাই, ২০১৪, ১০:৩৭:২৬ সকাল



সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশির ভাগ দেশে এবং জর্ডান, আমেরিকা, কানাডায় আজ উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদু উল ফিতর। এসব দেশে বসবাস করছেন প্রবাসী বাংলাদেশীদের একটি বিরাট অংশ। কীভাবে কাটছে এই প্রবাসীদের ঈদ? আসুন জেনে নেয়া যাক।

গতকাল চাঁদ দেখার ঘোষনার সাথে সাথেই প্রবাসী বাংলাদেশীদের সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ করা গেছে সেলুন গুলোতে। কর্মব্যস্ত জীবনে ঈদের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার এটাই সময় প্রবাসীদের। ফজর নামাজের পর সবার কানে মোবাইল। দিনের শুরুতে দেশের প্রিয়জনকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে সবাই ব্যস্ত। অতপর ঈদের নামাজের প্রস্তুতি শুরু। ঈদের নামাজের জন্য অধিকাংশ প্রবাসীর প্রথম পছন্দ পাঞ্জাবী। তবে কেউ কেউ এ্যারাবিয়ান পোশাক তোব (জুব্বা), সারওয়াল এবং মাথায় সেমাগ (রুমাল)ও পড়ে থাকেন। প্রস্তুতি যখন শেষ তখন দল বেঁছে ছুটে চলা মসজিদ পানে । নামাজ শেষ একে অপরকে বুকের সাথে মিলেয়ে আপন করে নেয়া এতো ঈদের এক চিরচেনা দৃশ্য। নামাজ শেষে বাসায় ফিরে সবাই মিলে নাস্তা করেন। তবে এই নাস্তায় পরোটা ও গোস্ত প্রাদান্য পায়।

নাস্তা শেষে চলে এক দীর্ঘ ঘুম। ঈদের পূর্বে অধিকাংশ প্রবাসীকে নির্ঘুম কর্মব্যস্ত থাকতে হয়। তাই পূর্বের জমে থাকা ঘুম সুদে আসলে উসুল করার এটাই প্রবাসীদের মোক্ষম সুযোগ। ঘুম থেকে উঠে লাঞ্চে থাকে বিশেষ আয়োজন। প্রিয় বন্ধুকে আগেই আমন্ত্রন করে আনা হয় নিজ বাসায় অথবা নিজেই বন্ধুর বাসায় মেহমান হন। বন্ধু বান্ধব সবাই মিলে এক সাথে খাওয়া প্রবাসীদের ঈদ আনন্দে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।

দুপুরে খাবার পর সবাই মিলে টিভি সেটের সামনে বসে চলতে থাকে আড্ডা। এক আড্ডায় দুপুর গড়িয়ে বিকেল। বিকেলে সবাই মিলে বাহিরে বের হওয়া। প্রবাসে প্রায় সব দেশেই বাংলাদেশী অধ্যুষিত কিছু এলাকা থাকে। এসব এলাকাতেই ঈদের বিকেলের আড্ডাটা জমজমাট হয়। এই আড্ডায় সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে যায়। অতপর নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে যাওয়া।

সাধারণত এভাবে কাটে প্রবাসীদের ঈদ। তবে যারা স্বপরিবারে প্রবাসে থাকেন তাদের ঈদের আনন্দ ব্যাচেলরদের ঈদ আনন্দ থেকে অনেক গুন বেশি ।

দু:খজনক হলেও সত্য অনেক প্রবাসী ঈদের দিনও ছুটি পান না। বিশেষ করে যাদের ডিউটি হসপিটাল, ফামের্সী খাবার হোটেল, আবাসিক হোটেল, মুদির দোকান এবং ক্লিনারের। তারা এক বুক ব্যাথা নিয়ে ঈদের দিনও ডিউটি করেন এবং প্রবাসে এদের সংখ্যাই বেশি।

আর একটি অপ্রিয় সত্য হলো প্রবাসী ঈদে বুকের ভিতর কান্না চেপে রেখে মুখে হাসি ফুটানোর ব্যর্থ চেষ্টা করেন। একটু চিন্তা করলেই বুঝা সম্ভব যেখানে নেই মা-বাবা, ভাই-বোন, ছেলে-সন্তান, আত্মী-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সেখানে কীভাবে ঈদের আনন্দ থাকতে পারে? এভাবে বছরের পর বছর প্রবাসীরা ঈদ করে যান। নিজেকে মমের মত জ্বালিয়ে অন্যকে আলোকিত করেন।

বিষয়: বিবিধ

১২৩৫ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

249003
২৮ জুলাই ২০১৪ সকাল ১১:১০
আওণ রাহ'বার লিখেছেন :
ﺗﻘﺒﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻨﺎ ﻭ ﻣﻨﻜﻢ
সব্বাইকে ঈদ মুবারক।
আপনার বাড়িতে আমার ঈদের দাওয়াত রইলো।
Good Luck Good Luck Good Luck
২৮ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৪:২৫
193475
লোকমান লিখেছেন : আমার বাড়িতে নয় সৌদিতে আমার বাসায় আপনার দাওয়াত। আসতে ভুল করবেন না কিন্তু...
249045
২৮ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০২:৩৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : প্রবাসিদের এই কষ্টের কতটুক প্রতিদান আমরা সামাজিক ও রাষ্ট্রিয়ভাবে দিই।
২৮ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৪:২৭
193476
লোকমান লিখেছেন : একটুও নয়। বরং দেশে গেলে প্রবাসীদের নানা ধরনের হয়রানির মুখে পড়তে হয়। আমাদের সরকার ও সমাজের লোকদের প্রবাসীদের এই ত্যাগের কথা একটু ভাবা উচিত।
249099
২৮ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৫
আফরা লিখেছেন : অনেক খারাপ লাগল ভাইয়া । প্রবাসীদের কষ্ট কেউ বুঝে না । ঈদ-- মোবারক ভাইয়া Rose Rose
২৯ জুলাই ২০১৪ রাত ১২:১১
193562
লোকমান লিখেছেন : প্রবাসীদের কষ্টে ব্যাথিত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ। তবে সবাইকে প্রবাসীদের কষ্ট বুঝতে হবে। ঈদের শুভেচ্ছা রইল Good Luck Good Luck Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File