স্বামী যখন হুজুর
লিখেছেন লিখেছেন লোকমান ০৬ জুলাই, ২০১৪, ০৪:০৬:৫৪ বিকাল
(১)
কখন ভাবিনি আমার হুজুর টাইপের
কারো সাথে বিয়ে হবে।
আমার ইচ্ছা না থাকা সত্তেও
পরিবারের চাপে বিয়ের
পিড়িতে বসতে হয়। আমি মর্ডান
মেয়ে আর বিয়ে করব
কিনা হুজুরকে, ভাবতেই কেমন যেন
সংকোচ বোধ হচ্ছিল।
এমনিতেই বিয়ে করতে ইচ্ছা করছিল
না তাতে আবার এক
বান্ধবি এসে বলল:- কিরে রিয়া তুই
হুজুরকে বিয়ে করলি আর পাত্র
খুজে পাসনি। আর এক
ভাবী এসে কানে ফিসফিস করে বলল:-
তোর বরের
তো সারা মুখেই দারি কিস
করবি কোথায় ।খুব বিরক্ত
লাগছিল । ইচ্ছা করছিল এখুনি আসন
থেকে উঠে যাই।
হটাৎ পায়ের ঠক ঠক আওয়াজে ঘোমটার
ফাক দিয়ে আর
চোখে দেখলাম একজন লোক আসতেছে।
তার বেশভুষা আর
গঠন দেখে বুঝলাম উনি আমার স্বামী।
অনিচ্ছা থাকা সত্তেও
উঠে গিয়ে পায়ে হাত দিয়ে সালাম
করলাম। থাক থাক বলে আমার ২
বাহুতে হাত
দিয়ে তুলে বিছানায় বসাল আর বলল:-
তোমার নাম কি ?
খুব ইচ্ছা করছিল বলতে আমার নাম
না জেনেই
আমাকে বিয়ে করেছেন। বললাম:- রিয়া
--সুন্দর নাম কিন্তু
তুমি কি জানো রিয়া নামের অর্থ কি ?
মেজাজটা খারাপ হওয়ার উপক্রম
বললাম:- না
--শোন আরবিতে রিয়া শব্দের অর্থ
অহংকার। আর
মানুষকে যে জিনিসগুলা ধ্বংস করে দেয়
তার
মধ্যে রিয়া অন্যতম ।তাই আজ
থেকে আমি তোমাকে মীম
বলে ডাকব ।নাহ আর মেজাজটা ঠিক
রাখতে পারছি না বাসর রাতে আমার
স্বামী আমাকে অর্থ
শেখাচ্ছে কারো মাথা ঠিক থাকার
কথা। একটু বারক্ত
সুরে বললাম:- আপনার যেটা ভাল
লাগে সেটাই ডাকিয়েন।
বুঝতে পারছে মনে হয় বলল তোমার
মনে হয় খারাপ
লাগছে তুমি ঘুমিয়ে পর।
"আমার ধার্মিক স্বামী"
লেখা:-ব্যাথার দান
(২)
ঘুমটা ভাঙ্গল গুন গুন আওয়াজে।কান
খারা করে আওয়াজটা শুনতে চেষ্টা করলাম
বুঝলাম কেউ
কোরআন পড়ছে। তাকিয়ে দেখলাম
আমার স্বামী।তার
সমধুর কন্ঠে কোরআন তিলোয়াত
শুনতে ভালই লাগছিল।
তাই একটু উঠে বসলাম।
আমাকে উঠে বসতে দেখে তিলোয়াত
বন্ধ করে বলল:-
আসসালামু আলাইকুল। শুভ সকাল ,
ঘুমটা কেমন হলো?
সালাম নিয়ে বললাম জি ভাল হয়েছে।
এভাবেই কাটছিল দিনগুলা।এর
মাঝে উনি আমাকে নানা ভাবে নামাজ
পরার কথা বলত। এত
ধৈয্য আর এত ভাল করে বুঝিয়ে বলত
যে আমি নিজেই খুব
অবাক হয়ে যেতাম।তার সব
চেষ্টাকে সফল করে একদিন
নামাজ পরা শুরু করলাম।দেখলাম তার
মুখটা খুশিতে ভরে উটেছে।তার
হাসি মাখা মুখটা দেখতে ভালই লাগত।
নামাজ ৫ ওয়াক্ত হলেও আমি ৪ ওয়াক্ত
পরতাম। ফজরের
নামাজ পরতাম না।খুব আলসেমি লাগত।
উনি আমাকে ডাকতেন শুনেও জাগতাম
না।
এটা উনি বুঝতে পেরেছিল
যে আমি ইচ্ছা করেই উঠি না।
তাই
আমাকে কাছে ডেকে পাশে বসিয়ে বলল:-
দ্যাখো তুমি এভাবে প্রতিদিন ৮
ঘন্টা করে ঘুমাও
তাহলে দিনের ৩ ভাগের ১ভাগ
তুমি ঘুমিয়ে কাটাচ্ছ।
যদি তোমার আয়ুকাল ৬০ বছর হয়
তাহলে তুমি ৩ভাগের
এক ভাগ মানে ২০ বছর ঘুমিয়ে কাটাচ্ছ।
আল্লাহ
তো তোমাকে এই দীর্ঘ সময়
ঘুমীয়ে কাটাতে পৃথিবীতে পাঠাইনি।
তারপর অনেকগুলা ভাল
ভাল কথা আর কোরআনের
বাণী শুনালেন।এত ভাল
কথা শুনিয়েছিলেন যে শুনে আমার
চোখে পানি এসে গিয়েছিল।তারপর
থেকে আজ পর্যন্ত
আমি ১ ওয়াক্ত নামাজও
আমি কাজা করিনি।সর্বদাই
ধর্মিয় অনুশাসন মেনে চলি।আজ
আমি অনুতপ্ত নয়
গর্ববোধ করি আমার স্বামীর জন্য।
সত্যিই আমি খুব
ভাগ্যবতী।কথায় বলে সাত জনম পূর্ণ্য
করলে এরকম
স্বামী পাওয়া যায়।
(ফেসবুক থেকে নেয়া)
বিষয়: বিবিধ
২৫২৪ বার পঠিত, ৩২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর মেয়েরা সহজেই বশ্যতা স্বীকার করে এটা সঠিক মনে হয়নি।
সেদিন থেকে আমি খানা কমিয়ে দিয়েছি। এখন আমার একটাই স্বপ্ন ! আপনার দায়াতের ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
ধন্যবাদ ফেবু থেকে ছিনিয়ে এনে গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
কপি/পেষ্ট কিংবা যার ই হোক না কেন পড়লাম তো আপনার বদৌলতে। চমৎকার পোষ্ট। অনেক অনেক ভালো লাগা রেখে গেলাম।
ধন্যবাদ।
এবার জানান আপনার আব্বাজান কেমন আছেন? আর ব্লগের সবাই দাওয়াত পাচ্ছি কবে?
আপনারা সবাই কবে দাওয়াত পাচ্ছেন তা তো মুই নিজেও জানি না
মন্তব্য করতে লগইন করুন