চার তথা ১৮ দলিয় জোট ভাঙ্গাই যখন আসল উদ্দেশ্য

লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৮ মার্চ, ২০১৩, ০৫:৪১:৩৩ বিকাল

আল্লাহদ্রহী শক্তির সহযোগী না হয়ে আসুন সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একমাত্র ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে ঐক্য গড়ে তুলি: পীরসাহেব চরমোনাই



গতকালকে উপরোক্ত পোস্টে নিন্মের মন্তব্যটা করেছিলামঃ

আবু জারীর লিখেছেন : বর্তমান অবস্থায় শুধুমাত্র ইসলামী দল গুলোর ঐক্য যথেষ্ট নয় দরকার বৃহত্তর ঐক্য। বর্তমান বিপদ কেটে গেলেই কেবল সব ইসলামী দলের প্রধান ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বৃৎহ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজ নিজ দল এবং অন্যান্য দলের আপত্তি সমুহ পর্যালচনার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য হতে পারে।


জবাবটা ছিল এরকমঃ
এম এম নুর হোসাইন মিয়াজী লিখেছেন: জারীর সাহেব। জানিনা আপনি কেন বলেছেন ইসলামী দল গুলির ঐক্য যথেষ্ট নয়??মনে হয় ইহা আমাদের চরম ভুল। বাংলাদেশের ইসলামী দল গুলির ঐক্য হল যে শক্তি হবে আমার মনে হয়,আ,লীগ-বি এন পির চাইতে কোন অংশে কম হবে না। আর তখন আ,লীগ বিএনপি'র কাছে জোটের জন্য আমাদেরকে যেতে হবে না বরং তারা নাকে খৎ দিয়ে আসবে আমাদের কাছে সমঝোতার জন্য। কিন্তু আমরা বার বার ওদের কাছে গিয়ে নিজেদেরকে নিজেরাই ছোট করি। আর ওরা ফায়দা লূটে নেয়। আপনি বলেন ২০০১ থেকে ২০০৬ পযর্ন্ত আমরা কি পেয়েছি??? কি পেয়েছে আমাদের প্রিয় ধর্ম ইসলাম???

অতএব মাদার গাছ থেকে আঙ্গুরের আশা করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়, একমাত্র বেকুবেই এই কামানা করতে পারে।


আপনার আবেগ এবং সরল রৈখিক চিন্তার জন্য আমরা ভাবিত। রাজনীতির ময়দানটা বড় কুটিল এটা যুদ্ধের কৌটিল্যকেও হার মানায়। তাই সোজা বুঝ এবং আবেগতারিত হয়ে কোন কাজ করলে রাজনৈতিক সফলতা পাওয়া যায়না বরং আমাদের আসল উদ্দেশ্য আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের মিশনও সফল হতে পারেনা। সেজন্যই আল্লাহ কৌশল অবলম্বনের কথা বলেছেন। কৌশলের ব্যাখ্যা ভিন্ন আঙ্গিকে অবশ্যই ভিন্ন ভিন্ন যা আলোচনার দাবী রাখে।

আজকে আপনার কাছে একটা প্রশ্ন করি।হেফাজতে ইসলাম একটা অরাজনৈতিক সংগঠন তারা নাস্তিকদের উৎপাত আর সরকারের ইসলাম ও মানবতা বিরোধী নানা কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়ে নিরেট ইসলামের স্বার্থে ৬ই এপ্রিল একটা কর্মসূচী ঘোষনা করেছে, সেই কর্মসূচীর এক সপ্তাহ পূর্বে যদি ইসলামী আন্দোলন ২৯ মার্চ ঢাকার মহাসমাবেশে যোগ দিন : পীর সাহেব চরমোনাই এর ডাক না দিতেন তাহলেই কি ভালো হত না? একই উদ্দেশ্যে দুই দিক থেকে দুইটা কর্মসূচী দিয়েকি ঐক্যের প্রমাণ দেয়া হল নাকি অনৈক্যের চারা গাছের গোড়ায় এক বালতি পানি দেয়া হল?

হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ ঠেকানর জন্য সরকারের তদবিরের কোন অভাব নাই অথচ আপনার কথা মত ইসলাম বিরোধী আওয়ামিলীগ ইসলামী আন্দোলন এর মহাসমাবেশে কোন বাধার সৃষ্টি করছেনা প্রকারন্তরে শাহাবাগীদের আদলে সহায়তা না করলেও নৈতিক সমর্থন যে দিয়ে যাচ্ছে তাতে অনেকেরই সন্দেহ নাই। এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষ যদি ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশকে ফরীদ উদ্দিনের মাসুদের মহাসমাবেশের পরবর্তি সংস্করণ মনে করে তাহলে কাকে দোষ দিবেন?

ইসলামপন্থীদের ঐক্যই যদি মূল উদ্দেশ্য হয় তাহলে যাদের গায়ে রাজনৈতিক গন্ধ নাই তাদেরকে সামনে দিয়ে আন্দোলন করাইকি যৌক্তিক নয়?

বর্তমান সরকার তথা আওয়ামিলীগ ২০০১ এর নির্বাচনে গোহারা হারার পর থেকেই চারদলিয় তথা বর্তমান ১৮ দলিয় জোট ভাঙ্গার জন্য এমন কোন তৎপরতা নাই যা তারা চালায়নি!

তাদের সর্ব শেষ প্রচেষ্টা ছিল ফরীদ উদ্দিন মাসুদের মাহাসমাবেশ কিন্তু সে সমাবেশ সুপার ফ্লপের পরে এখন সমাবেশের ডাক দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং তাদের দাবীও ভিন্ন আঙ্গিকে একই।

আমি একথা বলবনা যে পীর সাহেবকে দিয়ে আওয়ামিলীগই আন্দোলন করাচ্ছে তবে এ কথা বলতে মনেহয় বাধা নাই যে পীর সাহেবের আহব্বানটা আওয়ামিলীগের খুব মনপূত হয়েছে। গত চার বছরে আওয়ামিলীগ বিরোধী কেউ ময়দানে দাড়াতে পারেনি অথচ ইসলামী আন্দোলন বিনা বাঁধায় তাদের সকল কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছে! এ দ্বারা এটা প্রমাণীত হয় যদিও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের বিরুদ্ধে বক্তৃতা বিবৃতি দেয় কিন্তু আওয়ামিলীগ তা গায়ে মাখেনা। তার অর্থ এই যে আওয়ামিলীগ চরমোনাইকে তাদের আদোর্শের বিরোধী মনে করে না।

পীর সাহেব চরমোনাই জনাব রেজাউল করীমের ঐক্যের আহব্বনটা যেহেতু ইসলাম বিরোধীদের খুব মনপূত হয়েছে তাই এ বিষয়ে ইসলামপন্থীদের ধিরে চল নীতি অবলম্বন করতে হবে আর তা কমপক্ষে আওয়ামি গজব থেকে জাতি পরিত্রান না পাওয়া পর্যন্ত।

একটা বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করে লেখার সমাপ্তি টানবঃ

১৯৯৬ সালের নির্বাচনের সময় তৎকালীন ইসলামী শাসন তন্ত্র আন্দোলন মিনার মার্কায় আমাদের এলাকায় নির্বাচন করেছিল। তাদের প্রতিপক্ষ ছিল আওয়ামিলীগ নৌকা মার্কা নিয়ে, বিএনপি ধানের শীষ জামায়াত দাড়ি পাল্লা এবং জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতিক নিয়ে।

লীগ বিএনপি এবং জামায়াতের স্থানীয় কর্মীরাই পোষ্টারিং মিসিল মিটিং করত। জাতীয় পার্টির পোস্টারিং এবং মিসিল করত লীগ এবং দল ছুট ২/৪ জন তরুণ আর মীনার মার্কার পোস্টার লাগানো এবং মিসিল মিটিং বাস্তবায়নে পীর সাহেবের মুরীদদের সম্পূর্ণ সহায়তা দিতে দেখেছি আওয়ামি ঘরানার লোকদের। তারাযে পীর সাহেবের মুরীদ তাও কিন্তু না বরং যারা নৌকার মিসিল করে তাদেরকেই আবার মিনারের মিসিল করতে দেখেছি!

জানিনা এখন নতুন আঙ্গিকে গড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে আওয়ামিলীগ আগের মতই সহায়তা করে কিনা?

যদি করে তাহলে পীরসাহেবের খালেছ মুরীদ আর ইসলাম কায়েম করার মানষে সম্পৃক্ত ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের বিষয়টা ভেবে দেখার আহবান জানাব।

বিষয়: রাজনীতি

১৩৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File