ফ্রি ভিসা নামক গোলামী ভিসার প্রভাব।

লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ১৬ মে, ২০১৮, ০২:০৪:০৬ দুপুর

যে মাকা ভিক্ষা করে খাইয়েছি কিন্তু চার বেড়ার বাহিরে হতে দেইনি সেই মাকে কিভাবে ঘরের বাহিরে যেতে দেই?

ছেলেটা এভাবেই কেদে কেদে কথা গুলো বলছিল!

ঘটনা তেমনকিছুনা ফ্রি ভিসা নামক গোলামী ভিসার প্রভাব। আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে কৃতদাস দিয়ে কাজ করিয়ে প্রভূরা খেত আর এখন নিজের গাটের পয়সা খরচ করে ফ্রি ভিসা নামক গোলামীর ভিসা কিনে রাসূলের (সঃ) উম্মতেরা রাসূল (সঃ) এর জন্মভূমিতে তাঁরই উম্মত দাবীদার কফিল নামের প্রভূদের খাওয়াতে হয়!

ছেলেটার বাবা মারা গেছে তাকে ৫/৬ ছরের রেখে আর তার মা তখন দ্বিতীয়বারের মত অন্তসত্যা অথচ চাল চুলা বলতে কিচ্ছু নাই। যাও ছিল তাও চলে গেছে নদী ভাঙ্গন আর বানের জলে। সেই তখন থেকেই তাদের স্থান হয়েছে সরকারী রাস্তার পার্শ্বে ঝুপড়ি ঘড়ে! ক্ষুন্নিবৃত্তি নিবারণের জন্য সেই অতটুকু ছেলেকেই হাতে নিতে হয়েছিল ভিক্ষার ঝুলি।

বয়স ১০/১২ বছর হলে তার ভিক্ষা করতে লজ্বা লাগছিল তাই প্রতিবেশী এক চাচার সাথে ঢাকায় গিয়েছিল রাজ মিস্ত্রির কাজে। মাথাগোজার ঠাই না হলেও তা দিয়ে মা এবং ছোট্ট ভাইর সম্মানজনক রিজিকের ব্যবস্থা হয়েছিল।

স্বপ্ন যখন নিজস্ব মাথাগোজার ঠাই বানানো এবং বিয়ে করে সংসার গোছানর তখন প্রবাসে এসে সোনার হরিণ ধরা ছাড়া আর উপায় কি?

প্রতিবেশী এক চাচা একটা ফ্রি ভিসার ব্যবস্থা করলে ধার দেনা করে এবং নিজের জমানো টাকা ও সুদে টাকে এনে মোট ৮ লাক্ষ টাকা খরচ করে সৌদি'আরবে চলে আসে।

যে আশা এসেছে, এসেই দেখে সে আশায় গুড়ে বালি। ঘর হবে কিনা জানা নেই তবে সুদে আনা টাকাটা কোন ভাবে পরিষদ করতে পারলেই যথেষ্ট কারণ বিভিন্ন নিয়মের বেড়াজালে বাহিরে জাকে বেড়নটাই প্রায় অসম্ভব তার উপরে কাজের অভাবতো আছেই।

বছর শেষে নতুন আকামা করতে লাগবে প্রায় ১০ হাজার রিয়াল পাশাপাশি প্রতিমাসে কফিল নামক হারামখোড় মণিবকে দেয়া লাগবে ৫০০ রিয়াল। নিজের থাকা খাওয়ার খরচ মিলিয়ে শুধু টিকে থাকার জন্যই দরকার মাসে কমপক্ষে ২০০০ রিয়াল।

তার পরেও আশায় বুক বেঁধে দিন রাত এক করে কাজের সন্ধানে টো টো করা লাগে। ভাগ্য ভালো হলে কখনো কাজ জোটে আবার কখনো রাস্তায় বসে কাজের আশায় মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অলস সময় কাটে।

এর পরেও যদি কফিল নামক হারাম খোড় মণিবদের দয়া হত তাহলেও কোন কথা ছিলনা।

দয়া থাক দূরের কথা একটু মানবতাও দেখায়নি আল্লাহর রাসূলের (সঃ) দেশের আবুজাহেলের উত্তরসূরীরা। না জানিয়ে ছেলেটিকে হ্রুফ (পালাতক) বলে থানায় রিপোর্ট করে দিয়েছে অথচ সে প্রতিদিনই হারাম খোড় কফিলের চোখের সামনেই কাজের আশায় রাস্তায় বসে থাকে!

এমন মিথ্যাবাদী হারাম খোড়দের কবল থেকে আল্লাহ বিশেষ করে বাংলাদেশী কৃতদাসদের হেফাজত করুন। কারণ বাংলাদেশীরাই বেশীরভাগ ফ্রি ভিসা নামক গোলামী ভিসায় মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোতে আসে আর আবুজাহেলের উত্তরসূরিরা সেই সুযোগে এখনও ভিন্ন আঙ্গিকে দাস ব্যবসা চালু রেখেছে।

যেসব ভাইয়েরা ফ্রিভিসা নামক গোলামি ভিসায় বিদেশে আসতে চাচ্ছেন তাদেরকে অনুরোধ করব আপাতত ক্ষান্ত দিন। যদি একান্তই বিদেশে আসতে চান তাহলে ঢাকার গুলশান বনানিতে চলে যান। ওখানে অনেক রিক্রুটিং এজেন্সি আছে সরাসরি দেখে শুনে কোন কোম্পানীতে ইন্টারভিউ দিয়ে জেনে বুঝে তার পরে আসুন। একটা কথা মনে রাখবেন যে প্রিশ্রম আপনি বেইদেশে এসে করবেন সে পরিশ্রম দেশে করলে বরং বিদেশের থেকে ভালো উপার্যন করতে পারবেন।

বিষয়: আন্তর্জাতিক

১৩৪৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

385362
১৬ মে ২০১৮ সন্ধ্যা ০৭:০৪
শেখের পোলা লিখেছেন : এদের বোঝালে ভাবে তাদের উন্নতিতে বাধা দিচ্ছেন। মানুষ না ঠেকলে শেখে না। তাই সোনার হরীণ ধরতে যেতেই হবে। যায় পরে পস্তায়। ধন্যবাদ।
০৯ অক্টোবর ২০১৮ বিকাল ০৪:৪৯
317960
আবু জারীর লিখেছেন : আমাদের দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা যা তাতে তাদেরকে এককভাবে দোষও দেয়া যায়না। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। আমিন। ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File