মোক্তাদীদের সূরা ফাতেহা পড়া না পড়া নিয়ে কিছু প্রশ্নঃ

লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৩ এপ্রিল, ২০১৮, ০১:৪৯:২৩ দুপুর

মোক্তাদীদের সূরা ফাতেহা পড়া না পড়া নিয়ে কিছু প্রশ্নঃ

সূরা ফাতেহা না পড়লে নামাযই হবেনা এমন মত যদি কেউ গ্রহণ করে তাহলে আরও কিছু প্রশ্নের সমাধান হওয়া জরুরী।

০১) যে ব্যক্তি রুকুতে এসে জামায়াতে শরিক হয়েছে ঐ ব্যক্তির ঐ রাকাত কাউন্ট হবে কিভাবে? যদি ঐ রাকাত কাউন্ট করা হয় তাহলে প্রশ্ন থেকে যায় যেহেতু উনি রুকুতে শরিক হয়েছেন সেহেতু সূরা ফাতেহা পড়ার সুযোগ পাননি অথচ সূরা ফাতেহা না পড়লে নামায হবেনা এমন মত গ্রহণ করেছেন!

০২) অনেক সময় এমন হয় যে ইমাম সাহেব খুব দ্রুত সূরা ফাতেহা পড়ে রুকুতে চলে যান অথচ মোক্তাদী সূরা ফাতেহার অর্ধেকও শেষ করতে পারেনি। এমতাবস্থায় ঐ মোক্তাদীর নামাযের কি হবে? কারণ তার ইয়াকিন সূরা ফাতেহা না পড়লে নামাযই হবেনা।

০৩) কখনো কখনো এমনও হয় যে দ্বিতীয় বা তৃতীয় অথবা শেষ রাকাতে মোক্তাদী সূরা ফাতেহা পড়তে ভুলে গেছে কিন্তু যখন তার খেয়াল হয়েছে ততক্ষণে ইমাম সাহেব রুকুর তাকবির দিয়ে ফেলেছে। এমতাবস্থায়ও সূরা ফাতেহা মিস হয়ে গেছে। সূরা ফাতেহা ছাড়া যেহেতু নামায হবেনা তার মানে সূরা ফাতেহা পড়া ফরয এবং ফরয তরক হয়ে গেলে নামায পুনরায় পড়তে হয়। এমতাবস্থায় মোক্তাদী কি নামায শেষ হয়ে গেলে আবার নামায দোহরায়ে পড়বে? ঘটনাটা যদি আসরের নামাযে হয় তাহলে কি করবে? আসরের নামাযের পড়ে সূর্য অস্ত যাওয়ার আগ পর্যন্ত আর নামায নেই।

আশা করি বোদ্ধা শায়খগণ বিষয়টা একটা সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে ক্লিয়ার করবেন। সূরা ফাতেহা পড়া না পড়া নিয়ে পুরা মুসলিম উম্মাহর সাধারণ লোকেরা একটা বড় ধরণের কনফিউশানে আছে।

এবিষয়ে অনেকের আলোচনা আমি শুনেছি এবং নিজে যেভাবে মরহুম দাদার কাছে নামায শিখেছি যিনি হানাফি মানহাজের ভিত্তিতে আমল করতেন তা হলঃ

ইমাম সাহেব যখন উচ্চ স্বরে সূরা ফাতেহা পড়েন তখন নিরবে শুনি। যদি পরবর্তি আয়াত তেলাওয়াত করতে ইমাম সাহেব সময় নেন তখন সূরা ফাতেহা পড়ি। যখনই ইমাম সাহেব পুনরায় তেলাওয়াত শুরু করেন তখনই নিরব হয়ে যাই তা সূরা ফাতেহা পূর্ণ না হলেও তবে কখনো কখনো পূর্ণও করি।

ইমাম সাহেব যখন নিরবে তেলাওয়াত করেন তখন আমিও নিরবে সূরা ফাতেহা পড়ি। তবে কোন সময় বেখেয়ালে সূরা ফাতেহা ছুটে গেলে বা ইমাম সাহেবের দ্রুততার কারণে সূরা ফাতেহা পূর্ণ না করতে পারলেও কনফিউশানে ভুগিনা। মনে এই বিশ্বাস রাখি যে নামায হয়ে গেছে।

এভাবেই আমি ছোট্ট বেলায় নামায শিখেছি আমার মরহুম দাদা ক্বারী নূর মোহাম্মদ ভুঁইয়ার কাছ থেকে যিনি হানাফী মানহাজের অনুসারী ছিলেন। অনেক শায়খের আলোচনার সাথে এই পদ্ধতি মিলেযায় বিধায় এখনও আমি আমার দাদার শেখান পদ্ধতিতেই নামায আদায় করি। অবশ্য মাঝখানে কিছুদিন শায়খ মতিউর রহমান মাদানীর চক্করে পরে যেকোন মূল্যে সূরা ফাতেহা পড়া শুরু করেছিলাম। আল্লাহ্‌র আমার মরহুম দাদা-দাদীকে জান্নাতের উচ্চ মর্যাদা দান করুন। আমিন।

বিষয়: বিবিধ

১২১৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

385154
২৩ এপ্রিল ২০১৮ দুপুর ০২:০৬
মোহাম্মদ নূর উদ্দীন লিখেছেন : মাদানি চক্কর !! এটাকি দাম্মামে অবস্হিত !!
১৬ মে ২০১৮ দুপুর ০২:০৭
317686
আবু জারীর লিখেছেন : জ্বি।
385161
২৪ এপ্রিল ২০১৮ রাত ১২:২০
নূর আয়েশা সিদ্দিকা জেদ্দা লিখেছেন : মাঝে মাঝে মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে এই প্রশ্নগুলো আমারো মনে আসে। আমি ও জানতে চাই সহীহ নিয়ম কি?অনেক ধন্যবাদ।
১৬ মে ২০১৮ দুপুর ০২:১০
317687
আবু জারীর লিখেছেন : ওনাদেরকে প্রশ্ন করেছিলাম কিন্তু জবাব পাইনি। সবার একটা বিষয় মনে রাখা দরকার সার্বজনিন নিয়ম করার আগে খেয়াল রাখতে হবে একটা প্রশ্নের সমাধান হলে যেন নতুন করে ১০ প্রশ্ন এসে না দাড়ায়। আর ১০টা প্রশ্ন এলেও যেন তার সুন্দর সমাধান থাকে। কোন ভাবেই যেন বৈপরীত্য দেখা না দেয়। ধন্যবাদ আপু।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File