গল্প_প্রবাসী_বড়_ছেলেঃ২৬
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৩:০৭:০৫ দুপুর
#গল্প_প্রবাসী_বড়_ছেলেঃ২৬
যাভেদ অবশ্য মুন্না এবং তার খালা অর্থাৎ মুন্নার মা পরি বেগমের কাছ থেকে মুন্নি সম্পর্কে ইতি মধ্যেই সব কিছুই জেনেছে। যাভেদের মনটাও বেশ আকুলি বিকুলি করছিল মুন্নির সাথে একটু কথা বলার জন্য। কিন্তু সে উপায় কি আর আছে? মুন্নির বাবা-মা যে ধর্ম ভিরু, আর মুন্নি যেভাবে নিজেকে পর্দার আরালের মা-খালা বানিয়ে রেখেছে তাতে যেখানে মুন্নারই কথা বলা দায় সেখানে যাভেদের তো প্রশ্নই উঠে না। অবশ্য যাভেদও ভালো ছেলে। শহরের ছেলে হলেও কোন ধরণের আড্ডাবাজিতে নাই। ইসলামী ছাত্র সংগঠনের সে একজন গর্বিত কর্মী এবং ঢাকা কলেজের এইচএসসি বিভাগের কলেজ শাখার সাহিত্য সম্পদক। তাই মনকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে মনের খায়েস মনের মধ্যেই চেপে রেখেছে।
উচ্চতর গণিতের যে চ্যাপ্টারের অংক মুন্নি বুঝতে পারছেনা সে চ্যাপ্টারের অংক না পারলে মুন্নি যে পরীক্ষায় কমপক্ষে ১০ নম্বর কম পাবে তাতে সন্দেহ নাই। এতে করে সে এ+ নাও পেতে পারে। তাই মাকে বলে চাচীর সহায়তায় শেষ পর্যন্ত তাকে যাভেদের দারস্ত হতে হল।
যাভেদ যেন এমনই একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। সুযোগ পেলেও সুযোগের অসৎ ব্যবহার যে করা যাবেনা তা যাভেদ ভালো করেই জানত এবং সে সেভাবেই ছোট্ট বেলা থেকেই নিজেকে গড়ে তুলেছে।
- আসসালামু’আলাইকুম
- ওয়ালাইকুম’আসসালাম
- জ্বি বলুন আপনার জন্য কি করতে পারি?
- ভাইয়া, আপনি বলে লজ্জা দিচ্ছেন কেন? আমিতো আপনার চেয়ে অনেক ছোট্ট এবং সবে মাত্র দশম শ্রেণীতে পড়ি।
- হুম! অনেক ছোট্ট মাত্র তিন বছরের। কিন্তু বিদ্যা বুদ্ধিতে আপনি কিন্তু আমার চেয়ে এগিয়ে।
- লজ্জা দিচ্ছেন কেন ভাইয়া। আমি এসেছি আপনার কাছ থেকে উচ্চতর গণিতের একটা চ্যাপ্টার বুঝে নিতে।
- ওহ আচ্ছা! ঠিক আছে বের কর দেখি কিছু পারি কিনা।
- ভাইয়া Quadratic Equations চ্যাপ্টারটা একটু বুঝিয়ে দিন প্লিজ।
চ্যাপ্টারের নাম শুনেই যাভেদের অন্তরাত্মার পানি শুঁকিয়ে গেছে। কঠিন বলে এই চ্যাপ্টারের অংকে ফাকি দিয়েই যাভেদ স্কুল জীবন পার করেছিল অথচ বেড়াতে এসে আজ কি না সেই চ্যাপ্টারেরই মুখমুখি হতে হল!
- কি হল ভাইয়া? কি ভাবছোঁ?
- না মানে অনেকদিন আগে করেছি তো। আচ্ছা বইটা দাওতো। ফর্মূলাটা যেন কি?
- ax² + bx + c = 0 আর প্রথম অংকটা হল 2x² - 3x – 8 = 0
অংক আর ফর্মূলা দেখে যাভেদ সত্যি সত্যিই প্রমাদ গুণল। প্রেস্টিজের চাকা বুঝি এবার পাংচার হওয়ার পালা। কথায় আছেনা শিখছ কোথায়? ঠেকছি যেথায়। ফর্মূলা যখন আছে তখন একটা হাল হবেই। স্কুল লাইফে একটু কষ্ট করে চ্যাপ্টারটা শিখে নিলে আজকে এই বিতিখিচরা অবস্থার মধ্যে পরতে হত না। মুন্না অবশ্য যাভেদের অবস্থা কিছুটা আঁচ করতে পেরেছে।
- দেখ মুন্নি যাভেদ ভাই এই অঙ্ক করেছে অনেক দিন আগে তাই হয়ত এখন তার মনে পরছেনা তাই তুমি একটা কাজ কর। বইটা রেখে যাও ভাইয়া একটু দেখে নিক। হয়ে গেলে আমিই ভাইয়াকে নিয়ে তোমাদের ঘরে আসব।
- আচ্ছা ভাইয়া।
- হুম! কি বুঝলা ভাইয়া?
- কি বুঝলাম মানে?
- মানে আমি ইজ্জত না বাচালে কিন্তু এতক্ষনে পাংচার হয়ে যেতা।
- থামবি না মার খাবি।
- থাক বাবা মার খাওয়ার দরকার নাই। জলদি করে তোমার বন্ধুদের কাউকে ফোন করে বিষয়টার হাল কর না হলে তোমার কিন্তু আমও যাবে আর ছালাও যাবে। খুবত আমার সাথে ব্রলিয়ান্ট গিরি দেখাও, এবার ঠালা সামলাও।
- তুই ভাগ এখান থেকে।
- হুম! যাইতেছি কিন্তু যা করার আধা ঘনটার মধ্যেই কিন্তু করতে হবে নাহলে আমি কিন্তু হাটে হাড়ি ভেঙ্গে দিব।
বিষয়: সাহিত্য
১০২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন