ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক নেতা তৈরীর কারখানাঃ
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ০৫ জানুয়ারি, ২০১৮, ০৬:০৯:১৬ সন্ধ্যা
ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক নেতা তৈরীর কারখানাঃ
পরবর্তি রাজনৈতিক নেতৃত্ব তৈরীর জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছাত্র রাজনীতি চালু আছে। আমাদের দেশও তার ব্যতিক্রম না।
দুঃখের বিষয় হল আমাদের দেশের রাজনীতি এতটায় নোংড়া হয়ে গেছে যে ছাত্র জীবনে রাজনৈতিক চর্চা করতে গিয়ে অনেকেরই জীবনও চলে গেছে আর কেরিয়ার যে নষ্ট হয়েছে কত ছাত্রের তার হিসেব কেউ দিতে পারবেনা।
সেজন্যই আমরা অনেকেই মনে করি যে ছাত্র রাজনীতির নামে আমাদের দেশে যা চালু আছে তার গুণগত পরিবর্তন এখন সময়ের দাবী।
ছাত্র সংগঠনগুলোর মূল কাজ হওয়া দরকার কেরিয়ার বিল্ডিং এবং ছাত্র সমস্যা সমাধান কেন্দ্রিক। সংগঠন ভুক্ত ছাত্রদের কেরীয়া তথা জাতীয়ভাবে ছাত্রদের মেধামননের বিকাশ কিভাবে সম্ভব সেই দিক নির্দেশনা দেয়া।
হ্যা, যারা রাজনীতিকে কেরিয়ার হিসেবে নিতে চায় তারা শুধুমাত্র অনার্স শেষ করে মাস্টার্স করার সময় ইন্টার্নি রাজনীতিক হিসেবে স্থানীয় রাজনীতিতে যোগ দিবে।
স্থানীয় রাজনীতি হতে হবে রাজনীতি পাঠের সূতিকাগার। কে জিতবে কে হারবে সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হল রাজনীতির মাঠে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দেয়া।
এক্ষেত্রে দলীয় মননয়ন নিয়ে কামড়াকামড়ি না করে নিজেকে প্রার্থি হিসেবে দাড় করিয়ে দেয়া। পছন্দের দল সমর্থন দিলে ভালো আর নাহয় শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়া। নির্বাচন শেষে রাজনীতির মাঠে নিজে কতটুকু ফিট তা নিজে নিজেই বুঝে যাবে এবং এতে হানাহানি এবং টাকার খেলা হ্রাস পাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
এভাবে যারা নির্বাচিত হবে তারা ধিরে ধিরে জাতীয় রাজনীতিতে নিজেদের জায়গা করে নিতে পারবে।
শিক্ষিত ছেলে মেয়েরা যদি রাজনীতিতে আসে তাহলে রাজনীতির গুণগত মানে পরিবর্তন আসতে বাধ্য।
খেলোয়ার ডাক্তার ঈঞ্জিনীয়ার প্রফেসর মুফতি মাওলানা তৈরীর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যবস্থা আছে। আছে এসব বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষনেরও ব্যবস্থা শুধু নাই রাজনীতি শিক্ষার কোন প্রতিষ্ঠান বা প্রশিক্ষনের কোন ব্যবস্থা অথচ সমাজ রাষ্ট্রের মূল চাবিকাঠি এই রাজনীতিকদেরই হাতে!
এযেনে বিমানের ইঞ্জিনিয়ার কুরুদের যাত্রী সিটে বসিয়ে রেখে সুইয়াপের হাতে ফাই করার জন্য ককপিটের দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া!
বর্তমানে দেখা যাচ্ছে অশিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত লোকেরা রাজনীতির মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
এর থেকে মুক্তি পেতে হলে মর্যাদা অনুজায়ি যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নাই তাদেরকে নির্বাচনে প্রতি দ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
চেয়ারম্যান সাহেব আন্ডার মাধ্যমিক আর তার সেক্রেটারী পোষ্টগ্রাজুয়েট!
দেশে শিক্ষিত লোকের এখন আর অভাব নাই তাই ওয়ার্ড মেম্বারদের নূন্যতম যোগ্যতা হওয়া দরকার উচ্চ মাধ্যমিক, চেয়ারম্যাদের গ্রাজুয়েট। পৌরসভার কাউন্সিলরদের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক আর মেয়রদের জন্য গ্রাজুয়েট এবং সিটি কর্পরেশানের কাউন্সিলরদের গ্রাজুয়েট এবং মেয়রদের পোষ্টগ্রাজুয়েট হওয়া সময়ের দাবী। অভিগ্যতার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা সিথিল যোগ্য হতে পারে।
একইভাবে এম্পি, মন্ত্রীদের জন্য সর্ব নিন্ম শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে পোষ্টগ্রাজুয়েট।
যারা রাজনীতিকে কেরিয়ার হিসেবে নিতে চান এবং নির্বাচনে প্রার্থি হতে চান তাদেরকে নিন্মের বিষয় গুলোকে আত্বস্থ করতে হবেঃ
০১) আপনি যে এলাকার জনপ্রতিনিধি হতে চান সেই এলাকার এরিয়া আপনার নখদর্পনে থাকতে হবে।
০২) আপনার নির্বাচনি এলাকার কোথায় কি সমস্যা আছে তা আপনার জানা থাকতে হবে।
০৩) কোন এলাকার মানুষের কি দাবী তাও কৌশলে আপনাকে জেনে নিতে হবে।
০৪) বর্তমানে যিনি ঐ এলাকার জনপ্রতিনিধি আছেন তিনি নির্বাচনের আগে কি কি ওয়াদা করেছিলেন এবং তার মধ্যে কি কি বাস্তবায়ন করেছেন তাও আপনার জানা থাকতে হবে।
০৫) যে সব ওয়াদা বর্তমান বা সর্বশেষ জনপ্রতিনিধি বাস্তবায়ন করেছেন তাতে কোন দূর্বতা আছে কি না, আর যে গুলো বাস্তবায়ন হয়নি সেগুলো কেন বাস্তবায়িত হলনা সেই কারণও জানা থাকতে হবে।
০৬)আপনি নির্বাচিত হলে অবাস্তবায়িত কাজ কিভাবে সম্পন্ন করবেন এবং তার সাথে আপনি আরও কি কি কাজ করা জরুরী বলে মনে করেন তাও আপনার জানা থাকতে হবে।
০৭) আপনার সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য অঞ্চল বা দেশের জনপ্রতিনিধিরা কিভাবে কাজ করে তাও আপনার জানা থাকতে হবে।
০৮)সফল জনপ্রতিনিধী এবং আপনার নির্বাচনি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সম্পর্কে আপনার জানা থাকতে হবে। নির্বাচনি বক্তৃতায় তাদের ভালো গুণগুলো তুলে ধরে বক্তব্য দিতে হবে এবং নির্বাচিত হতে পারলে যে কোন কাজের ব্যাপারে তাদের সাথে পরামর্শ্ব করা হবে বলে ঘোষণা দিতে হবে।
০৯) শিক্ষা স্বাস্থ্য এবং বেকার যুবকদের জন্য আপনার ভাবনা কি তার একটা রোড ম্যাপ করতে হবে।
১০) নির্বাচিত হতে পারলে বিরোধী পক্ষকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন তার দিক নির্দেশনা থাকাও জরুরী।
ইলেকশান ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কে পরে লিখব ইনশা'আল্লাহ!
বিষয়: রাজনীতি
৭১৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন