ভয়কে জয়
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৬ নভেম্বর, ২০১৭, ০১:২৫:০৭ দুপুর
শেষ পর্যন্ত তিনি ভয়কে জয় করেই ফেল্লেন! আলহামদুলিল্লাহ!
মিডিয়ার বর্তমান স্বর্ণ যুগে খুব কম মানুষই এর থেকে সুফল নেয়ার চেষ্টা করে। আমরাইবা কতটুকু করি?
দাওয়াতে দীনের কাজকে যেভাবে দেশে দেশে প্রতিরোধ করা হচ্ছে তাতে বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করা ছাড়া উপায় কি? আর সে প্রকৃয়াটা যদি হয় সহজ তাহলে সেটেকে কাজে লাগানো সময়ের দাবী।
যখন থেকে মোবাইল ব্যবহার করছি তখন থেকেই ব্যক্তিগত রিপোর্ট সহ অনেক নোটই মোবাইলেই রাখার চেষ্টা করছি। এতে যখন তখন যে কোন প্রগ্রামেই রিপোর্ট পেশ করা যায়, পাসপোর্ট, আইডি, একাউন্ট নম্বর সহ অনেক প্রয়োজনীয় ত্বথ্যই সব সময় হাতের মুঠয় থাকে।
দেশে দাওয়াতি প্রগ্রাম গুলোতে ব্যাপকভাবে পুলিশি হানা শুরু হলে এর বিকল্প হিসেবে বৌ বাচ্চাদের নিয়ে IMO / WhatsApp এর মাধ্যমে বৈঠক চালু করি।
সমস্যা হচ্ছিলে আমার বৌকে নিয়ে। সে যেন প্রতিজ্ঞা করে বসেছিল যে নতুন করে আর কুর'আনের কোন আয়াত মুখস্ত করবেনা। যতটুকু মুখস্ত আছে নামায পড়ার জন্য তাই যথেষ্ট।
বড় মেয়েটার যাস্ট JSC পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ভাবলাম তাকেও কিছু সূরা মুখস্ত করানো দরকার। প্রথমে অন্যের মেয়ের দিকে দৃষ্টি না দিয়ে নিজের মেয়েকেই টার্গেট করলাম। তাকে পড়তে বললে সে এরিয়ে যেতে পারবেনা এটা ছিল আমার দৃঢ় বিশ্বাস। একটু হেকমতের সাথে তার ব্যাপক প্রশংসা করে বললাম, 'আম্মু তুমিতো সব কিছুই আমার চেয়ে ভালো বুঝ তাই যদি তাফহীমুল কুর'আন থেকে সূরা নাবাটা একটু বুঝিয়ে দিতে?'
সে আর দেরী না করে সাথে সাথেই আমাকে বুঝাতে শুরু করল। মাশা'আল্লাহ সে সহজেই বুঝে এবং বুঝাতেও পারে। এবার প্রস্তাব করলাম আম্মাপাড়ার যে সব সূরা এখনও মুখস্ত হয়নি তা অর্থ সহ মুখস্ত করার। যেহেতু তার হাতে প্রায় দেড় মাস সময় আছে তাই আমরা এ সময়টা কাজে লাগাতে পারি।
আলহামদুলিল্লাহ! পরিকল্পনা মাফিক মুখস্ত কার্যক্রম চলছে এবং ভালোভাবেই এগোচ্ছে কিন্তু বিপত্তি ঘটেছে অন্যের মেয়েকে নিয়ে, যে কিনা আবার আমার মেয়েদের মা।
তার একটাই কথা বাচ্চাদের নিয়ে ঝামেলা করতে করতে তার মগজ পানিপানি হয়ে গেছে তাই এখন আর মগজে কিছু ঢুকেনা! কিন্তু আমিও নাছর বান্দ। অনেক বুঝিয়ে সুজিয়ে শেষ পর্যন্ত দৈনিক এক আয়াত মুখস্ত করতে রাজি করেছি।
গতকাল সেও শুরু করেছে। মাশা'আল্লাহ প্রথম দিনেই সে ১০ আয়াত মুখস্ত করে ফেলেছে। তার এই পার্ফর্মেন্সে সেও বেশ এক্সাইটেড! আমিও তার ভূয়সী প্রশংসা করে এখন মা-মেয়ের মধ্যে কম্পিটিশান লাগিয়ে দিয়েছি। অবশ্য এজন্য আমাকে নগদ পয়সায় চারটা ড্রেস কিনে দিতে হয়েছে। বড় মেয়ে একাই তিনটা আর ছোট্ট মেয়ের জন্য একটা। নিজের মেয়ে বলে কথা। অবশ্য পরের মেয়েকেও অফার করেছিলাম কিন্তু তার নাকি এখন দরকার নাই।
বড় মেয়েটা নাকি প্রায়ই স্বপ্নে দেখে সে বিলগেটস এর মত ধ্বনী হয়ে গেছে। সেজন্য সব কিছুই তার বেশী বেশী চাই। স্কুলে যাওয়ার সময় তার টিফিনের জন্য ১০০ টাকা চাই। মাঝে মধ্যে মনে হয় সে টিফিন করেনি। তার মা যখন তাকে জেরা করে তখন বলে, 'এক ভিখারী তার কাছে চেয়েছে আর সে পুরা ১০০ টাকাই দিয়ে ইয়েছে'! তার মা আমার কাছে তার দানশীলতা নিয়ে অভিযোগ করে। আমি মনে মনে খুশি হই এবং তাকে উতসাহীত করি তবে তার মাকে বুঝানর জন্য মৃদু তিরষ্কার করি। জবাবে সে বলে বিলগেটস অমুসলিম হয়েও তার সম্পদের একটা বড় অংশ দান করে দিয়েছে তাহলে আমরা মুসলিমরা কেন পিছিয়ে থাকব?
ছোট্ট মেয়েটার ষষ্ঠ্য শ্রেণীর ফাইনাল পরীক্ষা আগামী সপ্তাহে। পরীক্ষার পরে আশা করি সেও এই কম্পিটিশানে সামিল হবে এবং আমাদের ধরে ফেলবে ইনশা'আল্লাহ! সে অতি দ্রুত মুখস্ত করতে পারে।
সব চেয়ে বড় কথা হল আমার বৌ যে ভয়কে জয় করে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে সাহসের সাথে কর্মসূচী এগিয়ে নিচ্ছে সেটা।
মজার ব্যাপার হল তাকে Spoken English এর জন্যও তাগাদা দিচ্ছি। আমরা বাপ-বেটিরা ইংলিশে কথা বললেও সে বলতে পারেনা তবে সবই বুঝে। এবার তার পালা। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কোথাকার ইংলিশ কোথায় গিয়ে গড়ায়?
বিষয়: বিবিধ
৭৬০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বিল গেটস্ নিজে ভাল মত স্টাবলিশ হয়ে তার পর দান করেছেন । মানে দান করার সময় উনার মুড ভাল ছিল কারণ উনি অভাব হীন ছিলেন।
উনি যদি উনার সম্পদের > ৯০%ই দান করে থাকেন তাহলে তো উনার বিশ্বের ২য় সেরা ধনীর পজিশনে থাকার কথা না।
আমরা কি বাইরের থেকে ভূঁয়া খবর পাই?
অবশ্য অস্বচ্ছল অবস্থার সামান্য দান কারো নজরে আসেনা।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন