তাহাদের কথা ও কাজে কত সুন্দর বৈপরিত্য?
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৭ অক্টোবর, ২০১৭, ০৮:৩০:০২ রাত
তাহাদের কথা ও কাজে কত সুন্দর বৈপরিত্য? তার পরেও তারা সহীহ হাদীসের অনুসারী!
আচ্ছা শায়খ, কথায় কথায়তো মাজহাব মানেননা, সহীহ হাদীস মানেন বলে গর্ব করেন, তাহলে ইক্বামতের দীনের বিরোধীতায় সহীহ হাদীসের রেফারেন্স না দিয়ে ঈমা মালেক ও মূসা (আঃ) এর রেফারেন্স দিচ্ছেন কেন?
ঈমাম মালেক আর মূসা (আঃ) কি আমাদের অনুসরণের মাপকাঠি নাকি মুহাম্মদ (সঃ)?
মূসা (আঃ) এর শরিয়ত কি পরিপূর্ণ ছিল না কি মুহাম্মদ (সঃ) এর শরিয়ত?
ফেরাউনের গদি ফাঁকা পেয়েও মূসা (আঃ) যদি তাতে না বসে থাকেন তাহলে আমাদের বসতে হবে কেন এই প্রশ্ন করেছনতো? আপনাদের কথা মত আমাদেরও মুসা (আঃ) এর মত করা উচিৎ তাইনা?
তাহলে কি আমাদেরর মূসা (আঃ) যেভাবে নামায পড়েছেন সেভাবেই নামায পড়া উচিৎ?
যেভাবে রোযা রেখেছেন সেভাবেই রোযা রাখা উচিৎ?
নাকি মোহাম্মদ (সঃ) যে ভাবে আমাদের নামায রোযা হজ্জ যাকাত শিখেয়েছেন সেভাবে পালন করা উচিৎ?
যদি আমাদেরকে মোহাম্মদ (সঃ) এর শেখান পদ্ধতিতেই নামায পড়তে হয়, রোযা রাখতে হয়, হজ্জ করতে হয় যাকাত দিতে হয় তাহলে তিনি যেভাবে মদিনা রাষ্ট্রে ইসলাম কায়েম করেছেন আমরাও সেভাবে আমাদের জনপদে ইসলামী হুকুমত কায়েম করার জন্য চেষ্টা করবনা?
মুসা (আঃ) ফেরাউনের তাড়া খেয়ে নিজের সাথীদের নিয়ে মিশর থেকে ফিলিস্তিনে হিজরত করার জন্য চলে যাচ্ছিলেন আর ফেরাউন তাকে তাড়া করছিল সঙ্গী সাথী সহ হত্যা করতে। আল্লাহর কুদরতে ফেরাউনের সলিল সমাধী হয়েছিল। মুসা (আঃ) ফেরাউনের ফাঁকা গদীতে না কি বসেন নি তাহলে কে বসেছিল? যদি নাও বসে থাকেন তার পরেও তা আমাদের জন্য আদর্শ নয়।
আমাদের জন্য আদর্শ এবং অনুসরণীয় মোহাম্মাদ (সঃ) যা করেছিলেন তা।
তিনি মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করে গিয়ে সেখানে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, আমাদেরও উচিৎ আমাদের জনপদের লোকেরা যদি চায় তাহলে প্রচলিত শাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তণ এনে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্টা করা।
তিনি দশ হাজার সাথী নিয়ে মক্কা অবরোধ করেছিলেন আর মহান আল্লাহ মুশরিক শক্তির অন্তরে পরাজয়ের ভিতি সঞ্চার করে দিয়েছিলেন। মক্কার মুশরিকেরা নিজেদের গদি মোহাম্মদ (সঃ) এর কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়েছিল। তিনি মুশরিকদের ক্ষমতাচ্যুত করে মক্কাকে মদিনা রাষ্ট্রের অন্তর্ভূক্ত করেছিলেন। মুসা (আঃ) এর মত গদি ফাঁকা রাখেন নি। (যদিও কারো কারো মতে মূসা (আঃ) মিশরে হুকুমত কায়েম করেছিলেন)
আমরা কুর'আন মানি, সহীহ হাদীস মানি, কুর'আন হাদীসের আলোকে ফোকাহাগ্ণ যেসব মাসা'আলার জবাব দিয়েছেন তাও মানি। তারা যদি ইজতেহাদ করতে গিয়ে কুর'আন হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক কোন মত দিয়ে থাকেন এবং তা যদি আমাদের কাছে প্রমাণীত হয় তাহলে অবশ্যই স্বজতনে তাকে এড়িয়ে চলি।
মুহাম্মদ (সঃ) যেভাবে নামায রোযা হজ্জ যাকাত শিখিয়েছেন সেভাবেই আমরা নামায রোযা হজ্জ যাকাত কায়েম করব। তিনি যেভাবে রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছেন সেভাবে আমরা রাষ্ট্রে ইসলাম কায়েমের চেষ্টা করব।
মূসা (আঃ) আল্লাহর পয়গম্বর, তার উপর অবতীর্ণ কিতাব আল্লাহর কিতাব কিন্তু অনুসরণ যোগ্য কিতাব আল কুর'আন আর মোহাম্মদ (সঃ) এর নবুয়তের ২৩ বছরের জীবন। এর বাহিরে আমরা কোন শায়খ মুফতির কথা মানিনা। তারা যদি মোহাম্মদ (সঃ) এর জীবন থেকে কোন উদাহরণ দিতে পারেন তা আমরা অবশ্যই মানতে বাধ্য তবে তার মোকাবেলায় মূসা(আঃ) সহ অন্য কোন পয়গম্বরের জীবনের উদাহণ মানতে পারিনা। সে অধিকার আমাদের নাই।
আল্লাহ আমাদের সকলকে সঠিক বুঝ বুঝার তাওফিক দিন। ইসলামের লেবাসে সহী হাদীসের আলখেল্লা লাগিয়ে যারা মানুষকে বিভ্রান্ত করছে তাদের অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।
যে সব ভাইয়েরা সহীহ হাদীস মানার অঙ্গিকার করেছেন তাদের সাথে আমাদের কোন বিরোধ নাই বরং তাদের জন্য আছে আমাদের মায়া ও মহব্বত কারণ আমরাও তাদের মত সহীহ হাদীসের উপর আমল করতে চাই।
তাই আসুন ঐ সব প্রতারকদের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে নিজেরা সহীহ হাদীস খুলে পড়ি এবং নিজের বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে চিন্তা করি। আল্লাহ অবশ্যই আমাদের সঠিক পথ দেখাবেন।
বিষয়: রাজনীতি
৮৫১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন