তাদের আসল বিরোধ ইকামতে দীনের সাথে, গণতন্ত্র বাহানা মাত্র।
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২১ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:৫৯:৩২ দুপুর
রাজতন্ত্রের সহীহ পূঁজারীগণ গণতন্ত্রের চরম বিরোধী এমনকি প্রচলিত গণতান্ত্রিক পন্থায় যারা ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করে তাগুতের প্রভুত্ব খতম করে সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর আইন কার্যকর করতে চায় তাদেরও ঘোর বিরোধী।
তারা গণতন্ত্র হারাম বলে বলে মুখে ফেনা তুলে কিন্তু রাজতন্ত্রও যে হারাম সে কথা সেভাবে বলেনা। ঠ্যালায় পরে দুইএকবার বললেও তার পক্ষে হাজারটা যুক্তি দাড় করাবার ব্যর্থ চেষ্টা করে।
রাজতন্ত্রীরা যদি ইসলামী বিধান কায়েম রাখে তাহলে তাদেরকে আমরা ততটুকু সাধুবাদ জানাতে পারি যেমনটা কোন ডাকাত ডাকাতির মালের একটা অংশ সমাজ সেবা ও গরীবদের মধ্যে বণ্টন করলে সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।
ইসলামী রাষ্ট্র গঠনে গণতন্ত্রের বিরোধী হলেও তারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত তাগুত সরকারের বিরোধীতা করে না এমনকি সেই তাগুতী শক্তিকে তাগুত বলতেও রাজিনা! যদিও সেই সরকার আল্লাহর আইন পরিত্যাগ করে নিজের মনমত আইন তৈরি করে রাষ্ট্র পরিচালনা করে। বরং তারা শাসকের আনুগত্য করাকে ফরজ বলে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তাদের আনুগত্য করে, যারা হারাম কে হালাল এবং হালাল কে হারামে পরিণত করে। তারা তাদের বই পুস্তকে এগুলোকে ইসলাম বিনষ্টের করণ বলে উল্লেখ করলেও তাদের বাস্তব আচরণ ভিন্ন! আর এই শিরকি আকিদা লালন করেও নিইজেদের সহীহ বলে হাস্যকর দাবী করে এবং মুমিন মুসলমানদের তা গেলাতেও উঠেপরে লাগে!
আবার সেই তারাই গণতান্ত্রীক পদ্ধতিতে নির্বাচিত ইসলামী সরকারকে উতখাৎ করতে পরিপূর্ণ শক্তি ব্যায় করে প্রয়োজনে তলে তলে বা প্রকাশ্যেই ইয়াহুদী নাসারাদের কাছ থেকে শক্তি ধার করে!
এতে কি এটাই প্রমাণীত হয়না যে তারা আসলে গণতন্ত্রেরও বিরোধী নয় বরং তারা মূলত যারা হুকুমতে ইলাহিয়া বা ইকামতে দীন প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাদের বিরোধী।
সহীহ আক্বীদা আর সহীহ হাদীস মানার ছদ্মাবরণে তারা শিরকি কুফুরী আক্বীদা পোষণ করে কিনা তা ভেবে দেখা এখন সময়ের দাবী। কারণ কোন বাছ-বিচার না করে, নিঃশর্তে এবং স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আনুগত্য করা একটি ইবাদত। আর এই আনুগত্য একমাত্র মহান আল্লাহরই নিমিত্ত। অন্য কাউকে এরূপ আনুগত্য করলে শিরক বলে গণ্য হবে।
হযরত মূসা (আ) ও হারুন (আ) কে আল্লাহ তা'য়ালা ফেরাউন ও তার পরিষদবর্গের নিটক দাওয়াত দেওয়ার জন্য পাঠালে-
فَقَالُوٓا۟ أَنُؤْمِنُ لِبَشَرَيْنِ مِثْلِنَا وَقَوْمُهُمَا لَنَا عَٰبِدُونَ
তারা বলল, ‘আমরা কি আমাদেরই মত দু’জন লোকের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব? অথচ তাদের সম্প্রদায় আমাদের ইবাদতকারী (দাসত্বকারী)।(সূরা মু'মিনীনঃ৪৭)
এখান عَٰبِدُونَ বলতে পূঁজা বা উপাসনাকে বুঝানো হয়নি বরং আনুগত্য করাকে বুঝানো হয়েছে। কেননা, মূসা (আ) এর সম্প্রদায়ের লোকজন ফেরাউন ও তার পরিষদবর্গের কোন বাছ-বিচার না করে, নিঃশর্তে এবং স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আনুগত্য করতো, যে আনুগত্য ইবাদতে পরিণত হয়েছিল। যার কারণে আল্লাহ عَٰبِدُونَ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
হাদীসে ইরশাদ হয়েছে:
عَنْ أُمِّ حُصَيْنٍ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ الله صَلَّى الله عَلَيه وسَلَّم لاَ طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ في مَعْصِيَةِ الخَالِقِ
.
“উম্মে হুসাইন (রা থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা ইরশাদ করেছেন: স্রষ্টাকে অমান্য করে সৃষ্টিজগতের কারো আনুগত্য চলবে না”। (জামেউল আহাদীস: হা: ১৩৪০৫, মুয়াত্তা: হা: ১০, মু’জামূল কাবীর: হা: ৩৮১, মুসনাদে শিহাব: হা: ৮৭৩ আবি শাইবা: হা: ৩৩৭১৭, কানযুল উম্মাল: হা: ১৪৮৭৫।)
স্রষ্টাকে অমান্য করে কোন সৃষ্টির আনুগত্য করা হারাম। আর এই হারাম আনুগত্যকে কেউ যদি ফরজ বা আবশ্যিক তো দূরের কথা জায়েয হিসাবে পালন করে তাহলে সেই আনুগত্য হবে শিরক।
মহান আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ
وَلَا تَأْكُلُوا۟ مِمَّا لَمْ يُذْكَرِ ٱسْمُ ٱللَّهِ عَلَيْهِ وَإِنَّهُۥ لَفِسْقٌۗ وَإِنَّ ٱلشَّيَٰطِينَ لَيُوحُونَ إِلَىٰٓ أَوْلِيَآئِهِمْ لِيُجَٰدِلُوكُمْۖ وَإِنْ أَطَعْتُمُوهُمْ إِنَّكُمْ لَمُشْرِكُونَ
যাতে (যবহ করার সময়) আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি তা তোমরা মোটেই খাবে না, তা হচ্ছে পাপাচার, শয়তান তার বন্ধুদেরকে তোমাদের সঙ্গে বিবাদ করার জন্য প্ররোচিত করে; যদি তোমরা তাদের কথা মান্য করে চল তাহলে তোমরা অবশ্যই মুশরিক হয়ে যাবে। (সূরা আনআমঃ১২১)
এখানে কাফেরদের স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আনুগত্য করাকে শিরক বলা হয়েছে। অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেনঃ
ٱتَّخَذُوٓا۟ أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَٰنَهُمْ أَرْبَابًا مِّن دُونِ ٱللَّهِ وَٱلْمَسِيحَ ٱبْنَ مَرْيَمَ وَمَآ أُمِرُوٓا۟ إِلَّا لِيَعْبُدُوٓا۟ إِلَٰهًا وَٰحِدًاۖ لَّآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۚ سُبْحَٰنَهُۥ عَمَّا يُشْرِكُونَ
তারা (আহলে কিতাবরা) আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের পন্ডিত ও ধর্ম যাজকদেরকে রব বানিয়ে নিয়েছে এবং মারইয়ামের পুত্র মসীহকেও। অথচ তাদের প্রতি শুধু এই আদেশ করা হয়েছে যে, তারা শুধুমাত্র এক মা‘বূদের ইবাদাত (দাসত্ব) করবে যিনি ব্যতীত ইলাহ হওয়ার যোগ্য কেহই নয়। তিনি তাদের অংশী স্থির করা হতে পবিত্র। (সূরা তওবাঃ৩১)
সাহাবী আদী ইবনু হাতিম (রা) বলেনঃ
আমি যখন রাসূলুল্লাহ (সা) এর কাছে পৌঁছি তখন তিনি সূরা বারআর আয়াত ٱتَّخَذُوٓا۟ أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَٰنَهُمْ أَرْبَابًا مِّن دُونِ ٱللَّه তিলওয়াত করছিলেন। আমি বললাম:
قلت يا رسول الله انا لسنا نعبدهم فقال أليس يحرمون ما أحل الله فتحرمونه ويحلون ما حرم الله فتحلونه؟ قال قلت بلي قال فتلك عبادتهم.
.
হে আল্লাহর রাসূল (সা), আমরা তো তাদের ইবাদত করি না! তিনি বলেন, আল্লাহ যা হারাম করেছেন তারা তা তোমাদের জন্য হারাম করলে তোমরা কি তা হারাম বলে গ্রহণ কর না? আর আল্লাহ যা হারাম করেছেন তারা তা হালাল করলে তোমরা কি তা হালাল বলে মেনে নাও না? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলেন, এই হলো তাদের ইবাদত করা।
(আহমদ, তিরমিজী, তাফসীরে তাবারী অত্র আয়াতের তাফসীর দ্রঃ)
হাসান বসরী বলেনঃ ٱتَّخَذُوٓا۟ أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَٰنَهُمْ أَرْبَابًا مِّن دُونِ ٱللَّه এর অর্থ, তারা আনুগত্যের ব্যাপারে তাদের সমাজনেতা ও দরবেশগণকে রব হিসাবে গ্রহণ করত।
হযরত হুযায়ফা (রা) ٱتَّخَذُوٓا۟ أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَٰنَهُمْ أَرْبَابًا مِّن دُونِ ٱللَّه এর ব্যাখ্যায় বলেন, তারা তাদের উপাসনা করে বটে, তবে তারা পাপকার্যে তাদের আনুগত্য করত।
(তাফসীরে তাবারী দ্রঃ)
ইহুদী-খ্রিষ্টানরা আল্লাহ কে পরিত্যাগ করে তাঁর বান্দাদেরকে রব হিসাবে গ্রহণ করায় আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ
قُلْ يَٰٓأَهْلَ ٱلْكِتَٰبِ تَعَالَوْا۟ إِلَىٰ كَلِمَةٍ سَوَآءٍۭ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَلَّا نَعْبُدَ إِلَّا ٱللَّهَ وَلَا نُشْرِكَ بِهِۦ شَيْـًٔا وَلَا يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِّن دُونِ ٱللَّهِۚ فَإِن تَوَلَّوْا۟ فَقُولُوا۟ ٱشْهَدُوا۟ بِأَنَّا مُسْلِمُونَ
(হে নবী) বলুন, হে আহলে কিতাব! এসো সে কথায় যা আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সুসাদৃশ্য রয়েছে। (তা হলো) আমরা যেন, আল্লাহ ব্যতীত কারও ইবাদাত (দাসত্ব) না করি এবং তাঁর সাথে কোন অংশী স্থির না করি এবং আল্লাহকে পরিত্যাগ করে আমরা পরস্পর কেহকে রব রূপে গ্রহণ না করি। অতঃপর যদি তারা ফিরে যায় তাহলে বলঃ সাক্ষী থেকো যে, আমরা মুসলিম (আল্লাহর নিকট আত্মসমপর্নকারী)
(সূরা আলি ইমরানঃ৬৪)
আহলে কিতাবরা যেমন আনুগত্যের ব্যাপারে তাদের তাগুতপন্থী ধর্মযাজক ও সমাজপতিদের রব হিসােব গ্রহণ করত ঠিক তেমনি আহলে হাদীসরা তাদের তাগুতপন্থী শাসকের আনুগত্য করা ফরজ বলে মেনে নিয়ে তাদের রব হিসাবে গ্রহণ করেছে। আর রাসূলুল্লাহ (সা) এর ভাষায় فتلك عبادتهم. এই আনুগত্যই হলো তাদের ইবাদত, যা সুস্পষ্ট শিরক। এজন্য আল্লাহ তা'য়ালা আহলে কিতাবদের যা বলতে বলেছেন আমরা আহলে হাদীসদেরও সে কথায় বলব:
হে আহলে হাদীস! এসো সেই বিষয়ে যা আমাদের ও তোমার মধ্যে সুসাদৃশ্য রয়েছে। (তা হলো) আমরা যেন, আল্লাহ ব্যতীত কারও ইবাদত না করি এবং তাঁর সাথে কোন অংশী স্থির না করি এবং আল্লাহকে পরিত্যাগ করে (আল্লাহর নাফরমানী মূলক কোন কাজে কারো আনুগত্য করা ফরজ বলে) আমরা পরস্পর কেহকে রব রূপে গ্রহণ না করি। অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরাও তাহলে বলব: তোমরা সাক্ষী থেকো যে, আমরা মুসলিম, আল্লাহর নিকট আত্মসমপর্নকারী। (তাই আল্লাহর নাফরমানী মূলক কোন কাজে আনুগত্য করাকে আমরা ফরজ তো দূরের কথা জায়েয বা বৈধ বলে মনে করি না এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে রব হিসাবে গ্রহণ করি না।) কৃতজ্ঞতাঃ Tanzil Islam
বিষয়: রাজনীতি
১১০১ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আবার তারা বলে সুদ হারাম, কিন্তু সুদিমহাজন দরবেশ যখন তাদের উপদেষ্টা তখন কি সব হালাল?
পাওয়ারফুল চরম ধোলাই সমৃদ্ধ একটা লিখা। সত্যিই যদি অমন কেউ থেকে থাকে যে এ লিখার অপোনেন্ট ধ্যানধারনা পোষন করেন - নিশ্চিত এ লিখা তার জন্য উপকার ই হবে - যদি তিনি এ থেকে শিক্ষা নেন শুধু মাত্র আল্লাহ ও তার রাসুল সঃ কে নিজের করে পাবার স্পৃহায়।
একই সাথে আমি বুঝতে চাইছি যারা গনতন্ত্রকে জায়েজ, কিংবা ইসলামী প্রত্যয় যোগ করে জায়েজ করার চেষ্টা করেন তারা কি অনুরূপ দোষে দোষী নন?
তারা কি নাস্তিক ও কাফের নির্বাচন কমিশন, বিচারালয় এবং তথাকথিত বায়বীয় মূর্তিতুল্য সরকার এর অনুগত্য করছেন না - যে বা যারা কিনা আল্লাহর আইনের উপর মানুষের তৈরী আইনকে স্টাবলিশ করেছে?
কিভাবে সম্ভব আমি শয়তানের আইনের আওতায় - যা নিয়ত পরিবর্তনশীল ইসলামকে কাউন্টার দেবার জন্য, শয়তানের ফ্রেমে আবদ্ধ হয়ে - যা ইসলামের সাথে দ্বন্ধ নিশ্চিত করার জন্য প্রতিনিয়ত এ্যাডাপ্ট করা হয়, শয়তানের নিয়ন্ত্রনে থেকে - যেখানে চাওয়া মাত্র তুলে নেওয়া যায়, রিমান্ডে নেওয়া যায়, শয়তানের তন্ত্র তথা গণতন্ত্রকে এক্সেপ্ট করে - যার কোন মাপকাঠি নেই, এ্যানিথিং এন্ড এ্যাভরিথিং কুড বি সার্টিফাইড এ্যাজ গনতন্ত্র যেমন সিসির গনতন্ত্র, শেখ হাসিনার গনতন্ত্র, ডোনাল্ড মিয়াজির গনতন্ত্র, ক্যাটালোনিয়ান গনতন্ত্র, কুর্দির গনতন্ত্র ইত্যাদি - আল্লাহর সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে পারবো?
বরং এটা কি অধিকতর নিরাপদ নয় যে, গনমানুষকে এটা বলা গনতন্ত্র ইসলামের বিপরীত, ইসলামের শত্রু - যা মানুষকে ইসলাম হতে সরিয়ে ১০০% শির্ক এ নিপতিত করে?
নবী মোহাম্মদ সঃ গনতান্ত্রিক ছিলেন না আবার আগামী দিনের মেহেদী আঃ কিংবা ঈসা আঃ ও গনতান্ত্রিক হবেন না।
ধন্যবাদ।
দ্বিতীয় কথা হল যারা পাশ্চাত্যের গণতন্ত্র বা সেকুলারিজম প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে তারা অবশ্যই আপনি যে উত্তর জানতে চাচ্ছেন আমিও তার সাথে একমত।
যারা কোন ধরণের প্রত্যয় যুক্ত ছাড়াই ইসলাম কায়েম করতে চাচ্ছেন তাদের প্রয়োজনীয় জনসমর্থন না থাকার কারণে প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতির ভিতরে থেকেই বাধ্য হয়ে কাজ করতে হচ্ছে যেমনটা আমরা সবাই জেনে বুঝেই সেকুলার সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে সার্টিফিকেট নিচ্ছি, ভোটার আইডি বানাচ্ছি, পাসপোর্ট বানাচ্ছি, চাকুরী করছি, সুদী ব্যাংক থেকে পে-ওর্ডার করছি ইত্যাদি।
জানি আপনার আশানুরূপ জবাব দিতে পারিনি তবে আপনি জ্ঞানী মানুষ তাই ইসারা ইঙ্গিতে যা বলেছি তাই আপনার জন্য যথেষ্ট।
আপনি আমি যদি বর্তমান নির্বাচন কমিশন থেকে আইডি কার্ড নিতে পারি তাহলে নেতৃত্বের পরিবর্তনের জন্য তারা সেই একই নির্বাচন কমিশনের অধিনে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেনা কেন?
নির্বাচন কমিশনতো চাচ্ছে ইসলামপন্থীরা নির্বাচনে অংশ না নিক। যেমনটা সিপাহি বিদ্রহের সময়ে কার্তুজে শুয়োরের চর্বি ব্যবহার করে মুসলিম সৈনিকদের বিপাকে ফেলা হয়েছিল।
যদি সেদিন হারাম যেনেও মুসলিম সৈনিকরা শুয়োরের চর্বিযুক্ত কার্তুজ ব্যবহার করত তাহলে হয়ত সেই বিদ্রহ সফল হত উপমহাদেশে আবার মুসলিম সালতানাত ফিরে আসত। ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আবু জারীর ভাই। আপনার উত্তর আমি যত্নসহকারে পড়েছি এবং প্রায় অনুরূপ উত্তর আমি এর আগেও শুনেছি।
এই জাতীয় আর্গুমেন্ট এর বিপরীতে আমার যে ভাবনা সমূহ জন্মায় তা হলঃ
১। যিনি স্বেচ্ছায় হারাম কিংবা না-জায়েজ কিংবা কুফরের সহায়ক - সরকারের হুকুম, সেকুলার সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে সার্টিফিকেট নিচ্ছি, নির্বাচন কমিশন থেকে আইডি কার্ড বানাচ্ছি, পাসপোর্ট বানাচ্ছি, চাকুরী করছি, সুদী ব্যাংক থেকে পে-ওর্ডার করছি - তিনি কি কোনভাবে ঐ ঈমানদারের সমার্থক, যিনি তা সর্বোচ্চভাবে এ্যাভয়েড করছেন, করতে চাইছেন এবং একান্ত বাধ্য না হলে এমনকি সরকারের রাস্তায় চলতেও চান না আর চললেও ঘৃনা ভরে চলেন, নিজেকে আল্লাহর ভয়ে ম্রীয়মান, কম্পমান পান?
২। শির্ক এর অপোজিট এ দাঁড়ানো মোহাম্মদ সঃ, রূমের বিরুদ্ধে ওসামা বিন জায়েদ এর অভিযানের সময় আবু বকর রাঃ ইত্যাদি কোন ক্ষেত্রেই জনসমর্থন ছিলনা তাদের প্রতি। আপনি যে অর্থে ইসলাম কায়েম হল কি হল না উল্লেখ করেছেন - সে অর্থে আল্লাহ কোন মুমিন মুসলিমকে জিজ্ঞাসা করবে বলে আমি কোথাও কিছু রেফারেন্স পাইনি। আবার ইসলাম প্রত্যয় যোগ করার কারনে আমি দুনিয়াজুড়ে মুসলিমদের বরং কায়েমের বিপরীত দিকেই যেতে দেখেছি - এবং এ প্রত্যয়ের মাধ্যমে প্রতারক শক্তির বানানো প্রতিটি কুফরী ও শির্কি মতবাদকে মুসলমান জনমানসে বৈধতা দেওয়ানোর একটা প্রয়াস দেখছি - যা মুসলিম নেতৃত্ব ও মুসলিম গনমানুষ ধরতে পারছেন না বলে নমুনা যেমন দেখছি তেমনি সে ট্রেন্ড চলতেই দেখছি।
৩। প্রতারিত হওয়া মুসলিম মাবাবার সন্তান যে নির্বাচন কমিশন, যে রাজনৈতিক দল - তারা চাচ্ছে ইসলামপন্থীরা নির্বাচনে অংশ না নিক। কিন্তু যারা তাদের প্রতারিত করে অমন নির্বাচন কমিশনে কাজ করাচ্ছে, অমন দলের জন্য শহীদ করাচ্ছে - তারা যে পয্যন্ত চাইছে যে ইসলামপন্থীরা নির্বাচনে যাক, অসংখ্য ৭৩ দলের একটা হয়ে থাকুক - ততক্ষণ তারা নির্বাচনে যেতে পারছে, দল করতে পারছে। যখন চাইছে না তখন মুসলিম ব্রাদারহুড হচ্ছে, জংগী কারদাভী, জাকির নায়েক হয়ে যাচ্ছে, টার্কিশ ক্যু এর শিকার হতে হচ্ছে।
৪। মুসলিম সৈনিকরা সিপাহী বিদ্রোহের সময় শুয়োরের চর্বিযুক্ত কার্তুজ ব্যবহার করুক কিংবা না করুক, আর ওহুদের যুদ্ধে পাহাড় ছাড়ুক কিংবা না ছাড়ুক - বিদ্রোহ সফল হত না, উপমহাদেশে মুসলিম সালতানাত ফিরে আসত না ঠিক যেমন আল্লাহর বিধানানুযায়ী রাসুলুল্লাহ সঃ কে কখনো যুদ্ধে যেমন জিততে হত আবার কখনো হারতে হত। আর শুকরের চর্বি যুক্ত কার্তুজ ব্যবহার না করে ওনারা ওনাদের তাকওয়ার পরিচয় দিয়েছেন এবং স্পেশাল শহীদ হয়েছেন - ওনারা পার পেয়েছেন। আমি আপনি শুকরের চর্বি ধরে, ব্যবহার করে কিংবা কেউ কেউ খেয়ে - যে সাকসেস আনতে চাইছি - তার পক্ষে কোরান ও হাদীসে যদি অকাট্য দলিল না থাকে - তবে কি আমাদের বিপদ বেড়ে যাবে না?
দয়া করে আমার প্রতিউত্তরকে প্রতিপক্ষের উত্তর হিসাবে দেখবেন না - বরং একজন মুমিন আর একজন মুমিনের আয়না স্বরূপ অমন জ্ঞানে দেখবেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন