আবেগী বিবেক
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ০২ অক্টোবর, ২০১৭, ০৩:৪৩:১৫ দুপুর
আবেগ আর বিবেক নিয়েই মানুষের বসবাস তাই সে যেকোন বিষয়ে যখন আবেগী হয় তখন নিজের বিবেক খাটিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় এবং তার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।
যদি কারও আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে না দেয়া হয় তাহলে তার আকাঙ্খা নিজের ভিতরেই গুমরে মরে এবং সে কষ্ট পায়। যদি এভাবে ঘটতেই থাকে তাহলে হয় সে বিদ্রহ করে নতুবা বিবেকহীন হয়ে পরে। সব কাজে নিজেকে অপাংতেয় মনে করে।
এখন কথা হল সবার বুঝ কি এক। সব বিষয়েই কি সবার কথা বলা উচিৎ। সবারইকি যুক্তি দেয়া দরকার? আমি বলব হ্যা, অবশ্যই। তবে কার যুক্তি গ্রহণ করা হবে আর কারটা করা হবেনা তা নীতি নির্ধারকদের ব্যাপার।
কোনভাবেই মত প্রকাশে বাঁধার সৃষ্টি করা উচিৎ নয়। হতেপারে কোন আদনা মানুষের কাছ থেকেও এমন কোন গুরুত্বপূর্ণ কথা বেরিয়ে আসতে পারে যা মহা জ্ঞানীরা নেতারাও কোন সময় চিন্তা করেনি।
বিষে করে সংগঠনের ব্যাপারে মাঠের কর্মীদের চেয়ে আবেগী কর্মীরা বেশী কথা বলে, যেমন খেলোয়াড়ের চেয়ে দর্শকরা বেশী ভুল ধরে।
খেলোয়াড়ও বুঝতে পারে যে শর্টটা এভাবে খেলা ঠিক হয়নি বা বলটা এতটা লুজ দেয়া ঠিক হয়নি। আবার দর্শকও বুঝতে পারে। প্লেয়ার চুপ থাকলেও দর্শকরা সমালোচনার ঝড় তোলে। খেলায় হেরে গেলে প্রিয় খেলোয়াড়ের বাড়ি ঘর পর্যন্ত ভেঙ্গে ফেলতে দ্বীধা করেনা আবার একই খেলোয়াড়ের জন্য জীবনও দিতে পারে। এটাই মূলত আবেগ। এমন আগবে বেশীরভাগ ভালো টিমের ব্যাপারেই দেখাযায়। যে টিম সব সময় হারে কেউ তাদের নিয়ে আবেগ দেখাতে যায়না। তাই ভালো খেলোয়াড় হতে হলে যেমন দর্শকদের ভালোবাসা ধারণ করার সামর্থ থাকতে হয় তেমনি সমালোচনাও হাসি মুখে সহ্য করার মানুষিকতা লালন করতে হয়।
ইসলামী আন্দলনের তরুণ সমর্থকদের প্রিয় দুইজন সাবেক ছাত্র নেতা গ্রেফতার হলে এবং ব্যাপকভাবে নির্জাতিত হলে সবাই অনেকটা মূষরে পরে। সবাই তাদের জন্য দুয়া করতে থাকে এবং অপেক্ষার প্রহর গুণতে থাকে যে কখন তারা মুক্তি পাবে?
কয়েকবার মুক্তি পেয়েও তারা জেল গেইটে পুনরায় গ্রেফতার হয় ফলে তাদের চুড়ান্ত মুক্তির খবরটা সংগঠন চেপে যায়। কাছের বা স্বকৃয় সবাই হয়ত খবরটা জানে এবং অঘোষিত ভাবে আবেগী সমর্থকরাও অনুমান করতে পারে।
আবেগী সমর্থকরা এই খুশির খবরটা সবার সাথে শেয়ার করতে চেয়েছিল। তারা তাদের ভিতরে জমাটবাধা কষ্টগুলো এই খবরের মাধ্যমে বের করে দিয়ে রিফ্রেশ হয়ে নতুন সূর্যদয় দেখার অপেক্ষায় ছিল, কিন্তু তা হয়নি।
মানুষ নিজের দুঃখকে হালকা করার জন্য চোখের পানি ফেলে অঝর ধারায় কাদে, তাতে তার সমস্যার সমাধান হয়না তবে নিজেকে কিছুটা হাল্কা মনে করে।
সেই দুই সাবেক ছাত্র নেতার একজন সহ, কমিটির তিনজন মূল ব্যক্তি পুনরায় গ্রেফতার হওয়ায় যদি আবেগী কর্মীরা এভাবে বলে, 'পুলিশ যেহেতু তাদের গ্রেফতার করার জন্য ওঁত পেতে আছে সেহেতু তারা মূল তিনজন ব্যক্তি একই সাথে একই প্রগ্রামে না গেলেইকি হতনা? ৪০ জন রোকন বোনকে একত্রে নিয়ে প্রগ্রাম না করে ৪/৫ করে যদি বিভিন্ন স্পটে প্রগ্রাম করত তাহলে হয়ত সবাই গ্রেফতার হতনা।
হ্যা অবশ্যই নেতারা ভালো বুঝেন তবে আবেগী সমর্থকরাও এমন পরামর্শ্ব দেয়ার অধিকার রাখে। এজন্য তাদেরকে বুদ্ধিজিবী বলে তিরষ্কার করা কতটুকু যৌক্তিক?
নেতা-নেত্রীদের গ্রেফতারে যারা ব্যথিত হয়েছে তারাই এমন কথা বলেছে। এর মানে এই নয় যে তারা নেত্রীবৃন্দের মুক্তির জন্য দুয়া করেনা? অবশ্যই দুয়া করে এবং এভাবে যেন আর কাউকে গ্রেফতার না হতে হয় বা বিপদে না পড়তে হয় সেজন্যই এই বক্তব্য।
যদি তাদেরকে এতটুকু কথা বলতেও না দেয়া হয় এবং ব্যপকভাবে ইন্সাল্ট করা হয়, তাহলে তারা নিরুতসাহী হবে এবং বোবা বধির হয়ে যাবে। যা সংগঠনের কোন উপকারে আসবেনা।
মনে রাখতে হবে সফল বিল্পবের জন্যে নেতার চেয়ে কর্মী বেশী দরকার, কর্মীর চেয়ে সমর্থক এবং সমর্থক থকে সুধীর সংখ্যা বেশী হওয়া জরুরী। আর এটাই গণভিত্তি।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ দিন। আমিন।
বিষয়: রাজনীতি
৭৭৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন